পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত হাওড়া জেলার একটি অন্যতম প্রসিদ্ধ ইতিহাস বিজড়িত জনপদ হল বাগনান।উলুবেড়িয়া সাব ডিভিশনের অন্তর্গত বাগনান, বিধানসভা কেন্দ্র হিসেবে বাগনান-১ ও বাগনান-২উন্নয়ন ব্লক এই দুটি ভাগে বিভক্ত।বাগনান রেল স্টেশনটি বাগনান-২ উন্নয়ন ব্লকের মধ্যে অবস্থিত।
ভৌগলিক দিক থেকে দেখা গেলে শহরটি ২২.৪৭° উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৭.৯৭° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ বরাবর অবস্থান করছে। শহরটিকে বেষ্টন করে হুগলি নদী পূর্ব সীমানা বরাবর প্রবাহিত এবং অন্যদিকে রূপনারায়ণ নদ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সঙ্গে হাওড়া জেলার প্রাকৃতিক সীমানা নির্দেশের মাধমে প্রবাহিত হয়েছে।বাগনান-১ উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি হল যথাক্রমে
বাগনান-১,বাগনান-২,বাঙালপুর,হাতুরিয়া-১,হাতুরিয়া-২ ও খালোর গ্রাম পঞ্চায়েত। বাগনান-২ ডেভলপমেন্ট ব্লকের অন্তর্গত সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত হল যথাক্রমে আন্টিলা, বাঁটুল বৈদ্যনাথপুর, চন্দ্রভাগ, হাল্যান, মুগকাল্যান, ওড়ফুলি ও শরৎচন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েত।
বাগনান নিয়ে লিখতে গেলে কেবল আধুনিক বাগনান শহরটি নিয়ে লিখলে বাগনান ব্লকের মধ্যে অবস্থিত গ্রামগুলির অবদানের প্রতি চরম অবিচার হয়। তাই বাগনানের দুইটি ব্লকের অন্তর্গত গ্রামগুলিকে নিয়ে সামগ্রিক বাগনানের এক বৃহত্তর ছবি এখানে তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে।
১৭২২ সালে বাংলার সুবেদার মুর্শিদকুলী খাঁ’র আমলে ভূমিরাজস্ব বিধি সংশোধন হওয়ার ফলে প্রায় সমগ্র হাওড়া জেলা বর্ধমান জমিদারির অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৭৯৫ সাল নাগাদ বর্ধমান জেলা থেকে আলাদা করে হাওড়া ও হুগলি জেলাকে মিলিয়ে হুগলি জেলা তৈরি হয় এবং বাগনান সেই সময় হুগলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়। বাগনান নিয়ে একটি লৌকিক ছড়া প্রচলিত ছিল বহু আগে-
দুলে কাপালি মুচুরমান
এই তিন নিয়ে বাগনান।
দুলে জাতের বসবাস সারা বাংলা জুড়ে থাকলেও বাগনানে বেশি ছিল। এদের পেশা মাছ ধরে বিক্রি করা। কাপালি জাত হল ভারতীয় পাট শিল্পের জনক। আর মুসলমান সম্প্রদায়ের বাস বাগনানে অনেক আগে থেকেই। বিখ্যাত সফরদান পীর সাহেবের সমাধি এই এলাকাতেই অবস্থিত।এখানকারই ভূমিপুত্র বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরা তাঁর ‘হাওড়া জেলার গ্রামনাম’ বইটিতে বাগনান নামটির উৎপত্তি ব্যাখ্যা করেছেন। বাগনান শব্দটিকে সন্ধি বিচ্ছেদ করলে বাগ+নান এই দুটি শব্দ পাওয়া যায়।এই নান শব্দের অর্থ দুটি– আরবী ভাষায় রুটি এবং গঞ্জ দুটোই বোঝায়। বাগ শব্দটি এসেছে দেবী বাগেশ্বরী থেকে। বৃন্দাবনতলার মাঠে বাগেশ্বরী দেবীর মন্দির ঘিরে যে বাজার বা গঞ্জ বসে তাই কালক্রমে ‘বাগনান’-এ এসে দাঁড়ায়। একইভাবে পিপুলগাছের নীচে যে বাজার তাকে ঘিরে গ্রাম পিপুলনান। সাধারণত একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে নান উপাধির গ্রামগুলি বেশীরভাগই মুসলমান প্রধান। যেমন হিন্দুপ্রধান গ্রামগুলি পুর দিয়ে শেষ হয়। যেমন কমলপুর , শ্রীরামপুর,— আবার মিশ্র উদাহরণের ব্যতিক্রম আছে— নতিবপুর—।এখানকারই আরেকটি গ্রাম ‘বাউনধুকরে’। এই নামটির উৎপত্তি প্রসঙ্গে তারাপদ বাবুর মত হল গ্রামটি যিনি পত্তন করেন তিনি নিজের নাম না দিয়ে যে ব্রাহ্মণকে দিয়ে পুকুর পূজা করিয়েছিলেন তাকেই সম্মান জ্ঞাপন করে এই নাম রাখেন। এখন পুকুর হিসেবে যা পূজিত হয় তা আসলে গেঁড়ি শামুকে ভরা ডোবা। গেঁড়ি ভরা ডোবা গ্রামের কথায় গেঁড়িয়া। বামুন পূজিত গেঁড়িয়া – সেখান থেকে বামুন দেওয়া গেঁড়িয়া কালে কালে লোকমুখে হল বাউন-দে-গেঁড়িয়া এবং উত্তরকালে বাউনদুকুড়িয়া বা বাউনধুকরে।
