টাইগার উডস

টাইগার উডস

গল্ফ খেলার ইতিহাসে যাঁদের কৃতিত্ব স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে থাকবে তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আমেরিকান গল্ফ খেলোয়াড় টাইগার উডস (Tiger Woods)। তিনি তাঁর খেলোয়াড় জীবনে গল্ফ খেলার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় সমস্ত বড় বড় খেতাব অর্জন করেছেন। মাত্র কুড়ি বছর বয়সে পেশাদার গল্ফ খেলোয়াড় হয়ে ওঠা টাইগার বিশ্বের সমস্ত গল্ফারের তুলনায় সবচেয়ে বেশি সপ্তাহ টানা এক নম্বর খেলোয়াড়ের স্থানে অধিষ্ঠিত থেকেছেন। এগারোবার ‘পিজিএ প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার’ পুরস্কার জিতে রেকর্ড স্থাপন করেছেন তিনি। আটবার বায়রন নেলসন পুরস্কারের প্রাপক হন টাইগার। পনেরোটি পেশাদার মেজর গল্ফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পাশাপাশি আঠারোটি বিশ্ব গল্ফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছেন তিনি। আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল ফ্রিডম অব মেডেল প্রাপ্ত, বর্তমানে ‘ওয়ার্ল্ড গল্ফ হল অব ফেম’ -এর সদস্য এবং সর্বাধিক পিজিএ ট্যুর জয়ী টাইগার উডসকে বিশ্বের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ গল্ফ খেলোয়াড়দের অন্যতম একজন হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।

১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার অন্তর্ভুক্ত সাইপ্রেসে এলড্রিক টন্ট ‘টাইগার’ উডসের (Eldrick Tont ‘Tiger’ Woods) জন্ম হয়। তাঁর বাবা আর্ল ডেনিসন উডস ছিলেন মার্কিন সেনার একজন পদাতিক অফিসার। পরবর্তীকালে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হয়েছিলেন। টাইগারের মায়ের নাম কুলটিদা ‘টিডা’ উডস। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান হলেও বাবার প্রথম পক্ষের বিবাহের ফলে টাইগারের দুই সৎ ভাই (আর্ল উডস জুনিয়র ও কেভিন ডেল উডস) এবং একটি সৎ বোন (রয়েস রেনি উডস) রয়েছে। টাইগারের আসল নাম য এলড্রিক তাঁর মায়ের দেওয়া। এই নামটি দেওয়ার পেছনের কারণটি হল এই নামটির আদ্যক্ষর ‘ই’ যা বাবা আর্লের নামের আদ্যক্ষর এবং শেষ অক্ষর ‘কে’ যা কুলটিদা নামের প্রতিনিধিত্ব করে। টাইগারের বাবার এক বন্ধু দক্ষিণ ভিয়েতনামের কর্নেল ভুং ডাং ফং, যিনি টাইগার নামে পরিচিত ছিলেন, তাঁর কথা মাথায় রেখেই এলড্রিককেও টাইগার নামে ডাকতে থাকেন। সেই থেকেই এলড্রিক  সারা বিশ্বে পরিচিত।

উডস ক্যালিফোর্নিয়ার অরেঞ্জ কাউন্টিতে বড় হয়ে ওঠেন। ছোট থেকেই ভীষণ প্রতিভাবান ছিলেন টাইগার। টাইগারের বাবা নিজেও একজন শখের  গল্ফ ও দক্ষ বেসবল খেলোয়াড় ছিলেন। টাইগারের যখন মাত্র দু’বছর বয়স সেই সময় তাঁর বাবা তাঁকে গল্ফ খেলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। যদিও টাইগার তাঁর খেলোয়াড় জীবনের শুরুতে বেসবল খেলোয়াড় হতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাঁর কাঁধের রোটেটর কাফ ছিঁড়ে যাওয়ায় বেসবল খেলার স্বপ্ন তাঁকে পরিত্যাগ করতে হয়। টাইগারের বাবা যেহেতু সামরিক বাহিনীতে ছিলেন, লস আলামিটোসে জয়েন্ট ফোর্সেস ট্রেনিং বেসের পাশে নৌবাহিনীর গল্ফ কোর্সে প্রথম গল্ফ খেলায় হাতে খড়ি হয় টাইগারের। তিন বছর বয়সে এই গল্ফ কোর্সে নয়টি গর্তে আটচল্লিশটি শট মারতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। এরপর মাত্র পাঁচ বছর বয়সে  ‘গল্ফ ডাইজেস্ট’ এবং সাত বছর বয়সেরও আগে এবিসি চ্যানেল আয়োজিত ‘দ্যাটস ইনক্রেডিবল’ নামক টেলিভিশন শোতে দেখা যায় টাইগারকে।

