পার্সি বিশি শেলি

পার্সি বিশি শেলি

বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাস অনুসন্ধান করলে এমন কিছু প্রতিভাবান লেখকের সন্ধান মিলবে যাঁরা ক্ষণজন্মা হলেও সাহিত্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে গেছেন তাঁদের মননশীল সৃষ্টির মাধ্যমে, ইংরেজ লেখক পার্সি বিশি শেলি (Percy Bysshe Shelley) সেই গোত্রেরই একজন সাহিত্যিক। মূলত রোম্যান্টিক পর্বের একজন জনপ্রিয় কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি একইসঙ্গে লিখেছেন বহু কাব্যনাটক, উপন্যাস এবং প্রবন্ধ। নিজের সমসময়ে শেলি সারস্বতসমাজের কাছে খুব বেশি গুরুত্ব না পেলেও মৃত্যুর পর থেকে আজও তাঁর সৃষ্ট সাহিত্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, গবেষণা চলছে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। চিরকাল নাস্তিক একজন মানুষ ছিলেন তিনি, বিশ্বাস করতেন মুক্ত ভালোবাসায়। তাঁর লেখায় লক্ষ্য করা যায় রাষ্ট্রবিরোধিতা, বাক্‌-স্বাধীনতার পক্ষে মন্তব্য, ভোটাধিকার সম্প্রসারণের জন্য প্রস্তাব, সকলের মধ্যে সম্পদের সমবন্টনের পক্ষে সওয়াল ইত্যাদি জরুরি কিছু বিষয়ও। শেলির কল্পনা এবং চিত্রকল্প বিশ্বসাহিত্যের মূল্যবান সম্পদ নিঃসন্দেহে। তাঁর লেখার গীতিধর্মিতার জন্য পরবর্তীকালের জনৈক সাহিত্য সমালোচক শেলিকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী একজন গীতিকবি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।

১৭৯২ সালের ৪ আগস্ট ইংল্যাণ্ডের পশ্চিম সাসেক্সের হরশাম শহরের নিকটবর্তী ব্রডব্রীজ হিথের ফিল্ড প্লেসে পার্সি বিশি শেলির জন্ম হয়। তাঁর বাবা টিমোথি শেলি (Timothy Shelley) প্রথাসর্বস্ব মানুষ ছিলেন। হুইগ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত টিমোথি ১৭৯০ থেকে ১৭৯২ পর্যন্ত হরশামের সংসদে এবং ১৮০৬ থেকে ১৮১২ সাল পর্যন্ত শোরেহাম সংসদের সদস্য ছিলেন। শেলির মায়ের নাম ছিল এলিজাবেথ পিলফোল্ড (Elizabeth Pilfold)। এলিজাবেথ এবং টিমোথি শেলির জ্যেষ্ঠপুত্র পার্সি বিশি শেলি, এছাড়াও তাঁদের আরও এক পুত্রের নাম জন ও চার কন্যার নাম যথাক্রমে এলিজাবেথ, মেরি, মার্গারেট এবং হেলেন। শেলি তাঁর ঠাকুরদার অর্জিত প্রভূত ধনসম্পত্তির উত্তরাধিকারী ছিলেন। তাঁর শৈশব ছিল খুবই সুখের। শেলি তাঁর বোনদের এবং তাঁর মায়ের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁরা শেলিকে মাছ ধরতে, শিকার করতে ভীষণ উৎসাহ দিতো। এছাড়াও শেলি তাঁর খুড়তুতো ভাই থমাস মেডউইনের সঙ্গে তখন মাঝেমধ্যেই নদী কিংবা কোনো উন্মুক্ত মাঠ জরিপ করে বেড়াতেন। তাঁর কবিতায় প্রকৃতির সঙ্গে যে আদানপ্রদানের ভাবটি লক্ষ্য করা যায়, খুব ছোটোবেলা থেকেই প্রকৃতির সান্নিধ্যে হয়তো তা গড়ে উঠেছিল ধীরে ধীরে।

