ব্যাসের ঔরসে এক দাসীর গর্ভে বিদূরের জন্ম হয়। কিন্তু বিদূর আসলে ছিলেন স্বয়ং ধর্মরাজ। তাহলে বিদূর দাসীপুত্র হল কিভাবে, সেটাই আলোচনা করব।
মান্ডব্য নামে এক মৌনব্রতী ঊর্ধ্ববাহু তপস্বী ছিলেন। একদিন কয়েকজন চোর রাজরক্ষীদের ভয়ে পালিয়ে এসে মান্ডব্যের আশ্রমে তাদের চুরি করা ধন লুকিয়ে রাখে। রক্ষীরা তার আশ্রমে এসে তাকে যখন প্রশ্ন করে তখন তিনি কোনও উত্তর দেন না। চোরেরা চুরির জিনিস সমেত ধরা পড়ে, কিন্তু রক্ষীরা চোরেদের সাথে মান্ডব্যকেও রাজার কাছে নিয়ে আসে। রাজার আদেশে সবাইকে শূলে চড়ানো হয়। কিন্তু মান্ডব্য তপস্যার প্রভাবে বেঁচে থাকেন। তখন রাজা আশ্চর্য হয়ে তার পরিচয় জানতে চান এবং তার পরিচয় পেয়ে তার থেকে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। কিন্তু মান্ডব্যকে শূল থেকে নামিয়ে আনা হলেও শূলের অগ্রভাগ তার পশ্চাতে আটকে থাকে। এই অবস্থাতেই তাকে ঘুরে বেড়াতে হয়। শূলখন্ড এভাবে তার পশ্চাতে আটকে থাকার জন্য তিনি অনীমান্ডব্য নামে খ্যাত হলেন। এরপর একদিন তিনি ধর্মরাজের কাছে গিয়ে ধর্মরাজকে প্রশ্ন করেন কোন পাপের জন্য এরকম শাস্তি তাকে দেওয়া হয়েছে? ধর্মরাজ বলেন মান্ডব্য ছোটবেলায় একটা পতঙ্গ ধরে তার পশ্চাতে তৃণ প্রবেশ করিয়েছিলেন, তাই এই শাস্তি। মান্ডব্য ধর্মরাজকে বলেন তাকে লঘু পাপে গুরুদন্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি তাই ধর্মরাজকে অভিশাপ দেন যে ধর্মরাজ শূদ্র হয়ে জন্মাবেন। তার অভিশাপেই ধর্মরাজ বিদূররূপে ব্যাসদেবের ঔরসে এক দাসীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।
তথ্যসূত্র
- মহাভারত সারানুবাদ - রাজশেখর বসু, দেবালয় লাইব্রেরী, তৃতীয় প্রকাশ, পৃষ্ঠা ৪২-৪৩