ভারতীয় বিচারালয়ের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে এমন কিছু মামলার হদিশ পাওয়া যাবে যেগুলির সুনিশ্চিত কুলকিনারা হয়নি এখনও। সেই তালিকার অন্তর্ভুক্ত একটি মামলা হল আরুষি তলোয়ার হত্যা মামলা । চোদ্দ বছরের এক কিশোরীর রহস্যজনক হত্যাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়। প্রাথমিকভাবে তলোয়ার পরিবারের নিখোঁজ গৃহকর্মী হেমরাজের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠলেও দুদিন পরে বাড়ির অন্যত্র সেই হেমরাজেরও মৃতদেহ পাওয়া যায়। ফলত রহস্য আরও জটিল হয়ে ওঠে। শেষপর্যন্ত পুলিশের হাত থেকে তদন্ত গিয়েছিল সিবিআইয়ের আওতায়৷ আরুষির বাবা-মা নুপুর এবং রাজেশ তলোয়ারকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল শেষমেশ। এটিকে পুলিশ ‘অনার কিলিং’ (honour killing)-এর পর্যায়ভুক্ত করারও প্রয়াস করেছিল। এলাহাবাদ হাইকোর্ট আবার তথ্যের অপ্রতুলতার কারণে রাজেশ এবং নুপুরকে খালাস করে দেয়। আরুষি তলোয়ার হত্যা মামলাটি এক হাত থেকে আরেক হাতে স্থানান্তরিত হয়েছিল একাধিকবার। কিন্তু আদপে এটি অমীমাংসিত রূপেই থেকে গিয়েছিল।
২০০৮ সালের ১৬ মে উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় তলোয়ার পরিবারের বাসভবনে চৌদ্দ বছরের আরুষি তলোয়ারকে বন্ধ ঘর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। গলা কেটে তাঁকে হত্যা করেছিল খুনি। ধরে নেওয়া হয়, হত্যাকান্ডটি ১৫ মে সম্পন্ন হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে তলোয়ার পরিবারের পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সী গৃহকর্মী হেমরাজ বানজাদেকে কোথাও খুঁজে না পাওয়া গেলে সন্দেহের তীর তার দিকেই ঘোরে। কিন্তু আরুষির মৃতদেহ উদ্ধারের দুদিন পর বাড়ির ছাদ থেকে যখন হেমরাজের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় তখন রহস্য অন্য দিকে বাঁক নেয়।
এখন হত্যাকান্ড যেদিন ঘটেছিল, সেই দিনটির দিকে নজর দেওয়া যাক। প্রথমেই বলে নেওয়া দরকার যে আরুষির বাবা-মা রাজেশ এবং নুপুর তলোয়ার দুজনেই ছিলেন নয়ডার নামকরা ডেন্টিস্ট। এছাড়াও রাজেশ গ্রেটার নয়ডার আইটিএস ডেন্টাল কলেজে পড়াতেনও। ১৫ মে নুপুর তলোয়ার সকালবেলা ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করে দুপুর দেড়টা নাগাদ আরুষিকে স্কুল থেকে নিয়ে বাড়ি পৌঁছন। এরপর বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ফোর্টিস হাসপাতালে কাজ করেন নূপুর। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে আসেন। অন্যদিকে আরুষির বাবা রাজেশ এবং তাঁর ড্রাইভার উমেশ শর্মা ফিরে আসেন রাত সাড়ে নটা নাগাদ। তারপর গাড়ি পার্ক করে ড্রাইভার উমেশ রাজেশ তলোয়ারের গাড়ির চাবি এবং ব্যাগ দিয়ে যান হেমরাজের হাতে। এই উমেশ শর্মাই একমাত্র বাইরের লোক যিনি শেষবার আরুষি তলোয়ার এবং হেমরাজকে জীবিত অবস্থায় দেখেছিলেন। রাজেশ এবং নুপুরের বয়ান অনুযায়ী সেদিন রাতের খাবারের পর তাঁরা দুজন আরুষির ঘরে গিয়েছিলেন তাঁর জন্মদিনের সারপ্রাইজ স্বরূপ একটি ক্যামেরা উপহার দিতে। আরুষি সেই ক্যামেরায় নিজের এবং বাবা-মায়ের বেশ কয়েকটি ছবি তোলে এবং কিছুক্ষণ পরে রাজেশ এবং নুপুর চলে যান নিজের ঘরে।
