ঊষা মেহতা

ঊষা মেহতা

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে যেসমস্ত নারী বিপ্লবীদের দুঃসাহসিক পদক্ষেপ স্বরাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইকে ত্বরান্বিত করেছিল ঊষা মেহতা (Usha Mehta) ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। আজীবন গান্ধীবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ঊষা গান্ধীজির দেখানো অহিংসার পথেই লড়াই করে গিয়েছেন ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে। মূলত যে কারণে আজও তাঁকে স্মরণ করা হয় তা হল ব্রিটিশের বিরুদ্ধে গান্ধীজির নেতৃত্বে সংগঠিত ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় তিনি একটি ভূগর্ভস্থ রেডিও স্টেশন গড়ে তুলেছিলেন, মহাত্মা গান্ধী এবং আরও সমস্ত উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের বার্তা সারা দেশবাসীর কাছে প্রচার করবার জন্য। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে ভারতের নানা প্রান্তে গড়ে ওঠা সংগ্রামের খবর সেই বেতার থেকে প্রচার করা হত দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করে তোলার জন্য। ব্রিটিশ সরকার অনেক পরিশ্রমের পর ঊষাকে গ্রেপ্তার করতে সফল হয়েছিল, কিন্তু ততদিনে এই রেডিও স্টেশন প্রায় সারা দেশবাসীর মনে স্বাধীনতার আবেগকে জাগিয়ে তুলেছিল, নাড়িয়ে দিয়েছিল ব্রিটিশ শাসনের ভিত। ঊষা মেহতা খুব ছোটবেলা থেকেই সাইমন কমিশনের বিরোধিতা সহ বিভিন্ন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন, মদের দোকানের সামনে পিকেটিং পর্যন্ত করেছিলেন তিনি। আজীবন গান্ধীবাদী থেকে তিনি ব্রহ্মচারীর মতো অবিবাহিত জীবন কাটিয়েছেন। স্বদেশের প্রতি তাঁর প্রেম এতখানিই অটুট ছিল যে ইংরেজ প্রদত্ত বিদেশে পড়াশোনার প্রস্তাব হেলায় উপেক্ষা করতে দু’দণ্ড ভাবেননি তিনি। তাঁর গড়ে তোলা রেডিও স্টেশন যে স্বাধীনতার লড়াইকে দু-কদম এগিয়ে দিয়েছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মবিভূষণ’ পুরস্কারে সম্মানিত করে।

১৯২০ সালের ২৫ মার্চ ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে গুজরাটের অন্তর্গত সুরাটের নিকটবর্তী সরস গ্রামে এক শিক্ষিত পরিবারে ঊষা মেহতার জন্ম হয়। তাঁর বাবা হরিপ্রসাদ মেহতা (Hariprasad Mehta) ব্রিটিশ সরকারের অধীনস্থ জেলা-স্তরের একজন বিচারক ছিলেন এবং তাঁর মা ঘেলিবেন মেহতা (Gheliben Mehta) ছিলেন এক সামান্যা গৃহিণী। ঊষা তাঁর বাবা-মার একমাত্র সন্তান নন, তাঁর আরও এক অগ্রজ ছিলেন। খুব ছোটবেলায় মাত্র পাঁচ বছর বয়সে ঊষা স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা এবং পথপ্রদর্শক মহাত্মা গান্ধীকে দেখেছিলেন তাঁর আমেদাবাদের আশ্রমে যাওয়ার সময়। তখনই সম্ভবত গান্ধীর তেজ এবং অহিংস শান্ত ব্রহ্মচারী মূর্তি সেই ছোট্ট ঊষার মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই তাঁদের গ্রামের নিকটেই গান্ধীর উদ্যোগে একটি শিবিরের আয়োজন করা হয়। এবারে ঊষা সরাসরি চলে গিয়েছিলেন সেখানে অংশগ্রহণের জন্য এবং চরকা কাটাতেও সামিল হয়েছিলেন। অল্প বয়স থেকেই গান্ধীজীর আদর্শ গ্রহণ করে কেবল খাদির পোশাক পরিধান করতেন তিনি।