হাওড়ার অন্যতম প্রাচীন জনপদ সালকিয়ার মত বাগনানও হাওড়ার সেই কতিপয় সৌভাগ্যবান জনপদের মধ্যে একটি যা নেতাজী সুভাষচন্দ্রের পাদস্পর্শে ধন্য। ১৯৪০ সালের ৫ ই মে’র সেই সকাল আজও বহু প্রবীণের কাছে গতকালের মতই স্পষ্ট, স্বপ্নের মত উজ্জ্বল হয়ে আছে।বাগনানের চিত্রবাণী সিনেমাহলের পশ্চিমে পান আড়তের ময়দানে অগণিত স্বাধীনতাকামী মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে ভারতবর্তিষের নয়নের মণি সুভাষ দৃপ্ত কন্ঠে ঘোষণা করেছিলেন,”Country men prepare for struggle”। পরের দিন হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ডস ও আনন্দবাজার পত্রিকার পাতায় পাতায় কেবল নেতাজীর বাগনান ও উলুবেড়িয়ার এই সভার খবর।৪মে নেতাজীর এইসভার বিজ্ঞপ্তি জারি করে “Hindustan Standard-এ ( ৪মে১৯৪০) যে বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল:-
“Public meeting at Bagnan
place- Maidan by the side of Bagnan Station
Date & Time-Sunday,the 5th May at 5-30 P.M.
President–Srj Subhas Chandra Bose.
Loud speakers and special arrangement for ladies will be made in both metings.”
সভার পরের দিন হেডলাইনে উদ্ভাসিত হয়ে নেতাজীর সভার খবর।ঐ কাগজেই ৬.৫.৪০ তারিখে লেখা হয়েছে…
“The public reception at Bagnan was held under the auspices of the Juva Sangha and the Congress Comittee.”
এই বাগনান যে একসময় বাংলার বীর সন্তান ক্ষুদিরামকেও দেখেছে তা আজকের প্রজন্মের অনেকেই হয়ত জানে না। হাওড়ার বাগনানের দেউলগ্রামে ছিল ক্ষুদিরাম বসুর মামাবাড়ি।
বাগনান পেয়েছে কাজী নজরুলের পাদস্পর্শও। ১৯২৬ সালের জুন মাস নাগাদ কংগ্রেসের জেলা সম্মেলন উপলক্ষে বাগনান থানার আগুনসি গ্রামে এসেছিলেন বিদ্রোহী কবি।উদ্যোক্তা ছিলেন বাগনানের ভূমিপুত্র বিভূতি ঘোষ।’ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম’ এবং ‘ মঞ্জুষা’ পত্রিকায় নজরুলের সেদিনের সেই আগমনের খবর প্রকাশিত হয়। নজরুলের বয়স তখন ২৭।বাগনান ষ্টেশন থেকে হেঁটে এক সুবিশাল পদযাত্রার সাথে চার কিমি দূরের আগুনসি গ্রামে পৌঁছন।সেদিন বিনা মাইকে কেবল হারমোনিয়াম সহযোগে নিজের লেখা ‘জাতের নামে বজ্জাতি’ এবং ‘ ওঠ রে চাষি জগদ্বাসী ধর কষে লাঙল’ গান দুটি গেয়েছিলেন।
বাগনানকে যারা ভারত তথা সমগ্র বিশ্বের দরবারে সমাদৃত করেছে তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন–
আবুল হুশেন ( ডাক্তার ) – ১২৬৯ বঙ্গাব্দে বাগনানে এনার জন্ম । উচ্চ শিক্ষার্থে তিনি প্রথমে ইংল্যান্ড পরে আমেরিকা থেকে চিকিৎসা বিদ্যায় এম.ডি হন। ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি তিনি অনেক বইও লিখেছিলেন । নিজের তৈরি হোসেনী ছন্দে ‘স্বর্গারোহণ’, ‘যমজ ভগিনী’ ও ‘জী-স্ত পুতুল’ নামে তিনটি কবিতা লিখেছিলেন।
দ্বারকানাথ মিত্র- বাগনানের আগুনসি গ্রামেই জন্মেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের এই বিখ্যাত উকিল এবং বিচারপতি ।
