গারফিল্ড সোবার্স

গারফিল্ড সোবার্স

বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাস ঘাঁটলে যে সব কিংবদন্তি ক্রিকেটারের নাম পাওয়া যাবে তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার স্যার গারফিল্ড সোবার্স (Sir Garfield Sobers)। যদিও ক্রিকেটমহলে তিনি মূলত স্যার গ্যারি বা গ্যারি সোবার্স নামেই খ্যাত। অত্যন্ত দক্ষ বোলার, সেইসঙ্গে ভীষণ আক্রমণাত্মক এক ব্যাটসম্যান এবং ফিল্ডিংয়েও দুর্দান্ত গারফিল্ডকে ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডার বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। বামহাতি এই ব্যাটসম্যান এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরের রেকর্ড গড়েছিলেন যেমন, তেমনি টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচ হাজারের বেশি রান করা ক্রিকেটারদের তালিকায় পঞ্চম-সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় রয়েছে তাঁর। রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সোবার্সকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন। ২০০৯ সালে সোবার্স আইসিসি ক্রিকেট হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।

১৯৩৬ সালের ২৮ জুলাই বার্বাডোজের ব্রিজটাউনে গারফিল্ড সেন্ট অব্রুন সোবার্সের জন্ম হয়। তিনি বাবা শ্যামন্ট সোবার্স এবং মা থেলমা সোবার্সের ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। ১৯৪২ সালের জানুয়ারি মাসে একটি জার্মান ইউ-বোটের সঙ্গে শ্যামন্টের জাহাজের সংঘর্ষ হলে তাঁর মৃত্যু হয় এবং গারফিল্ড মাত্র পাঁচবছর বয়সেই পিতৃহারা হন। জন্মের সময় সোবার্সের দু-হাতে একটি করে মোট দুটি অতিরিক্ত আঙুল ছিল, যা, শৈশবেই উৎখাত করেছিলেন তাঁর বাবা। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট, ফুটবল এবং বাস্কেটবল খেলায় ভীষণই পারদর্শী ছিলেন গারফিল্ড সোবার্স । ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ান মহিলা প্রু কিরবির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন সোবার্স। তাঁদের দুই পুত্রের নাম ম্যাথিউ এবং ড্যানিয়েল। তাঁদের দত্তক নেওয়া কন্যাটির নাম জেনেভিভ। যদিও ১৯৮৪ সালে এই দম্পতি বিচ্ছিন্ন হয়ে যান এবং অবশেষে ১৯৯০ সালে আইনি বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয় তাঁদের। এখানে উল্লেখ্য প্রু কিরবিকে বিবাহের আগে ১৯৬৬-৬৭ সালে ভারত সফরে এসে ভারতীয় অভিনেত্রী অঞ্জু মহেন্দ্রুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ান সোবার্স কিন্তু সে সম্পর্ক পরিণতি পায়নি।

বার্বাডোজের বে স্ট্রীট বয়েজ স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন গারফিল্ড। তিনি এবং তাঁর প্রতিভাবান ভাই জেরাল্ড তাঁদের বে স্ট্রীট বয়েজ স্কুলকে টানা তিনবছর প্রাথমিক বিদ্যালয় আন্তঃস্কুল ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে সাহায্য করেছিলেন।
তেরো বছর বয়সে তাঁর দুটি ক্রিকেট দলে খেলার সুযোগ হয়। বার্বাডোস ক্রিকেট লীগে কেন্ট সেন্ট ফিলিপ ক্লাব এবং বার্বাডোজ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের বে ল্যান্ডে অবস্থিত ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে খেলার জন্য নিযুক্ত হন তিনি। গারফিল্ড নেটে অনুশীলনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট খেলোয়াড় ডেনিস অ্যাটকিনসন-সহ ওয়ান্ডারার্স ব্যাটসম্যানদের বোলিং করার অভিজ্ঞতা লাভ করেন এবং শীঘ্রই একজন বাঁহাতি স্পিন বোলার হিসাবে তাঁর দুর্দান্ত দক্ষতা বিকশিত হয়। ১৯৫২-৫৩ মরসুমে সোবার্সকে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কলোনির সফর ম্যাচের জন্য বার্বাডোজ ট্রায়ালে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মূলত দলের দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি কিন্তু ফ্র্যাঙ্ক কিং চোটের কারণে খেলতে না-পারায় জায়গা হয় সোবার্সের। ১৯৫৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ১৬ বছর বয়সে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয় সোবার্সের। নয় নম্বরে ব্যাট করে তিনি তাঁর একমাত্র ইনিংসে সাত রানে অপরাজিত থাকেন কিন্তু বোলিং করে প্রথমে পঞ্চাশ রানের বদলে চার উইকেট এবং ৯২ রানের বদলে তিনটে উইকেট নিয়েছিলেন। আবার সতেরো বছর বয়সে মেরিলিবর্ন ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করে ৪৬ ও ২৭ রান করেন ও দুটি উইকেট নেন। এই দুই ম্যাচে তাঁর খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের জাতীয় দলে নির্বাচিত হওয়ার জন্য ছিল যথেষ্ট।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