১৯৮৪ সালে আট বছর বয়সে জুনিয়র ওয়ার্ল্ড গলফ চ্যাম্পিয়নশিপ ইভেন্টে জয়লাভ করেন তিনি। ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত টানা চারবার-সহ মোট ছয়বার জুনিয়র ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন টাইগার। টাইগারের তেরো বছর বয়সে তখন বিগ আই টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। এটি তাঁর জীবনের প্রথম বড় জাতীয় জুনিয়র টুর্নামেন্ট ছিল।

পনেরো বছর বয়সে টাইগার আনাহাইমের ওয়েস্টার্ন হাইস্কুলের ছাত্র থাকাকালীন সর্বকনিষ্ঠ গল্ফ খেলোয়াড় হিসেবে ইউ এস জুনিয়র অ্যামেচার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। সেসময় এটি একটি রেকর্ড ছিল যা পরে জিম লিউ ভেঙে দেন ২০১০ সালে। ১৯৯১ সালে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া অ্যামেচার প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার (টানা দ্বিতীয় বছর) এবং গল্ফ ডাইজেস্ট জুনিয়র অ্যামেচার প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন টাইগার। পরের বছর আবার ইউ এস জুনিয়র অ্যামেচার টুর্নামেন্টটি জিতে টুর্নামেন্টের  একমাত্র খেলোয়াড় হন যিনি তৃতীয়বার এই শিরোপা জিতেছেন। ১৯৯৪ সালে ফ্লোরিডার সগ্রাসে টিপিসি- তে তিনি ইউএস অ্যামেচারের সর্বকনিষ্ঠ বিজয়ী হন যে রেকর্ডটি ২০০৮ সাল অবধি তিনি ধরে রেখেছিলেন।

১৯৯৪ সালে টাইগার গল্ফ স্কলারশিপের অধীনে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে নথিভুক্ত হন এবং সেপ্টেম্বরে তাঁর প্রথম কলেজিয়েট ইভেন্ট চল্লিশতম বার্ষিক উইলিয়াম এইচ. টাকার আমন্ত্রণমূলক প্রতিযোগিতা জেতেন। কিন্তু দুই বছর পর তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিত্যাগ করেন গল্ফকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করবার জন্য। ১৯৯৬ সালের আগস্ট মাসে টাইগার হয়ে ওঠেন একজন পেশাদার গল্ফ খেলোয়াড়। সেই বছর অক্টোবর মাসে টাইগার ডেভিস লাভথ্রীকে একটি প্লে অফে পরাজিত করে লাস ভেগাস ইনভিটেশনাল জয় করেন এবং প্রথম পিজিএ ট্যুরে সাফল্য পান। পেশাদার হিসেবে এটিই ছিল তাঁর প্রথম কোন টুর্নামেন্ট জয়। দুই সপ্তাহ পরে তাঁর দ্বিতীয় পিজিএ ট্যুরেও জয়লাভ করে তিনি। ১৯৯৬ সালে’ পিজিএ ট্যুর রুকি অব দ্য ইয়ার’ খেতাব অর্জন করেন তিনি। স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড ম্যাগাজিন তাঁকে স্পোর্টসম্যান অব দ্য ইয়ার হিসেবেও সম্মান জানিয়েছিল।

