শ্রীগৌরী সাওয়ান্ত

শ্রীগৌরী সাওয়ান্ত

ভারতবর্ষ ষেমন উদার চিন্তাকে প্রশ্রয় দিয়েছে তেমনই নানা বিষয়ে সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয়ও দিয়েছে। বিশেষত যখন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রসঙ্গ ওঠে তখনই ভারতীয় সমাজের সেই সংকীর্ণ চিন্তার প্রতিফলন দেখা যায়। তবু সেই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও লড়াই করতে এগিয়ে এসেছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন শ্রীগৌরী সাওয়ান্ত (Shreegauri Sawant)। তিনি নিজে একজন ট্রান্সজেন্ডার মানুষ। তেমনই কিছু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সহায়তার জন্য এবং নিরাপদ যৌনতার বার্তা ও এইডসের মতো রোগ বিষয়ে সচেতনতা প্রসারের উদ্দেশ্যে শ্রীগৌরী সাওয়ান্ত নিজস্ব একটি সংস্থারও সূচনা করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টে ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের জন্য পিটিশন দায়েরকারী প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ছিলেন তিনি। টেলিভিশন বিজ্ঞাপনেও কাজ করতে দেখা গেছে তাঁকে। এমনকি নির্বাচনী দূত হিসেবে মনোনীতও হয়েছিলেন শ্রীগৌরী। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মাথা তুলে তিনি বাঁচার পথ দেখিয়েছেন।

১৯৮০ সালের ২২ জুলাই মহারাষ্ট্রের পুণেতে ভবানী পেঠ অঞ্চলে শ্রীগৌরী সাওয়ান্তের জন্ম হয়। অবশ্য জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয়েছিল গণেশ সুরেশ সাওয়ান্ত। তাঁর পিতা সুরেশ সাওয়ান্ত (Suresh Sawant) ছিলেন পেশায় একজন পুলিশ অফিসার। শ্রীগৌরীর যখন সাত বছর বয়স তখন তাঁর মায়ের মৃত্যু হয় এবং তাঁকে তাঁর ঠাকুমা লালন-পালন করতে থাকেন। গৌরী তাঁর মা-বাবার দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। তাঁর দিদির জন্মের ১০ বছর পর তিনি ভূমিষ্ট হয়েছিলেন। একটি সাক্ষাৎকারে শ্রীগৌরী সাওয়ান্ত জানিয়েছিলেন যে, তাঁর মা দ্বিতীয় সন্তান চাননি। এমনকি শ্রীগৌরী যখন মাতৃগর্ভে, তখন গর্ভাবস্থার সপ্তম মাসে তাঁর মা গর্ভপাতের চেষ্টা পর্যন্ত করেছিলেন, কিন্তু ডাক্তাররা তাতে রাজি হননি এবং  জানিয়েছিলেন যে, গর্ভের শিশু এতটাই পরিণত হয়ে গেছে যে তাকে আর নষ্ট করা সম্ভব নয়। গৌরী সাওয়ান্তের মতে, এমন টানাপোড়েনের মধ্যেই তাঁর জন্ম হয়েছিল বলে বিভ্রাম্তিকর এক লিঙ্গপরিচয় নিয়ে জন্মেছিলেন তিনি।

ক্রমে যতই বেড়ে উঠছিলেন তিনি ততই তাঁর আগ্রহ অন্যান্য ছেলেদের থেকে স্বতন্ত্র হয়ে উঠছিল কিন্তু নিজেকে হিজড়া বা মেয়ে বলে তখনও ভাবেননি, তবে নিজের ভিতর একটা অস্বাভাবিকতা অনুভব করতেন। সাক্ষাৎকারেই জানিয়েছেন যে, তিনি সবসময় মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেন, তাদের সঙ্গেই ঘর-ঘর খেলতে পছন্দ করতেন। গাছের পাতা ছিঁড়ে রুটি বানাতেন, সিংদানা সংগ্রহ করে কুকারে সিদ্ধ করবার ভান করতেন এবং এমনই ঘরকন্নার খেলা তাঁকে আনন্দ দিত। এমনকি তাঁর পোশাক নির্বাচনও পুরুষদের মতো ছিল না, মেয়েদের পোশাকের প্রতিই ছিল তাঁর আকর্ষণ। গৌরীদের পুরুষতান্ত্রিক পরিবার ছেলের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ত। এই আচরণের জন্য পরিবারের লোক চিৎকার করে তাঁকে তিরস্কার করলেও গৌরী কখনই বদলে যেতে পারেননি।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