মাত্র সতেরো বছর বয়সে ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে জামাইকার কিংস্টনে সাবিনা পার্কে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল গারফিল্ডের। সেই ১৯৫৪ থেকে শুরু করে পরবর্তী কুড়ি বছর অর্থাৎ ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছিলেন গারি সোবার্স। উক্ত অভিষেক ম্যাচেই সোবার্স ১৪ রানে অপরাজিত এবং ২৬ রান করেন নয় নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে। সেই টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে চারটি উইকেটও নিয়েছিলেন সোবার্স। সেই ম্যাচেই তাঁর প্রতিভার আঁচ পাওয়া গিয়েছিল এবং তারপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।

১৯৫৪-৫৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রথম টেস্টের জন্য সোবার্স নির্বাচিত হননি। সেই টেস্ট হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ত্রিনিদাদ এবং টোবাগোতে দ্বিতীয় টেস্টে খেলেন তিনি। সেই টেস্ট অমীমাংসিত ছিল৷ এরপর দক্ষিণ আমেরিকায় তৃতীয় টেস্টে ব্যাট হাতে ভালো রান না পেলেও প্রথম ইনিংসে তিনটে উইকেট নেন তিনি যদিও অস্ট্রেলিয়া সেই ম্যাচ জিতে যায়। সোবার্সের জন্য উল্লেখযোগ্য ছিল চতুর্থ টেস্ট। ওপেনিং ব্যাটসম্যান জেফ স্টলমায়ার গোড়ালিতে চোট পেলে সোবার্সকে ওপনিং করবার জন্য নামানো হয়েছিল৷ অলরাউন্ডার কিথ মিলার সোবার্সের মধ্যে বোলারের তুলনায় ভালো ব্যাটসম্যান হওয়ার সম্ভাবনা দেখেছিলেন৷ জে কে হল্টের সঙ্গে ৫২ রানের যে জুটি তৈরি হয়েছিল, সোবার্স তারমধ্যে নিজে করেছিলেন ৪৩ রান।  পঞ্চম তথা শেষ টেস্টেও ৩৫ ও ৬৪ রান পেয়েছিলেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরোয়া ও বিদেশী কিছু টেস্ট সিরিজে খেলেছিলেন তিনি।

১৯৫৬ সালে প্রথম বিদেশ সফর করেন সোবার্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজ গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড সফরে। বিদেশী অপরিচিত মাঠে সোবার্সের সেই সিরিজটি ব্যক্তিগতভাবে ভালো যায়নি খুব একটা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পিচে ঘাস ছিল না, কিন্তু নিউজিল্যান্ডের পিচ ছিল ঘাসে সবুজ, ফলে ব্যাটিং করতে খুবই অসুবিধা হয়েছিল সোবার্সের। চারটি টেস্ট খেলে মোটে ৮১ রান করতে পেরেছিলেন।  এরপর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি আনুষ্ঠানিক টেস্ট ম্যাচে খেলার জন্য তাঁকে নিউজিল্যান্ড থেকে তাড়াতাড়ি দেশে পাঠানো হয় তাঁকে। ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার ফ্রাঙ্ক টাইসনকে সফলভাবে খেলে একটি অর্ধশতক করেন। এরপর আসন্ন ইংল্যান্ড সফরে মূল দল নির্বাচনের জন্য আয়োজিত প্রথম ট্রায়াল ম্যাচে ত্রিনিদাদে সেঞ্চুরি করেন সোবার্স।