হরিপদ চট্টোপাধ্যায়– হরিপদ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন নাট্যকার। বাংলা নাট্যধারার পরিবর্তনে হরিপদ চট্টোপাধ্যায় এর লেখা ‘ভৃগু চরিত’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।যাত্রা জগতে তিনি আখ্যা পেয়েছিলেন ‘বাংলার বিবেক’ নামে। কল্যাণপুরে পশুপতি প্রেসের প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গাব্দ ১৩০৮ সালে। এই ছাপাখানাটি ছিল বিদ্যাসাগরের যা তিনি কিনে নিয়ে প্রথমে কোলকাতায় ও পরে নিজের গ্রাম কল্যাণপুরে স্থানান্তর করেন। হরিপদ বাবু বাংলা ছাপাখানার ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন তালপাতার পুঁথি ছাপিয়ে। ১৩০৯ বঙ্গাব্দের শেষ দিকে ১৪০ পাতার সম্পূর্ণ শ্রী শ্রী চন্ডী তালপাতায় ছাপিয়ে প্রকাশ করেন।তালপাতার এই শ্রী শ্রী চন্ডী এত জনপ্রিয় হয় যে প্রায় চল্লিশ হাজার কপি ওনাকে ছাপতে হয়েছিল।
বিভূতিভূষণ ঘোষ- বাগনানের আরেক কৃতী সন্তান স্বাধীনতা সংগ্রামী এই বিপ্লবীর উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে পড়েঃ১) গান্ধিজীর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন।২) বিপ্লবী বিপিন বিহারী গাঙ্গুলির পরামর্শে বাইনান উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রসংগঠন তৈরী করাতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৩)১৯৩০ সালে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগদান করবার উদ্দেশ্যে বাগনানের বাঙ্গালপুরে একমাসব্যাপি প্রশিক্ষণ শিবির ও বাগনানে সত্যাগ্রহী শিবিরের আয়জনের মূল দায়িত্বে ছিলেন।৪) ৫০০ সত্যাগ্রহীকে নিয়ে আমতায় বৈশাখী পূর্ণিমায় মদ দিয়ে মেলাইচন্ডীর মহাস্নানের প্রথা বন্ধ করেন।৫)মুকুন্দদাসের স্বদেশী যাত্রার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে “দাদা” পালা লেখেন যেটি হাওড়া হুগলি মেদনীপুরের গ্রামে গ্রামে মঞ্চস্থ হয় এবং অগণিত গ্রামবাসীকে জাতীয়তাবোধে উদ্বুূদ্ধ করে ৬)পূর্ণালে দেশবন্ধু পল্লী উন্নয়ন ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠা করেন।
ডঃ অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়- বাগনানের এই মানুষটিকে কিন্তু অনেক বাগনানবাসীই চেনেন না।ভারতের জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষনায় অন্যতম নক্ষত্র অধ্যাপক । এম. পি.বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়মে জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণা বিভাগে সিনিয়র সায়েন্টিস্ট।বিজ্ঞানী জীবনে “নটিক্যাল অ্যালম্যানাক ইউনিট ” – এর প্রথম ডিরেক্টর যার আজকের নাম — ” পজেশনাল অ্যাষ্ট্রোনমি সেন্টার “। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাষ্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের এফিমারাইউস কমিশনে একমাত্র নির্বাচিত ভারতীয় সদস্য হন বাগনানের এই ভূমিপুত্র।এছাড়াও ইংল্যান্ডের রয়্যাল অ্যাষ্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ফেলো, ব্রিটিশ অ্যাষ্ট্রোনমিক্যাল- এ নির্বাচিত আজীবন সদস্য এবং পশ্চিমবঙ্গ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ফেলো নির্বাচিত হন ইনি । ২২৫ টির বেশি গবেষণা পত্র ও ইংরেজি ও বাংলা মিলিয়ে ২৫০০ টিরও অধিক প্রবন্ধ লেখেন। ইংরেজীতে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তিনটি এবং পাঁচটি বাংলা ভাষায়।
আফসার আহমেদ– বাংলা সাহিত্য জগতের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিকও বাগনানের সন্তান। ২৭ টি উপন্যাস, ছোটগল্প ও প্রবন্ধ মিলিয়ে ১৪টি মূল্যবান গ্রন্থ রয়েছে তাঁর। ২০১৭ সালে ‘নিখোঁজ সেই মানুষটা’ উপন্যাসের জন্য সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরষ্কারও পান।সৃষ্ট সাহিত্যকীর্তির মধ্যে রয়েছে খণ্ডবিখণ্ড, স্বপ্নসম্ভাস, দ্বিতীয় বিবি, মেটিয়াবুরুজের কিসসা ইত্যাদি।