গৌরী জানান যখন তাঁর দশ বছর বয়স, তখন তাঁর এক আত্মীয়া তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, বড় হয়ে সে কী হতে চায়, তার উত্তরে গৌরী জানিয়েছিলেন যে, তিনি মা হতে চান। সেই জবাব শুনে সকলে হেসে বলেছিলেন ছেলে কখনও মা হতে পারে না।

যখন গৌরী স্কুলে গিয়েছিলেন তখনও সহপাঠীদের নানারকম উপহাসের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে। একদিন স্কুলের অধ্যক্ষ গৌরীর বাবাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন ছেলে গণেশের মধ্যে তিনি কিছু মেয়েলি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করেছেন। এতে গৌরীর বাবা খুবই বিরক্ত হয়েছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করাও শুরু করেছিলেন। বাবা তাঁর সঙ্গে কথা বলাও বন্ধ করে দেন। সাক্ষাৎকারে গৌরী জানান যে, বাবা বাড়িতে এলেই গৌরী বেডরুমে চলে যেতেন। বাবা তাঁর মুখ পর্যন্ত দেখতেন না। কিশোর বয়সে উত্তীর্ণ হয়ে যৌনতা সম্পর্কে গৌরী সচেতন হয়ে গেলেও গৌরীদের পরিবার এমনিতেই একটু সংস্কারাবদ্ধ ছিল ফলে নিজের বিশেষ যৌন বৈশিষ্ট্য নিয়ে বাবার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে পারতেন না তিনি। বাড়িতে কেউ না থাকলে গৌরী নিজের ঠাকুমার মতো সাজতেন৷ একদিন তাঁর পরিবারের সদস্যরা লক্ষ করে যে তিনি টি-শার্টের নীচে মেয়েদের একটি অন্তর্বাস পরিধান করেছেন। ফলে পরিবারের লোকজন ভীষণই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তাঁর ওপর, এমনকি তাঁকে প্রস্রাব করবার সময়ও বাথরুমের দরজা খুলে রাখতে বলা হয়।

