প্রজাতন্ত্র দিবস

‌২৬ জানুয়ারি ।। প্রজাতন্ত্র দিবস ।। সাধারণতন্ত্র দিবস

প্রতি বছর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়। ঐ নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা  গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরী করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। ভারতের পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলোর মধ্যেই একটি হল প্রজাতন্ত্র দিবস বা সাধারণতন্ত্র দিবস।

সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে ২৬ জানুয়ারি মহাসমারোহে প্রজাতন্ত্র দিবস বা সাধারণতন্ত্র দিবস পালন হয়।  এই দিন সারা ভারত জুড়ে ছুটি ঘোষণা করা আছে কারণ এই দিনটি ভারতের তিনটি জাতীয় ছুটির দিনের মধ্যে একটি। অন্য দুটি জাতীয় ছুটির দিন হল স্বাধীনতা দিবস (১৫ আগস্ট) এবং মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন (২ অক্টোবর)।

১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর স্বাধীন ভারতের সংবিধান গৃহীত হবার পর ঠিক করা হয় ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালনের দিনটিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ভারতের সংবিধান কার্যকর হবে এবং সেদিন থেকে প্রজাতান্ত্রিক ভারতবর্ষ বা Republic of India হিসেবে পরিচিত হবে। প্রথম স্বাধীনতা দিবস নিয়ে জানতে হলে ইতিহাসের একটু পিছনে যেতে হবে।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

৩১ ডিসেম্বর ১৯২৯ মাঝরাত। লাহোর, তখন অবশ্য ভারতের অন্তর্গত। অজস্র ভারতীয় ভিড় করে দাঁড়িয়ে রবি নদীর তীরে। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্যরা সবাই উপস্থিত। পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু সেই প্রথম ‘পূর্ণ স্বরাজ’ অর্থাৎ কিনা ব্রিটিশ শাসন থেকে সম্পূর্ন মুক্ত ভারতের দাবি জানিয়ে ভারতের পতাকা উত্তোলন করলেন। উপস্থিত জনতাকে সেদিন ‘পূর্ণ স্বরাজ’ পালনের সমর্থনের দাবী করা হলে বেশিরভাগ হাত ওঠে সমর্থনের পক্ষে। ঠিক করা হয় ২৬শে জানুয়ারি দিনটিকে এবার থেকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হবে। ১৯৩০ সালে ২৬ জানুয়ারি সেই রবি নদীর তীরে আবার জড়ো হয়ে ‘পূর্ণ স্বরাজ’ এর দাবি পুনরায় জানিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালন করে জাতীয় কংগ্রেসের সদস্যরা।

এই দিনটি ভারতের স্বাধীনতা দিবসের মতই গুরুত্বপূর্ণ এবং যথেষ্ট উৎসাহের সাথেই পালন করা হয়। সাধারণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের প্রধান কর্মসূচী পালিত হয় ভারতের রাষ্ট্রপতির সামনে, রাজধানী নতুন দিল্লীতে। এই দিন রাজপথে আড়ম্বরপূর্ণ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় যা ভারত রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। এই দিনে প্রত্যেক বছর বিভিন্ন দেশের প্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত করা হয়। দেশের রাজধানী ছাড়াও সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পতাকা উত্তোলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পদযাত্রা ইত্যাদির মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করে।

6 comments

আপনার মতামত জানান