মা দুর্গা তার চার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কৈলাস থেকে পাঁচদিনের জন্য বাপের বাড়ি বেড়াতে আসেন। এই পাঁচদিন বাঙালির দুর্গাপূজা। পুজোর শেষদিন দশমীতে আবার তিনি তার স্বামীগৃহ কৈলাসে ফিরে যান। এই দিনটিকেই বিজয়া দশমী নামে অভিহিত করা হয়।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথিতে মা পুনরায় কৈলাসে পাড়ি দেন। এই দিনটিকেই বলা হয় দশমী, কিন্তু বিজয়া দশমী কেন, তার নানা পৌরাণিক ব্যাখ্যা আছে। পুরাণ অনুযায়ী দেবীদুর্গা মহিষাসুরের সাথে নয়দিন নয়রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে মহিষাসুরকে হারিয়ে বিজয় লাভ করেছিলেন। তাই নবমীর পরের দিনটি বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। বলা হয় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে দেবী আসেন, এবং শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর-বধ করেন। বিজয়া দশমী সেই বিজয়কেই চিহ্নিত করে।
অপরদিকে গোটা উত্তর ও মধ্যভারত জুড়ে রামের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই দিনটি দশেরা হিসাবে পালন করা হয়। দশেরা আসলে নবরাত্রির দশমদিন। এইদিন লঙ্কার দশানন রাবণকে হারিয়ে রাম যুদ্ধে জয় লাভ করে সীতাকে উদ্ধার করেছিলেন। তাই এইদিন রাবনের পুতুল পুড়িয়ে দশেরা পালন করা হয়। ‘দশেরা’ শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত ‘দশহর’ থেকে, যা দশানন রাবণের মৃত্যুকে সূচিত করে। বলা হয় যে, আশ্বিন মাসের শুক্লা দশমী তিথিতেই রাবণ-বধ করেছিলেন রাম।
দশেরা ও বিজয়া দশমী দিনটি কেবল হিন্দুদের কাছেই নয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কথিত আছে সম্রাট অশোক এই বিশেষ দিনটিতেই বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। পুরান অনুযায়ী আবার দশেরার দিন রাবণ বধের পর এক নতুন সূচনা হয়ে থাকে। এর পরই বর্ষাকাল বিদায় নিয়ে শীতের শুরু হয়ে যায়।
তথ্যসূত্র
- https://en.wikipedia.org/wiki/Vijayadashami
- https://ebela.in/events/durga-puja/rituals-and-mythology/significance-of-vijaya-dashami

Pingback: দুর্গাপূজা | সববাংলায়
Pingback: শ্মশানভূমিতে দুর্গাপূজা | সববাংলায়