নিজের পরিবারে এবং অঞ্চলে এই ধরনের অমানবিক আচরণের সম্মুখীন হতে হয়েছিল বলেই নিজের লড়াই লড়বার জন্য ১৭ বছর বয়সে গৌরী গৃহত্যাগ করে চলে আসেন মুম্বাই। তাছাড়াও তাঁর গৃহত্যাগের আরও একটি কারণ ছিল, তিনি তাঁর বাবার হতাশার কারণ হতে চাননি। যখন বাড়ি ছেড়েছিলেন পকেটে তাঁর তখন মাত্র ৬০ টাকা ছিল। গৌরী জানিয়েছেন যে, তিনি জানতেন চিঞ্চওয়াদ থেকে একটি ট্রেন পুণের ওপর দিয়ে মুম্বাই যায়। তাতে করে রওনা দিয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সিদ্ধি বিনায়কে গিয়েছিলেন এবং মন্দির থেকে প্রাপ্ত প্রসাদ দুটি লাড্ডু তিনি দুপুরের খাবার হিসেবে খেয়েছিলেন। মুম্বাইতে পৌঁছে ভীষণই কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল তাঁকে। মুম্বাইতে তাঁর থাকার জায়গা ছিল না, তিনি তাঁর যৌনকর্মী ট্রান্সজেন্ডার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করেন সেখানে এবং সেই বন্ধুর কাছেই কিছুদিন থাকেন। কোনো যৌনকর্মী বা ভিক্ষুক হিসেবে কাজ করতে চাননি গৌরী, সেই কারণে বন্ধুটি তাঁকে ভারতের প্রাচীনতম এলজিবিটিকিউ সংস্থাগুলির মধ্যে একটি ‘হামসাফার ট্রাস্টে’র সমাজকর্মীদের সঙ্গে দেখা করবার পরামর্শ দেন। এই হামসাফার ট্রাস্টের সঙ্গে কাজ করবার সময়তেই তিনি আলাপ করেন অশোক রো কবি, লক্ষ্মী নারায়ণ ত্রিপাঠী এবং কাঞ্চনার (গৌরীর গুরু মা) মতো সমাজকর্মীদের সঙ্গে। এখানে উল্লেখ্য যে, ১৯৯৪ সালে অশোক রো কবিই এই হাফসাফার ট্রাস্টটির নির্মাণ করেছিলেন। গৌরী তখন নিজেকে তৃতীয় লিঙ্গে রুপান্তরিত করবার সিদ্ধান্ত নেন এবং গণেশ থেকে গৌরী সাওয়ান্ত হয়ে ওঠেন। গৌরী জানিয়েছেন যে, তিনি যৌনকর্মী হয়ে বা ভিক্ষা চেয়ে দিনযাপন করতে চাননি, বরং সুবিধাবঞ্চিত শিশু এবং ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য একটি আশ্রয় কেন্দ্র খুলতে চেয়েছিলেন। অশোক রো কবিই গৌরীকে হিজরাদের কল্যাণের জন্য একটি ট্রাস্ট শুরু করার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ মেনেই ২০০০ সালে গৌরী সাওয়ান্ত ‘সখী চর চৌঘী ট্রাস্ট’ ওরফে আজিচা ঘর শুরু করেন এবং তার পরিচালক হন। ট্রাস্টটি তখন মুম্বাই ডিস্ট্রিক্ট এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির সঙ্গে একত্রিত হয়েছিল। এই ট্রাস্ট মূলত নিরাপদ যৌনতা ও এইডসের মতো যৌন রোগ বিষয়ে সচেতনতার প্রচার এবং ট্রান্সজেন্ডারদের নানারকম সহায়তার কাজ করত। হিজরা ও যৌনকর্মীদের বিনামূল্যে এইডস পরীক্ষা শিবির, বিনামূল্যে নিরোধ বিতরণ ইত্যাদি কাজ করে আসছে এই সখী চর চৌঘী ট্রাস্ট। পরবর্তীকালে ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে গৌরী সাই সাভলি নামে আরেকটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই সংস্থাটিও হিজরা, অনাথ মেয়ে, পরিত্যক্ত মহিলা, অসহায় বয়স্ক মানুষ ছাড়াও সমাজের দুর্বল মানুষদের সাহায্যের জন্য কাজ করে চলেছে। প্রাণীদের কল্যাণেও  গৌরীকে নানারকম কাজ করতে দেখা গেছে।

২০০১ সালে গৌরী এক পতিতার কন্যাকে দত্তক নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই মেয়েটি এইচআইভির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে পারেনি, প্রাণ হারিয়েছিল। এরপর গৌরী ২০০৮ সালে গায়ত্রী নামে ৫ বছরের একটি শিশু কন্যাকে দত্তক নেন। গায়ত্রীর মা-ও এইচআইভি এইডসে মারা গিয়েছিল। গায়ত্রীর ঠাকুমা টাকার বিনিময়ে শিশু কন্যাটি যৌন-পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। তখন গৌরী গায়ত্রীর ঠাকুমার কাছ থেকে টাকার বিনিময়েই গায়ত্রীকে চেয়ে নিয়েছিলেন। ট্রান্সজেন্ডার হয়ে একটি মেয়েকে দত্তক নেওয়ায় গায়ত্রীকে প্রভূত সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে যখন ইউটিউবে ‘ভিকস- জেনারেশন অব কেয়ার’-এ গৌরীর দত্তক নেওয়ার গল্পটি ভিডিওর মাধ্যমে দেখানো হয়েছিল তা গৌরীর জীবনকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিয়েছিল বলা যায়। প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন তিনি। মানুষের অনেক প্রসংশা পেয়েছিলেন, মানুষ তাঁকে চিনতে শুরু করেছিল। এইরকম মাতৃত্ব নিয়ে গৌরী বলেছিলোন যে, গায়ত্রী তাঁকে শিখিয়েছে মা হওয়ার জন্য একটি শিশুর জন্ম দেওয়ার দরকার নেই, মাতৃত্ব হল একটি শিশুর যত্ন নেওয়া, তাকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসা।