ছয় বছর বয়সে শেলিকে পাঠানো হয় দিবাভাগের একটি বিদ্যালয়ে। সেই বিদ্যালয় পরিচালনা করতেন ওয়ার্নহ্যাম চার্চের এক যাজক। সেখানে শেলি তাঁর অনবদ্য স্মৃতিশক্তির পরিচয় দেন। ১৮০২ সালে দশ বছর বয়সে মিডলসেক্সের ব্রেন্টফোর্ড শহরে অবস্থিত সিয়ন হাউস একাডেমিতে পড়তে চলে যান শেলি। তাঁর খুড়তুতো ভাই থমাস মেডউইনও সেই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু সেই স্কুলে শেলিকে উত্যক্ত করতো অন্যেরা, ফলে অসন্তোষ এবং অশান্তির কারণে কখনও কখনও তিনি খুব হিংসাত্মক ক্রোধ প্রকাশ করে ফেলতেন। এসময়েই দুঃস্বপ্ন, হ্যালুসিনেশন তাঁকে ঘিরে ধরে, বিজ্ঞানের প্রতি এক তীব্র আগ্রহ জন্মায় এবং তিনি রহস্য, রোম্যান্স কিংবা অতিপ্রাকৃত বিষয়ের ওপর লেখা বই পড়তে শুরু করেন। বারুদ, অ্যাসিড এবং বিদ্যুৎ নিয়ে তাঁর উদ্ভট পরীক্ষার আতঙ্কে শেলির বোনেরা তটস্থ হয়ে থাকতো। স্কুলে বারুদের সাহায্যে একটি আস্ত বেড়া উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সিয়ন স্কুলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় ঘটনা যা কিনা শেলিকে প্রভাবিত করেছিল বিস্তর তা হল বিদ্যুৎ, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং রসায়নবিদ্যার ওপর অ্যাডাম ওয়াকরের প্রাণবন্ত এবং কল্পনাপ্রসূত একটি বক্তৃতা। ১৮০৪ সালে ১২ বছর বয়সে তিনি এই স্কুল থেকে বেরিয়ে ইটন কলেজে প্রবেশ করেন পড়াশোনার জন্য। এই কলেজে অধ্যয়নের সময়কালকে শেলি পরবর্তীকালে খুব ঘৃণ্য একটা সময় হিসেবে স্মরণ করেছিলেন। অন্য ছাত্রদের দ্বারা ক্রমাগত উৎপীড়ন তাঁর মানসিক শান্তিকে বিধ্বস্ত করে দেয়, তাঁকে বিচ্ছিন্ন করে এক নিঃসঙ্গতার দিকে ঠেলে দেয়। প্রতিক্রিয়ায় মাঝেমধ্যেই প্রচণ্ড হিংস্র হয়ে উঠতেন শেলি যে কারণে সকলে তাঁকে ‘ম্যাড শেলি’ বলতো। জাদুবিদ্যা এবং বিজ্ঞানের প্রতি মোহ যদিও অটুট ছিল তাঁর। কথিত আছে তিনি নাকি একজন মাস্টারমশাইকে বৈদ্যুতিক শক দিয়েছিলেন এবং জাদুবিদ্যার প্রয়োগ করে আত্মা উত্থাপন করবারও চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় ডক্টর জেমস লিন্ড নামের একজন পার্ট-টাইম শিক্ষকের অধীনে শেলি পড়াশোনা করতে থাকেন যিনি শেলিকে জাদুবিদ্যার প্রতি আরও আগ্রহী করে তোলেন। প্লেটো এবং আদর্শবাদী দর্শনের প্রতিও শেলির আগ্রহ তৈরি হয় এই সময় এবং পরবর্তীকালে এই বিষয়ে নিজের উদ্যোগে চর্চাও করেছিলেন তিনি।

