জাতীয় বিজ্ঞান দিবস

২৮ ফেব্রুয়ারি ।। জাতীয় বিজ্ঞান দিবস (ভারত)

প্রতি বছর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়। ঐ নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা  গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরী করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। ভারতের পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলোর মধ্যেই একটি হল জাতীয় বিজ্ঞান দিবস।

ভারতে প্রতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ভারতীয় পদার্থ বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ২৮ ফেব্রুয়ারি রামন এফেক্ট আবিস্কার করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তীকালে এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের জন্য ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

রামণ এফেক্ট এর আবিস্কার পদার্থবিদ্যার গবেষণার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। আলোর এক বিশেষ ধরণের বিচ্ছুরণকে রামণ এফেক্ট বলে। রেইলির বিচ্ছুরণ নীতি দিয়ে দিনের বেলা আকাশ নীল কেন হয় ব্যাখ্যা করা হয় – যেখানে আপতিত আলোক কণার (ফোটন) বিচ্ছুরণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্থিতিস্থাপক (ইলাস্টিক ) বিচ্ছুরণ হয় অর্থাৎ আলোক কণার শক্তির কোন পরিবর্তন হয় না। রামণ এফেক্ট সেখানে অস্থিতিস্থাপক (ইনিলাস্টিক) বিচ্ছুরণের কথা বলে যেখানে খুব কম সংখ্যার ফোটন এর শক্তি কমে যায় ফলে আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বাড়ে। এই আবিস্কার পরবর্তীকালে পদার্থ ও রসায়ণবিদরা বিভিন্ন পদার্থ চেনার জন্যে ব্যবহার করেন। রামণ এফেক্ট আবিস্কারের প্রায় তিন দশক পর লেসার আবিস্কার হলে এর ব্যাবহার খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

১৯৮৬ সালে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা যোগাযোগ আয়োগ (National Council for Science and Technology Communication) ভারত সরকারর কাছে ২৮ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আবেদন করে, পরে সরকার এই এর অনুমোদন দেয়।  প্রথম জাতীয় বিজ্ঞান দিবস ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ সাল থেকে NCSTC বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যা প্রসার ও জনপ্রিয় করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে জাতীয় বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণে পুরস্কার দিতে শুরু করে।

বর্তমানে গোটা দেশ জুড়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক, কারিগরী, চিকিৎসা, গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহে এই দিবস পালন করা হয়।

প্রতি বছর এই দিনটি বিভিন্ন থিম নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে উদযাপিত হয়। ২০২২ সালের থিম ছিল ‘ পরিবেশ বান্ধব ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির যৌথ সমন্বয় সাধন ‘ (Integrated Approach in S&T for Sustainable Future’)।

২০২৩ সালের থিম ছিল ‘ বিশ্ব কল্যাণে বিশ্ব বিজ্ঞান'(Global Science for Global Wellbeing)

2 comments

আপনার মতামত জানান