২০০৯ সালে গৌরী ভারতে ট্রান্সজেন্ডারদের আইনি স্বীকৃতির জন্য আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। তিনিই ছিলেন প্রথম ট্রান্সজেন্ডার মানুষ যিনি ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেন। ভারতীয় এনজিও ‘নাজ ফাউন্ডেশন’ তাঁর এই আবেদনটিকে ফরোয়ার্ড করে দিয়েছিল। ‘ন্যাশানাল লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির (NALSA) কাছে গৌরী এই আবেদনটি জানিয়েছিলেন। গৌরীর আবেদনের ভিত্তিতেই ভারতের সর্বোচ্চ আদালত ২০১৪ সালে ট্রান্সজেন্ডার আইন পাশ করে এবং ট্রান্সজেন্ডারদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে, ভারতীয় সংবিধানের অধীনে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারগুলি এই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য। গৌরীর পিটিশনে তৃতীয় লিঙ্গের দত্তক নেওয়ার অধিকার এমনকি স্বতন্ত্র আধার কার্ডের অধিকারের কথাও উল্লেখ করা ছিল এবং সুপ্রিম কোর্ট সেই সমস্ত অধিকারের আবেদনকে মান্যতা দিয়ে তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল।

২০১৯ সালে গৌরী সাওয়ান্তকে মহারাষ্ট্রের নির্বাচন কমিশনারের ১২জন শুভেচ্ছা দূতের একজন হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। শ্রীগৌরী সাওয়ান্ত ছিলেন প্রথম ট্রান্সজেন্ডার মানুষ যিনি ভারতের নির্বাচনী দূত হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন কারোরই ভোট নষ্ট করা উচিত নয় এবং শুধু বাড়ির গৃহিণীই নয় এই দেশের সমস্ত যৌনকর্মী ও  ট্রান্সজেন্ডারদেরও ভোট দেওয়া উচিত।

জনপ্রিয় হওয়ার পর বিভিন্ন টেলিভিশন শো-তে গৌরীকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিখ্যাত গায়িকা উষা উত্থুপকে শৈশব থেকেই ভীষণই পছন্দ করেন গৌরী। উষা উত্থুপের ড্রেসিং স্টাইল, কপালের গোল টিপ খুবই পছন্দ তাঁর। সেই উষা উত্থুপের সঙ্গে ২০১৭ সালে জনপ্রিয় টেলিভিশন শো ‘কন বনেগা কড়োরপতি’তে দেখা গিয়েছিল গৌরী সাওয়ান্তকে। তাছাড়া ‘টেডএক্স টকস’-এ অতিথি বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তাঁকে। বিভিন্ন ফ্যাশন শো-তে গৌরীকে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা গেছে।

২০১৯ সালে ভারতীয় লেখক রিদম ওয়াঘোলিকারের লেখা গ্রন্থ ‘গৌরী দ্য আর্জ টু ফ্লাই’ প্রকাশ পেয়েছিল। বইটি শ্রীগৌরী সাওয়ান্তের জীবন অবলম্বনে রচিত।

২০২৩ সালে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘তালি’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ মুক্তি পেয়েছে, যেটি আসলে শ্রীগৌরী সাওয়ান্তের জীবনের ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। সেই ওয়েব সিরিজের গৌরীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিস ইউনিভার্স খেতাব প্রাপ্ত বিখ্যাত অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন।

আপনার মতামত জানান