ডুয়ার্সের কোলে গড়ে ওঠা আলিপুরদুয়ারের মধ্যেই রয়েছে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর অরণ্য-সমাকীর্ণ। ভুটান সীমান্তের একেবারে ধার ঘেঁষে অপূর্ব মোহময়ী বক্সা যেন সবুজে ঘেরা এক রোমাঞ্চ-জগত। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সমগ্র ভারতের মধ্যে জীববৈচিত্র্যের দিক থেকেও বক্সা জাতীয় উদ্যানের (Buxa National park) স্থান অনেক উপরে।
পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলায় বক্সা জাতীয় উদ্যান বা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প অবস্থিত। এর উত্তর দিকেই রয়েছে ভুটান সীমান্ত, সিঞ্চুলা পর্বতশ্রেণি আর পূর্ব দিকে আসাম-সীমান্ত। ৩১ সি নং জাতীয় সড়কটি চলে গিয়েছে এর একেবারে দক্ষিণ দিক বরাবর। উত্তর-পূর্ব ভারতের একেবারে পূর্ব সীমানার এই জীববৈচিত্র্যপূর্ণ অরণ্যাঞ্চলে তরাই-এর বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছে। তাছাড়া এর পূর্ব দিকে রয়েছে মানস জাতীয় উদ্যান। ভারত ও ভুটানের মধ্যে এশীয় হাতিদের অভিবাসনের অন্যতম মাধ্যম এটি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২৮০০ ফুট। এর খুব কাছেই রয়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান, চিলাপাতা অরণ্য এবং জয়ন্তী পাহাড়।
১৯৮৩ সালে ভারতের পঞ্চদশ ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্প হিসেবে গড়ে উঠেছিল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প। এই সংরক্ষিত অরণ্যটি প্রাথমিকপর্বে উত্তরবঙ্গের মধ্যে ডলোমাইটের খনি হিসেবে সুপরিচিত ছিল। পরে ১৯৮৬ সালে এই প্রকল্পের মধ্যেই প্রায় ৩১৫ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠে বক্সা অভয়ারণ্য। ১৯৯১ সালে পুনরায় এই অভয়ারণ্যে অতিরিক্ত ৫৪.৪৭ বর্গ কিলোমিটার জমি অন্তর্ভুক্ত করা হয় অর্থাৎ বক্সা অভয়ারণ্যের পরিসর বর্ধিত হয়। এর ঠিক এক বছর পরেই ১৯৯২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বক্সা অভয়ারণ্যের মধ্যে প্রায় ১১৭ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলকে সংরক্ষিত করে বক্সা জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা দেওয়ার পরিকল্পনা করে এবং ১৯৯৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বক্সা জাতীয় উদ্যান গড়ে ওঠে।
বক্সার প্রবেশপথে রয়েছে রাজাভাতখাওয়া যার নামকরণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাজাদের ভাত খাওয়ার প্রাচীন ইতিহাস। কোচবিহারের রাজা ধৈর্য্যেন্দ্রনারায়ণ এবং ভুটানের রাজা দেবরাজের মধ্যে এই বক্সা অঞ্চলের অধিকার নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধলে ভুটানের রাজা সেনাবাহিনী নিয়ে ধৈর্য্যেন্দ্রনারায়ণকে বন্দী করেন। পরে ১৭৭৪ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে আর সেই সময়েই বন্দী রাজার ফিরে আসার ঘটনায় উৎফুল্ল জনগণ রাজার উদ্দেশ্যে মহাভোজের আয়োজন করেন এই অঞ্চলে। সেই ভোজের মধ্যে বাঙালিদের অতি প্রিয় ভাত খেয়েছিলেন রাজা। সেই থেকেই এই অঞ্চলের নাম হয় রাজাভাতখাওয়া।
