ডি. ওয়াই পাটিল

ডি. ওয়াই পাটিল

ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাস ঘাঁটলে এমন কিছু মানুষের সন্ধান মেলে যাঁরা রাজনৈতিক দক্ষতার কারণে ততটা নয়, যতটা সমাজ এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য বিখ্যাত হয়ে রয়েছেন। তেমন তালিকার একেবারে উপরের দিকে স্থান পাবেন নিঃসন্দেহে মহারাষ্ট্রের ডি. ওয়াই পাটিল (D. Y. Patil)। তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছেন এবং একই সঙ্গে মহারাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে, পরিকল্পনার মাধ্যমে বহুবিধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মূল কাণ্ডারি ছিলেন। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের বেসরকারিকরণ তাঁর উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডগুলির অন্যতম। জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে তিনি যেমন কাজ করেছেন, তেমনি ত্রিপুরা, বিহারের মতো রাজ্যের রাজ্যপাল পদও অলঙ্কৃত করেছিলেন তিনি। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সদস্য হিসেবে নির্বাচিতও হয়েছিলেন তিনি। মহারাষ্ট্রে তাঁর শিক্ষাসংস্কার পথ দেখিয়েছিল গোটা ভারতবর্ষকেই। শিক্ষার অগ্রগতি এবং মানোন্নয়নে তাঁর অনবদ্য কৃতিত্বকে সম্মান জানাতে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে।

১৯৩৫ সালের ২২ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতের বোম্বাই প্রেসিডেন্সির (বর্তমানে মহারাষ্ট্র) অন্তর্ভুক্ত কোলাপুর জেলার আমবাপ নামক গ্রামে একটি কৃষিজীবী পরিবারে ডি. ওয়াই পাটিলের জন্ম হয়। তাঁর পুরো নাম ছিল জ্ঞানদেও যশবন্তরাও পাটিল। তিনি প্রথমে বিবাহ করেছিলেন শান্তাদেবীকে (Shantadevi) এবং পরবর্তীতে তাঁর স্ত্রী হন পুষ্পলতা (Pushpalata)। মি. পাটিলের পাঁচ সন্তানের মধ্যে একমাত্র কন্যা সন্তান হলেন নন্দিতা পালশেটকর এবং চার পুত্র সন্তান হলেন বিজয়. ডি পাটিল, আজিঙ্ক ডি. ওয়াই পাটিল, সতেজ পাটিল এবং সঞ্জয় ডি. ওয়াই পাটিল। এঁদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং কয়েকজন পাটিল গ্রুপের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সতেজ পাটিলও একজন কংগ্রেসের সদস্য এবং রাজ্য আইন পরিষদের সদস্য ছিলেন। এছাড়াও আবাসন, পরিবহন, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। অজিঙ্ক ডি. ওয়াই পাটিল ছিলেন পাটিল গ্রুপের চেয়ারম্যান, এছাড়াও সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ওয়ার্কার্স এডুকেশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ডি. ওয়াই পাটিলের একমাত্র কন্যা নন্দিতা ছিলেন পেশায় একজন ডাক্তার ও বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ। তিনি ‘ভারত গৌরব’ পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছিলেন। 

তিনি প্রথমে কোলাপুরের আলফোনসা স্কুল থেকে বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষা সমাপ্ত করেন। পরবর্তীকালে আরো উচ্চশিক্ষার জন্য অধ্যয়ন করেন তিনি এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এল.এল.বি অর্থাৎ আইন নিয়ে পড়াশোনার জন্য তিনি কোলাপুরের শিবাজী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং আইনের পরীক্ষায় সেখানে প্রথম শ্রেণির প্রথম স্থানাধিকারী হন। গবেষণা স্তরের পড়াশোনাও করেছিলেন তিনি এবং তার ফলে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। 

