সববাংলায়

১২ মে | আন্তর্জাতিক নার্স দিবস

প্রতিবছর প্রতিমাসের নির্দিষ্ট কিছুদিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়ে থাকে। এই নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়ে থাকে। বিশ্বে পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলির মধ্যে একটি আন্তর্জাতিক নার্স দিবস ।

আন্তর্জাতিক নার্স দিবস প্রতি বছর ১২ মে আধুনিক নার্সিংয়ের জন্মদাত্রী ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের জন্ম দিন উপলক্ষে চিকিৎসাক্ষেত্রে নার্সদের অক্লান্ত অবদানের কথা মাথায় রেখে সারা বিশ্বব্যাপী  উদযাপন করা হয়।

আন্তর্জাতিক নার্স দিবসের ইতিহাস দেখলে আমরা দেখতে পাই – ১৯৫৩ সালে আমেরিকার স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক তৎকালীন আমেরিকান রাষ্ট্রপতি আইজেনহাওয়ারের কাছে নার্সদের জন্য একটি নির্ধারিত দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি তখন রাজি হননি।

এরও ২১বছর পরে, ১৯৭৪ এর ১২ই মে থেকে নার্সদের আন্তর্জাতিক কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে প্রতি বছর ১২ই মে ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের জন্মদিনের দিন নার্সদিবস পালন করা হয়।

সাধারণ মানুষের কাছে নার্স পেশাটি সম্পর্কে একটি প্রচলিত ধারণা এই যে নার্স হল ডাক্তারের আজ্ঞাবাহী একজন কর্মী যার কাজ কেবল ডাক্তারের আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে রুগীর সেবা করা। এই সেবার মধ্যে বেডপ‍্যান দেওয়া থেকে ইনজেকশন দেওয়া সবই পড়ে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর বাইরেও একজন নার্সকে কি অতিমানবিক ধৈর্য্যের সাথে হাসি মুখে রুগীর সেবা করতে হয় সে সম্পর্কে আমরা কোন খবরই রাখি না। আরো ভালভাবে বলতে গেলে প্রয়োজনই বোধ করি না রাখার। এই একবিংশ শতাব্দীতেও, এই ডিজিটাল যুগেও একজন নার্স সম্পর্কে আমাদের ধারণার কোন পরিবর্তন ঘটেনি। আমাদের এই দেশে এমন হাসপাতালও আছে যেখানে ডাক্তার আর রুগীর আত্মীয়দের জন্য আলাদা আলাদা ক্যান্টিন আছে, কেবল নার্সদেরই নেই। নার্সদের প্রতি এই অবজ্ঞার ধারণা প্রকট বেশি হয় যখন যেকোন হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের ওয়েব সাইটে কেবল ডাক্তারের নামই থাকে। সেখানকার চিফ নার্স বা মেট্রন এর নাম লেখার প্রয়োজনীয়তাই কখনো খেয়াল হয় না।

আরও পড়ুন:  ১৮ মে | আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস

তবে সুখের কথা এই যে, ধীরে হলেও ক্রমাগত ভাবে নার্সদের সম্পর্কে এই অবজ্ঞা সূচক ধারণা পাল্টাচ্ছে। নার্স বলতে যে কেবল নারীই না, পুরুষদের প্রবেশ এই পেশাতে তারই ইঙ্গিতবাহী। নার্সিং একটি অত্যন্ত কঠোর প্রশিক্ষনযুক্ত পেশা, যেখানে অসুস্থ আহত কে সর্বাধিক বৈজ্ঞানিক ও আন্তরিক পদ্ধতিতে পেশাদারিত্বের সঙ্গে শুশ্রূষা করা হয় সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ না করা অবধি।একজন রুগী বা আহতের কাছে একজন নার্স মায়ের থেকেও বেশি ভূমিকা পালন করে। দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে একজন সেনা যে ভূমিকা পালন করে, একজন নার্স তার থেকে কোন অংশে কম গুরুত্বপূর্ন কাজ করে না। প্রকৃতপক্ষে নার্সদের অনুচ্চারিত নিবেদিতপ্রাণ মানসিকতা ছাড়া কোন নার্সিংহোম আর কোন হাসপাতালই সুনাম অর্জন করতে পারে না।

প্রত্যেক বছর একটি বিশেষ প্রতিপাদ্য বেছে নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালনের জন্য, যেমন:
২০১৮ – নার্সরা নেতৃত্বের কন্ঠস্বর – স্বাস্থ্য একটি মানবাধিকার (Nurses: A voice to lead – Health is a Human Right)। ২০১৯ – নার্সরা নেতৃত্বের কন্ঠস্বর – সকলের জন্য স্বাস্থ্য (Nurses: A voice to lead – Health for All)। ২০২০ – নার্সরা নেতৃত্বের কন্ঠস্বর – স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে বিশ্ব সেবা (Nurses: A voice to lead – Nursing the World to Health)। ২০২১ – নার্সরা নেতৃত্বের কন্ঠস্বর – ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যসেবার পরিচায়ক (Nurses: A voice to lead – A vision for future healthcare)। ২০২২ – নার্সরা নেতৃত্বের কন্ঠস্বর – নার্সিং এ বিনিয়োগ করুন এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করার অধিকারকে সম্মান করুন (Nurses: A voice to lead – Invest in Nursing and respect rights to secure global health)। ২০২৩ – আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদের নার্স( Our Nurses. Our Future. Our Nurses)। ২০২৪ – আমাদের নার্সরা আমাদের ভবিষ্যত এবং আমাদের স্বাস্থ্যের যত্নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক শক্তিও তারাই (Our Nurses Our Future, The Economic Power of Care)।

আরও পড়ুন:  ১১ মে | জাতীয় প্রযুক্তি দিবস

 

error: লেখা নয়, লিঙ্কটি কপি করে শেয়ার করুন।

Discover more from সববাংলায়

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading

চৈতন্যদেবের অসামান্য জীবনী দেখুন

চৈতন্য জীবনী

ভিডিওটি দেখতে ছবিতে ক্লিক করুন