নরেন্দ্র মোদী

নরেন্দ্র মোদী

ভারতের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী (Narendra Damodardas Modi)। তিনি ২০০১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বম্বে প্রেসিডেন্সির (বর্তমান গুজরাট রাজ্যের) মহেসানা জেলার ভাদনগর নামক স্থানে ঘাঞ্চী তেলী সম্প্রদায়ের এক নিম্নবর্গ পরিবারে মোদীর জন্ম হয়৷ তাঁর বাবার নাম দামোদারদাস মূলচাঁদ মোদী ও মায়ের নাম হীরাবেন মোদী। তিনি তাঁর বাবা-মায়ের চার সন্তানের মধ্যে তৃতীয় সন্তান ছিলেন। তাঁর বাবা ভাদনগর রেলস্টেশনে চা বিক্রি করতেন। মোদী কিশোর বয়সে চা বিক্রিতে তাঁর বাবাকে সাহায্য করতেন৷ পরবর্তীকালে তিনি তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে বাস টার্মিনালে একটি চায়ের দোকান চালাতেন৷

কৈশোর অবস্থায়  তেরো বছর বয়সে ঘাঞ্চী সম্প্রদায়ের রীতি অনুসারে মোদীর পিতা মাতা  যশোদাবেন চিমনলাল নামক এক মেয়ের সঙ্গে তাঁর বিবাহ স্থির হয়েছিল এবং আঠারো বছর বয়সে তাদের মধ্য বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছিল। খুব কম সময় তাঁরা একসঙ্গে সময় অতিবাহিত করেছিলেন কারণ এরপর মোদী তাঁর জীবিকা ও জীবনধারণের অন্য পথ অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিলে তাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। তবে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ষোড়শ সাধারণ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তিনি যশোদাবেনকে নিজের আইনত বৈধ পত্নী রূপে স্বীকার করে নিয়েছিলেন।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

নরেন্দ্র মোদীর প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর ১৯৬৭ সালে তিনি তাঁর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন৷ পড়াশোনায় তিনি সাধারণ মানের হলেও নতুন নতুন বই পড়ার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল। স্থানীয় গ্রন্থাগারে বসে তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা পড়াশোনা করতেন। ছোট বেলায় স্বামী বিবেকানন্দের জীবন তাঁকে বিশেষ ভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল৷ আট বছর বয়সে মোদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের স্থানীয় শাখায় তাঁর রাজনৈতিক গুরু লক্ষ্মণরাও ইনামদার নামক এক সাংগঠনিক কর্মীর সংস্পর্শে আসেন। ইনামদার মোদীকে সঙ্ঘের বাল স্বয়ং সেবক হিসেবে দলে নেন। এই সময় তিনি জন সংঘের নেতা বসন্ত গজেন্দ্রগড়কর ও নথালাল জঘদার সংস্পর্শে আসেন।

মাত্র সতেরো বছর বয়সে ঘর ছেড়ে তিনি রাজকোট শহরে অবস্থিত রামকৃষ্ণ মিশন ও তারপর বেলুড় মঠ যাত্রা করেন। এরপর তিনি আলমোড়া শহরে স্বামী বিবেকানন্দ প্রতিষ্ঠিত আশ্রমে যোগ দেন। তবে দুই বছর পরে তিনি বাড়ি ফিরে এসে আমেদাবাদ শহরে নিজের কাকার চায়ের দোকানের কাজে যোগ দেন। এই সময়ে তিনি আবার লক্ষ্মণরাও ইনামদারের সংস্পর্শে আসেন।  ১৯৭০ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের একজন পূর্ণসময়ের প্রচারক হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি গুজরাট রাজ্য মার্গ বাহন ব্যবহার নিগমের ক্যান্টিনের কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছিলেন৷ ১৯৭৮ সালে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষার মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক এবং গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।

১৯৭৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দ্বারা ঘোষিত জরুরীকালীন অবস্থায় বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সময়ে মোদী গ্রেপ্তারী এড়ানোর জন্য কখনো শিখ, কখনো বয়স্ক ব্যক্তির ছদ্মবেশে গোপনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারপুস্তিকা বিতরণ ও বিক্ষোভ সমাবেশ সংগঠিত করতেন।

