পাণ্ডুর বিয়ে হয়েছিল দুইজনের সাথে। একজন হলেন ভোজবংশীয় রাজা কুন্তিভোজের কন্যা কুন্তী এবং অন্যজন মদ্রদেশের রাজকুমারী মাদ্রী। জেনে নেওয়া যাক তার বিয়ের কাহিনী।
কুন্তীর রূপগুণের প্রশংসা তখন চারদিকে। সেই কুন্তীর স্বয়ম্ভরে দেশ-বিদেশ থেকে রাজারা এলেন কুন্তীকে স্ত্রীরূপে পাবার আশায়। সেখবর পৌঁছল হস্তিনাপুরেও। রাজা পাণ্ডুও তাঁকে পাবার আশায় এলেন সেই সভায়। এবং স্বয়ম্ভরসভায় উপস্থিত সব রাজাকে ছেড়ে কুন্তীর চোখ গেল পাণ্ডুর দিকে। পাণ্ডুর চোখ তো এসে থেকেই কুন্তীর দিকেই আছে। একপা একপা করে এগিয়ে এলেন কুন্তী, এগিয়ে এলেন পাণ্ডুর দিকে। সখীদের সাথে সলজ্জে পান্ডুর কাছে এসে তার গলায় বরমাল্য প্রদান করলেন। দুজনের বিয়ে হয়ে গেল। কুন্তীকে সঙ্গে নিয়ে পাণ্ডু ফিরলেন হস্তিনাপুরে।
এই ধরণের তথ্য লিখে আয় করতে চাইলে…
আপনার নিজের একটি তথ্যমূলক লেখা আপনার নাম ও যোগাযোগ নম্বরসহ আমাদের ইমেল করুন contact@sobbanglay.com এ
কিন্তু কুন্তীর সাথে পান্ডুর বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই মহামতি ভীষ্ম পান্ডুর আরও একটি বিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। ভীষ্মের কাছে খবর এল মদ্রদেশের মেয়ে মাদ্রী নাকি অশেষ সুন্দরী। ভীষ্ম মদ্রদেশে সরাসরি এসেই সেদেশের রাজা বাহ্লীকবংশীয় শল্যের কাছে তার বোন মাদ্রীকে পান্ডুর জন্য প্রার্থনা করলেন। তবে মদ্রদেশে বিয়ের জন্য একটা নিয়ম ছিল। কিন্তু শল্য সেটা বলতে একটু সঙ্কুচিত হচ্ছিলেন। তবু আমতা আমতা করে তিনি ভীষ্মকে বললেন,”আমাদের বংশে বিয়ের জন্য একটা নিয়ম আছে। নিয়মটা ঠিক করে দিয়েছে আমাদের পূর্বপুরুষেরাই।”
“হ্যাঁ তো বলুন না”, ভীষ্ম বললেন, “কুলের নিয়ম তো মানতেই হবে। নিয়ম যাই হোক না কেন!”
শল্য বললেন তাঁদের বংশে বিয়ের নিয়ম হল কন্যা বিয়ে দিলে পাত্রপক্ষকে থেকে প্রচুর ধনসম্পত্তি দিতে হবে। সেই অনুযায়ী রাজা শল্য ভীষ্মের থেকে প্রচুর সোনাদানা, হাতিঘোড়া প্রভৃতি ধন পণস্বরূপ গ্রহন করে তার বোন মাদ্রীকে তুলে দিলেন ভীষ্মের হাতে। ভীষ্ম মাদ্রীকে হস্তিনাপুরে নিয়ে এসে পান্ডুর সাথে তার বিয়ে দিলেন।
তথ্যসূত্র
- "মহাভারত সারানুবাদ", দেবালয় লাইব্রেরী(প্রকাশক সৌরভ দে, তৃতীয় প্রকাশ) - রাজশেখর বসু, আদিপর্ব (১৯। গান্ধারী, কুন্তী ও মাদ্রী- কর্ণ - দুর্যোধনাদির জন্ম) পৃষ্ঠাঃ ৪৩-৪৪
- "কৃষ্ণা, কুন্তী ও কৌন্তেয়", আনন্দ পাবলিশার্স, নবম মুদ্রণ - নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, অধ্যায়ঃ কুন্তী, পৃষ্ঠাঃ ৩০-৩২
- "মহাভারতের অষ্টাদশী", আনন্দ পাবলিশার্স, চতুর্থ মুদ্রণ - নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, অধ্যায়ঃ মাদ্রী, পৃষ্ঠাঃ ৩৫১-৩৫৩

Pingback: উপপাণ্ডব ।। দ্রৌপদীর পাঁচ সন্তান | সববাংলায়
Pingback: অভিশপ্ত পাণ্ডু | সববাংলায়