বিশ্ব শক্তি সংরক্ষণ দিবস

১৪ ডিসেম্বর ।। বিশ্ব শক্তি সংরক্ষণ দিবস

প্রতি বছর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশে কিছু দিবস পালিত হয়। ওই নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। পালনীয় সেই সমস্ত দিবস গুলির মধ্যে একটি হল বিশ্ব শক্তি সংরক্ষণ দিবস (World Energy Conservation Day)।

প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর  সারা বিশ্বজুড়ে বিশ্ব শক্তি সংরক্ষণ দিবস পালিত হয়। এই দিনটি পালন করার মূল উদ্দেশ্য হল সামাজিক স্তরে প্রচলিত শক্তির অপচয়কে রোধ করা এবং তার সঠিক ব্যবহার করা।

১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্ব শক্তি সংরক্ষণ দিবস পালন শুরু হয়। পেট্রোল এবং কয়লার মাধ্যমেই প্রধানত বিশ্বজুড়ে শক্তির উৎপাদন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন গ্যাস ব্যবহার করে শক্তির উৎপাদন করা হয়ে থাকে। কিন্তু এইসব খনিজ শক্তি পৃথিবীতে খুব সীমিত পরিমাণে রয়েছে। যেহেতু গত ৫০ বছর ধরে জনসংখ্যা বিপুল হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেহেতু এইসব জ্বালানি পদার্থ বহুল ব্যবহারের ফলে অনেকটাই কমে আসছে। তাই আমাদের সঠিকভাবে শক্তির ব্যবহার করা প্রয়োজন। আর এই সচেতনতাকে আরো বাড়িয়ে তুলবার জন্যে এবং মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য বিশ্ব শক্তি সংরক্ষণ দিবস পালিত হয়। যেহেতু এইসব খনিজ পদার্থের চাহিদা বিপুল পরিমানে বেড়ে চলেছে সেহেতু এর স্থায়ীত্ব সীমা বাড়ানোর জন্য এর সঠিক ব্যবহার এখন থেকে যদি না করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সবাই যদি প্রয়োজন অনুযায়ী শক্তির ব্যবহার করে তাহলে এই শক্তি অনেকটা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়। যেমন প্রয়োজন না থাকলে ঘরের আলো, পাখা বা এয়ারকন্ডিশনার (air conditioner, AC) বন্ধ করে রাখা কিংবা নিকটবর্তী জায়গায় গাড়ি না চড়ে হেঁটে যাওয়া বা গণপরিবহন ব্যবহার করা ইত্যাদি। আমাদের এই ধরনের সচেতনতার ফলে পরিবেশ দূষণও অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। এই কারণগুলিকে মাথায় রেখে এই বিশেষ দিনটি সারা পৃথিবী জুড়ে পালন করা হয়ে থাকে।

সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী যেভাবে মানুষ তেলের ব্যবহার করছে তাতে আর মাত্র ৪৫ বছর পৃথিবীতে তেলের যোগান থাকবে, ৬৫ বছর এবং কয়লার যোগান বড়জোর আর ২০০ বছর থাকবে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এই ধরনের জ্বালানি পদার্থ সংরক্ষণ করা কতটা প্রয়োজন এবং এর বিকল্প পথের সন্ধান করা খুবই প্রয়োজন। শুধু সরকারিভাবে পদক্ষেপ নেওয়া বা শিল্পাঞ্চলগুলিতে সচেতন হলেই চলবে না, এই ব্যাপারে মানুষকে দৈনন্দিন জীবনেও খুব সচেতন হতে হবে। ইতিমধ্যে এই দিনটি পালন করার মধ্যে দিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে শক্তি সংরক্ষণের ব্যাপারে অনেকটাই সচেতন করা গেছে বলে মনে করা  হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও আরো মানুষকে এই ব্যাপারে সচেতন করে তোলা যাবে বলেই মনে করা হয়।

এই দিনটি উপলক্ষে নানান দেশে নানান রকম কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। যেমন সচেতনতা মূলক প্রচার, আলোচনা সভা, বক্তৃতা সভা, বিতর্ক সভা, স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, ছবি প্রদর্শনী,- অঙ্কন প্রতিযোগিতা, ক্যুইজ প্রতিযোগিতা, মিছিল ইত্যাদি।

One comment

আপনার মতামত জানান