চন্দ্রকেতুগড় ভ্রমণ

চন্দ্রকেতুগড় ভ্রমণ

বাংলার বুক জুড়ে রয়েছে প্রচুর ইতিহাস এবং প্রাচীনত্বের গন্ধ। আর এই ইতিহাসের স্বাদ পেতে ভ্রমণ-পিপাসুরা বেরিয়ে পড়েন একেক দিন একেক জায়গায়। তবে যে স্থানই হোক না কেন, তার নিজস্ব একটা ইতিহাস থাকেই। বারাসাতের কাছে চন্দ্রকেতুগড় এর ব্যতিক্রম নয়। লেখিকা বাণী বসুর বিখ্যাত উপন্যাস ‘খনামিহিরের ঢিপি’-র প্রেক্ষাপট জুড়ে রয়েছে এই চন্দ্রকেতুগড়, যা নাকি বাংলার হরপ্পা! গাছ-পালা ভরা, উঁচু সবুজ ঘাসের ঢিপির মাঝে মাঝেই জেগে আছে প্রাচীনকালের স্থাপত্যের ভগ্নাবশেষ। জাগ্রত ইতিহাসের বুকে শান্ত, নিরিবিলি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হাঁটতে হাঁটতে কিছুক্ষণ কাটিয়ে আসতেই পারেন। বাঙালির প্রাচীন ইতিহাসের হদিশ পেতে চন্দ্রকেতুগড় ভ্রমণ ভালো বৈ মন্দ নয়।

কলকাতার উত্তর-পূর্ব দিকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে বেড়াচাঁপা শহর আর হাড়োয়া রেল রোডের কাছেই উত্তর ২৪ পরগণার অন্তর্গত এই চন্দ্রকেতুগড়। খুব কাছ দিয়ে বয়ে গেছে বিদ্যাধরী নদী। আশেপাশে রয়েছে দেগঙ্গা, দেউলিয়া ইত্যাদি জনপদ।