১৯৯৭ সালের প্রথম দিকে উডস মার্সিডিজ ওপেন জিতে দারুণভাবে বছর শুরু করেন। সেই বছর ১৩ এপ্রিল তিনি তাঁর প্রথম মেজর মাস্টার্স জেতেন এবং একই সঙ্গে একুশ বছর বয়সে টুর্নামেন্টের সর্বকনিষ্ঠ বিজেতার আসনও লাভ করেন। দুই মাস পর অফিসিয়াল ওয়ার্ল্ড গল্ফ র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ স্থানটি দখল করেন টাইগার। ১৯৯৮ সালটি তাঁর বেশ ব্যর্থতার মধ্যেই কাটে।  ১৯৯৯ সালে টাইগার আবার পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপ-সহ আটটি চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেন। টাইগার উডসের দূরের দৃষ্টিতে সমস্যা ছিল এবং দৃষ্টিশক্তির এই সমস্যার সমাধানের জন্য ১৯৯৯ সালে লেজার আই সার্জারি করান তিনি। ২০০৭ সালে দৃষ্টিশক্তি পুনরায় খারাপ হতে শুরু করলে সেসময় ফের লেজার আই সার্জারি করান তিনি। ২০০০ সালে টাইগার পিজিএ ট্যুরে টানা ছয়টি ইভেন্টে জয়লাভ করেন। এর মধ্যে একটি ছিল আবার ইউএস ওপেন। এই প্রথমবার তিনি ইউএস ওপেন জিতলেন, এমনকি সেই বছর প্রথম ব্রিটিশ ওপেনের শিরোপাও জিতেছিলেন। চব্বিশ বছর বয়সে তিনি কেরিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম অর্জনের জন্য নির্বাচিত সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হয়েছিলেন। গল্ফ খেলার ইতিহাসে তিনি  দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি কেরিয়ারে মোট তিনবার গ্র্যান্ড স্ল্যাম অর্জন করেন। ২০০০ সালের শেষ দিকে দেখা যায় উডস মোট কুড়িটি পিজিএ ট্যুর ইভেন্টের মধ্যে নয়টিতে জয়লাভ করেছেন। স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড পুনরায় তাঁকে ‘স্পোর্টসম্যান অব দ্য ইয়ার’ সম্মানে সম্মানিত করে। গল্ফের দুনিয়ায় তিনিই একমাত্র খেলোয়াড় ছিলেন যাঁকে দুবার এই সম্মান প্রদান করা হয়েছিল। ২০০১ সালের মাস্টার্স জিতে টাইগার টানা চারটি বড় গল্ফ শিরোপা জেতা একমাত্র খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। তাঁর এই সাফল্য গল্ফ জগতে ‘টাইগার স্ল্যাম’ নামে পরিচিত। ২০০১ ও ২০০২ সাল জুড়ে যে পরিমাণ সাফল্য লাভ করেছিলেন টাইগার, তুলনায় ২০০৩ এবং  ২০০৪ সালটি তাঁর কেরিয়ারের মন্দার সময়। এই সময়পর্বে কোনো মেজর জিততে পারেননি তিনি। ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে বিজয় সিং উডসকে ছাড়িয়ে যান অফিসিয়াল ওয়ার্ল্ড গলফ র‍্যাঙ্কিংয়ে। সেই বছর প্রাক্তন সুইডিশ মডেল এলিন নর্ডেগ্রেনকে বিবাহ করেন টাইগার। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। ২০০৫ সালে পুনরায় ঘুরে দাঁড়ান টাইগার। ছয়টি পিজিএ ট্যুর ইভেন্ট জিতে জুলাই মাসে পুনরায় গল্ফ র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান অধিকার করেন টাইগার। ২০০৬ সালে প্রথম দুটি পিজিএ টুর্নামেন্ট জেতার পর হঠাৎ তাঁর বাবার মৃত্যু হলে সফর থেকে সাময়িক বিরতি নেন উডস। কিন্তু ফিরে এসে টানা ছয়টি সফরে জয়লাভ করে নিজের শ্রেষ্ঠত্বকে প্রমাণ করেন তিনি। ২০০৭ সাল ও ২০০৮ সালেও জয়ের ধারা অব্যহত ছিল টাইগারের। কিন্তু ২০০৮ সালের এপ্রিলে হাঁটুর সমস্যা ও সেই সংক্রান্ত অস্ত্রোপচারের কারণে পরের দুই মাস কোন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে পারেননি তিনি। ২০০৯ সালে টাইগারের বৈবাহিক জীবন সংক্রান্ত  ব্যক্তিগত সমস্যা তাঁর কেরিয়ারে প্রভাব ফেলে যার ফলে পেশাদার গল্ফ থেকে তিনি সাময়িক বিরতি ঘোষণা করেন। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি তাঁর আচরণের জন্য টেলিভিশনে ক্ষমাপ্রার্থী হন এবং ২৩ আগস্ট তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। এই ঘটনার পর থেকেই অনেকগুলি নামকরা স্পনসার হারান টাইগার। ২০১০ সালে মাস্টার্সে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন তিনি। ২০১১ সালে তাঁর পারফরম্যান্সের মান আরও পড়ে যায় যা তাঁর র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রভাব ফেলে। অবশেষে বছরের শেষদিকে এমিরেটস অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং ডিসেম্বরে শেভরন ওয়ার্ল্ড চ্যালেঞ্জে জয়লাভ করেন তিনি। ২০১২ সালে তিনি আর্নল্ড পামার ইনভিটেশনাল জেতেন যা কিনা ২০০৯ সালের পর পিজিএ ট্যুরে তাঁর প্রথম জয়। 

