জাতীয় প্রযুক্তি দিবস

১১ মে ।। জাতীয় প্রযুক্তি দিবস

প্রতি বছর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়। ঐ নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা  গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা  তৈরী করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। ভারতের পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলোর মধ্যেই একটি হল জাতীয় প্রযুক্তি দিবস ।

প্রতি বছর ১১ মে ভারতে নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার, তার ব্যবহারের কথা নিয়ে জাতীয় প্রযুক্তি দিবস পালন করা হয়। ১১ই মে, ১৯৯৮ সালে ভারত রাজস্থানের পোখরানে সফলতার সাথে দ্বিতীয়বার পরমাণু বোমা পরীক্ষা করে। পরের বছর ১৯৯৯ সাল থেকে দেশের এই সাফল্যের কথা মনে রেখে এই দিনটিকে জাতীয় প্রযুক্তি দিবস (national technology day) হিসেবে পালন করা হয়।

অপারেশন শক্তি নামে পোখরানে ১৯৯৮ সালের ১১ মে তিনটি ও ১৩ মে দুইটি মোট পাঁচটি পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করা হয়। এই পারমাণবিক বোমাগুলোর নাম ছিল যথাক্রমে শক্তি-১ থেকে শক্তি-৫ । অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে এই পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। যাঁরা এই প্রজেক্টের সাথে যুক্ত ছিলেন যেমন ড. এ পি জে আব্দুল কালাম, তাঁরা সবাই ভারতীয় সেনার বেশে পরীক্ষাস্থলে যেতেন এবং ভারতের ওপর নজর রাখা বিভিন্ন স্যাটেলাইট এই পরীক্ষাকে ভারতীয় সেনার নিত্যনৈমিত্তিক কাজ হিসেবেই ধরে নিয়েছিল। যখন পরীক্ষা শেষ হয় তখন জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এর নিন্দা করে । কিন্তু এই পরীক্ষার পর ভারত বিশ্বের ষষ্ঠ নিউক্লিয়ার দেশ (nuclear state ) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এটি ভারতের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিস্ফোরণ পরীক্ষা। এর আগে ১৮ মে, ১৯৭৪ সালে পোখরানে ভারতের মধ্যে প্রথম পারমাণবিক বিস্ফোরণের পরীক্ষা করা হয়, যা স্মাইলিং বুদ্ধ নামে পরিচিত ।

এ ছাড়াও ১৯৯৮ সালের এই দিনে সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে হান্সা-৩ (Hansa-3) নামে দুটি আসন বিশিষ্ট বিমান তৈরি করা হয় যা ট্রেনিং এর জন্য ব্যবহার করা হয়। ঐ একই দিনে স্বল্প পাল্লার মিসাইল ত্রিশুল এর সফল পরীক্ষা করা হয়।

প্রতি বছর এই দিনটিতে ভারতের প্রযুক্তি উন্নয়ন বোর্ড (Technoogy Developement Board of India)  প্রযুক্তিতে কৃতী বিভিন্ন মানুষদের সম্মান প্রদান করে। এছাড়া দেশের প্রযুক্তি বিষয়ক কলেজগুলিতে দিনটিকে উৎসাহের সঙ্গে পালন করা হয়। প্রত্যেক বছর একটি করে বিশেষ থিম বা প্রতিপাদ্য  বেছে নেওয়া হয় এই দিনটি পালনের জন্য। এখানে কয়েক বছরের প্রতিপাদ্য দেওয়া হল –
২০১৬ সালের প্রতিপাদ্য ছিল  – স্টার্ট আপ ইন্ডিয়ার জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা (Technology enablers of Startup India)

২০১৭ সালের প্রতিপাদ্য ছিল -স্থিতিশীল ও সার্বিক বিকাশের জন্য প্রযুক্তি (Technology for inclusive and sustainable growth)

২০১৮ সালের প্রতিপাদ্য ছিল -স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (Science and Technology for a Sustainable Future)

২০১৯ সালের প্রতিপাদ্য ছিল -মানুষের জন্য বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানের জন্য মানুষ (Science for People and People for Science)

২০২০ সালের প্রতিপাদ্য ছিল – ‘রিস্টার্ট’ শিরোনামের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গবেষণা অনুবাদের মাধ্যমে অর্থনীতিকে পুনঃসঞ্চালিত করা (Rebooting the Economy through Science, Technology and Research Translations titled RESTART)

২০২১ সালের প্রতিপাদ্য ছিল– স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (Science and Technology for a Sustainable Future)

২০২২ ও  ২০২৩ সালের প্রতিপাদ্য – স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সমন্বয়ী দৃষ্টিভঙ্গি (Integrated Approach in Science and technology for sustainable future)

2 comments

আপনার মতামত জানান