বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস

১২ জুন ।। বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস

প্রতি বছর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়। ঐ নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা  গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা  তৈরী করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলোর মধ্যেই একটি হল বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস ( World Day Against Child Labour) ।

সমগ্র বিশ্ব জুড়ে ১২ জুন এই দিনটি পালন‌ করা হয়। এই দিনটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (International Labour Organisation)  দ্বারা স্বীকৃত ছুটির দিন।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে যদি কোনও কাজের ফলে কোনও শিশুকে তার শৈশবের স্বাভাবিক চাহিদাগুলি থেকে বঞ্চিত হতে হয়, স্কুলের শিক্ষালাভ থেকে সে যদি বঞ্চিত হয় এবং মানসিক, শারীরিক ও নৈতিকভাবে তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তা হলে সেই কাজটিকে ‘শিশুশ্রম’ বলা হবে। আরও বলা হয় ৫ থেকে ১১ বছরের কোন শিশু দৈনিক এক ঘণ্টা কাজ করলে এবং ১২ থেকে ১৪ বছরের কোন কিশোর সপ্তাহে ১৪ ঘন্টা কাজ করলে তাকে শিশুশ্রমিক হিসেবে ধরা হবে। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা শিশুশ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়টি তুলে ধরতে ২০০২ সালের ১২ জুন প্রথম বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস ঘোষণা করে।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

দারিদ্রতা হল শিশুশ্রমের অন্যতম প্রধান কারণ। দারিদ্রতার কারণে ছেলেমেয়েরা স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয় ও তাদের মা বাবাদের সাহায্য করার জন্য ছোটোখাটো ‌কোনো কাজকে বেছে নেয়। কোনো কোনো‌ ক্ষেত্রে আবার শিশুদের বাধ্য করানো হয় কম বয়সে কাজ করার জন্য। মেয়েদের ক্ষেত্রে অল্পবয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরে লোকের বাড়িতে কাজ করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন দেশে শিশুশ্রম বন্ধ করতে বিভিন্ন আইন আনা হয়েছে। কিন্তু এখনও ভারত, বাংলাদেশ সহ আরও বিভিন্ন দেশে এখনও শিশুদের শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো হয়। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা। মানুষের মধ্যে সেই সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবসটি আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা।

প্রতি বছর এই দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন থিম বা প্রতিপাদ্য নির্বাচন করা হয়ে থাকে। ২০১৫ সালে এই দিনটি পালনের থিম বা প্রতিপাদ্য ছিল – “শিশুশ্রমকে না, গুনগত শিক্ষাকে হ্যাঁ” (NO to child labour – YES to quality education)। ২০১৬ সালের প্রতিপাদ্য ছিল – “সাপ্লাই চেইনে শিশু শ্রমকে শেষ করা – এটি প্রত্যেকের দায়িত্ব” (End child labour in supply chains – It’s everyone’s business)। ২০১৭ সালের প্রতিপাদ্য ছিল – “যুদ্ধ এবং বিপর্যয়গুলিতে শিশুদের শিশুশ্রম থেকে রক্ষা করা” ( In conflicts and disasters, protect children from child labour )। ২০১৮ সালের প্রতিপাদ্য ছিল – “নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর প্রজন্ম” (Generation safe and Healthy)। ২০১৯ সালের প্রতিপাদ্য ছিল – “শিশুদের মাঠে কাজ করা উচিত নয়, তাদের কাজ স্বপ্ন নির্মাণ” ( Children shouldn’t work in fields, but on dreams )। ২০২০ সালের প্রতিপাদ্য – “কোভিড-১৯: শিশুশ্রম থেকে শিশুকে রক্ষা কর, এখন আরও বেশি করে” (Covid-19: Protect Children from Child Labour, now more than ever!)। ২০২১ সালের প্রতিপাদ্য – “সক্রিয় হও: শিশুশ্রমের সমাপ্তি!” (Act now: End child labour!)। ২০২২ সালের প্রতিপাদ্য ছিল – “শিশু শ্রম বন্ধ করার জন্য সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা” (Universal Social Protection to End Child Labour)।  ২০২৩ সালের প্রতিপাদ্য – “সবার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার। শিশুশ্রম বন্ধ করুন!”  (Social Justice for All. End Child Labour!)। 

One comment

আপনার মতামত জানান