মানবহিতৈষী ডি. ওয়াই পাটিল রাজনীতিতে সাংবিধানিক বিভিন্ন পদে যুক্ত হবার আগে থেকেই এমনকি সক্রিয় রাজনীতির পাশাপাশিও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকেছেন। যেহেতু কৃষিজীবী পরিবারের সন্তান তিনি, তাই কৃষকদের দুঃখ, দুর্দশা, সমস্যার ব্যাপারে এগিয়ে এসেছেন তিনি সবসময়। ১৯৫৫ সালে তিনি কোলাপুরের শ্রী রাম কো-অপারেটিভ সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত হন যারা স্থানীয় কৃষিসংক্রান্ত নানা বিষয়ের ওপর কাজ করে, এমনকি প্রতিবন্ধী মানুষের চাহিদা পূরণে, দুঃস্থ শিশুদের লেখাপড়ায় সহায়তা করার কাজে তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯৫৭ সালে জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হিসেবেই তিনি কোলাপুর মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলে নির্বাচিত হন এবং ১৯৬২ সাল পর্যন্ত এই পদে বহাল থাকেন। কোলাপুর মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানও নিযুক্ত হয়েছিলেন ডি. ওয়াই পাটিল। ১৯৬০ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত ব্লক ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি । ১৯৬৭ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিনি কোলাপুর ডিস্ট্রিক্ট কংগ্রেস কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ডি. ওয়াই পাটিল মহারাষ্ট্র বিধানসভার সদস্য পদ অলঙ্কৃত করেন। সেসময় তিনি বস্তি এলাকার উন্নয়নের জন্য যেসব পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন তা বর্তমানকালে শুধু মহারাষ্ট্রেই নয়, আরও অনেক রাজ্যে অনুসরণ করা হয়৷ ১৯৬৭ এবং ১৯৭২ সালের নির্বাচনে তিনি পানহালা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত মহারাষ্ট্র স্টেট ফার্মিং কর্পোরেশনের ডিরেক্টর হিসেবে তিনি কাজ করেছিলেন। ১৯৭৫-৭৬ সালে মহারাষ্ট্র ইরিগেশন ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ডিরেক্টর, সাউথ সেন্ট্রাল রেলওয়ে অ্যাডভাইজারি কমিটি এবং মুম্বাইয়ের হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম বোর্ডের সদস্য হিসেবে কাজ করেন মি. পাটিল। ১৯৮০ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। 

এছাড়াও আরও গুরুত্বপূর্ণ যেসব সংস্থায় তিনি যুক্ত ছিলেন সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য টেলিফোন অ্যাডভাইজারি কমিটি (১৯৮১-৮৪), কোলাপুর ডিস্ট্রিক্ট প্ল্যানিং কমিটি (১৯৮১-৮৪), দ্য ওয়েস্টার্ন মহারাষ্ট্র দেবস্থান কমিটি (১৯৮৯-৯৪), শিব মুদ্রা প্রতিষ্ঠান (১৯৮৯-বর্তমান), কন্টিনেন্টাল মেডিকেয়ার ফাউন্ডেশন, রাজস্থানের জয়পুরে অবস্থিত এস আর সি মিউজিয়াম, মুম্বাইয়ে অবস্থিত ভারতীয় বিদ্যা ভবন ইত্যাদি। 

