সববাংলায়

অমিতাভ চৌধুরী

অমিতাভ চৌধুরী (Amitabha Chowdhury) একজন বিখ্যাত সাংবাদিক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি একজন প্রখ্যাত রবীন্দ্রগবেষক হিসেবে পরিচিত। তাঁর গবেষণার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথকে এক নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরেছিলেন তিনি।

১৯২৮ সালের ১৬ জুলাই অধুনা বাংলাদেশের শ্রীহট্টে অমিতাভ চৌধুরীর জন্ম হয়। শ্রীহট্টে জন্ম হলেও তাঁর বেড়ে ওঠা অসমের কাছাড়ের এক চা বাগানে। তাঁর স্ত্রীয়ের নাম সুনন্দা চৌধুরী।

অমিতাভ চৌধুরীর পড়াশোনা পড়াশোনা কলকাতা ও শান্তিনিকেতনে। পরবর্তীকালে তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেছেন। সাংবাদিকতা পেশায় তাঁর আগমন পঞ্চাশের দশকে। সাংবাদিক হিসেবে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেছিলেন তিনি। সাংবাদিক জীবনের প্রথম দিকে তিনি যোগ দিয়েছিলেন আনন্দবাজার পত্রিকায় এবং পরবর্তীকালে এই পত্রিকার বার্তা সম্পাদকও হয়েছিলেন। আনন্দবাজার ছাড়াও পরবর্তী সময়ে যুগান্তর ও আজকাল পত্রিকাতে সাংবাদিকতা করেছেন। ভারত ভাগের পর শরণার্থী সমস্যা নিয়ে তিনি মানবিক ভঙ্গিমায় সংবাদ পরিবেশন করতেন। সংসদীয় সাংবাদিক হিসেবে ১৯৫৬ সালে তিনি ‘নেপথ্য দর্শন’ নামে একটি সাপ্তাহিকী প্রকাশ করেন যেখানে প্রায় দুই শতাধিক দুর্নীতি সম্পর্কিত কেস নিয়ে তিনি লেখালিখি করেন যার ফলস্বরূপ প্রায় পঞ্চাশজন উচ্চপদস্থ দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি আধিকারিকের চাকরি খোয়া যায়। সাংবাদিকতার পেশার সূত্রে ইন্দিরা গাঁধী, মুজিবর রহমান, সুচিত্রা সেনের সাথেও তাঁর যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও প্রকাশকদের সংস্থা আন্তর্জাতিক প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

সাংবাদিকতার বাইরে অমিতাভ চৌধুরী একজন প্রখ্যাত সাহিত্যিক বটে। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছেন তিনি। প্রায় চল্লিশটি বই লিখেছেন অমিতাভ চৌধুরী। পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন অনবদ্য ছড়াকার। তিনি চাণক্য ও দৌবারিক ছদ্মনামে লিখতেন। তার উল্লেখ যোগ্য গ্রন্থ হল- ‘কবি ও সন্ন্যাসী’, ‘চর্বিত চর্বণ’, ‘জলছবি’, ‘রবীন্দ্র পঞ্চমী’, ‘স্বর্গের কাছাকাছি’, ‘রবীন্দ্রনাথের পরলোক চর্চা’, ‘জমিদার রবীন্দ্রনাথ’, ইত্যাদি।

আরও পড়ুন:  বেল্লারি শামান্না কেশবন

১৯৬১ সালে সাংবাদিকতায় রামন ম্যাগসেসে পুরস্কারে ভূষিত হন অমিতাভ চৌধুরী। ১৯৮৩ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী পান তিনি। ২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করে। শিলচর বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডিলিট উপাধি দিয়ে সম্মানিত করে।

২০১৫ সালের ১ মে বার্ধক্যজনিত রোগে তাঁর মৃত্যু হয়।

error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন।

Discover more from সববাংলায়

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

চৈতন্যদেবের অসামান্য জীবনী দেখুন

চৈতন্য জীবনী

ভিডিওটি দেখতে ছবিতে ক্লিক করুন