তারাপদ সাঁতরা– বাগনানকে একা হাতে সারা বিশ্বের দরবারে যিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি বাগনানের সন্তান তারাপদ সাঁতরা।নবাসন নিবাসী এই বাঙালি পুরাতত্ত্ববিদ এবং লোকসংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ অনুসন্ধান ভিত্তিক গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নিজস্ব স্বতন্ত্র ধারা তৈরি করেছিলেন।তারাপদ সাঁতরা, হাওড়া এবং মেদিনীপুর জেলার পুরাকীর্তি, গ্রামজনপদের ইতিহাস, লোকশিল্প ও শিল্পীসমাজ, লোকউৎসব, ধর্মীয় স্থাপত্য, কলকাতার মন্দির মসজিদ, কারুভাস্কর্য প্রভৃতি বিষয়ে অনেকগুলি বই লিখেছিলেন। তাঁর চেষ্টায় সমাজসেবক অমল গাঙ্গুলির সাথে বাগনানের আনন্দনিকেতনে কীর্তিশালা গড়ে ওঠে। বর্তমানে এখানে হাওড়া জেলার পুরাতত্ত্ব সংগ্রহশালা আছে। তারাপদ সাঁতরা ছিলেন কৌশিকী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। তাঁর ছশোর বেশি প্রবন্ধ নানা জায়গায় প্রকাশিত হয়েছে।
বাগনানের সবথেকে ঐতিহ্যশালী স্কুল বাগনান হাই স্কুল যা ১৮৫৪ সালে স্থাপিত হয়। চন্দ্রপুর গ্রামের জমিদার হেমচন্দ্র ঘোষ এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা।বাগনানে পনেরোটির বেশী বাংলা মাধ্যম হাই স্কুল এবং একটি কলেজ রয়েছে, বাগনান কলেজ।বাগনানের শিক্ষাভুবনে ‘দি স্কলার স্কুল’ এক নবতম সংযোজন।বাগনানের রবিভাগ গ্রামে দামোদর নদের পাশে হিউম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ‘দি স্কলার স্কুল’ একটি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা বাংলা এবং আসামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির কাছে শিক্ষার অধিকার পৌঁছে দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে।
বাগনানের বিখ্যাত হাট বাকসিহাট। বাগনানের ঐতিহ্যশালী প্রাচীন পুজোগুলোর মধ্যে অন্যতম চন্দ্রভাগ গ্রামের চট্টোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো। বাগনানের অন্যতম প্রাচীন মন্দির খালোড়ের বিখ্যাত কালী মন্দির। বনেদী বাড়ির পুজোর মধ্যে অন্যতম বাগনানের নন্দীবাড়ির পুজো।এখানে এখনও সন্ধিপুজোর আগে ফায়ারিং করা হয়। তারপর শুরু হয় অষ্টমী-নবমীর সন্ধিক্ষণের পুজো।বাগনানের রথতলা সংলগ্ন এলাকায় বাস নন্দী পরিবারের।নন্দী পরিবারের আদি বাসস্থান হুগলির শিয়াখালার পাতুল গ্রাম। পাতুল গ্রামে নন্দী পরিবারে ঠিক যে রীতিতে পুজো হয়, সেই ধারা বজায় রেখে এখনও পুজো হয় হাওড়ার বাগনানের বাড়িতেও।এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য এ বাড়ির পুজোর সঙ্গে বাংলার পরাক্রমী বিপ্লবী বাঘাযতীনের একটি যোগসূত্র আছে। অনেকের-ই অজানা বাঘাযতীন দীর্ঘদিন বাগনানে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন এবং এখানকার অন্যতম প্রাচীন স্কুল বাগনান হাইস্কুলে তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা লুকিয়েছিলেন।এখান থেকেই বাঘাযতীন বালেশ্বরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন ইংরেজদের সঙ্গে লড়াই করবেন বলে।তার আগে এই নন্দী বাড়ির দুর্গাপুজোয় হাজির হয়ে দেবীর আশীর্বাদ নিয়ে গিয়েছিলেন।
বাগনান থানার অন্তর্গত হারোপ গ্রামের চক্রবর্তী বাড়ির দক্ষিণাকালী ‘বুড়িমা’ নামে খ্যাত। প্রায় চারশো বছরের অধিক প্রাচীন এই প্রতিমাকে নিয়ে অনেক জনশ্রুতি প্রচলিত।