২০১৩ সালে তিনি ডব্লিউসিজি-ক্যাডিলাক চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। এই জয় তাঁকে আবার বিশ্বর‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিল। সেই বছরই দ্য প্লেয়ার্স চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন তিনি। তবে ২০১৩ সালে একটিও মেজর জিততে পারেননি টাইগার। ২০১৪ সালে তাঁর পিঠের ব্যথায় তাঁর খেলোয়াড় জীবনে প্রভাব ফেলে।  ওই ব্যথা নিয়েও পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেন কিন্তু ব্যর্থ হন। ২০১৫ সালে ব্যথা আরও বাড়লে ফার্মার্স ইন্স্যুরেন্স ওপেন থেকে প্রত্যাহার করে নেন নিজেকে। তাঁর কেরিয়ারে পিঠে ব্যথার কারণে প্রথমবার এক বছরে চারটি মেজর মিস করেন তিনি। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে পিঠে অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। ২০১৭ সালেও পিঠের সমস্যার কারণে নানান টুর্নামেন্ট থেকে সরে আসতে বাধ্য হন তিনি৷ ২০১৮ সালে পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন টাইগার। এই মেজর তাঁকে বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে ২৬ নম্বর স্থান করে দেয়। ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল উডস মাস্টার্স জিতেছিলেন, যা ছিল এগারো বছরের মধ্যে তাঁর প্রথম বড় চ্যাম্পিয়নশিপে জয়। এই জয়ের ফলে সেবছর ‘প্রেসিডেন্ট মেডেল অব ফ্রীডম’ দেওয়া হয় তাঁকে। ২০২০ সালে আবার পিঠে মাইক্রোডিসেক্টমি সার্জারি হয় তাঁর। ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হন তিনি। এরপর তাঁর কেরিয়ার নিয়ে সংশয় দেখা দিলেও তিনি ২০২২ সালে দ্য মাস্টার্সে খেলে বিশ্বকে অবাক করে দেন।

টাইগার উডস ফোর্বসের সমীক্ষা অনুযায়ী বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনভোগীদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। টাইগার এবং তাঁর বাবা টাইগার উডস ফাউন্ডেশন  তৈরি করেন ১৯৯৬ সালে, যা শিশুদের মধ্যে গল্ফের প্রচারের প্রাথমিক লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়াও এই ফাউন্ডেশন শিক্ষাবিস্তারের কাজেও সমানভাবে কাজ করে চলেছে।

2 comments

আপনার মতামত জানান