সংবিধান সংস্কারের উদ্দেশ্যে সাইমন সাহেব ভারতে এসেছিলেন এবং সাত সদস্যের একটি দল গঠন করেছিলেন, কিন্তু সেই দলে কোনো ভারতীয় ছিল না। এর সহজ অর্থ হল, ব্রিটিশরা নিজেদের ইচ্ছানুসারে সংবিধান তৈরি করতে চান। গান্ধী, নেহেরুর মতো বড় বড় নেতা এর বিরোধিতা করেছিলেন। সাইমনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য রাস্তায় আন্দোলন চলতে থাকে। ১৯২৮ সালে ঊষার যখন মাত্র আট বছর বয়স, তখন সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে সংগঠিত এক মিছিলে অংশ নেন তিনি। মুখে উচ্চারণ করেন তাঁর নিজের প্রথম উচ্চারিত ব্রিটিশ বিরোধী স্লোগান ‘সাইমন গো ব্যাক’। কেবলমাত্র তাই নয়, অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে ঊষাও সকালবেলায় ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে সংঘটিত মদের দোকানের সামনে পিকেটিং-এ অংশ নিয়েছিলেন। এমনই একটি বিক্ষোভের সময় ব্রিটিশ পুলিশ শিশুদের উপর এবং ভারতের জাতীয় পতাকা বহনকারী একটি মেয়ের উপর চড়াও হয়। মেয়েটি মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে পতাকাসমেত। এই ঘটনা ক্ষুব্ধ শিশুরা তাঁদের বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে শুনিয়েছিল। প্রবীণরা তখন এই ঘটনার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সমস্ত শিশুদেরকে জাতীয় পতাকার মতো তিনরঙা (গেরুয়া, সাদা ও সবুজ) পোশাক পরিয়ে পুনরায় রাস্তায় বের করে দেন। তাঁরা আবার সেই পোশাক পরিহিত অবস্থায় মিছিল করে এবং স্লোগান দিতে থাকে, ‘পুলিশ তোমরা লাঠি চালাতে পারো, কিন্তু আমাদের পতাকা নামাতে পারবে না’। এছাড়াও তাঁরা গোপন বুলেটিনও প্রচার করতে থাকেন সেইসময়। এমনকি ঊষা কারাগারের বন্দীদের বার্তাবাহক হিসেবেও কাজ করেছিলেন। গোপনে বার্তা পৌঁছে দিতেন তাঁদের, আবার তাঁদের বার্তা নিয়ে আসতেন বাইরে। 


সববাংলায় সাইটে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য আজই যোগাযোগ করুন
contact@sobbanglay.com


 

কিশোরীবেলার একেবারে শুরু থেকেই ঊষা স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়লেন। কিন্তু তাঁর পরিবার থেকে মূলত তাঁর বাবার তরফ থেকে একটা আপত্তি উঠেছিল। যেহেতু হরিপ্রসাদ মেহতা ব্রিটিশ সরকারের অধীনস্থ একজন চাকুরিজীবি ছিলেন, ফলে ব্রিটিশ বিরোধী লড়াইয়ে তাঁর কন্যার সক্রিয়তা তাঁর পক্ষে বিশেষত তাঁর চাকরির পক্ষে ক্ষতিকর ছিল। কিন্তু যিনি ছোটবেলা থেকেই পেয়েছেন গান্ধীর অমূল্য সংস্পর্শ যাঁর হৃদয়ে জেগেছে পরাধীনতার যন্ত্রণা, স্বাধীনতার তীব্র আকাঙ্ক্ষা, দেশপ্রেম তাঁকে কোনো পরিস্থিতিতেই নিরস্ত করা সম্ভব নয়। তবে ১৯৩০ সালে হরিপ্রসাদ চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর আর তেমন কোনো বাধা থাকে না। সেবছরই গান্ধীজির নেতৃত্বে ঐতিহাসিক লবণ সত্যাগ্রহ হয়েছিল। ঊষার বয়স তখন দশ বছর। সেসময় তিনি বাড়িতে সমুদ্রের জল আনতেন এবং তা দিয়ে লবণ তৈরি করতেন। গান্ধীজির লবণ কর অমান্য করবার আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলেন ঊষা মেহতা। 

