সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা দিবস

৭ ডিসেম্বর ।। সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা দিবস(ভারত)

প্রতি বছর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বিভিন্ন দেশে কিছু দিবস পালিত হয়। ওই নির্দিষ্ট দিনে অতীতের  কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়। পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলির মধ্যে একটি হল সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা দিবস (Armed Forces Flag Day)।

প্রতি বছর ৭ ডিসেম্বর ভারতবর্ষে  সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা দিবস পালন করা হয়ে থাকে সৈনিকদের পরিবারের প্রতি দেশের জনগণের নৈতিক কর্তব্য এবং দায়বদ্ধতাকে তুলে ধরতে এবং জীবিত ও মৃত জওয়ানদের পরিবারের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে।

ভারতের সশস্ত্র বাহিনী নিরন্তর প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত রক্ষা করছে, দেশকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে চলেছে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের উচিত সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। দেশের স্বাধীনতার জন্য সৈনিকরা প্রাণ না দিলে পরাধীনতার অন্ধকার ঘুচত না। দেশের স্থল, বিমান, নৌ, সমস্ত বিভাগের সেনাবাহিনীর প্রতি এবং শহীদ জওয়ানদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য বিশেষ মর্যাদা সহকারে এই দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও সৈনিকদের পরিবারের প্রতি দেশের জনগণের যে একটা নৈতিক কর্তব্য এবং দায়বদ্ধতা থাকে এই দিনটি সেই বিষয়টিকেও তুলে ধরে এবং জীবিত ও মৃত জওয়ানদের পরিবারের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

 ১৯৪৯ সাল থেকে এই সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা দিবস পালিত হয়ে আসছে ভারতবর্ষে। ১৯৪৯ সালের ২৮ আগস্ট তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে  গঠিত একটি কমিটি ৭ ডিসেম্বর তারিখটিকে নির্বাচন করেছিল এই বিশেষ দিনটি পালনের উদ্দেশ্যে। এই দিবস উদযাপনের পেছনে একটি মূল লক্ষ্য ছিল, সাধারণ মানুষের মধ্যে পতাকা বিতরণ করে তার বদলে অর্থ সাহায্য গ্রহণ করা দেশ রক্ষার্থে যাঁরা নিয়োজিত সে ই সেনাবাহিনীর পরিবারের জন্য। পতাকা দিবসের জন্য অর্থ তহবিল গঠিত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। ১৯৯৩ সালে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রক সেনা কল্যাণ সংক্রান্ত অন্যান্য তহবিলকে এই সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা দিবসের তহবিলের সঙ্গে একীভূত করে দেয়। এই দিনটি মূলত যেসব উদ্দেশ্যে পালিত হয় সেগুলি হল-

১. যুদ্ধে হতাহতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা।

২. সৈনিক পরিবারের সেবা এবং প্রাক্তন সৈন্য ও তার পরিবারের পুনর্বাসন ও কল্যাণসাধন।

৩. সেনাবাহিনীদের প্রতি দেশের জনগণ যে উদাসীন নয়জওয়ানদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর যে আন্তরিক দায়বদ্ধতা প্রত্যেক নাগরিক অনুভব করে সেই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয় এই দিন, এই সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা দিবস। 

নানারকম আয়োজনের মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপন করা হয়। ভারতীয় নৌ, স্থল, এবং বায়ুসেনাদের উদ্যোগে বিচিত্র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। নাটক অভিনয়ের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর নানা বীরত্বের কাহিনী কিমবা কখনও অশ্রুসজল কোনো মর্মান্তিক বা আবেগপূর্ণ ঘটনা তুলে ধরা হয় সাধারণ মানুষের কাছে। এই দিনটির গুরুত্ব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রিন্ট মিডিয়া যেমন সাহায্য করে তেমনি টেলিভিশন চ্যানেলগুলিও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনপ্রকার সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিত্বকারী লাল, গভীর নীল এবং হালকা নীল রঙের পতাকা বিতরণ করা হয় এবং বিনিময়ে গ্রহণ করা হয় অনুদান। এভাবেই এত গুরুত্ব সহকারে ভারতবর্ষে ৭ই ডিসেম্বর পালিত হয় সশস্ত্র বাহিনীর পতাকা দিবস। 

One comment

আপনার মতামত জানান