নানান মহৎ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা ডি. ওয়াই পাটিল সভ্যতার ইতিহাসে উজ্বল হয়ে থাকবেন শিক্ষার অগ্রগতি এবং উন্নতিসাধনের জন্য প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা এবং তার সফল বাস্তবায়নের কারণে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চস্তরের শিক্ষা এমনকি কারিগরি শিক্ষার জগত তাঁর মহান দর্শন, প্রজ্ঞা, অনাবিল আবেগ এবং উদারতার আলোকে হয়ে উঠেছে উদ্ভাসিত। প্রাথমিক থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরে উচ্চমানের শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্ন চোখে নিয়ে ডি. ওয়াই পাটিল তাঁর বিশাল কর্মযজ্ঞের সূচনা করেন। ঐতিহ্যের মূল্য এবং আধুনিকতার প্রয়োজনীয়তা এই দুইয়ের মিশ্রণেই তাঁর এই শিক্ষাচিন্তার জগত গড়ে উঠেছিল। মহারাষ্ট্রে কারিগরি শিক্ষার বেসরকারিকরণের সূচনার মূল কাণ্ডারি ছিলেন তিনি। কেবল পুনেতেই তাঁর দক্ষ নির্দেশনায় কিণ্ডারগার্টেন থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ৭৫টিরও বেশি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কেবলমাত্র শিক্ষাই নয়, পাশাপাশি গোটা ভারতবর্ষে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং ডাক্তারি শিক্ষা প্রদানের স্বপ্নও তাঁকে তাড়িত করেছে এবং সেই স্বপ্নপূরণেও তিনি সফল হয়েছেন। যেসব বিষয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তিনি গড়ে তুলেছিলেন সেগুলি হল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিসিন, ডেন্টাল সায়েন্স, ম্যানেজমেন্ট, আইন, ফুড টেকনোলজি, ফার্মেসি, আর্কিটেকচার, নার্সিং, আয়ুর্বেদিক, কৃষিবিদ্যা, বায়োটেকনোলজি এবং স্পোর্টস। মি. পাটিল বিশ্বাস করতেন একজন ব্যক্তির কেবলমাত্র বৌদ্ধিক উন্নতি নয়, পাশাপাশি  শারীরিক উন্নতিরও প্রয়োজন। সেকারণে তিনি নেভি মুম্বাইয়েতে গড়ে তোলেন ডি. ওয়াই পাটিল স্পোর্টস অ্যাকাডেমি। এখানে উল্লেখ্য যে, মুম্বাইতে ডি. ওয়াই পাটিলের নামাঙ্কিত ক্রিকেট এবং ফুটবল উভয় খেলারই একটি স্টেডিয়াম রয়েছে।  

নেভি মুম্বাই, পুণে এবং কোলাপুরে উন্নতমানের শিক্ষার বিস্তারের জন্য তিনি ২০০২ সালে তিনটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেগুলিকে ভারতবর্ষের আধুনিক শিক্ষার আধার হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিনি তৈরি করেছিলেন সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল – কোলাপুরের ডি. ওয়াই পাটিল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (১৯৮৪), পুনের ড. ডি. ওয়াই পাটিল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং (১৯৮৪), মুম্বাইয়ের ড. ডি. ওয়াই পাটিল এডুকেশনাল অ্যাকাডেমি (১৯৯১), ডঃ ডি. ওয়াই পাটিল বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড বায়োইনফরমেটিক্স ইনস্টিটিউট, ডঃ ডি. ওয়াই পাটিল জুনিয়র কলেজ ইত্যাদি। এছাড়াও ডাক্তারিবিদ্যা অধ্যয়নের জন্য কোলাপুরে এবং নেভি মুম্বাইতে ডি. ওয়াই পাটিল মেডিকেল কলেজ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষার জন্য তাঁর গড়ে তোলা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হল ডঃ ডি. ওয়াই পাটিল বিদ্যানিকেতন, ডঃ ডি. ওয়াই পাটিল (মারাঠি মিডিয়াম) স্কুল, নেভি মুম্বাইয়ের পদ্মশ্রী ডি. ওয়াই পাটিল বিদ্যাপীঠ ইত্যাদি। এছাড়াও সারা বিশ্বের বাজারের সুবিধার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বেলজিয়ামে গড়ে তোলা হয়েছে ডি. ওয়াই পাটিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। ডি. ওয়াই পাটিল গ্রুপ এই সমস্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে দক্ষ হাতে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। এই গ্রুপের অধীনে কারিগরি এবং বি. এড, এম. এডের মতো পেশাদারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান যেমন গড়ে উঠেছে, তেমনি মেয়েদের কারিগরি শিক্ষার জন্যেও ডঃ ডি. ওয়াই পাটিল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (উওমেনস পলিটেকনিক), ডঃ ডি. ওয়াই পাটিল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ফর উওমেনের মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। আবার কৃষিবিদ্যার জন্য যেমন গড়ে তোলা হয়েছে কৃষি বিদ্যান কেন্দ্র তেমনি আর্কিটেকচার, কম্পিউটার সায়েন্স, পেট্রোলিয়াম টেকনোলজি, ফিজিওথেরাপি, হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজম, অ্যানিমেশন মিডিয়া ইত্যাদি আরও নানাবিধ, শিক্ষার প্রায় সমস্ত রকম শাখার জন্যই আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে ভারতবর্ষকে স্বনির্ভর এবং আপন বলে বলীয়ান একটি দেশ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্নকে সত্যি করার পথে এগিয়ে চলেছেন জ্ঞানদেও যশবন্তরাও পাটিল এবং তাঁর কর্মঠ দল। 