অবশেষে নির্বাচিত হয়ে ১৯৫৭ সালের গ্রীষ্মে ইংল্যান্ড সফরে সামিল হন সোবার্স। পাঁচটি টেস্ট সিরিজে তাঁর পারফরম্যান্স খুব বেশি উল্লেখযোগ্য না হলেও তিনটি অর্ধশতক করেন তিনি এবং মোট রান করেন ৩২০। এছাড়াও ৭১ রান দিয়ে পাঁচটি উইকেটও নিয়েছিলেন। ওভালে শেষ টেস্টে দলের পারফরম্যান্স হতাশাজনক হলেও সোবার্সের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। এই পর্বের সূচনা ভালো হলেও স্কোরকে আরও উচ্চতর জায়গায় নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন তিনি। ২২টি টেস্ট ম্যাচ খেলেও তাঁর করা সর্বোচ্চ রান ছিল ৬৬। কিন্তু ১৯৫৭ সালের সফরের পরবর্তী তিনবছর তাঁর পারফরম্যান্স ছিল দেখবার মতো। পরের ২৪টি টেস্টে তিনি ২,২৫০ রান করেছিলেন এবং তাঁর গড় ছিল ৯৩.৭৫। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন সোবার্স। সেই ম্যাচে ৩৬৫ রানে অপরাজিত থেকে ১৯৩৮ সালে লেন হাটনের করা ৩৬৪ রানের রেকর্ড ভেঙে দেন তিনি। উল্লেখ্য যে, ৩৬৫-এর এতবড় ইনিংসে কোনো ছক্কা মারেননি সোবার্স। তিনি মাত্র ২১ বছর বয়সের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় ছিলেন, যিনি ব্যক্তিগত স্কোরের রেকর্ড ভাঙেন এবং সর্বকনিষ্ঠ ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে তিনি ক্রিকেটের ইতিহাসে আজও অপরাজিত রয়ে গেছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি টেস্ট ম্যাচে মোট তিনটি সেঞ্চুরি করেন সোবার্স। এছাড়াও ১৯৫৮-৫৯ সালে ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও তিনি তিনটে সেঞ্চুরি করেছিলেন।

১৯৫৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু কলি স্মিথ অটোমোবাইল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মারা গেলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন কিন্তু তাও সফলভাবে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যান। ১৯৫৯-৬০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হোম টেস্ট সিরিজে আরও তিনটি সেঞ্চুরি করেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন ক্যাপ্টেন ফ্রাঙ্ক ওরেল দ্বারা দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হন তিনি এবং ১৯৬০-৬১ সালের অস্ট্রেলিয়া সিরিজে দুর্দান্ত খেলেন। সিরিজে ৪৩০ রান করেন, দুটি সেঞ্চুরি করেন এবং দুরন্ত ফিল্ডিং করে মোট ১২টি ক্যাচ নেন।

