মহাভারতের রাজা দুষ্মন্ত এবং শকুন্তলার সন্তান ভরতের বংশেই জন্মগ্রহণ করেন কৌরব আর পাঞ্চালদের আদিপুরুষেরা। পরবর্তীকালে যে কৌরব, পাণ্ডব বা পাঞ্চালদের এত রমরমা, তাদের বংশের শুরু কিন্তু একই জায়গা থেকে। কৌরব পাঞ্চাল সবাই এক বংশ থেকেই এসেছে। মহারাজ ভরতের বংশে জন্মগ্রহণ করেন রাজা হস্তী। তিনিও পুরুবংশের একজন বিখ্যাত রাজা ছিলেন। তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন হস্তিনাপুর, পরবর্তীকালের মহাভারতে যে নগরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । মহারাজ হস্তীর ছিল তিন ছেলে। তাঁর বড় ছেলের নাম ছিল অজমীঢ়। এই অজমীঢ়ের ছেলেদের বংশধরেরাই দুটো আলাদা বংশে ভাগ হয়ে যায়। কৌরব এবং পাঞ্চাল।
মহারাজ হস্তীর ছিল তিন বউ – নীলিনী, কেশিনী ও ধূমিনী। নীলিনীর সন্তানেরা যে বংশধারাটা চালু রাখল, সেই বংশেই একসময় জন্মগ্রহণ করল পাঁচজন দুর্দান্ত ছেলে – মুদগল, সৃঞ্জয়, বৃহদিষু, যবীনর ও কৃমিলাশ্ব। এই পাঁচ ভাই মিলেই প্রতিষ্ঠা করে তাদের রাজ্য পাঞ্চাল। সৃঞ্জয় ছিলেন পাঞ্চালের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজা। তার বংশে জন্মেছিলেন সুদাস। এই সুদাসের নাতি হলেন দ্রুপদ, যিনি দ্রৌপদীর পিতা।
অজমীঢ়ের তৃতীয় স্ত্রী ধূমিনীর গর্ভে জন্ম নিয়েছিলেন ঋক্ষ। তার ছেলে সংবরণ। তাঁর সময়ে পাঞ্চালদের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। পাঞ্চালের রাজা সুদাসের সঙ্গে যুদ্ধে হেরে তাকে হস্তিনাপুর ছাড়তে হয়েছিল। কিন্তু তিনি মনে মনে হার মানেনি। পরবর্তীকালে অনেক রাজার জোটশক্তির সাহায্যে তিনি আবার পাঞ্চালদের সাথে যুদ্ধ করে হস্তিনাপুর ফিরে পান। তার ছেলে কুরুর আমলে হস্তিনাপুরের বাড়বৃদ্ধি হয়। কুরুক্ষেত্রের নাম তো সকলেই শুনেছি আমরা। মহারাজ কুরুই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কুরুক্ষেত্র। এছাড়াও কুরুজাঙ্গল নামে অন্য একটি জায়গাও তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। তার চার ছেলের মধ্যে ছোট ছেলের বংশে জন্মায় রাজা প্রদীপ, যার ছেলে ছিলেন রাজা শান্তনু।
তথ্যসূত্র
- মহাভারতের ভারতযুদ্ধ ও কৃষ্ণ - নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী
One comment