লক্ষ্মীপূজার জন্য আমতার জয়পুর থানার খালনার নাম বেশী পরিচিত হলেও বাগনান থানার অন্তর্গত জোকা গ্রামের লক্ষ্মী পূজাও কিন্তু একই সমারোহে পালিত হয়। খালনায় মাতৃরূপে পূজিত হন দেবী অন্যদিকে জোকায় হন কন্যারূপে।
হাওড়া জেলার বাগনান থানার বাঁটুল গ্রামে মোটাপুকুর নামে সাড়ে সাত বিঘে জায়গা জুড়ে একটি বিখ্যাত জলাশয় বা পুকুর আছে যেখানে প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ডুব দিলেই নাকি সুস্থ সবল হওয়া যায়।
বাগনানের খ্যাতি কেবল ইতিহাস সমৃদ্ধির জন্য নয়, তার নিজস্ব লোকশিল্প বাগনানকে বাংলার একটি অনন্য জনপদ করে তুলেছে।এর মধ্যে অন্যতম কালিকাপাতাড়ি লোক নৃত্য।এই লোক নৃত্যের উৎপত্তি শিবচতুর্দশীর রাতে শিবের ব্রত করা মহিলাদের জাগিয়ে রাখতে।প্রধানত, হিন্দু পুরাণ ও মহাকাব্যের ভিত্তিতে মুখে মুখে রচিত বিভিন্ন টুকরো কাহিনীর সংমিশ্রণ হল এই নাচ। তবে বর্তমানে আধুনিক প্রজন্মের লোক নৃত্যের এই ঘরানাটির প্রতি নিরাসক্তি ক্রমেই এটিকে লুপ্তপ্রায় করে তুলেছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানে সমৃদ্ধ বাগনানে প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন মিলেছে ভুরি ভুরি।বাগনান থানা সংলগ্ন হরিনারায়ণপুর গ্রামে খ্রিস্টীয় দ্বাদশ ত্রয়ােদশ শতকের দুটি পাথরের বিমূর্তি এবং সপ্তম ও অষ্টম শতকের বিষ্ণু খােদিত প্রস্তর ফলক পাওয়া গেছে। এছাড়াও একটি ছােট পাথরে খােদিত মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তিও পাওয়া গেছে। মেল্লক গ্রামের মদন গোপাল জিউর মন্দিরে ব্যবহৃত পাল যুগের পাথরের স্তম্ভ,পাশের বাটুল গ্রামে দ্বাদশ-ত্রয়ােদশ শতকের একটি বিষ্ণুমূর্তির নিদর্শন মিলেছে। মানকুর গ্রামে চামুণ্ডা মূর্তি, খালােড় গ্রামের কালীমন্দিরের পাশে ধর্ম ঠাকুরের থানে কুর্মমূর্তি, বিষ্ণুমূর্তি, চামুণ্ডা মূর্তি, বাইনানে পাওয়া এগারো বারো শতকের ভগ্ন সূর্যমূর্তি প্রভৃতি এখানকার উল্লেখযােগ্য প্রত্নতাত্ত্বিক দৃষ্টান্ত।
বাগনান থানার অন্তর্গত বৈদ্যনাথপুরের গাজন উৎসব এখানকার অত্যন্ত বিখ্যাত একটি লোক উৎসব যা প্রায় সতেরো দিন ধরে চলে। আবার বাণ ফোঁড়া উৎসবটির জন্য বাইনান গ্রামটি বিখ্যাত।
এখানকার দেউলগ্রামের শিং ও চিরুনি শিল্প সারা ভারতে অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে।বাগনানের বাঁটুল গ্রাম শঙ্খ ও ঝিনুক শিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ।বাঁটুল গ্রামের ‘ শাঁখারী পাড়ার ‘ দত্ত পরিবার এই শিল্পটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আজ প্রায় তিনশো বছরের’ও বেশী সময় ধরে বংশ পরম্পরায়।একটি শাঁখের মাঝের অংশ থেকে তৈরি হয় শাঁখা।শাঁখায় যে নকসা হয় তার আবার গঠন অনুসারে বিভিন্নতা আছে। শাঁখা সরু হলে যে নকশাগুলি হয়- যবশীষ, যুঁই ফুল, বোন্দন, হাফমতিচূর, ইত্যাদি।শাঁখা মোটা হলে- শঙ্খ পদ্ম, লতা পাতা ইত্যাদি। ঝিনুক শিল্পের জন্য বিখ্যাত বাগনান থানার কাজীভূঁঞেড়া ও কল্যাণপুর গ্রাম।কাজীভূঁঞেড়া গ্রামের মেটে ও দুয়ারী পরিবার এই কাজগুলি করে।কাঁসার বাসন তৈরি তে বিখ্যাত বাগনান থানার কল্যাণপুরের শিল্পীরা।হাওড়ার বাগনান অঞ্চলের নবাসনে জেলার একমাত্র পুরাতাত্ত্বিক সংগ্রহশালা, মূলত জেলার একমাত্র পুরাতাত্ত্বিকতারাপদ সাঁতরার অক্লান্ত পরিশ্রমে জেলায় প্রাপ্ত বহু পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন এই মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। ১৯৬২ সালের ১৪ই জানুয়ারি, এটির উদ্বোধন হয়। ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ২৩শে এপ্রিল ১৯৭২ সালে এটি পরিদর্শন করেন
