অমরদা রোড বিমানঘাঁটি

অমরদা রোড বিমানঘাঁটি

পশ্চিমবঙ্গের বিমান বন্দর বলতেই আমাদের চোখের সামনে একটিই নাম ভেসে ওঠে দমদম বিমান বন্দর (অধুনা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বিমান বন্দর) । তবে বর্তমানে আরও বেশ কয়েকটি বিমান বন্দর তৈরী হলেও দমদম এবং শিলিগুড়িতে অবস্থিত বাগডোগরা বিমান বন্দরকেই মূলত প্রধান দুই বিমান বন্দর হিসেবে আমরা চিনে আসছি। কিন্তু যদি আপনাকে বলি মেদিনীপুর ও ওড়িশা সীমান্তে এক সময়ে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের আমলের একটি বিমান যাতায়াতের টারম্যাক ছিল বিশ্বাস করবেন?

ওড়িশা এবং মেদিনীপুর সীমান্ত লাগোয়া রাসগোবিন্দপুরে একসময় ছিল এশিয়ার দীর্ঘতম যুদ্ধবিমান টারম্যাক যা পরিচিত অমরদা রোড বিমানঘাঁটি (Amarda Road Airstrip) নামে।

ওড়িশা এবং মেদিনীপুর সীমান্ত লাগোয়া রাসগোবিন্দপুরে একসময় ছিল এশিয়ার দীর্ঘতম যুদ্ধবিমান টারম্যাক যা পরিচিত অমরদা রোড বিমানঘাঁটি নামে। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার রাসগোবিন্দপুরে অবস্থিত অমরদা রোড বিমানঘাঁটিটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তৈরী হওয়া একটি পরিত্যক্ত বিমানঘাঁটি। অনেকে মনে করেন এটি ব্রিটিশদের তৈরী একটি বিমানঘাঁটি ছিল যার ইতিহাস ব্রিটিশ সরকার গোপন রাখতে চেয়েছিল। ১৯৪৫ সালে এই বিমানঘাঁটিতে দুটি যুদ্ধ বিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় যার ফলে প্রায় চোদ্দ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে এক জন ভারতীয়ও ছিলেন। ১৯৪৫ সালের ২৬ জুলাই, দুটি ব্রিটিশ রয়্যাল ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের বি -২৪ লিবারেটর চার ইঞ্জিনযুক্ত বোমারু অনুশীলন চলাকালীন কম উচ্চতায় তারা একে অপরকে সজোরে ধাক্কা মারে। এই বিমানঘাঁটিতে সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এশিয়ার দীর্ঘতম রানওয়ে আছে যা এশিয়ার দীর্ঘতম রানওয়ে। যুদ্ধের সময় স্টেশনটি জাপানের বার্মা বিজয়ের বিরুদ্ধে ফরোয়ার্ড এয়ারফিল্ড হিসাবে মর্যাদা লাভ করেছিল। বড় স্ট্রিপ প্লেনের জন্য ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড হিসাবে এবং বিশেষ বোমা হামলার জন্য একটি প্রশিক্ষণ স্থান হিসাবে ভাল ছিল। অমরদা রোড বিমানবন্দরটি প্রায় ৯০০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। ৩৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৪০ সালে নির্মিত এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পরিত্যক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। নিকটবর্তী আমরদা রোড রেলস্টেশন হওয়ার কারণে এটির নামকরণ হয়েছিল আমড়দা রোড এয়ারফিল্ড নামেই বৃটিশদের কাছে বেশি পরিচিত ছিল।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

এগারো হাজার ফিট দীর্ঘ কংক্রিট রানওয়ে এখনও অক্ষত রয়েছে, যদিও ভবনগুলি আর অবশিষ্ট নেই। বর্তমানে এখানে স্থানীয় মহিলারা জামা কাপড় শুকোতে দেন। কৃষকরা টার্মাকের উপর শস্য শুকনো করেন এবং গরু ছাগল চরান।

আপনার মতামত জানান