আইনস্টাইনের তাঁর মেয়েকে লেখা একটি অনবদ্য চিঠি

আইনস্টাইনের তাঁর মেয়েকে লেখা একটি অনবদ্য চিঠি

“আমি যখন আপেক্ষিকতার সূত্র আবিষ্কার করেছিলাম এই পৃথিবীতে খুব কম ব্যক্তিই ছিলেন যিনি আমার বক্তব্য বুঝতে পেরেছিলেন এবং আজ এই চিঠির মাধ্যমে মানবজাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যে বক্তব্য প্রকাশ করতে চলেছি আমি নিশ্চিত এটিও পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে থাকা কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণার বিপক্ষেই যাবে।

যতদিন পারো এই চিঠিটি তোমার কাছে লুকিয়ে রেখো, সেটা কয়েক বছর হতে পারে, কয়েক দশকও হতে পারে। যতদিন না আমাদের এই সমাজ যথেষ্ট পরিণত হচ্ছে আমার বলা কথাগুলো মেনে নেওয়ার মত ততদিন এই চিঠি তুমি তোমার কাছেই লুকিয়ে রেখো।

এই বিশ্বে এমন একটি প্রবল শক্তিশালী বল আছে যার কোন নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা বা সংজ্ঞা বিজ্ঞান এখনো দিয়ে উঠতে পারেনি। এটি এমন একটি বল যা সবকিছুর মধ্যে উপস্থিত এবং বলতে গেলে এই বলের প্রভাবেই এই পৃথিবীর সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। এই মহাবিশ্বে ঘটে চলা অগণিত ঘটনার পেছনেও এই বলই নীরবে কাজ করে চলেছে অথচ কি অদ্ভুত আমরা মানুষরা এটা বুঝতেও পারিনা, ধরতেও পারিনা।

এই বিশ্বজনীন শক্তির নাম – ভালবাসা।

বিজ্ঞানীরা যখন এই বিশ্বের একটি সামগ্রিক মতবাদ খুঁজতে বসেন তাঁরা ভুলে যান এই অদৃশ্য সর্বশক্তিমান বলের কথা।

ভালবাসা হল আলোর মত, যে ভালবাসে এবং যে সেই ভালবাসা পায় উভয়ই মনের গহীনে আলোকিত হয়ে ওঠে এক অব্যক্ত অনুভূতিতে।

ভালবাসা আসলে মাধ্যাকর্ষণ কারণ এই বলের প্রভাবেই আমরা একে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট হই।

ভালবাসা আসলে এক অদৃশ্য ক্ষমতা যে আমাদের মধ্যে থাকা যৎসামান্যকে প্রাচুর্যে পরিণত করে। ভালবাসা মানবজাতিকে শেখায় স্বার্থপরতার নিকষ আঁধারে বিলীন না হয়ে যেতে। ভালবাসা আসলে আমাদের উন্মুক্ত উন্মীলিত হতে শেখায়।

এই ভালবাসার জন্যেই আমরা বাঁচি এবং মরি।

ভালবাসা হল ঈশ্বর তাই ঈশ্বরের অপর নাম ভালবাসা।

এই একটি শক্তিই এই জগতের সব কিছুকে ব্যাখ্যা করে, জীবন নামের এক বিস্ময়কে অর্থবহ করে তোলে। এটা এমন এক পরিবর্তনশীল শক্তি যাকে আমরা শুরু থেকেই বড্ড উপেক্ষা করেছি বোধহয় এই কারণে যে এই বিশ্বের এটাই একমাত্র বল যাকে মানুষ তার ইচ্ছে মত প্রয়োগ কিংবা রুদ্ধ করতে পারে না।

ভালবাসা আসলে কি সেটা এখন আমি আমার একটি বিখ্যাত সূত্র দ্বারা বোঝাচ্ছি,

যদি আমরা ধরে নিই E =Mc2 সূত্রটিকে দেখি এই পৃথিবীকে সুস্থ করার জন্য যে শক্তির প্রয়োজন তা ভালবাসা থেকে পাওয়া যাবে তখনই যখন ভালবাসাকে আলোর গতিবেগের গুণফল হিসেবে ধরা হবে। এই নীতিতে আমরা দেখলাম ভালবাসাই হল এই বিশ্বের সর্বাধিক শক্তিশালী বল কারণ এর কোন সীমা নেই।

বিশ্বের অন্য শক্তিগুলিকে যখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ও তার যথোপযুক্ত ব্যবহারে আমরা মানুষরা ব্যর্থ হয়েছি তখন এটি আমাদের আশু কর্তব্য যে এমন একটি শক্তির সন্ধান করা যা আমাদের বাঁচতে সাহায্য করবে।

যদি আমরা মানুষরা আমাদের প্রজাতিকে বাঁচাতে চাই এবং বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পেতে চাই, যদি আমরা এই পৃথিবীটাকে এবং এই পৃথিবীর মধ্যে বসবাসরত সমস্ত অনুভূতিশীল প্রাণকে রক্ষা করতে চাই তাহলে ভালবাসাই হবে এর এক এবং একমাত্র উত্তর।

আমরা অনেক উন্নত হলেও এখনও এমন কোন বোমা বানাতে পারিনি যার মূল উপাদান হবে ভালবাসা। এমন একটা প্রচন্ড শক্তিশালী বোমা যা দিয়ে এই পৃথিবীকে প্রতিনিয়ত শেষ করে দেওয়া স্বার্থপরতা, ঘৃণা এবং লোভকে সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করে ফেলতে পারি।

তবুও আমরা প্রত্যেকে আমাদের বুকের মধ্যে ক্ষুদ্র হলেও এমন এক শক্তিশালী ভালবাসার উন্মাদনা নিয়ে ঘুরি যা প্রকাশের অপেক্ষায় সর্বদা উন্মুখ হয়ে থাকে।

স্নেহের লিসার্ল, যখন আমরা এই বিশ্বজনীন শক্তির সঠিক ব্যবহার শিখবো সেদিন আমরা নিশ্চিতভাবে জানবো ভালবাসা সবকিছু জয় করতে পারে। সবকিছুকে ভালবাসা অতিক্রম করতে পারে কারণ জীবনের সারবত্তাই হল ভালবাসা।

আমি ভীষণভাবে আফসোস বোধ করি আমার হৃদয় জুড়ে তোমার জন্য যে আকুতি তৈরী হয়ে চলেছে নিরন্তর তা সঠিকভাবে প্রকাশ করতে না পারার জন্য। হয়তো অনেকটা দেরী হয়ে গেল কিন্তু সময় যেহেতু আপেক্ষিক তাই আমি তোমাকে বলতে চাই আমি তোমাকে ভীষণ ভালবাসি এবং আমার প্রশ্নের উত্তরের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

ইতি

তোমার বাবা

অ্যালবার্ট আইনস্টাইন

তথ্যসূত্র


  1. তথ্যটি সামাজিক মাধ্যমে প্রাপ্ত। সববাংলায় এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে কোন বিশ্বস্ত প্রমাণ পায়নি বরং চিঠিটি সম্ভবত ভুল (তথ্যসূত্র ২ দ্রষ্টব্য), তবুও লেখাটি প্রকাশ করা হল, মূলত এর অন্তর্নিহিত বার্তার জন্য
  2. https://www.snopes.com/

আপনার মতামত জানান