এতো গেল বাগনানের প্রাচীন গৌরবের জয়গাথা।এক বিংশ শতাব্দীতে বাগনানকে তার অধিবাসীরা কিভাবে তার গৌরবোজ্জ্বল মুকুটে একের পর এক সাফল্যের পালকে মহিমান্বিত করেছে নীরবে, কিভাবে সবার অগোচরে তারা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সেটাও বরং জেনে নেওয়া যাক এই অবসরে।
বাগনানের কাছারিপাড়ার বাসিন্দা মহিব্বর রহমান মল্লিক ওরফে কালো মল্লিক পেশায় রিক্সা চালক।সারাদিন রিক্সা চালিয়ে আয় ২০০ টাকা। কিন্তু এই অতি সামান্য মানুষটিকে গোটা বাগনান একডাকে চেনে নেতাজির প্রতি তাঁর নজিরবিহীন অকৃত্রিম ভালোবাসার কারণে।তিনিই এখন বাগনানের ‘নেতাজি’।একটা সময় ছিল আয় যাই হোক প্রতিদিন ৫০ টাকার ফুল-মালা কিনে বাড়ি ফেরার পথে বাগনান স্টেশন সংলগ্ন নেতাজি মূর্তিতে মালা পরাতেন নিয়ম করে।সংসারের চরম অনটন গৃহিণীকে সন্তান নিয়ে ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছে কিন্তু মহিব্বর রহমান মল্লিক তাঁর নেতাজি-প্রেমে এরপরেও অটল ।
বসুধৈব উত্স প্রাণ। বাগনান থানার স্নেহাঞ্জলি ভবনে ২০০২ সাল থেকে প্রকৃতি আন্দোলনে অন্যতম হাতিয়ার প্রকৃতি নির্ভর এই ষান্মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে প্রতি ইংরেজি মাসের প্রথম রবিবার।
সারা বাংলার মধ্যে মূলত হাওড়ার বাগনান, দুই মেদিনীপুর ও নদীয়াতেই জবা ফুলের চাষ হয়।এই অঞ্চল গুলি থেকেই প্রায় ৮০ শতাংশ জবা সরবরাহ করা হয় সারা বাংলা তথা ভারতে।বাগনান ১ নম্বর ব্লকের গোপালপুরকে বলা হয় ‘টম্যাটো গ্রাম’।এখানে প্রায় সাড়ে তিনশো বিঘা জমি জুড়ে টম্যাটোর চাষ হয়।বাগনানে ইদানীং স্ট্রবেরী ও ব্রকলি চাষও শুরু হয়েছে।
বাগনানের দুপাশ দিয়ে হুগলী ও রূপনারায়ণ প্রবাহিত হয়েছে আর তার শরীর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সহমর্মিতা, করুণার অদৃশ্য এক ফল্গুধারা।সেই অন্তঃসলিলা ফল্গুধারার উৎস এখানকার নজিরবিহীন প্রত্যয়ী অধিবাসীদের হৃদয়।
বাইনান গ্রাম পঞ্চায়েতের বালি গ্রামের সেখ আনসার যিনি আজ প্রায় চল্লিশ বছর ধরে এলাকার একটি কালী মন্দিরে ও পাড়ার পুজোয় জবা ফুল দিয়ে আসছেন মায়ের প্রতি নৈবেদ্য হিসেবে।আজকের এই ধর্মীয় হানাহানির যুগে এক অনন্য ব্যতিক্রমী ধর্মীয় সম্প্রীতির নজির সৃষ্টি করেছেন এই মানুষটি।
রূপালি সরকার।পেশায় ভিখারিনী।সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তর এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তর রূপালি সরকারকে “অগ্নিকন্যা” সম্মানে ভূষিত করেছে।তা এমন কি করেছেন এই ভিখারিনী? পনেরো বছর আগে সাংসারিক সমস্যার কারণে বাবা মা’কে ছেড়ে একাই নিরুদ্দেশের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন রূপালি।না ছিল কাজ, না ছিল অর্থ। একরকম নিরুপায় হয়েই বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তিকে অর্থ সংস্থানের উপায় হিসেবে।আজ সেই রূপালি সরকারই ১২০ জন ভিক্ষুকের আশ্রয়স্থল, তাদের ভিখারিনী মা।নিজের পেট চালানোর পাশাপাশি এই ভিক্ষুকদের সারা জীবনের দায়িত্বই নিয়ে নেন রূপালি।
অবিচল সংকল্পের আরেক নাম বাগনানের মাধবী ঘোষ।বাস বাঙালপুর।এই মহিলাই এখানকার বধূ, কন্যাদের হাতে ধরে শিখিয়েছেন হাতের কাজ।স্বাদ পাইয়েছেন নারী অধিকারের।একা হাতে তৈরি করেছেন মহিলা বিকাশ কো- অপারেটিভ।যে উদ্যোগ শুরু হয় ১৫০ জন মহিলাকে নিয়ে আজ তার সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার।৮০টি গ্রাম নিয়ে সে এক বিপুল কর্ম সংস্থান। এলাকার প্রান্তিক মহিলারা নিজের পছন্দমতো কাজ করেন।কেউ করেন জরির কাজ,কেউ দিয়েছেন ছোটো দোকান, কেউ করেন মাছ চাষ, কেউ ধান চাষ বা মাটির জিনিস তৈরি।আর্থিক সাহায্য করে বাগনান মহিলা বিকাশ সমিতি। রাজ্য সরকারের সমবায় দপ্তর দিয়েছে সমবায় রত্ন পুরস্কার।
