মহাভারত

কুন্তীর পিতা

যদুবংশীয় রাজা আর্যক শূরের আপন পিসতুতো ভাই ছিলেন ভোজবংশীয় রাজা কুন্তিভোজ। কুন্তিভোজ এবং শূর ছিলেন পরস্পরের বন্ধু। রাজা কুন্তিভোজের কোনও সন্তান ছিল না। তখন শূর তাকে প্রতিজ্ঞা করেন যে নিজের প্রথম সন্তানটিই তিনি কুন্তিভোজকে দান করবেন। শূরের প্রথম সন্তান জন্মায় একটি মেয়ে- তার নাম হল পৃথা। আসলে পৃথার পুত্র বলে  প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী রাজা তাকে তুলে দেন কুন্তিভোজের হাতে। কুন্তিভোজ পরম আহ্লাদে তার এই নতুন পাওয়া মেয়েটিকে মানুষ করতে থাকেন। কুন্তিভোজের নাম থেকেই পৃথার নাম হয় কুন্তী। সেই অর্থে কুন্তীভোজ এবং আর্যক শূর দুজনেই ছিলেন কুন্তীর  পিতা। একজন একজন জন্মদাতা পিতা আর একজন পালক পিতা।

অনেক সময় আমরা মহাভারতে দেখেছি, কৃষ্ণ অর্জুনকে পার্থ বলে ডেকেছে। কারণ আর কিছুই না, কুন্তী তো তার পালকপিতার দেওয়া নাম, জন্মের পর তো তার নাম হয় পৃথা। সেই পৃথার পুত্র অর্জুন, সেই থেকেই পার্থ। কুন্তীর জন্মদাতা পিতার আরেক সন্তান হল কৃষ্ণপিতা বসুদেব। অর্থাৎ কুন্তী হল কৃষ্ণের পিসি।

মেয়েদের জীবনটাই অন্যরকম। ছোট থেকে নিজের বাড়িতে মানুষ হয়ে তারপরে আসতে হয় তাকে শ্বশুরবাড়ি। ছোট থেকে শেখা অনেক আদবকায়দাই হয়ত শ্বশুরবাড়িতে এসে পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু কুন্তীর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ছিল আরও একটু অন্যরকম। জন্মের পরপরই নিজের বাড়ি ছেড়ে তাকে চলে আসতে হল অন্য এক বাড়িতে। তার নিজের জন্মদাতা পিতা জীবিত থাকতেও তাকে চলে আসতে হল অন্য এক বাড়িতে। সেখানে অবশ্য তার সুখের অভাব ছিল না কোনও।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

তথ্যসূত্র


  1. "মহাভারত সারানুবাদ", দেবালয় লাইব্রেরী(প্রকাশক সৌরভ দে, তৃতীয় প্রকাশ) - রাজশেখর বসু, আদিপর্ব (১৯। গান্ধারী, কুন্তী ও মাদ্রী- কর্ণ - দুর্যোধনাদির জন্ম) পৃষ্ঠাঃ ৪৩
  2. "কৃষ্ণা, কুন্তী ও কৌন্তেয়", আনন্দ পাবলিশার্স, নবম মুদ্রণ - নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, অধ্যায়ঃ কুন্তী, পৃষ্ঠাঃ ১৭-১৮
  3. "মহাভারতের অষ্টাদশী", আনন্দ পাবলিশার্স, চতুর্থ মুদ্রণ - নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, অধ্যায়ঃ কুন্তী, পৃষ্ঠাঃ ২৫৬-২৫৮

 

3 comments

আপনার মতামত জানান