বিশ্ব জল দিবস

২২ মার্চ ।। বিশ্ব জল দিবস

প্রতি বছর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়। ঐ নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা  গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা  তৈরী করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। পালনীয় সেই দিবস গুলির মধ্যে একটি হল বিশ্ব জল দিবস ৷

প্রতিবছর ২২ মার্চ তারিখটিতে বিশ্ব জল দিবস সমগ্র বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়ে থাকে। 

১৯৯৩ সালে রাষ্ট্রসংঘ ২২ মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব জল দিবস হিসেবে ঘোষণা করে৷ যদিও এর সূচনা হয়েছিল এক বছর আগেই। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে প্রথমবার দিনটি পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারপর সেই প্রস্তাব পাশ হয়ে গেলে ১৯৯৩ সালে প্রথমবার দিনটি পালিত হয় এবং এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই দিনটি পালনের গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। 

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

জলের আরেক নাম জীবন সে বিষয়ে আমরা সকলেই জানি। পৃথিবীর তিন ভাগ জল এক ভাগ স্থল। তবুও এই বিপুলা পৃথিবীতে পানীয় যোগ্য জলের অভাব । পৃথিবীতে মোট জলের পরিমান ১৩৮.৬ ঘন কিমি। এর মধ্যে লবনাক্ত জলের পরিমান ১৩৫.১ কোটি ঘন কিমি এবং মিষ্টি জল মাত্র ৩.৫ কোটি ঘন কিমি ৷ রাষ্ট্রসংঘের সমীক্ষা অনুসারে বর্তমানে চাহিদা অনুসারে জলের পরিমান রয়েছে মাত্র ২ লক্ষ ঘনকিমি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতিবছর দূষিত ও অস্বাস্থ্যকর পানীয় জল ব্যবহার করে ৮.৫ লক্ষ মানুষ নানা ব্যাধি ও মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে থাকে ৷ ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী পৃথিবীতে ২১০ কোটি মানুষ পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। পানীয়জল পরিষেবা লাভে সমস্যার জন্য ৬.৮৫ কোটি মানুষ তাদের বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। ৪০০ কোটি মানুষ বছরে কমপক্ষে একমাস চরম জলসংকটের মুখোমুখি হয়ে থাকে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে জল সংকটের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে জলসংরক্ষণ আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷

প্রতি বছর বিশ্ব জল দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে। কেবল রাষ্ট্রসংঘই নয় বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও পরিচ্ছন্ন জল ও জলসম্পদ রক্ষা সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য এই দিনে বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে৷ এই দিনে প্রতি বছরে বিভিন্ন থিম বানানো হয়েছে।

প্রতি বছরই নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য (Theme) সামনে রেখে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়। ২০১৮ সালের প্রতিপাদ্য – জলের জন্য প্রকৃতি (Nature for Water’)। ২০১৯ সালের প্রতিপাদ্য – কাউকেই পিছনে ছাড়া হবে না (Leaving No One Behind’)। ২০২০ সালের প্রতিপাদ্য – জল এবং জলবায়ু পরিবর্তন (Water and Climate Change)। ২০২১ সালের প্রতিপাদ্য – জলের মূল্যায়ন (Valuing Water)। ২০২২ সালের প্রতিপাদ্য – ভূগর্ভস্থ জল: অদৃশ্যকে দৃশ্যমান করা (Groundwater: Making the Invisible Visible)। ২০২৩ সালের প্রতিপাদ্য – জল ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংকট সমাধানে পরিবর্তন ত্বরান্বিত করা (Accelerating the change to solve the water and sanitation crisis) ।

One comment

আপনার মতামত জানান