১৮১০ সাল থেকে ১৮১১ সালের মধ্যে শেলি দুটি গথিক উপন্যাস এবং দুই খণ্ডে কিশোর পদ্য প্রকাশ করেছিলেন। ইটন কলেজের শেষ বছরে অর্থাৎ ১৮১০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল শেলির প্রথম উপন্যাস ‘জিস্ট্রেজি’। কলেজে পড়াকালীনই তিনি কবিতা লেখার জগতে প্রবেশ করেন এবং ১৮১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বোন এলিজাবেথের সঙ্গে একত্রে লেখা তাঁর কবিতার বই ‘অরিজিনাল পোয়েট্রি : বাই ভিক্টর অ্যাণ্ড ক্যাজায়ার’ প্রকাশিত হয়েছিল।

১৮১০ সালের অক্টোবর মাসে শেলি অক্সফোর্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজে ভর্তি হন। তারপর প্রকাশিত হয় তাঁর কাব্যনাটক ‘দ্য ওয়াণ্ডারিং জিউ’ এবং ১৮১১ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় গথিক উপন্যাস ‘সেন্ট ইরভাইন; অর, দ্য রোসিক্রুশিয়ান : আ রোম্যান্স’। সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই তাঁর খুব কাছের বন্ধু হয়ে ওঠেন থমাস জেফারসন হগ। তাঁর প্রভাবেই শেলির মধ্যে একপ্রকার উগ্রপন্থী এবং ক্রিশ্চান-বিরোধী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে যা কিনা সেই সময়ের ব্রিটেনের পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে খুবই বিপজ্জনক। শেলিকে তাঁর বাবা হগের প্রভাবমুক্ত হবার জন্য সতর্কও করেছিলেন। ১৮১০ থেকে ১৮১১ সাল পর্যন্ত শেলি তাঁর বন্ধু হগের সঙ্গে মিলিতভাবে বেনামে যে রাজনৈতিক কবিতা দুটি লেখেন সেগুলি হল ‘পসথিউমাস ফ্র্যাগমেন্টস অফ মার্গারেট নিকোলসন’, ‘দ্য নেসেসিটি অব অ্যাথেইসম’। এসময় একইরকম বিষয়কে কেন্দ্র করে তিনি যে প্রবন্ধটি রচনা করেন তা হল ‘পোয়েটিকাল এসে অন দ্য এক্সিসটিং স্টেট অব থিংস’। এসময় অক্সফোর্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ হগ এবং শেলি তাঁদের দুজনকেই বহিষ্কার করেছিল নাস্তিকতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে লেখা ‘নেসেসিটি অব অ্যাথেইসম’-এর জন্য। তাঁরা বেনামে এই গ্রন্থ রচনা করেছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কেউই রচয়িতা হিসেবে শেলির নাম স্বীকার করেনি।

