চন্দ্র ও তারার সন্তান ছিল বুধ। এদিকে মনুর পুত্র রাজা সুদ্যুম্ন একটি বিশেষ কারণে কন্যায় রূপান্তরিত হয়েছিল। তার কন্যারূপের নাম ছিল ইলা। সেই সময় তার সঙ্গে দেখা বুধের। তারা দুজনেই প্রেমে পড়ে এবং বিয়ে করে। নয় মাস পরে ইলার গর্ভে জন্মায় পুরূরবা। এক বছর পর ইলা পুনরায় রাজা সুদ্যুম্ন তে রূপান্তরিত হলে সঙ্গে করে সে পুরূরবাকেও সঙ্গে নিয়ে যায়। পুরূরবা যেহেতু চন্দ্রের নাতি এবং এই বংশের প্রথম রাজা, তাই তার থেকেই শুরু হয় চন্দ্রবংশ। পুরূরবাই হল চন্দ্রবংশের প্রথম রাজা। তার বংশধরেরা মহাভারতের বংশগুলো প্রতিষ্ঠা করে।
পুরূরবার মায়ের নাম ইলা। ইলা মনুর মেয়ে। তবে ইলা যদিও ছিলেন মেয়ে আবার পুরুষও হয়ে যেতে পারতেন। পুরুষ হলে তাকে সুদ্যুম্ন নামে ডাকা হতো। । ইলার নারী-রূপে মুগ্ধ হয়ে পড়েন বুধ। আর তাদের মিলনে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান যার নাম-পুরূরবা। পুরাণে বলে ইলা নারী হওয়ার ফলে রাজ্য পাননি পরে পুরুষ হওয়ার পর রাজ্য লাভ করেন। পুরূরবা বুধের ছেলে হওয়া স্বত্বেও ইলার ছেলে পরিচয়েই বেশি পরিচিত। এর প্রধান কারণটি তার মা। আর মায়ের কারণেই পুরূরবা বেশি বিখ্যাত হয়ে উঠেন।
বুধ তাঁর পিতা মাতার প্রেমকে কোনোদিনই মেনে নিতে পারেননি। তিনি স্বর্গের দেবতাদের কাছে এই বিষয়ে জানান যে নিজের জন্ম নিয়েই তিনি লজ্জিত। তাঁর ব্যবহারে তাকে স্বর্গের জায়গা দেওয়া হলেও তিনি মর্ত্যে নিজের আশ্রমে চলে আসেন। তাঁর আশ্রমের কাছাকাছি একটি পুকুর ছিল। একদিন, সুদ্যুম্ন নামে একটি রাজা, যিনি বনের মধ্যে একা শিকার করছিলেন, খুব তৃষ্ণার্ত হয়ে উঠলেন। তিনি এই পুকুরে তৃষ্ণা নিবারণ করার পর দেখলেন তিনি একটি সুন্দর নারীতে পরিণত হয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁর নিজের রাজ্যে ফিরে যাওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব ছিল। তিনি রাতের জন্য বুধের আশ্রয়টি খুঁজে বের করেন। বুধ তাকে থাকতে দেয়। তার কন্যারূপের নাম হয় ইলা। কিছুদিন থাকতে থাকতে বুধ ইলার প্রেমে পড়েন। তারা বিয়ে করে নেন। নয় মাস পর তাদের একটি সুন্দর পুরুষ সন্তান জন্মলাভ করে । সেই সন্তানের নাম পুরূরবা। তারপর ইলা নিজের পুরুষ রূপে ফিরে এলে তিনি নিজের সন্তানকেও সঙ্গে করে আনেন। পুরূরবা থেকেই চন্দ্রবংশ প্রতিষ্ঠা হয়।
তথ্যসূত্র
- "মহাভারতের অষ্টাদশী", আনন্দ পাবলিশার্স, চতুর্থ মুদ্রণ - নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, অধ্যায়ঃ উর্বশী, পৃষ্ঠাঃ ১২- ১৩
- http://www.apamnapat.com/Mahabharata001
One comment