ভারতবর্ষের ঐতিহ্যশালী প্রাচীন চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কে আগ্রহ এবং তার পুনরুজ্জীবনের উদ্দেশ্যে তিনি মহারাষ্ট্রের নেরুলে এবং পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড়ে দুটি আয়ুর্বেদিক হাসপাতাল গড়ে তুলেছিলেন। এছাড়াও নেভি মুম্বাই, পুণে এবং কোলাপুরে উন্নতমানের দাঁতের চিকিৎসা-সম্পন্ন ডেন্টাল হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন তিনি। 

মূলত তিন রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ২০০৯ সালের ২১ নভেম্বর তিনি ত্রিপুরার রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২৭ নভেম্বর শপথ গ্রহণ করেন। ২১ মার্চ ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন। এরপর ২০১৩ সালের ৯ মার্চ তাঁকে বিহারের রাজ্যপাল পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ২২ মার্চ থেকে ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি বিহারের রাজ্যপাল পদ অলঙ্কৃত করেছিলেন। এম কে নারায়ণন নির্ধারিত সময়ের আগেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদ ছেড়ে দিয়ে স্ত্রী পদ্মিনীর সঙ্গে চেন্নাইতে চলে গেলে ডি. ওয়াই পাটিলকে ওই মধ্যবর্তীকালীন সময়ের জন্য রাজ্যপাল হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ করা হয়। ২০১৪ সালের ৩ জুলাই থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব সামলেছিলেন। 

শিক্ষা এবং সামাজিক কাজে অবদানের জন্য ডি. ওয়াই পাটিলকে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন নামকরা সংস্থা সম্মান জানিয়েছে বিবিধ পুরস্কার কিংবা ডিগ্রি বা পদক প্রদানের মাধ্যমে। সেইসব সম্মানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটির কথা এখানে বলা হল। ১৯৮৮ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানীয় ‘ডক্টরেট’ উপাধি প্রদান করে। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য দ্য নটিংহ্যাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি কিংডম ১৯৯৬ সালে তাঁকে ‘ডক্টরেট’ উপাধিতে ভূষিত করে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান বায়োগ্রাফিকাল ইন্সটিটিউট তাঁকে ‘ম্যান অফ দ্য ইয়ার ২০০৫’ ঘোষণা করে পুরস্কার প্রদান করেছিল। আমেরিকার আরিজোনার ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি রাউন্ড টেবল  ‘কালচারাল ডক্টরেট ইন ফিলসফি অফ এডুকেশন’ সম্মানে ভূষিত করেছিল জ্ঞানদেও যশবন্তরাওকে। ২০১২ সালে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি তাঁকে সম্মানীয় ডি.লিট উপাধি দিয়েছিল। ২০০০ সালে কোলাপুর মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন তাঁকে সম্মানীয় ‘সমাজশ্রী’ মানপত্র প্রদান করে। ২০০৭ সালে মুম্বই প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি শিক্ষায় অবদানের জন্য তাঁকে ‘রাজীব গান্ধী পুরস্কারে’ সম্মানিত করেছিল। ২০০৮ সালে মহারাষ্ট্র পত্রকার সংঘ তাঁকে ‘শ্রী মহারাষ্ট্র ভূষণ’ সম্মান প্রদান করেছিল। এসব ছাড়াও আরও অনেক সম্মান তিনি পেয়েছেন, কিন্তু সর্বোপরি ভারত সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে প্রায় বিপ্লব ঘটিয়ে দেওয়ার এই অসামান্য কৃতিত্বের জন্য তাঁকে ১৯৯১ সালে চতুর্থ-সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মশ্রী’ পদক প্রদান করে। 

আপনার মতামত জানান