কথায় বলে- Cancer has no Answer. সত্যিই চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতির পরও এই একটা প্রতিবন্ধকতার কাছে মানুষ আজও বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারেনা। বিশ্ব জুড়ে অগণিত ক্যানসার রোগী যারা দেহে এই মারণরোগ নিয়ে রোজ বাঁচার লড়াই লড়ছেন, তাদের কথা ও ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেই ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোল নামের আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং অন্যান্য কয়েকটি সংগঠনের সমন্বিত সভায় ১৯৩৩ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে প্রতি বছর ৪ঠা ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব ক্যানসার দিবস হিসেবে পালনের পরিকল্পনা করা হয়।
সমগ্র বিশ্বের মত ভারতও এই মারণ রোগের হাত থেকে নিস্তার পায়নি। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ তে সারা ভারতজুড়ে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭.৫ লক্ষ যে সংখ্যাটা ২০২০ সালের মধ্যে গিয়ে দাঁড়াবে ১৭.৩ লক্ষে।
এই ধরণের তথ্য লিখে আয় করতে চাইলে…
আপনার নিজের একটি তথ্যমূলক লেখা আপনার নাম ও যোগাযোগ নম্বরসহ আমাদের ইমেল করুন contact@sobbanglay.com এ
ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যাটা সবথেকে বেশি ভারতের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলিতে। মিজোরামের আইজলে সারা ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পুরুষ ক্যানসার আক্রান্ত, অন্যদিকে অরুণাচলের পাপুম্পারে জেলায় সবচেয়ে বেশি মহিলা ক্যানসার আক্রান্ত।
ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে সারা বিশ্ব জুড়েই নিরন্তর গবেষণা হয়ে চলেছে। একটি সূত্র মতে মারণ রোগকে নির্মূল করতে কিউবা একটি ছোট দলের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করে ফেলেছেন একটি মিরাকেল টিকা। তাঁদের দাবি, এই টিকার সাহায্যেই কর্কট রোগ নির্মূল করা সম্ভব। সেটা হাতেনাতে প্রমাণ পেতে ইতোমধ্যেই ৪ হাজারেরও বেশি আক্রান্তদের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে। যাঁরা এখন স্বাভাবিক মানুষের মতোই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ভাবছেন, এই ভ্যাকসিনের দাম অত্যন্ত বেশি হবে। কিউবার বিজ্ঞানীদের কথায়, মধ্যবিত্তের সামর্থ্যের মধ্যেই মিলবে এই অত্যন্ত জরুরি টিকা।কিউবার ল্যাবিওফ্যাম কোম্পানির EscoZul এই ভ্যাকসিন বিক্রি করে।উল্লেখ্য , এই মহামূল্যবান ভ্যাকসিনটি যেহেতু কিউবা থেকে আবিষ্কার হয়েছে, তাই কিউবার বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনটি বিনামূল্যেই দেওয়া হচ্ছে। আর যাঁরা এই ভ্যাকসিন পেতে চান, তাঁরা কিউবার মেডিক্যাল সার্ভিসেস যোগাযোগ করতে পারেন আপনি নিজেই।
এইদিকে ভারতও পিছিয়ে নেই এই লড়াইতে।কলকাতার বোস ইন্সটিটিউটের জৈব-পদার্থবিদ্যার গবেষকদল যার মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞানের অধ্যাপক দেবপ্রসাদ মণ্ডল, অধ্যাপক শমী ভট্টাচার্য ও বারাসত ক্যানসার রিসার্চ এবং ওয়েলফেয়ার সেন্টারের চিকিত্সক গোপেশ্বর মুখোপাধ্যায়, তাঁদের দাবি , আরএনএ (রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড)-এর গঠনে পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্যানসার কোষের ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা রুখতে পেরেছেন তাঁরা। এর জেরে ক্যানসার আক্রান্তদের মৃত্যুর হার অনেক কমবে বলে দাবি তাঁদের। ক্যানসারে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসাবে মেটাস্ট্যাসিসকে দায়ী করেন চিকিত্সকরা। এই মেটাস্ট্যাসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই মানবদেহের একটি অঙ্গ থেকে অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে ক্যানসার। ফলে অগ্নাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তি আক্রান্ত হয়ে পড়েন যকৃতের ক্যানসারেও। একাধিক অঙ্গে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ায় সুস্থতায় ফেরা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ে রোগীর পক্ষে। এতদিন মেটাস্ট্যাসিসের মাধ্যমে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া রোখার পদ্ধতি জানা ছিল না চিকিত্সাবিজ্ঞানে। এবার তারই সন্ধান দিলেন কলকাতার চার বিজ্ঞানী।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে মানবজাতির এই সঙ্ঘবদ্ধ লড়াই চলছে। আগামী দিনে আরও জোরদার হবে এই লড়াই এ আশা আমরা রাখি।
তথ্যসূত্র
- http://www.worldcancerday.org/
- https://www.ncbi.nlm.nih.gov
- http://zeenews.india.com
- http://www.dnaindia.com
- https://timesofindia.indiatimes.com

Pingback: আজকের দিনে ।। ৪ ফেব্রুয়ারি | সববাংলায়
Pingback: আন্তর্জাতিক পালনীয় দিবস | সববাংলায়