১৯৩২ সালের তাঁদের পরিবার চলে গিয়েছিল সুদূর বম্বেতে। সেখানেও স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গে এতটুকু নিজের সম্পর্ক ছিন্ন হতে দেননি তিনি। গুজরাটের খেড়া এবং ভারুচ শহরে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন ঊষা মেহতা। তারপর বম্বে চলে আসবার পর সেখানকার চন্দরামজী হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন উচ্চবিদ্যালয়ের পড়াশোনা করবার জন্য। ১৯৩৫ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ক্লাসের শীর্ষ ২৫ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ঊষার নামও ছিল। এরপর আরও উচ্চস্তরের শিক্ষার তাগিদ অনুভব করেন তিনি এবং বম্বের উইলসন কলেজে প্রবেশ করেন। ১৯৩৯ সালে সেখান থেকে দর্শনে প্রথম শ্রেণির ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হন ঊষা মেহতা। এরপর হয়তো বাবার নির্দেশেই আইন অধ্যয়ন শুরু করেছিলেন ঊষা মেহতা, কিন্তু ১৯৪২ সালে গান্ধীজির আহ্বানে এবং নেতৃত্বে সংগঠিত ব্রিটিশ বিরোধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগদানের জন্য সেই পড়াশোনা মাঝপথে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাবাকে জানান এবং বেরিয়ে পড়েন বাড়ি থেকে।

১৯৪২ সালের আগস্ট মাসে গোয়ালিয়া ট্যাঙ্ক মাঠে সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির একটি সমাবেশ থেকে মহাত্মা গান্ধী ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। সেই সভায় বক্তব্য রেখেছিলেন জওহরলাল নেহেরু, মৌলানা আজাদ, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মতো প্রভাবশালী নেতারা। সেদিন সেই মাঠে অসংখ্য মানুষের ভিড়ে দাঁড়িয়ে সমস্ত বক্তৃতা শুনেছিলেন ঊষা। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার এই আন্দোলনের আহ্বানে রীতিমতো শঙ্কিত হয়েছিল। সমাবেশের পরদিন ৯ আগস্ট আন্দোলনের সূচনা হয়। ব্রিটিশরা আন্দোলন দমনের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে এবং আন্দোলন ঘোষণার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে গান্ধী, নেহেরু সহ অসংখ্য বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই সমাবেশের এক সপ্তাহের মধ্যেই ঊষা মেহতা আরও কয়েকজনের সহযোগিতায় একটি ভূগর্ভস্থ গোপন রেডিও স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেছিলেন৷ এই রেডিও স্টেশন তৈরির মূল উদ্দেশ্য ছিল মহাত্মা গান্ধী সহ বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার বার্তাকে সমগ্র ভারতবাসীর নিকট পৌঁছে দেওয়া এবং স্বদেশি আন্দোলনের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ যা ব্রিটিশ সরকার চাপা দেওয়ার অর্থাৎ সেন্সর করে দেওয়ার চেষ্টা করত, সেইসব খবর পৌঁছে দেওয়া জনসাধারণের কাছে। এছাড়াও ভারত ছাড়ো আন্দোলনের নেতাদের কাছে গোপন তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজও চলত এই রেডিও স্টেশনের মাধ্যমে। এই রেডিও স্টেশনটি মূলত ‘সিক্রেট কংগ্রেস রেডিও’ নামে পরিচিত ছিল। এছাড়াও এটি ‘দ্য ফ্রিডম রেডিও’, ‘দ্য ঘোস্ট রেডিও’ ইত্যাদি অনেক নামেই পরিচিত ছিল। কিন্তু রেডিও চালানো ছিল যথেষ্ট ব্যয়বহুল। প্রথমে ঊষার একজন আত্মীয় রেডিওর জন্য নিজের অলঙ্কার দান করেছিলেন। শেষে তাঁর এক সহকর্মী বাবুভাই খাখর এর জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। শিকাগো রেডিওর মালিক নানকা মোতওয়ানি কংগ্রেস রেডিওর জন্য সরঞ্জাম এবং টেকনিশিয়ান সরবরাহ করতেন। ঊষার সহযোগীদের মধ্যে ছিলেন বিটলভাই ঝাভেরি, চন্দ্রকান্ত ঝাভেরি, এমনকি অচ্যুতরাও পটবর্ধন, পুরুষোত্তম ত্রিকোমদাস, রাম মনোহর লোহিয়ার মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এই সিক্রেট রেডিও স্টেশনকে সহায়তা করেছিলেন। ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত অল ইন্ডিয়া রেডিওর এক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল এই কংগ্রেস রেডিও। বম্বের শস্য বিক্রেতা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্য সমিতি এবং তুলা ব্যবসায়ীদের আর্থিক অনুদান এই রেডিও স্টেশনকে সচল রাখতে সাহায্য করেছিল। ১৯৪২ সালের ২৭ আগস্ট প্রথম এই রেডিওটি সম্প্রচারিত হয়। হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষায় খবর সম্প্রচারিত হত এখান থেকে।   

