সোমবার হল ভগবান শিবের উপাসনার দিন। তাই অনেক ভক্ত ষোলটি সোমবার নিয়মমত শিবের উদ্দেশ্যে ষোল সোমবারের ব্রত পালন করেন। জেনে নেওয়া যাক এই ব্রতের পেছনে প্রচলিত কাহিনী।
মহাদেব একদিন মৃত্যুলোকে ঘুরতে ঘুরতে অমরাবতীকে এসে পৌঁছলেন। সেখানে মৃত্যুপুরীর রাজা তাঁর জন্য বিশাল এক সুন্দর মন্দির বানিয়েছিলেন। মহাদেব মুগ্ধ হয়ে দেবী পার্বতীর সাথে কিছুকাল সেখানেই বাস করতে শুরু করলেন। একদিন পার্বতী মহাদেবের কাছে পাশা খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন, তিনিও সঙ্গে সঙ্গে রাজি হলেন। খেলা সবে শুরু করতে যাবেন, এমন সময় সেখানে এসে উপস্থিত হলেন সেই মন্দিরের পুরোহিত। পার্বতী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আচ্ছা বলুন তো কে জিতবে এই খেলায়?”
পুরোহিত কিছু না ভেবেই উত্তর দিল, “ভোলানাথই জিতবেন।”
কিন্তু খেলার শেষে জিতলেন দেবী পার্বতী। পার্বতী তাঁকে বললেন যে তিনি মিথ্যা কথা বলেছিলেন এবং এই অপরাধে তাঁকে অভিশাপ দিলেন যে তাঁর কুষ্ঠ হবে। সেই পুরোহিত পার্বতীর অভিশাপে একজন কুষ্ঠরোগীতে পরিণত হয়ে জীবনযাপন করতে লাগলেন।
এরপর বেশ কিছুকাল কেটে যায়। একদিন সেই মন্দিরে কিছু অপ্সরা মন্দিরে পূজা দিতে এলেন। পুরোহিতের এই অবস্থা দেখে তাঁরা এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন। পুরোহিত তাঁদের সমস্ত গল্পই বললেন। তখন সেই অপ্সরারা তাঁকে ষোল সোমবারের ব্রত করার পরামর্শ দিলেন। সেই অনুযায়ী পুরোহিত অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে ষোলটা সোমবার ধরে এই ব্রত করলেন। তারপর ভোলানাথের আশীর্বাদে সে রোগমুক্ত হয়ে প্রতি সোমবারই ভোলানাথের পুজো করতে থাকেন। কিছুদিন পর আবার যখন শিবপার্বতী ঐ মন্দিরে ঘুরতে আসেন, তখন পার্বতী পুরোহিতকে রোগমুক্ত দেখে তাঁর আরোগ্য হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেন। পুরোহিত তাঁকে ষোল সোমবারের কথা বলেন। এই শুনে পার্বতীও ষোল সোমবারের ব্রত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পার্বতীর পুত্র কার্তিক মায়ের ওপরে রেগে ছিলেন। পার্বতী ষোল সোমবারের ব্রত করার পর কার্তিক বাধ্য সন্তানের মত মায়ের কাছে ফিরে এসে জিজ্ঞেস করেন ব্যাপারটা কি! তখন পার্বতী তাঁকে ষোল সোমবারের কথা বলেন। কার্তিকও এই ব্রত পালন করে তাঁর এক ব্রাহ্মণবন্ধুকে কাছে পেয়ে যান। বন্ধুটি কার্তিকের কাছে জানতে চায় কি করে তাদের মিলন সম্ভব হল, তখন কার্তিক তাকে ষোল সোমবারের ব্রতকথা জানায়।
কার্তিকের সেই বন্ধুটি বিয়ের ব্যাপারে খুব উৎসাহী ছিলেন। একদিন তিনি একটি দেশে গেলেন, যেখানে রাজার মেয়ের স্বয়ম্ভর চলছিল। স্বয়ম্ভরের নিয়ম ছিল একটি হাতি সভায় উপস্থিত যার গলায় মাল্যদান করবে, সেইই হবে রাজার জামাই। কার্তিকের বন্ধু তো সভায় বসে ছিলেন, হঠাৎ হাতিটা এসে তাঁর গলায় মালা পরিয়ে দেয়। অবাক বন্ধুটা বুঝতে পারেন ষোল সোমবারের মহিমা। তাঁর সাথে রাজার মেয়ের বিয়ে হয় এবং রাজা তাকে প্রচুর ধনসম্পত্তিও দেন। ফুলশয্যার রাতে তাঁর বউ তাকে জিজ্ঞেস করেন এত লোক, এত রাজকুমার থাকতে কেন হাতি তার গলাতে মালা দিয়েছিল! তিনি তখন বউকে ষোল সোমবার ব্রতের কথা বলেন। তাঁর বউ পুত্রলাভের আশায় ষোল সোমবারের ব্রত নিষ্ঠাভরে পালন করেন এবং একটি পুত্রসন্তান লাভ করেন। সেই পুত্র বড় হয়ে মায়ের কাছে জানতে চায় মা কিভাবে তাকে পেলেন! তিনি ষোল সোমবারের ব্রতের কথা পুত্রকে বলেন।
এভাবেই একজন থেকে অন্যজনের মুখে ছড়িয়ে ষোল সোমবারের ব্রতকথা পড়ে।
এই ব্রতকথাটি ভিডিও আকারে দেখুন এখানে
তথ্যসূত্র
- সোমবার ব্রতকথা (হিন্দি সংস্করণ), শ্রী দুর্গা পুস্তক ভাণ্ডার প্রাঃ লিঃ
- http://www.indif.com/nri/kathas/Somvar/solahsomkathaeng.asp
- https://www.speakingtree.in/blog/16-monday-fast-vidhi
It is amazing site and many useful content keep posting guys.
https://hanumanchalisamantra.in/