১৮১১ সালের ২৫ আগস্ট শেলি লণ্ডনের এক সরাইখানার মালিকের ছোটো মেয়ে হ্যারিয়েট ওয়েস্টব্রুকের সঙ্গে এডিনবার্গে পালিয়ে গিয়ে বিবাহ করেন। হ্যারিয়েটের বড় বোন এলিজাও এসেছিলেন তাঁদের সঙ্গে। শেলি, হ্যারিয়েট এবং শেলির বন্ধু হগ এডিনবার্গে একসঙ্গে বসবাস করছিলেন। ইতিমধ্যে বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়, শেলি বাবার সঙ্গে কথা বলতে সাসেক্সে যান। এরপর শেলি ও হ্যারিয়েট ডাবলিনে যান এবং সেখানেও শেলি তাঁর রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন লেখালেখির মাধ্যমে। তিনি সেখানে রোমান ক্যাথলিকদের রাজনৈতিক অধিকার এবং আয়ারল্যাণ্ডের স্বাধীন চিন্তা ও স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে সওয়াল করে ১৮১২ সালের প্রথম দিকে যেসব ছোটো পুস্তিকা রচনা করেছিলেন সেগুলি হল ‘অ্যান অ্যাড্রেস টু দ্য আইরিশ পিপল’, ‘প্রোপোজালস ফর অ্যান অ্যাসোসিয়েশন অব ফিলানথ্রপিস্টস’ এবং  ‘ডিক্ল্যারেশন অফ রাইটস’। এরপর তাঁরা লিনমাউথ এবং আরও পরে উত্তর ওয়েলসে যান যেখানে ১৮১২ থেকে ১৮১৩ সালের মধ্যে ছয় মাস কাটিয়েছিলেন। এসময়তেও রাজনৈতিক লেখালেখি করেছেন শেলি। প্রচণ্ড অর্থাভাবের কারণে শেলিকে ফিরে আসতে হয় লণ্ডনের মহাজনদের কাছে। এসময়তেই ১৮১৩ সালে প্রকাশিত হয় শেলির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বড়ো কবিতা ‘কুইন ম্যাব, আ ফিলোসোফিকাল পোয়েম : উইথ নোটস’ যা সংক্ষেপে ‘কুইন ম্যাব’ নামে পরিচিত। ব্ল্যাঙ্ক ভার্সে রচিত এই লেখাটিকে একটি ইউটোপিয়ান রাজনৈতিক মহাকাব্য হিসেবে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা। এখানে রাজতন্ত্র, বাণিজ্য এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে এদের সামাজিক কুফল বলে বর্ণনা করেছেন। ১৮১৩ সালেই শেলি দাবি করেন তাঁর বাড়িতে একটি হামলা হয়েছে।  সম্ভবত সরকারি নজরদারী, ঋণদাতা এবং স্থানীয় রাজনীতির ফাঁদ থেকে বাঁচার জন্য এটি শেলির একরকম প্রতারণা ছিল। এরপর আয়ারল্যাণ্ড থেকে পালিয়ে শেলি এবং হ্যারিয়েট চলে আসেন লণ্ডনে। ১৮১৩ সালের ২৩ জুন শেলির স্ত্রী হ্যারিয়েট জন্ম দেয় এক কন্যাসন্তানের যাঁর নাম এলিজাবেথ ইয়ান্থে। পরবর্তীকালে ১৮১৪ সালের নভেম্বর মাসে হ্যারিয়েট দ্বিতীয় সন্তান চার্লসের জন্ম দিয়েছিলেন যদিও শেলির সঙ্গে তখন তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটে গেছে।

১৮১৩ সালে শেলির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তাঁর জীবনে প্রভূত প্রভাব বিস্তারকারী উগ্র রাজনৈতিক দার্শনিক উইলিয়াম গডউইনের। গডউইন শেলির শ্রদ্ধাভাজন যেমন ছিলেন, তেমনি শেলিকেও তিনি আন্তরিকভাবে পছন্দ করতেন। শেলি এসময়তেই দ্বিতীয় সন্তানের পিতা হওয়ার পূর্বেই স্ত্রী হ্যারিয়েটকে ত্যাগ করেন সুশিক্ষিত রমণী গডউইনের কন্যা মেরির প্রেমে আবিষ্ট হয়ে পড়ে। এই সম্পর্ক নিয়ে গডউইন খুব খুশি ছিলেন না, ফলে শেলি মেরি এবং তাঁর সৎবোন ক্লেয়ার ক্লেয়ারমন্টকে সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে যান প্যারিসে। জাহাজে করে তাঁরা লন্ডন ত্যাগ করেন এবং বেশিরভাগ সময় পায়ে হেঁটেই ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি এবং হল্যান্ড ভ্রমণ করেন। ১৮১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মেরির জন্ম দেওয়া শিশু কন্যাটি দশদিন পরে মারা যায়। এসময় শেলি একটি যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন মেরির সৎবোনের সঙ্গে। অগাস্টে তাঁরা বিশপগেটে চলে যায় এবং সেখানে শেলি ‘অ্যালাসটার’ নামে একটি দীর্ঘ কবিতা লেখেন। ১৮১৬ সালের ২৪শে জানুয়ারি মেরি জন্ম দেয় উইলিয়াম শেলির। সেবছর ডিসেম্বরে শেলি আনুষ্ঠানিকভাবে মেরিকে বিবাহ করেন নিজের আদর্শ ভেঙে, কারণ তাঁর প্রথম স্ত্রী হ্যারিয়েট একটি সুইসাইড নোটে তাঁদের সন্তান চার্লসকে হেফাজতের অধীনে রাখার অনুরোধ জানায়। এই বিবাহ না হলে সেই অনুরোধ রক্ষা সম্ভব ছিল না। মেরি আরও দুটি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন পরে তাঁরা হলেন ক্লারা এভরিনা শেলি এবং পার্সি ফ্লোরেন্স শেলি। গবেষকদের মতে ক্লারার মৃত্যুর পর শেলি এক কন্যা দত্তক নেন মেরিকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য, তাঁর নাম এলেনা এডিলেইড শেলি।

