বড়দিন

বড়দিন

২৫ ডিসেম্বর তারিখে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে যে উৎসব পালিত হয়, তাকে সারা বিশ্বজুড়ে বলা হয় ক্রিসমাস, আর বাংলায় বড়দিন। যদিও এই দিনটি যিশুর আসল জন্মদিন কিনা তা জানা নেই। কিন্তু এই দিনটিই সারা বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা যীশুর জন্মদিন হিসাবে পালন করে থাকে। শুধু খ্রিস্টানরাই নয়, অ-খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও এই দিনটি ধুমধামের সাথে পালন করে থাকে। দিনটি  ধর্মনিরপেক্ষ দিন হিসাবেই পালন করা হয়।

ইংরেজি ক্রিসমাস (Christmas) শব্দটি Christ’s Mass থেকে এসেছে। এছাড়াও দিনটিকে এক্সমাস (Xmas) ও বলা হয়ে থাকে।আর বাংলায় বড়দিন আখ্যা দেওয়ার কারণ হিসাবে বলা হয় যে ২৩ ডিসেম্বর থেকে দিন ক্রমশ বড় আর রাত ছোটো হতে আরম্ভ করে। বিশ্বাস করা হয় ২৫শে ডিসেম্বর এসে নাকি দিনটি সবচেয়ে বড় হয়।

বড়দিন হল যীশুর জন্মোৎসব। খ্রিষ্টানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, বাইবেলে একাধিক ভবিষ্যদবাণীতে বলা হয়েছে যে কুমারী মেরীর গর্ভে তাঁদের মসিহা বা উদ্ধারকর্তার জন্ম হবে। নিউ টেস্টামেন্টে মথিলিখিত সুসমাচার (মথি ১: ১৮ – ২: ১২) এবং লূকলিখিত সুসমাচার (লূক ১: ২৬ – ২: ৪০)-এ বর্ণিত যিশুর জন্মকাহিনী খ্রিষ্টমাস উৎসবের মূলভিত্তি। এই উপাখ্যান অনুসারে, স্বামী জোসেফের সঙ্গে বেথলেহেম শহরে মেরি যীশুর জন্মদান করেন। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, একটি আস্তাবলে গবাদি পশু পরিবৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন যীশু। যদিও বাইবেলে সেভাবে এই ঘটনার উল্লেখ নেই। তবে লূকলিখিত সুসমাচারে (লূক ২: ৭) একটি যাবপাত্রের উল্লেখ আছে: “আর তিনি আপনার প্রথমজাত পুত্র প্রসব করিলেন, এবং তাঁহাকে কাপড়ে জড়াইয়া যাবপাত্রে শোয়াইয়া রাখিলেন, কারণ পান্থশালায় তাঁহাদের জন্য স্থান ছিল না।” যিশুর জন্ম-সংক্রান্ত বিভিন্ন ছবি আছে, তাতে দেখা যায় গবাদি পশু ও যাবপাত্র পরিবৃত একটি গুহায় যিশুর জন্মদৃশ্য। খ্রিস্টিয় ২০০ সাল থেকে এ উৎসব পালন শুরু হয়।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

বেশিরভাগ দেশেই বড়দিন প্রধান একটি উৎসব হিসাবে পালিত হয়। পাশ্চাত্যে এই দিনটি মহা ধুমধামের সাথে পালন করা হয়।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইংল্যান্ডে বাচ্চারা বড়দিনের আগের দিন সন্ধ্যায় বিছানার পাশে মোজা ঝুলিয়ে রাখে এই বিশ্বাসে যে সান্টাক্লজ এগুলি উপহার দিয়ে ভরে দেবে। ক্রিসমাস ট্রি সাজানো,  কেক কাটা থেকে শুরু করে এদিন বিশেষ খাবার যেমন রোস্ট টার্কি, শূকরের মাংস, হাঁসের মাংস বানানো ইত্যাদি বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে এই উৎসব পালন করা হয়।

তবে চীন (হংকং ও ম্যাকাও বাদে), জাপান, সৌদি আরব, আলজেরিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, ইরান, তুরস্ক ও উত্তর কোরিয়ার মতো কয়েকটি দেশে বড়দিন সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয় না।

3 comments

আপনার মতামত জানান