রামনবমী ব্রত চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে পালন করা হয়। রাম এই দিন পৃথিবীর বুকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটিকে হিন্দুধর্মে অতি পবিত্র দিন হিসাবে মান্য করা হয়।
বিষ্ণুর সপ্তম অবতার হলেন শ্রীরামচন্দ্র। ত্রেতা যুগে অযোধ্যার রাজা দশরথ ও তার প্রথম স্ত্রী রানি কৌশল্যার গর্ভে চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে পৃথিবীতে রাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রামের জন্মদিনটিই রামনবমী নামে পরিচিত। এই সময় বসন্তের নবরাত্রি পালন করা হয়। রাম দশরথের জ্যেষ্ঠ সন্তান হওয়া সত্ত্বেও সিংহাসন ত্যগ করে স্ত্রী সীতাকে নিয়ে বনবাসী হয়েছিলেন। এবং পরে রাবণ কর্তৃক সীতা অপহরণ হওয়ায় তাকে হারানোর গভীর যন্ত্রনা অনুভব করেছিলেন। এর পিছনে একটি পৌরাণিক কাহিনী আছে। নারদ একসময় এক সুন্দরী রাজকন্যার প্রেমে পড়েছিলেন। তাকে বিবাহ করতে নারদ খুবই আগ্রহী ছিলেন। সেই রাজকন্যার স্বয়ম্বরের আয়োজন হলে নারদও সেখানে উপস্থিত হন। সেখানে যাবার আগে নারদ বিষ্ণুর কাছে আবদার করেন একদিনের জন্য তার রূপ নারদকে দান করার জন্য। পরে বিষ্ণুর আশীর্বাদ নিয়ে নারদ সেই স্বয়ম্বর সভায় হাজির হয়। কিণ্তু রাজকন্যা তার সামনে বরমালা নিয়ে উপস্থিত হলে হেসে লুটিয়ে পড়ে। তার দিকে তাকিয়ে সভায় হাজির অন্য সবাই হাসতে শুরু করে। নারদ লজ্জায় সেই স্থান ত্যাগ করে জলে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে চমকে উঠেন। কারণ নারায়ণ তাকে একটি বানরের মুখমন্ডল দান করেছিলেন। এই ঘটনায় নারদ খুবই রেগে যান এবং দুঃখ পান। পরে তিনি নারায়ণকে অভিশাপ দেন যে ভাবে তিনি তার প্রেমকে কাছে না পেয়ে কষ্ট পাচ্ছেন সেরকম তিনিও তার প্রিয়জনকে কাছে না পাবার যন্ত্রনা ভোগ করবেন। ফলত, বিষ্ণু রামরূপে এই ধরিত্রীতে জন্ম নিয়ে তার পিতামাতাকে ছেড়ে সীতাকে সঙ্গে নিয়ে বনবাসী হন। বনে আবার সীতা অপহরণ হলে দীর্ঘ সময় সীতা বিচ্ছেদের যন্ত্রনা ভোগ করেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন এই দিন নানা পুন্য কর্ম করলে পাপমুক্ত হওয়া যায়।তাই এই দিন দরিদ্র সেবা,দান,যজ্ঞ,যে যেরকম পারে ভালো কাজ করে থাকে।
তথ্যসূত্র
- মেয়েদের ব্রতকথা- লেখকঃ গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য সম্পাদিত ও রমা দেবী কর্তৃক সংশোধিত, প্রকাশকঃ নির্মল কুমার সাহা, দেব সাহিত্য কুটির, পৃষ্ঠা ১৮৪
- https://en.wikipedia.org/wiki/Rama_Navami
3 comments