অনেকেই জানেন না এই বাগনান থেকেই কিন্তু চন্দ্রশেখর ঘোষ ‘বন্ধন ব্যাংক’-এর যাত্রা শুরু করেন। আজ থেকে দেড়দশক আগে ২০০১ সালে ক্ষু মাত্র তিনজন কর্মী নিয়ে একটি ভাড়া বাড়িতে এর সূচনা হয়।
বাগনানের আন্টিলাতে গড়ে উঠছে হাওড়ার বৃহত্তম ইকো পার্ক।বাগনান থানার আন্টিলা, বাটুল-বৈদ্যনাথপুর ও চন্দ্রভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মেদিনীপুর খালের পাশে দীর্ঘ সাত কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠছে হাওড়া জেলার বৃহত্তম ইকোপার্ক শহীদ মানস সেনের নামে’মানস উদ্যান’।
২০১৭ মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান পেয়েছিল দেউলগ্রাম মানকুর বক্সী হাইস্কুলের ছাত্র শায়ন সফিক৷ সেই বছরই আনটিলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পাইকপাড়ি হাইস্কুলের আবদুল মালেক খান মেধা তালিকায় দশম স্থান অধিকার করে৷
২০১৯ সালে বাগনান থানার প্রথম, হাওড়া জেলার মধ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে বেনাপুর চন্দনাপাড়া হাই স্কুল এর সৌম্যদীপ মহিস।।
বাগনানের আন্টিলার ঝুনু দত্ত ও মিহির দত্তকে অনেক বাগনানবাসী না চিনলেও এই দম্পতি আজ ভারতবিখ্যাত।সুপারি পাতা, নারকেল পাতা, কচুরিপানা কিংবা বেতের মতো প্রাকৃতিক সামগ্রী দিয়ে অবিশ্বাস্য সব শিল্পকর্ম বানিয়ে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন এই দম্পতি।২০১২ সালে ঝুনু দত্ত পান রাষ্ট্রপতি পুরস্কার আর তাঁর স্বামী মিহির দত্ত ২০১৪ সালে ন্যাশন্যাল মেরিট অ্যাওয়ার্ড পান।
এখানকার সবথেকে বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান হল পানিত্রাসের সামতাবেড়ে গ্রামে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের বাড়ি। পানিত্রাসে গেলে কথাশিল্পীর অন্য আরেকটি পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি যে হোমিওপ্যাথি ডাক্তার ছিলেন তা কিন্তু অনেকেই জানেন না। বাড়ির সামনে তাই বড় বড় হরফে লেখা আছে ‘ডাক্তার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’।পানিত্রাসে প্রতি বছর শরত্ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বাগনান বেড়ে চলেছে আড়ে। বেড়ে চলেছে বহরে। সভ্যতা যত এগিয়েছে বাগনান তত নিজেকে ধীরে ধীরে খাপ খাইয়ে নিয়েছে পরিবর্তিত সময়, পরিবর্তিত চাহিদার সঙ্গে। শহর জুড়ে উড়ালপুল হয়েছে, আগের মন্থর গতি এখন দ্রুততর হয়ে উঠেছে। কিন্তু তারই সাথে সাথে অনেক ইতিহাস নীরবে মরে যাচ্ছে গতির সাথে পাল্লা দিতে না পেরে।সভ্যতার এই জোয়ার ভাঁটা বুকে নিয়ে বাগনান এগিয়ে চলেছে যেভাবে রূপনারায়ণ এগিয়ে চলেছে অনাদি কাল ধরে।
তথ্যসূত্র
- https://en.wikipedia.org/wiki/Bagnan#High_schools
- https://en.wikipedia.org/wiki/Bagnan
- https://xiaomi.dailyhunt.in/
- https://bn.m.wikisource.org/
- https://www.google.com/
- https://www.anandabazar.com/
- https://bengali.oneindia.com/
- http://www.aprim2017.tw/PDF/S7-4/S7-4-6.pdf
- https://www.facebook.com/howrahzillerkatha/
- http://bengalbulletin.co.in/
- https://www.anandabazar.com/
- https://www.sahityashruti.com/
- https://allevents.in/.