উক্ত দুজনের বয়ান থেকে জানা যাচ্ছে, রাত এগারোটার দিকে রাজেশ নুপুরকে বলেছিলেন আরুষির ঘরে থাকা ইন্টারনেট রাউটারটি অন করে আসতে৷ নুপুর সেটি অন করতে এসে দেখেন আরুষি চেতন ভগতের ‘দ্য থ্রী মিসটেকস অব মাই লাইফ’ পড়ছে। রাত বারোটা বা তার কিছু পরে আরুষির এক বন্ধু আনমোল আরুষিকে তাঁর মোবাইলে এবং তলোয়ার ভবনের ল্যান্ড লাইনে ফোন করে কিন্তু কলগুলি রিসিভ করা হয়নি। এদিকে জানা যায় ইন্টারনেট রাউটার ব্যবহার করা হয়েছিল বারোটা বেজে আট মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ রাজেশ ততক্ষণই অনলাইনে সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু মধ্যরাত থেকে সকাল ৬টার মধ্যে ঘটনার সঠিক ক্রমটি তদন্তকারীরা নিশ্চিতভাবে নির্ধারণ করতে পারেনি। তাদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, আরুষি ও হেমরাজকে রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে হত্যা করা হয়।
পরদিন সকালে ছটা নাগাদ নতুন নিযুক্ত পরিচারিকা ভারতী মন্ডল কাজে এসে ডোরবেল বাজান। সাধারণত হেমরাজ রোজ দরজা খুলে দিত, কিন্তু সেদিন তা ঘটল না। বেশ কয়েকবার বেল বাজাবার পর নুপুর ভিতরের কাঠের দরজা খুলে দেন এবং মাঝের গ্রিলের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখেন। নুপুর ভারতীকে বলেন হেমরাজ নিশ্চয়ই বাইরে দুধ আনতে গেছে। এরমধ্যে রাজেশ জেগে উঠে ড্রয়িং রুমে স্কচ হুইস্কির বোতল দেখতে পান ফলে সন্দেহ হয় তাঁর। তিনি শঙ্কিত হয়ে আরুষির ঘর পরীক্ষা করতে বলেন নুপুরকে। ঘরে ঢুকে আরুষির মৃতদেহ আবিষ্কার করেন তাঁরা। এরপর পুলিশ মিডিয়ায় ছয়লাপ হয়ে খবর ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। পুলিশ নিখোঁজ হেমরাজকেই দোষী সাব্যস্ত করে। পুলিশ সন্দেহ করেছিল যে হেমরাজ স্কচ হুইস্কি খাওয়ার পরে মদ্যপ অবস্থায় আরুষি তলোয়ার -এর ঘরে প্রবেশ করেছিল এবং তাকে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করেছিল। আরুষি বাধা দিলে হেমরাজ তাকে কুকরি (একটি নেপালি ছুরি) দিয়ে হত্যা করে।
১৬ মে সকালে তলোয়ারের বাড়িতে দর্শনার্থীরা ছাদের দরজার হাতলে কিছু রক্তের দাগ লক্ষ্য করেন। রাজেশের প্রাক্তন সহকর্মী রাজীব কুমার ভার্শনি এবং রোহিত কোচার পরে পুলিশকে বলেছিলেন যে তারা ছাদের দরজা, তালা এবং ছাদে যাওয়ার সিঁড়িতে রক্তের দাগ দেখেছেন। রোহিত কোচার পরে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে একজন পুলিশ রাজেশের কাছে ছাদের চাবি চাইলে রাজেশ চাবি আনতে বাড়ির ভিতরে গিয়েছিল এবং অনেকক্ষণ পর্যন্ত বাইরে আসেননি। রাজেশ চাবি খুঁজে পাচ্ছেন না এবং দরজা ভাঙার জন্য লোকও পাওয়া যাচ্ছে না, এমনই কিছু কথা ১৬ মে এসপি মহেশ মিশ্রকে পুলিশের অধস্তন কর্মচারীরা জানিয়েছিল। এই পুলিশি অব্যবস্থায় বিরক্ত হয়ে মিশ্র নয়ডার সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশের কাছে এক রিপোর্ট দায়ের করেন।
পরদিন অর্থাৎ ১৭ মে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কে কে গৌতম আসেন তলোয়ারদের বাড়ি এবং আরুষি ও হেমরাজের ঘর পরীক্ষা করেন, রক্তের দাগও দেখেন। গৌতমবাবু তখন মহেশ মিশ্রকে তালা ভাঙার কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত সকাল সাড়ে দশটায় স্টেশন অফিসার দাতারাম নৌনেরিয়া তালা ভেঙে ছাদে ঢুকলে এক রক্তাক্ত মৃতদেহ আবিষ্কৃত হয়। পরে হেমরাজের এক বন্ধু লাশটি শনাক্ত করেন। হেমরাজের মৃতদেহ আবিষ্কারের ফলে আরুষিকে হেমরাজের যৌন নির্যাতনের প্রসঙ্গটি প্রাসঙ্গিকতা হারায়।
পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট অনুযায়ী আরুষি ও হেমরাজ দুজনেই রাত বারোটা থেকে একটার মধ্যে মারা যান। প্রথমে ভারী ও ভোঁতা কোনো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কাটা হয়েছিল বলে রিপোর্ট জানিয়েছে।
তদন্তে গাফিলতির জন্য তদন্তকারী অফিসার দাতারাম নৌনেরিয়াকে ১৭ মে এবং পরদিন মহেশ মিশ্রকেও বদলি করা হয়। ১৯ মে পুলিশ সন্দেহের তালিকায় তলোয়ার পরিবারের প্রাক্তন গৃহকর্মী বিষ্ণু শর্মার নাম অন্তর্ভুক্ত করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করে হয়তো বিষ্ণুর জায়গায় হেমরাজকে নেওয়ার কারণে আক্রোশ থেকেই বিষ্ণু হেমরাজকে হত্যা করে এবং হত্যার সাক্ষী হিসেবে আরুষিকেও হত্যা করতে হয় তাঁকে।
২১ মে ইউপি পুলিশের সঙ্গে দিল্লি পুলিশও যোগ দিয়েছিল। কয়েকটি কারণে পুলিশ আরুষির বাবা-মাকে সন্দেহ করতে থাকে। রাজেশ এবং নুপুর জানান, হত্যার সময় তাঁরা কোনো শব্দ শুনতে পাননি, অথচ আরুষির বিছানা থেকে তাঁর বাবা-মায়ের ঘরের দূরত্ব বড়জোর সাত-আট ফুট। এছাড়াও আরুষির ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশের কোনো চিহ্ন নেই এবং আরুষির ঘরের চাবি থাকত নুপুরের বিছানায়৷ এমনকি রাজেশ ছাদের চাবিও খুঁজে পায়নি, আবার হেমরাজের মৃতদেহ কুলার প্যানেল দিয়ে ঢেকে রাখা, লোহার গ্রিল সাদা চাদরে মুড়ে রাখা এসব চেষ্টা থেকে সন্দেহ হয় তলোয়াররা আরুষির হত্যার জন্য হেমরাজকে দায়ী করার প্রয়াস করেছিলেন। এছাড়াও ১৬মে আরুষির মৃতদেহ সৎকারের কাজ যেন কিছুটা অস্বাভাবিক তাড়াহুড়োয় করে তাঁর পরিবার। এছাড়াও কে কে গৌতম পরে জানান রাজেশের ভাই দীনেশ গৌতমবাবুকে পোস্টমর্টেমে যৌন নির্যাতনের কথা লিখতে অনুরোধ করেছিল।
ইনস্পেকটর-জেনারেল গুরুদর্শন সিং জানান হয়তো হেমরাজ রাজেশের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বিষয়ে কিছু জানত এবং আরুষি তাতে বিরক্ত ছিল ও হেমরাজের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিল। নিজের মেয়েকে গৃহকর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে তাঁদেরকে রাজেশ হত্যা করে, এমনই একটি তত্ত্ব দেন গুরুদর্শন সিং। ২৩ মে রাজেশ এবং নুপুরকে পুলিশ নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য৷ রাজেশকে সেদিন গ্রেপ্তার করে স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
যদিও রাজেশ তলোয়ার দাবি করে পুলিশ নিজের অপারগতা ঢাকবার জন্য তাঁদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। তাই আরুষির বাবা-মায়ের অনুরোধে ৩১ মে মামলাটি সিবিআই-এর হাতে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপর নিজের পক্ষে অনেকগুলি যুক্তি সাজান রাজেশ এবং নুপুর। খুনের দিন রাতে এসি চলায় রাজেশ-নুপুরের গভীর ঘুম, আরুষির গলায় আঘাতের ফলে চিৎকারের সম্ভাবনা কমে যাওয়া, ছাদেই হেমরাজকে হত্যা – হত্যার পর ছাদে নিয়ে যাওয়া নয়, আরুষির ঘরের দরজায় চাবি ঝুলিয়ে রেখে যাওয়ায় আততায়ীর রুমে ঢুকতে সুবিধা ইত্যাদি বিষয়গুলির উত্থাপন করে রাজেশ এবং নুপুর নিজেদের বাঁচাতে চেয়েছিল। এছাড়াও দীনেশ কে কে গৌতমকে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে মিথ্যে কথা লেখার অনুরোধও অস্বীকার করে। এছাড়াও সন্দেহের তালিকায় ঢুকে যান তলোয়ারদের ডেন্টাল ক্লিনিকের সহকারী কৃষ্ণা থাদারাই, রাজকুমার এবং বিজয় মন্ডলও। তাদের গ্রেপ্তারও করা হয়।