মেরির সৎবোনের উদ্যোগে জেনেভাতে শেলির সঙ্গে বিখ্যাত কবি বায়রনের দেখা হয়েছিল। বায়রনকে শেলি তাঁর ‘কুইন ম্যাব’ লেখাটিও পাঠিয়েছিলেন। জেনেভা লেকে বায়রনের সঙ্গে বোটিং করার অভিজ্ঞতা পার্সি বিশি শেলিকে ‘হাইম টু ইন্টালেকচুয়াল বিউটি’ কবিতাটি লিখতে উদ্বুদ্ধ করে। লেই হান্টকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সাহিত্য ও রাজনীতির বৃত্তে অংশ নেন শেলি। এসময় তাঁর সঙ্গে বিখ্যাত কবি কিটসের সাক্ষাৎ হয়। শেলির বিখ্যাত এক আখ্যানমূলক দীর্ঘকবিতা ‘লাওন অ্যান্ড সিথনা’ এই সময়েই প্রকাশ পায়। তাঁর লেখা রাজনৈতিক রচনাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘আ প্রোপোজাল ফর পুটিং রিফর্ম টু দ্য ভোট থ্রুআউট দ্য কিংডম’ এবং ‘অ্যান অ্যাড্রেস টু দ্য পিপল অন দ্য ডেথ অব প্রিন্সেস শার্লট’। এই সময়েই শেলি রচনা করেন তাঁর বিখ্যাত সনেট ‘ওজিম্যানডিয়াস’।

এরপর লিভারের সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শে ইতালি চলে যান শেলি। নেপলসে গিয়ে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একপ্রকার আত্মহত্যাপ্রবণতা কাজ করতে থাকে তাঁর মধ্যে। রোমে থাকাকালীন শেলির তিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল, ‘জুলিয়ান অ্যাণ্ড মাডালো, ‘প্রমিথিউস আনবাউণ্ড’ (১৮২০) এবং ‘দ্য সেনসি’। বন্ধু কিটসের মৃত্যুতে শেলি লেখেন ‘অ্যাডোনেইস’ কাব্য। এছাড়া ইতালির বিভিন্ন জায়গায় লেখা তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রবন্ধ হল ‘ফিলোজফিক্যাল ভিউ অব রিফর্ম’, ‘আ ডিফেন্স অব পোয়েট্রি’, ‘দ্য ফোর এজেস অব পোয়েট্রি’ ইত্যাদি।

১৮২২ সালের ৮ জুলাই এডওয়ার্ড উইলিয়ামসের সঙ্গে নৌকাবিহারের সময় একটি ভয়ঙ্কর ঝড়ে নৌকাডুবিতে মাত্র ২৯ বছর বয়সে পার্সি বিশি শেলি র মৃত্যু হয়।

6 comments

আপনার মতামত জানান