- https://bengali.oneindia.com/
- https://kolkata24x7.com/
- http://bengalbulletin.in/
- http://bengalbulletin.in/
- https://www.tdnbangla.com/
- http://m.bangla.eenaduindia.com/
- http://www.bartamanpatrika.com/
- http://khabarindiaonline.com/2018/10/17/barir-pujo/
- http://bengalbulletin.co.in/
- https://m.dailyhunt.in/
- https://m.dailyhunt.in/
- https://www.sangbadpratidin.in/bengal/beggar-awarded-by-ngos-in-uluberia/
- https://eisamay.indiatimes.com/sports/cricket/netaji/articleshow/67645705.cms
- http://uluberia.gov.in/pages/display/104-bagnan%E2%80%93ii
- https://web.dailyhunt.in/news/india/bangla/burdwan+today-epaper-burdwant/prasiddh+kalikapatadi+lokanrity+bharater+garb+haoda+jela-newsid-110572134
- https://bn.m.wikipedia.org/
- https://eisamay.indiatimes.com/nation/tomato-village/articleshow/68222878.cms
- https://www.banglahunt.com/strawberry/
- https://m.dailyhunt.in/
- হাওড়া জেলার পুরাকীর্তিঃ তারাপদ সাঁতরা।প্রকাশনী-পূর্ত (পুরাতত্ত্ব) বিভাগঃ পশ্চিমবঙ্গ সরকার।পৃষ্ঠাঃ ৮,৩৫,৩৭,৪৩
- হাওড়া জেলার লোক সাহিত্য ও লোক সংস্কৃতি ঃ অবন্তী রায়।প্রকাশনী- কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠাঃ৩,১৬৮,১৮০-১৮১,৪১২,৪২০,৪২৪,৪২৬
- হাওড়া জেলার ইতিহাসঃ (প্রথম খণ্ড) অচল ভট্টাচার্য্য।প্রকাশনী- শিবা এন্ড কোং।পৃষ্ঠাঃ ৬০,১২২,১৭২-১৭৩,২৩১-২৩২,২৫৮,২৭৫,২৮৩,২৯৭,৩০৭,৩২০
- http://www.mzamin.com/details-archive2016.php?mzamin=81175
- https://yourstory.com/bangla/be32da1a82-dutt-is-busy-couple-srstisukhe-bagananera
শ্যামপুর 2নং ব্লকের আদি বাসস্থান আমার ,তবে বর্তমান সময়ে বাগনানের বাসিন্দা হওয়ায় ভীষণ নিয়ে লেখাটি পড়ে অনেক অনেক সমৃদ্ধ হলাম। ধন্যবাদ।
It’s sad that there is no place of Maulana Azad Academy of Hallyan , a great residential educational institution, in your article. Azad Academy produced numerous diversified talent in their field of work. Its constantly contributing NEET, AIEEE qualifiers every year . In 10th and 12th board exams , Azad Academy is leading institution throughout bagnan.Hopefully , your lack of knowledge led you to put it in. Rest was apt.
Dr.Wasim Karim
MBBS
পরিবেশনটি অনেক অজানা তথ্য বাগনানবাসীর কাছে হাজির করলেও আরো research এর পয়োজন ছিল।বাগনানের অনতরগত সাহড়া একটি ছোট গাম। যেখানে বহু কৃতী সন্তান বিদেশে বিশেষ সমমান অজজন করেছেন।কল্যান ঘোষ এর নামে আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় এ জীবত অবস্থায় science & technology কেন্দ্র রয়েছে। যা একটি বিরল ঘটনা।এছাড়া mathematican D.N.Mallick এই গ্রামের সন্তান।যার পাটিগণিত book বিখ্যাত।সেই যুগে England যাওয়ার অপরাধে গ্রামে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েছিল।এই তথ্য গুলো জানানোর দরকার ছিলো।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই অজানা তথ্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। বাগনান সম্পর্কে এরকম অজানা তথ্য থাকলে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ সহ অবশ্যই শেয়ার করবেন আমাদের সাথে।ধন্যবাদ।