এখানে আসার জন্য প্রথমেই ট্রেনে করে নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে আসা যায়। আলিপুরদুয়ার স্টেশন থেকে বক্সার দূরত্ব মাত্র ২৪ কিলোমিটার। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমেও একইভাবে গাড়ি করে বক্সায় আসা যায়, কিন্তু সেক্ষেত্রে দূরত্বটা অনেকটা বেশি হওয়ায় বেশ খানিকটা অতিরিক্ত সময় লেগে যাবে। সময় আর গাড়ির জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য আলিপুরদুয়ারে নেমে পড়াই শ্রেয়। বিমানে এলে নামতে হবে বাগডোগরা বিমানবন্দরে আর তারপর সেখান থেকে গাড়ি করে সোজা বক্সায়। এছাড়া নিজের গাড়ি করে আসতে চাইলে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ২৭ নং জাতীয় সড়ক ধরে মোটামুটি ঘন্টা চারেকের মধ্যে সহজেই চলে আসা যাবে বক্সা জাতীয় উদ্যান।

বক্সা জাতীয় উদ্যান এবং তার আশেপাশে বহু থাকার জায়গা রয়েছে। বক্সা জাতীয় উদ্যানের কাছেই পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অধীনে অরণ্য ট্যুরিজম প্রপার্টিতে পরিবার নিয়ে অনায়াসে থাকা যায়। বক্সার অরণ্যের ভিতরেও কিছুদিন আগে পর্যন্ত বাংলোতে রাত্রিবাস করা যেত। কিন্তু ২০১৭ সালের শেষ দিকে বক্সার বেশ কিছু স্থানে রাত্রিবাস নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ২০১৫ সালে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত জাতীয় পরিবেশ আদালতে একটি মামলা করেছিলেন, যার শুনানি হয় ২০২২ সালের ৩০ মে। সেই মামলার রায়ে বক্সা জাতীয় উদ্যানের ভেতরে সমস্ত বাণিজ্যিক কাজকর্ম বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং বনাঞ্চলের ভেতরে কোনও হোটেল, রিসর্ট না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে বনাঞ্চলের ভেতরে বাণিজ্যিক কাজকর্ম বন্ধের এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে আর্জি করেছিলেন বক্সার ১৮ জন হোম-স্টে মালিক। তাই এখানে ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকলে আগে থেকে কাছাকাছি অঞ্চলে হোটেল বুক করে নেওয়াই শ্রেয়।
এখানে বক্সা ব্র্যাঘ প্রকল্প ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি জায়গা, যাদের বিস্তারিত বর্ণনা নিচে দেওয়া হল।
বক্সা ব্র্যাঘ প্রকল্প (Buxa Tiger Reserve) – প্রায় ৭৪৫ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত বক্সা টাইগার রিজার্ভে প্রায় ৪৫০টি প্রজাতির গাছ, ২৫০টি প্রজাতির গুল্ম, ৪০০ রকমের ওষধি গাছ এমনকি ১৫০ রকমের অর্কিড দেখা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ ও ঘাসও রয়েছে এই অরণ্যাঞ্চলের মধ্যে। শাল, চাঁপা, গামহার, শিমূল, চিকারাসি ইত্যাদি গাছপালাই এখানে বেশি দেখা যায়। সমগ্র বনভূমিটি মোট ৮টি ভাগে বিভক্ত। তবে মূলত পূর্ব এবং পশ্চিম এই দুটি ভাগেই এই অরণ্যটি বিভক্ত রয়েছে। ২৮৪ রকমের পাখি, ৭৩টি ভিন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীর বাস এই বক্সা টাইগার রিজার্ভে। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, এশীয় হাতি, ভারতীয় বাইসন, সম্বর হরিণ, ক্লাউডেড লেপার্ড, ভারতীয় লেপার্ড, বুনো শূকর, বিশালাকায় কাঠবেড়ালি ইত্যাদি পশুদের দেখা মেলে এই অরণ্যে। এছাড়াও অসংখ্য প্রজাতির মাছ, সরীসৃপ এবং উভচর প্রাণীও রয়েছে এখানে। বক্সা ব্র্যাঘ প্রকল্পের মনোরম অরণ্য প্রকৃতি, অচেনা পাখিদের কূজন সব মিলিয়ে এক রোমাঞ্চকর আবহ। এখানে জঙ্গল ঘুরতে হবে মূলত জিপ সাফারি ভাড়া করে। ভাগ্য ভালো থাকলে সাফারিতে যেতে যেতে বাঘের দেখাও পেয়ে যেতে পারেন। তবে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাঘের দেখা পাওয়াই দুষ্কর। ২০২১ সালে সরকারের বনদপ্তরের তরফে ৩টি বাঘ পরীক্ষামূলকভাবে এখানে আনা হয়েছে। ব্যাঘ্র সংরক্ষণের জন্য জঙ্গলের ভিতরে থাকা সমস্ত হোম-স্টেগুলিকে তুলে দেওয়ার কথা আদালত থেকে জানানো হয়েছে। বক্সার যত গভীরে যাবেন, নিস্তব্ধতা এসে গ্রাস করবে জিপকে। দুদিকের জঙ্গলের মাঝ বরাবর কালো পিচের রাস্তা চলে গেছে বহুদূরে। সেই পথেই জিপ এগিয়ে চলবে। হাতি, বাঘ কিচ্ছু যদি চোখে না পড়লেও এই জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতাই আলাদা। ভোর ৬টা থেকে এবং বিকেল ৩টে থেকে দুটি পৃথক সময়ে এই জঙ্গল সাফারি হয়ে থাকে। মোটামুটি একটি ট্রিপে ৩-৪ ঘন্টা ধরে জঙ্গলে ঘোরা যায়।
