চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী তিথিতে অন্নপূর্ণা পূজা করা হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী এই দিন গৃহে অন্নপূর্ণা পূজা করা হলে অন্নের অভাব হয় না। দেবী পার্বতী ভিক্ষুক শিবকে অন্নপ্রদান করে এই নাম প্রাপ্ত হন। দেবীর আরেক নাম অন্নদা যার একহাতে রয়েছে অন্নপাত্র এবং অন্যহাতে হাতা। জেনে নেওয়া যাক প্রচলিত কিছু গল্পকথা।
পৌরাণিক গল্প অনুযায়ী মহাদেব ও পার্বতী একদিন গল্প করছিলেন। একটি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। মহাদেব পার্বতীকে বলেন যে পৃথিবী একটা মায়া বা বিভ্রম ছাড়া কিছু নয়। কিণ্তু পার্বতী তাতে সায় দেন না। এই নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বেঁধে যায়। পার্বতী তার কথার সত্যতা প্রমাণ করার জন্য অদৃশ্য হয়ে যান। দেবীর অনুপস্থিতিতে সমগ্র পৃথিবীতে অনাহার, অনিয়ম,দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। মাতা পার্বতী তার সন্তানদের এই দুর্দশা আর সহ্য করতে না পেরে দেবী অন্নপূর্ণার রূপ ধরে কাশীতে আসেন। তখন কাশীতে তার রন্ধনশালা স্থাপন করে ক্ষুধার্ত মানুষদের অন্নদান করলেন। পৃথিবীর এই দুর্ভিক্ষে মহাদেবও ক্ষুধার্ত ছিলেন। কাশীতে দেবী অন্নপূর্ণার কথা জানতে পেরে তিনিও সেখানে উপস্থিত হলেন এবং অন্নপূর্ণার কাছে অন্ন ভিক্ষা চাইলেন। মহাদেব এরপর দেবী অন্নপূর্ণার উদ্দেশ্যে কাশীতে মন্দির নির্মাণ করেন। কাশীর এই অন্নপূর্ণার মন্দির তথা এখানের অন্নকূট উৎসব পৃথিবী বিখ্যাত। প্রতিবছর এখানে ধুমধাম করে অন্নপূর্ণা পূজা পালিত হয়।
অন্য গল্পকথা অনুযায়ী বিয়ের পর শিব-পার্বতীর সুখেই দাম্পত্য কাটছিলো। কিণ্তু শিব ছিলেন খুব গরিব ,তাই অভাবের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। পার্বতীর তিরস্কারে শিব ঘর ছেড়ে ভিক্ষা করা শুরু করেন। কিন্তু কোথাও ঘুরেও তিনি ভিক্ষা আর পান না। যেখানেই যান সেখানেই অভাব। আসলে কিন্তু পার্বতীর মায়াতেই শিব ভিক্ষা পাচ্ছিলেন না তবে তা তিনি বুঝতে পারেননি। শেষে কৈলাসে ফিরে তিনি আহার গ্রহণ করেন। এরপর পৃথিবীতে যাতে অন্নের অভাব না হয় তাই তিনি কাশীতে মা অন্নপূর্ণার মন্দির গড়ে তোলেন।
3 comments