রেখো মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে। সাধিতে মনের সাধু, ঘটে যদি পরমাদ, মধুহীন করোও না গো তব মনঃকোকনদে। প্রবাসে, দৈবের বশে, জীব-তারা যদি খসে এ দেহ-আকাশ হতে, নাহি খেদ তাহে। জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে, চিরস্থির কবে নীর, হায় রে, জীবন-নদে?
প্রবাসী মধু কবির ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ এ আর্তি আমাদের সবার ভীষণ পরিচিত। কর্মসূত্রে যাঁরা দেশের বাইরে কাজ করেন কিন্তু জন্মসূত্রে যারা ভারতীয় তাদের সবার যে দেশের প্রতি ভীষণ টান থাকে সে কথা হলফ করে বলা না গেলেও এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই তাঁরাও বিদেশের মাটিতে ভারতবর্ষের নাম তাদের কাজের মাধ্যমে উজ্জ্বল করে চলেছেন প্রতিনিয়ত।
স্বেচ্ছায় বা পরিস্থিতির চাপে পড়ে যাঁরা বিদেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন সেই সকল প্রবাসী ভারতবাসীর জন্য একটি বিশেষ দিনকে বেছে নেওয়া হয়েছে – সেটি প্রবাসী ভারতীয় দিবস হিসেবে পালিত হয় প্রত্যেক ৯ জানুয়ারি। ২০০৩ সাল থেকে ভারত সরকার ৯ জানুয়ারিকে প্রবাসী ভারতীয় দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, ৯ জানুয়ারিকেই প্রবাসী ভারতীয় দিবস হিসেবে বেছে নেওয়া হল কেন। তার জন্যে ফিরে যেতে হবে স্বাধীনতারও অনেক আগে। ভারতে শুরুর আগে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রথম বীজ বপন হয়েছিল গান্ধীজীর হাত ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ১৯০৭ সালে। এই সত্যাগ্রহ আন্দোলনের শেষে ৯ই জানুয়ারি, ১৯১৫ সালে গান্ধীজী ভারতে ফেরেন। গান্ধীজীর স্বদেশে প্রত্যাগমনের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০০৩ সালে ভারত সরকারের অনাবাসী ভারতীয় মন্ত্রক, কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের উদ্যোগে প্রবাসী ভারতীয় দিবস পালন শুরু হয়। প্রতি বছর ৭-৯ জানুয়ারি ভারতের কোনো একটি শহরে বড় অনুষ্ঠান হয়, অনাবাসী ভারতীয়রা আলোচনাসভায় অংশ নেন প্রবাসী ভারতীয় সম্মান দেওয়া হয়।
3 comments