রাজাভাতখাওয়া – বক্সার গভীরে ঢোকার আগেই পড়বে রাজাভাতখাওয়া যেখানে রয়েছে শকুন প্রজনন কেন্দ্র। এখানে বিলুপ্তপ্রায় ভারতীয় শকুনদের সংরক্ষণ করা হয়। এখানে একটি সুদৃশ্য সংগ্রহশালা রয়েছে। সেই সংগ্রহশালার ভিতরে ঢুকলেই চোখে পড়বে নানা পশু-পাখির স্টাফ করা মূর্তি, বিশালাকায় একটি বাঘের ছাল ঝোলানো দেয়ালে কিংবা একটি বিশাল বলগা হরিণের মাথা স্টাফ করা আছে দেয়ালে। এখানেই সেই কোচবিহারের রাজার ফিরে আসার কাহিনি দেয়ালচিত্রে সুদৃশ্যভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রাজাভাতখাওয়ার ছোট্ট পরিসরে একটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। এর নাম ক্যানোপি ওয়াচ টাওয়ার। এখান থেকে জঙ্গলের যে ভিউ দেখতে পাওয়া যায় তা অসাধারণ। বিকেলের পড়ন্ত রোদে জঙ্গলের অসাধারণ দৃশ্য দেখতে এই ওয়াচ টাওয়ারে একবার আসতেই হবে। এছাড়াও রয়েছে একটি ‘হুইসপারিং ফরেস্ট’ যার মধ্যে দিয়ে হেঁটে গেলে মনে হবে সমস্ত জঙ্গল থেকে যেন কয়েক লক্ষ ঝিঁঝিঁ পোকা অবিরত ডেকে চলেছে। সেই ডাকের মধ্যে একটা আলাদা রোমাঞ্চ খুঁজে পাবেন।
বক্সা দূর্গ – এই অঞ্চলের অন্যতম বিখ্যাত দিকনির্দেশিকা হিসেবে বক্সা দূর্গের কথা বারবারই উঠে আসে। এই বক্সা দূর্গের ইতিহাস অনেক পুরনো। তবে ঠিক কবে এই দূর্গ গড়ে ওঠে তা বলা যায় না। ইতিহাস বলছে ভুটানের রাজা এবং কোচবিহারের রাজাদের যোগসূত্র ছিল এই বক্সা দূর্গ। যদিও ১৮৬৫ সালে সিঞ্চুলা চুক্তির অংশ হিসেবে ব্রিটিশরা এই দূর্গ দখল করে নেয়। তারপরই এই বক্সা দূর্গে গড়ে ওঠে সেকালের কুখ্যাত ডিটেনশন ক্যাম্প ওরফে বন্দিশালা। আন্দামান সেলুলার জেলের পর এটিই ছিল ভারতের অন্যতম কুখ্যাত কারাগার। বহু বিপ্লবীকে বিনা বিচারে এখানে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। শোনা যায়, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুকেও নাকি এখানে কিছুদিন বন্দি করে রাখা হয়েছিল। ১৭৭৪ ও ১৮৬৫ সালের ভারত-ভুটান যুদ্ধের সাক্ষী এই বক্সা দূর্গ। অনেক পরে ১৯৬০-এর দশকে তিব্বতি রিফিউজিদের রিলিফ ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত ছিল এই দূর্গ। বর্তমানে এই দুর্গটি একটি পরিত্যক্ত দুর্গ। তবে এই দুর্গে আসার পথ ট্রেক করে আসতে খুব রোমাঞ্চকর লাগবে। মাঝে বেশ কিছু হোম স্টে রয়েছে। তবে বর্তমানে এখানে থাকা নিষিদ্ধ করে দেওয়ার ফলে এইসব হোম স্টে’র ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বক্সা অরণ্য ঘোরার পাশাপাশি সাইটসিইং হিসেবে ঘুরে আসা যায় জয়ন্তী পাহাড়, মহাকাল গুহা ইত্যাদি জায়গায়। আবার পুরো ডুয়ার্সের ট্রিপে এসে থাকলে জলদাপাড়া, চিলাপাতা অরণ্য, লেপচাখা গ্রাম এগুলিও দেখে নেওয়া যায় পরপর। চাইলে কেউ ট্রেক করে ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ৫ কিমি. দীর্ঘ পথ পেরিয়ে পৌঁছে যেতে পারেন বক্সাদুয়ার বনবাংলো। ট্রেকারদের জন্য এখানে থাকা-খাওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বক্সায় ট্রেক করার অনেকরকম পথ রয়েছে। সান্তালবাড়ি থেকে বক্সা দূর্গ, আবার কেউ চাইলে বক্সা থেকে জয়ন্তী হয়ে ১৩ কিমি. পথ পেরিয়ে মহাকাল গুহাতেও ট্রেক করে চলে যেতে পারেন। ট্রেকিং হোক বা সাফারি নির্দিষ্ট সরকারি পরিচয়পত্র দেখিয়ে তার জন্য অনুমতি নিতে হয়। ট্রেকিং-এর ক্ষেত্রে দক্ষ একজন গাইড সঙ্গে রাখা খুবই জরুরি। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ঘোরার সময় কখনই অযথা চিৎকার-চেঁচামেচি করা যাবে না, গাড়িতে জোরে গান বাজানো কিংবা হুল্লোড় করা যাবে না। জঙ্গলের পশু-পাখিদের শান্তি বিঘ্ন করা অপরাধ। সর্বোপরি খাবার-দাবারের প্যাকেট, জলের বোতল ইত্যাদি জঙ্গলের মধ্যে ফেলে জঙ্গলের পরিবেশ নষ্ট করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে জঙ্গলের মধ্যে দু-চাকার গাড়ি নিয়ে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
বছরের যে কোনও সময়েই বক্সায় যাওয়া যায়। বর্ষাকালে জঙ্গলের সৌন্দর্য কয়েকগুণ বেড়ে যায় ঠিকই, কিন্তু তাতে ভ্রমণের আনন্দ মাটি হয়ে যাবে। তাই বর্ষাকাল বাদ দিয়ে আসাই ভাল। ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বক্সা জাতীয় উদ্যান বন্ধ থাকে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে আসাই শ্রেয়।
ট্রিপ টিপস
- কীভাবে যাবেন – নিউআলিপুরদুয়ার স্টেশনে নেমে সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে সহজেই চলে আসা যায় বক্সা টাইগার রিজার্ভ আর নিজের গাড়ি থাকলে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ২৭ নং জাতীয় সড়ক ধরে ঘন্টা চারেকের মধ্যেই এখানে পৌঁছানো যায়।
- কোথায় থাকবেন – বক্সা টাইগার রিজার্ভের আশেপাশে বহু ছোট-বড়ো থাকার হোটেল রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন বিভাগের একটি ট্যুরিজম লজও রয়েছে। তবে ২০১৮ সাল থেকে জঙ্গলের ভিতরে রাত্রিবাস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- কী দেখবেন – বক্সা অরণ্য, এখানকার গাছ-গাছালি, নিস্তব্ধ আরণ্যক প্রকৃতি এখানকার বিশেষ দ্রষ্টব্য। জঙ্গল সাফারি বক্সা টাইগার রিজার্ভের অন্যতম আকর্ষণ। বক্সা দূর্গে ট্রেক করে ওঠা আলাদা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। এছাড়া বক্সা ঘোরার পর নিকটবর্তী জয়ন্তী পাহাড়, কিংবা মহাকাল গুহা সাইটসিইং হিসেবে ঘুরে আসা যায়।
- কখন যাবেন – ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বক্সা টাইগার রিজার্ভ বন্ধ থাকে। ফলে এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে আসাই সবথেকে ভাল।
- সতর্কতা –
- ট্রেকিং হোক বা সাফারি নির্দিষ্ট সরকারি পরিচয়পত্র দেখিয়ে তার জন্য অনুমতি নিতে হয়, তাই সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথিপত্র রেখে দেওয়া দরকার।
- ট্রেকিং-এর ক্ষেত্রে দক্ষ একজন গাইড সঙ্গে রাখা খুবই জরুরি।
- জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ঘোরার সময় কখনই অযথা চিৎকার-চেঁচামেচি করা যাবে না, গাড়িতে জোরে গান বাজানো কিংবা হুল্লোড় করা যাবে না। জঙ্গলের পশু-পাখিদের শান্তি বিঘ্ন করা অপরাধ।
- সর্বোপরি খাবার-দাবারের প্যাকেট, জলের বোতল ইত্যাদি জঙ্গলের মধ্যে ফেলে জঙ্গলের পরিবেশ নষ্ট করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
- জঙ্গলের মধ্যে দু-চাকার গাড়ি নিয়ে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
- বিশেষ পরামর্শ