১৯৮৭ সালে গুজরাটে বি.জে.পি.’র সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তাঁর জীবনে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। নতুন দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পর তাঁর প্রথম কাজ ছিল আমেদাবাদ নগর নিগমের নির্বাচনে বি.জে.পি.’র প্রথম জয়লাভ নিশ্চিত করা। তাছাড়া ১৯৯০ সালে গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচনে বি.জে.পি. যাতে কংগ্রেসের পরেই দ্বিতীয় স্থান দখল করে সেটিও তিনি নিশ্চিত করেন। ১৯৯৫ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মোদীর সাংগঠনিক দক্ষতার মাধ্যমে বি.জে.পি.’র জনসমর্থন বৃদ্ধি পায়। এই বিধানসভা নির্বাচনে বি.জে.পি. ১২১টি আসন লাভ করেছিল। ১৯৯৫ সালে নরেন্দ্র মোদী বি.জে.পি.’র জাতীয় পর্যায়ের সম্পাদক হিসাবে হরিয়ানা এবং হিমাচলপ্রদেশের সাংগঠনিক দায়িত্ব লাভ করেন। বি.জে.পি.’র সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ১৯৯৮ সালের লোকসভা নির্বাচনে বি.জে.পি.’র জয় নিশ্চিত করার জন্য তিনি কাজ করেন৷ শেষপর্যন্ত ভারতীয় জনতা পার্টি ঐ নির্বাচনে জয়লাভ করে।

২০০১ সালে কেশুভাই পটেলের স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে এবং তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতির পাশাপাশি ওই বছরই ভূমিকম্পের মতন প্রাকৃতিক দূর্যোগের প্রশাসনিক দুর্বলতার অভিযোগ ওঠে। এর ফলে পার্টির জাতীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য নরেন্দ্র মোদীকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে হিসেবে ভাবা হয়৷ ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

২০০১ সালে নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মেয়াদ চলাকালীন, ২০০২ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি গোধরা শহরের কাছে বহু হিন্দু তীর্থযাত্রী ও শতশত যাত্রীসহ একটি ট্রেন আগুনে পুড়ে যায়, ফলে প্রায় ৬০ জনের মৃত্যু ঘটে। খবর ছড়িয়ে পড়ে উগ্র মুসলিমদের দ্বারা এই অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে৷ গুজরাট জুড়ে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। এই দাঙ্গায় ৯০০ থেকে ২০০০ ব্যক্তির মৃত্যু হয় এবং কয়েক হাজার ব্যক্তি আহত হয়৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে মোদী সরকার বড় শহরগুলিতে কার্ফু জারী করেন, দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ দেয় এবং দাঙ্গা প্রতিরোধে সেনাবাহিনী ডাকা হয়। যদিও বিরোধী দল এবং সংবাদপত্রের কিছু অংশ গুজরাট সরকারের এই পদক্ষেপ দাঙ্গাবিরোধী বলে সমালোচনা করে৷

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সরকারীকরণ ও বিশ্বায়নবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে বেসরকারীকরণের নীতি গ্রহণ করেছিলেন৷ তাঁর মন্ত্রীত্বের প্রথম মেয়াদ ছিল ২০০১ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে গোয়াতে অনুষ্ঠিত ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় কার্যনির্বাহী সভায় মোদী তার ইস্তফা দিতে চাইলে পার্টি তা গ্রহণ করেনি। পরের বিধানসভা নির্বাচনে মোদীর নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি ১৮২টির মধ্যে ১২৭টি আসন দখল করে। ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি ১৮২টির মধ্যে ১২২টি আসন দখল করে জয়ী হন এবং মোদী তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদ লাভ করেন। ২০১২ সালের গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে মোদী মণিনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৮৬,৩৭৩ ভোটের বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেন। ২০১৩ সালে তাঁকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয় ও নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করে ২০১৪ সালের ২৬ মে নরেন্দ্র মোদী ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ নেন৷ নরেন্দ্র মোদী হলেন ব্রিটিশ রাজত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জন্ম নেওয়া ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মসূচি আয়ুষ্মান ভারত রূপায়ণ নরেন্দ্র মোদীর তত্ত্বাবধানে রূপায়ণ করা হয়৷ ৫০ কোটি দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে এই কর্মসূচির আওতায় নিয়ে এসে সুলভে গুণগত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ‘দ্য ল্যানসেট’ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জার্নাল বা পত্রিকায় আয়ুষ্মান ভারতের প্রশংসা করা হয়েছে৷ দরিদ্র মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রক্রিয়ার আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টিকে বড় বাধা হিসাবে বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক ভারতীয়র জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার সূচনা করেন।

দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার জন্য ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উজ্জ্বলা যোজনার সূচনা করেন। এই যোজনার ফলে, ৭ কোটি সুফলভোগী, যাঁদের বেশিরভাগই মহিলা, তাঁরা বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছেন।
২০১৯ সালের অন্তর্বর্তী বাজেটে কৃষকদের আর্থিক সুবিধাদানের কথা ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি নামে এই কর্মসূচি ঘোষণার তিন সপ্তাহের মধ্যেই ২০১৯ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি তা চালু হয়।

২০১৪ সালের ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী সারা দেশ জুড়ে স্বচ্ছতার লক্ষ্যে গণঅভিযান স্বচ্ছ ভারত মিশনের সূচনা করেন।

ভারতকে আন্তর্জাতিক স্তরে এক অগ্রণী উৎপাদক দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সূচনা করেছেন। এই কর্মসূচি চালু হওয়ার ফলে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা গেছে । উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভারতে মোবাইল ফোন উৎপাদন ইউনিটের সংখ্যা ২০১৪ সালে ছিল ২টি। সেটি এখন বেড়ে ২০১৯ সালে ১২২টি হয়েছে।

নরেন্দ্র মোদীর বৈদেশিক নীতির সূচনার ফলে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসাবে ভারতের প্রকৃত সম্ভাবনা ও ভূমিকার বাস্তবায়ন ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথমবার শপথ গ্রহণের সময় সার্ক দেশগুলির সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা এবং দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার সময় বিমস্টেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তাঁর ভাষণ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। তিনিই হলেন প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী, যিনি ১৭ বছর পর দ্বিপাক্ষিক সফরে নেপাল, ২৮ বছর পর অস্ট্রেলিয়া, তিন দশকেরও বেশি সময় পর ফিজি এবং ৩৪ বছর পর সংযুক্ত আরব আমীরশাহী ও সেশেলস্ সফরে গিয়েছিলেন৷ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানেই প্রথমবার ১৭৭টি রাষ্ট্র একযোগে এগিয়ে এসে ২১শে জুন দিনটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তাব অনুমোদন করে।

জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছ থেকে তিনি যে সমস্ত পুরষ্কার পেয়েছেন তার মধ্যেই তাঁর কাজের স্বীকৃতি প্রতিফলিত হয়েছে। ‘ইন্ডিয়া টুডে’র করা সমগ্র দেশব্যাপী সমীক্ষায় নরেন্দ্র মোদীকে সেরা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত হয়েছিলেন৷

‘দ্য টাইম’ ম্যাগাজিনের এশিয়ান সংস্করণের নরেন্দ্র প্রচ্ছদে মোদীর ছবি ছাপা হয়েছিল৷ ২০১৬ সালে লন্ডনের মাদাম তুসো জাদুঘর (Madame Tussaud Wax Museum)- এ মোদীর মোমের মূর্তি সংরক্ষিত করে রাখা হয়৷ কেবল তাই নয় টুইটার ফেসবুকের মতন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতেও তিনি যথেষ্ট খ্যাতি লাভ করেছেণ। তিনি বিভিন্ন দেশ থেকে সম্মানসূচক পদক লাভ করেছেন৷ যেমন ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল সৌদি আরব থেকে তিনি আব্দুলআজিজ আল সৌদ লাভ করেন যেটি সেখানকার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান। এছাড়া ২০১৬ সালের ৪ জুন  আফগানিস্তান থেকে আমীর আমাউল্লাহ খান অ্যাওয়ার্ড, ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী প্যালেস্টাইন থেকে গ্রান্ট কলার অফ দ্য স্টেট অফ প্যালেস্টাইন পুরস্কার ইত্যাদি।

3 comments

আপনার মতামত জানান