প্রথমদিকে রেডিওটি দিনে দুবার সম্প্রচারিত হত। কিন্তু শীঘ্রই তারা সন্ধে ৭ টা বেজে ৩০ মিনিট থেকে ৮ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে দিনে কেবল একবারই সম্প্রচার করা শুরু করে। ব্রিটিশ সরকারের গোপন তথ্য বিপ্লবীদের কাছে ফাঁস করা হত এই রেডিওর মাধ্যমে। কংগ্রেস রেডিওতেই সঠিক তথ্য জানতে পারতেন দেশবাসী। ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য ঊষারা বারংবার নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করতেন। নথিপত্র থেকে জানা যায় রেডিওটি শুরু হওয়ার মাত্র তিনদিন পরে ব্রিটিশরা এর অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। অবশেষে ১৯৪২ সালের ১২ নভেম্বর ব্রিটিশ পুলিশ খুঁজে পায় তাঁদের এবং গ্রেপ্তার করে। সিক্রেট রেডিও মোট তিন মাস কাজ করেই ব্রিটিশ শাসনের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল। 

ঊষাকে নির্জন এক কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। এইসময় ভারতীয় পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট তাঁকে ছয় মাস ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এমনকি এসময় তাঁকে বিদেশে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়ার মতো প্রলোভন দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার আর তার বদলে আন্দোলনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে বলা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু কোনওরকম প্রলোভনই ঊষা মেহতার দেশপ্রেমকে টলাতে পারেনি। তিনি সমস্ত জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সম্পূর্ণ নীরব ছিলেন। হাইকোর্টে বিচারের পর চার বছর তাঁকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পুনের ইয়ারভেদা জেলে তাঁকে বন্দি করা হয়েছিল, কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্যার জে জে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সুস্থ হওয়ার পর পুনরায় আবার ইয়ারভেদা জেলে ফেরত পাঠানো হয় ঊষাকে। ১৯৪৬ সালে মোরারজি দেশাইয়ের নির্দেশে বম্বেতে মুক্তি পাওয়া প্রথম রাজনৈতিক বন্দি ছিলেন ঊষা মেহতা। 

১৯৪৭ সালে ভারত যখন স্বাধীনতা পায়, অসুস্থতার কারণে সেদিন নয়া দিল্লিতে উৎসবে যোগদান করতে পারেননি তিনি। এরপর তিনি তাঁর শিক্ষা পুনরায় শুরু করেছিলেন। গান্ধীর রাজনৈতিক এবং সামাজিক চিন্তার উপর তিনি মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। পরবর্তীকালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন প্রভাষক এবং অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেছিলেন ঊষা মেহতা এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। স্বাধীনতার পরেও গান্ধীর আদর্শ প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। ইংরেজি এবং গুজরাটি ভাষায় অনেক নিবন্ধ ও প্রবন্ধগ্রন্থ তিনি রচনা করেছিলেন। তাঁর একটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল ‘মহাত্মা গান্ধী অ্যান্ড হিউম্যানিজম’। মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘গান্ধী স্মারক নিধি’র সভাপতির পদও অলঙ্কৃত করেন তিনি। এছাড়াও নয়া দিল্লির গান্ধী পিস ফাউন্ডেশনেরও সভাপতি ছিলেন ঊষা মেহতা। 

১৯৯৮ সালে দেশের জন্য তাঁর অবদানকে সম্মান জানিয়ে ভারত সরকার তাঁকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মবিভূষণ’ খেতাবে ভূষিত করে। 

২০০০ সালের ১১ আগস্ট ৮০ বছর বয়সে ঊষা মেহতার মৃত্যু হয়।

One comment

আপনার মতামত জানান