২০০৯ সালে সেপ্টেম্বরে সিবিআইতে অরুণকুমারের মেয়াদ শেষ হলে সে বছর সেপ্টেম্বরে এই কেসটি এসপি নীলাভ কিশোরের নেতৃত্বে একটি নতুন সিবিআই দলের কাছে যায়। ২০১০ সালে ‘দ্য পাইওনিয়ার’ সংবাদপত্র ‘অনার কিলিং’ (honour killing) বলে উল্লেখ করে আরুষির হত্যাটিকে। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর সিবিআই একটি ক্লোজার রিপোর্টে রাজেশ ও নুপুর তলোয়ারকেই মূল সন্দেহভাজন হিসেবে দেখতে শুরু করে। থাদারাই, রাজকুমার এবং বিজয়কে ক্লিনচিট দেওয়া হয়। ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গাজিয়াবাদের বিশেষ সিবিআই আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট প্রীতি সিং সিবিআই ক্লোজার রিপোর্টকে চার্জশিটে রূপান্তরিত করে রাজেশ ও নুপুরকে অভিযুক্ত করে। তাঁরা দুজন তাঁদের বিচারের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানালেও তা খারিজ হয়ে যায়। ২০১৩ সালের ১১ মে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। সিবিআই ক্রমাগত রাজেশ এবং নুপুরের নানা কার্যকলাপের প্রসঙ্গ টেনে তাঁদের অভিযুক্ত করতে থাকে৷ ২৫ নভেম্বর আদালত রাজেশ ও নুপুরকে দুটি খুনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে এবং পরদিন ২৬ নভেম্বর তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দন্ডিত করে। ২০১৪ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন রাজেশরা। এর ফলস্বরূপ ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর এলাহাবাদ হাইকোর্ট রাজেশ ও নুপুরের ওপর ন্যস্ত সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তিসঙ্গত প্রমাণের অভাবে এবং তাঁদের খালাস দিয়ে দেয়। আদালত জানায় হত্যাকান্ডের কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না, সবটাই অনুমাননির্ভর। সিবিআইয়ের অনুমান ছিল হেমরাজ ও আরুষির ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত দেখে ফেলে রাজেশ তাঁদের হত্যা করে। এই অনুমানকে আদালত অসম্ভব অনুমান এবং স্পষ্টভাবে অযৌক্তিক ঘোষণা করে রাজেশ ও নুপুরকে মুক্তি দেয়। সিবিআই ২০১৮ সালের ৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে পুনরায় আপিল করে এই খালাসের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ১০ আগস্ট সিবিআইয়ের আপিল স্বীকার করে। হেমরাজের স্ত্রী খুমকুলাও আপিল করে ন্যায়বিচারের জন্য। কিন্তু এই মামলার যথাযথ মীমাংসা হয়নি আজও৷
এই মামলাটি জনসাধারণের মধ্যে এতটাই আলোড়ন তৈরি করেছিল, এতখানি রহস্য পরতে পরতে লুকিয়ে ছিল এই মামলাটির সঙ্গে যে, এটিকে কেন্দ্র করে ‘তলোয়ার’-এর মতো বিখ্যাত সিনেমা যেমন হয়েছে তেমনি হয়েছে টেলিফিল্ম, লেখা হয়েছে ‘আরুষি’ নামের বইও। এই বিষয় নিয়ে তামিল ভাষাতেও হয়েছে সিনেমা, আবার হয়েছিল ক্রাইম ডকুমেন্টারিও।
ভারতীয় বিচারের ইতিহাসে এই আরুষি তলোয়ার হত্যা মামলা সেকারণেই একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে রয়েছে।