মহাভারত

যযাতির বংশধর

মহাভারতের বলতেই অনেকেই যে পাণ্ডব আর কৌরবদের বোঝে, বংশ বিচার করলে তারা সকলেই কিন্তু যযাতির বংশধর । পাণ্ডব আর কৌরবের বংশ ছিল একই। মহারাজা কুরুর বংশে জন্ম তাদের। কুরুর অনেক পুরুষ আগে ছিলেন মহারাজা পুরু। পুরুর পিতা হলেন যযাতি। সেই অর্থে এরা সবাই হলেন তারা প্রত্যেকেই যযাতির বংশধর।

যযাতির ছিল দুই বউ। দৈত্যগুরু শুক্রাচার্যের মেয়ে দেবযানীকে বিয়ে করার পরও রাজা দেবযানীর দাসী এবং দৈত্যরাজ বৃষপর্বার মেয়ে শর্মিষ্ঠাকেও গোপনে গ্রহণ করেছিল। যখন একথা জানাজানি হয়, তখন তা জানতে পেরেই দৈত্যগুরু শুক্রাচার্য তাকে হাজার বছরের জরা অভিশাপ হিসাবে দিল। অনেক প্রার্থনা করেও জরারোধ হল না তার। কিন্তু শুক্রাচার্য বলল, যদি তার কোনও ছেলে তার এই জরা গ্রহণ করে, তাহলেই যৌবন সে ফিরে পাবে। রাজা যযাতি তখন ঘোষণা করল যে ছেলে জরা নেবে, সেই ছেলেই রাজ্য পাবে। দেবযানীর গর্ভে রাজার দুই ছেলে যদু ও তুর্বসু জরা নিলো না। নিলো না শর্মিষ্ঠার গর্ভে রাজার অন্য দুই ছেলে দ্রুহ্যু ও অনুও। শর্মিষ্ঠার কনিষ্ঠ ছেলে পুরু সানন্দে জরা গ্রহণ করল। হাজার বছর পর যযাতি তার থেকে জরা ফিরিয়ে তাকে রাজ্য দিল। এই পুরুর বংশেই জন্মগ্রহণ করেছিল কুরু, ভরত, অর্জুনেরা। যদুর থেকে তৈরি হয় যদুবংশ, যে বংশে জন্ম কৃষ্ণের। দ্রুহ্যু থেকে ভোজবংশ, যেখানে জন্ম কংসের। আর বাকি দুজন অনু আর তুর্বসুর থেকে যথাক্রমে সৃষ্ট হল ম্লেচ্ছ আর যবন। আবার অনেকের মতে তুর্বসুর থেকে ম্লেচ্ছ এবং অনু থেকে যবন।

এছাড়াও যযাতির ছিল এক কন্যা মাধবী। তার পরিচয় পাওয়া যায় মহাভারতের উদ্যোগপর্বে।  গুরুর ঋণভারে যখন গালব যযাতির কাছে এসে তার সাহায্য প্রার্থনা করে, তখন যযাতি জানায় তার কাছে যথেষ্ট অর্থ নেই, বদলে সে তার কন্যাকে গালবের হাতে দান করে যদি কোনো রাজা সেই কন্যার বিনিময়ে গালবকে সাহায্য করে। গালব মাধবীর সাহায্যে অবশেষে ঋণমুক্ত হয়েছিল।

তথ্যসূত্র


  1. মহাভারতের ভারতযুদ্ধ ও কৃষ্ণ - নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী
  2. "মহাভারত সারানুবাদ", দেবালয় লাইব্রেরী(প্রকাশক সৌরভ দে, তৃতীয় প্রকাশ) - রাজশেখর বসু, আদিপর্ব,  পৃষ্ঠাঃ ২৭-৩২, উদযোগপর্ব পৃষ্ঠাঃ ৩০৮-৩১১

 

9 comments

  1. পিংব্যাকঃ satyavati in bengali

আপনার মতামত জানান