সমগ্র টেস্ট কেরিয়ারে উইকেট নেওয়ার খুব ভালো রেকর্ড নেই সোবার্সের। সামগ্রিকভাবে মোট ৯৩টি টেস্ট ম্যাচে ৩৪.০৩-এর গড়ে ২৩৫টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তারমধ্যে সেরা ছিল ৭৩ রানের পরিবর্তে নেওয়া ৬টি উইকেট। ১৯৬১-৬২ সালে ভারতে এবং ১৯৬৩ সালে ইংল্যান্ডে তিনি দারুণ সাফল্য লাভ করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে উইজডেন ক্রিকেটার অফ দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন তিনি।১৯৬৪-৬৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হোম সিরিজে প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়কত্ব করেন গারফিল্ড সোবার্স। সেই সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে ৩৯টি টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছিলেন সোবার্স। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবং ১৯৬৬-৬৭ সালে ভারতের বিপক্ষে তাঁর অধিনায়কত্বে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৬৭-৬৮ সালে টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ডের কাছে অধিনায়ক সোবার্সের ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথবার পরাজিত হয়েছিল। চারটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল কিন্তু শেষ ম্যাচে সোবার্সের বিতর্কিত ঘোষণার কারণে ইংল্যান্ড জয়লাভ করে। আবার ১৯৬৮-৬৯ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরেও নেতৃত্ব দেন তিনি, যদিও এবারও পরাজয় নেমে আসে।

দেশের বর্ণবাদী নীতির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হলে ১৯৭০-এর ইংল্যান্ড সফর এবং ১৯৭১-৭২ সালের অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। পরিবর্তে ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ বিশ্বের বাকি দলগুলিকে গঠন করে একটি আনুষ্ঠানিক টেস্ট সিরিজ খেলার আয়োজন করে। এই দলগুলির মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃস্থানীয় বেশকিছু খেলোয়াড় ছিল। সোবার্সকে ইংল্যান্ডে বাকি বিশ্ব একাদশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্ব একাদশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। ১৯৭০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাকি বিশ্ব একাদশের নেতৃত্বে লর্ডসে ১৮৩ রান করেন তিনি। ১৯৭২-এ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্ব একাদশের হয়ে ২৫৪ রান করেন, যেটিকে ডন ব্র্যাডম্যান অস্ট্রেলিয়ায় দেখা ব্যাটিংয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রদর্শনী বলেছিলেন।
১৯৭৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জীবনের প্রথম এবং একমাত্র ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছিলেন গারফিল্ড সোবার্স। তাতে একটি উইকেটও পেয়েছিলেন৷ ১৯৭৪ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন গারফিল্ড। তাঁর শেষ টেস্ট ম্যাচ ছিল ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর কুইন্স পার্ক ওভালে। এছাড়াও তিনি ইংলিশ লিগ ক্রিকেট, অস্ট্রেলিয়ায় ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর প্রতিযোগিতা এবং ইংল্যান্ডে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপেও খেলেছেন। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত র‍্যাডক্লিফ ক্রিকেট ক্লাবে সেন্ট্রাল ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে খেলেছিলেন। পরে নর্টন ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলার জন্য ১৯৬৪ সালে নর্থ স্টাফোর্ডশায়ার এবং সাউথ চেশায়ার লীগে চলে যান। তাছাড়া দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার হয়েও খেলেছিলেন তিনি। কখনও কখনও বার্বাডোজের হয়েও খেলেছেন। ১৯৬৮ সালের ৩১ আগস্টে এক ওভারে ছটি ছক্কা মারা প্রথম খেলোয়াড় হন সোবার্স। 
তাঁর সামগ্রিক আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের দিকে তাকালে দেখা যায় মোট ৯৩টি টেস্ট এবং একটি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছেন সোবার্স। ২৬টি সেঞ্চুরি ও ৩০টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর। উইকেট নিয়েছেন ২৩৫টি। মোট ৮০৩২ রান করেছেন এবং গড় ৩৪.০৩।

ক্রিকেটে অনবদ্য অবদানের জন্য বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন গারফিল্ড সোবার্স । ১৯৭৫ সালে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ সোবার্সকে নাইটহুড উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। ২০০৪ সালে আইসিসি স্যার গারফিল্ড সোবার্স খেতাব চালু করেন যা বর্ষের সেরা খেলোয়াড়কে প্রদান করা হয়। নিজের বর্ণময় জীবনের কথা তিনি লিপিবদ্ধ করেছিলেন ‘মাই অটোবায়োগ্রাফি’ গ্রন্থে।

One comment

আপনার মতামত জানান