চন্দ্রকেতুগড়ে এএসআই-এর বোর্ড। চিত্র ইন্টারনেট।

উত্তর ২৪ পরগণার বেড়াচাঁপার কাছেই এই প্রাচীন জনপদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। ঐতিহাসিকদের মতে প্রাচীনকালে এটি ছিল একটি বন্দর নগরী এবং উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের সঙ্গে এর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল। পরবর্তীকালে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে এখান থেকে যে ক্ষয়িত রৌপ্যমুদ্রা পাওয়া গেছে তা থেকে অনুমান করাই যায় এই অঞ্চল অতীতে একটি সমৃদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল এবং এখান থেকে প্রাপ্ত সীলমোহরেও প্রত্নতাত্ত্বিকেরা পালতোলা নৌকার প্রতিকৃতি, ঘোড়ার প্রতিকৃতি আবিষ্কার করেছেন। ফলে বোঝাই যায় জলপথে বাণিজ্যের নিদর্শনের সত্যতা রয়েছে। বণিক, নাবিকদের পদচিহ্ন আজ মুছে গেলেও জলপথের হদিশ মিলেছে। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে ভূতত্ত্ববিদেরা এই অঞ্চলের পাশেই কোনও নদীর ধারার লুপ্ত অস্তিত্বের সন্ধান পেয়েছেন। মনে করা হয় একসময় চন্দ্রকেতুগড়ের কাছেই ছিল সমুদ্র আর সেই লুপ্ত নদীর ধারা ছিল আসলে গঙ্গারই প্রাচীন কোনও নদীখাত। কিন্তু বর্তমানে সমুদ্র অনেকটাই দূরে সরে গেছে। প্রাচীন ভারতে যে গঙ্গারিডাই সভ্যতার কথা জানা যায়, তার রাজধানী ছিল ‘গঙ্গে’। ঐতিহাসিকেরা কেউ কেউ মনে করেন চন্দ্রকেতুগড়ের নিকটবর্তী দেগঙ্গা আসলে এই ‘গঙ্গে’রই বর্তমান রূপ। দেগঙ্গা নামের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেব গঙ্গা, দ্বীপ গঙ্গা, দ্বিগঙ্গা ইত্যাদি আদিনাম পাওয়া যায় যা থেকে অনুমিত হয় যে এই অঞ্চলে গঙ্গার দুটি শাখা সমান্তরালে বয়ে গিয়েছিল আর তাদের মাঝে পলি জমে গড়ে উঠেছিল ব-দ্বীপ অঞ্চল। সম্ভবত এই দেগঙ্গাই ছিল সেই ব-দ্বীপ যা কিনা প্রায় ২৩০০ বছরের পুরনো। এই চন্দ্রকেতুগড়ে পাল যুগের একটি বৌদ্ধ মন্দির পাওয়া গিয়েছে যা থেকে ঐতিহাসিকেরা মনে করছেন মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পরেই অন্যান্য ছোট ছোট নগর রাষ্ট্রের উৎপত্তির সঙ্গে এই চন্দ্রকেতুগড়ের জন্ম হয়েছিল। চন্দ্রকেতুগড়ের নামকরণ কীভাবে হল তার ইতিহাস জানতে গিয়ে হাড়োয়ার গোরাচাঁদ পীর আর জমিদার চন্দ্রকেতুর কাহিনী জানা যায়। এই গোরাচাঁদ পীরের সঙ্গে রাজা তথা জমিদার চন্দ্রকেতুর সংঘর্ষের লোককাহিনী প্রচলিত রয়েছে। ১৮৭৮ সালে কেদারনাথ চক্রবর্তীর লেখা ‘চন্দ্রকেতু’ নামের একটি উপন্যাসেও চন্দ্রকেতু রাজার একটি বিশালাকায় দূর্গের বর্ণনা পাওয়া যায় এবং সেখানে চন্দ্রকেতুগড়ের পাশেই ‘বালাণ্ডা নামের একটি নগরীর উল্লেখ লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিকদের মতে প্রাচীন বালবল্লভী রাজ্য থেকেই এই ‘বালাণ্ডা’ শব্দের উৎপত্তি। চন্দ্রকেতুগড় সহ পার্শ্ববর্তী বিস্তৃত অঞ্চল এই বালবল্লভী রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে মনে করা হয়। ১৯০৬ সালে স্থানীয় চিকিৎসক তারকনাথ ঘোষ প্রথম চন্দ্রকেতুগড়ের ‘আর্কেওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া’র প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও পর্যালোচনার অনুরোধ করেন। ঐ সময়ই পুরাতত্ত্ব বিভাগের পূর্বাঞ্চল শাখার সুপারিনটেণ্ডেন্ট মি. লঙ হার্স্ট চন্দ্রকেতুগড় পরিদর্শনে আসেন। ১৯০৯ সালে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এই অঞ্চলে আসেন এবং কিছু প্রত্নবস্তু আবিষ্কার করেন। তারপর ১৯২৬ সালে ‘মাসিক বসুমতী’ পত্রিকায় রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ‘চন্দ্রকেতুর গড়’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তার অনেক পরে ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আশুতোষ সংগ্রহশালা থেকে এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য চালান হয়। তার ফলেই চতুর্থ ও দ্বাদশ শতকের মধ্যবর্তী সময়কালের নানাবিধ পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। ২০০০ সালে খননকার্যের ফলে এখানে মৌর্য ও গুপ্ত যুগের মধ্যবর্তী ৩০ ফুট উচ্চতার আয়তক্ষেত্রাকার একটি দুর্গের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তাছাড়া সেই দলটি একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষও খুঁজে পেয়েছে। চন্দ্রকেতুগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি প্রাথমিকপর্বে অরক্ষিত থাকায় বহু নিদর্শন চুরি গিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম অফ আর্ট-এ সুভাষ কাপুরের দেওয়া বেশ কয়েকটি চন্দ্রকেতুগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান পাওয়া গিয়েছে। সুভাষ কাপুর পরে যদিও গ্রেপ্তার হন। ২০১৬ সালে সংসদে প্রথম তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য কাকলি ঘোষ দস্তিদার এই চন্দ্রকেতুগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান সংরক্ষণের ব্যাপারে ২০১৭ সালে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। শিল্প-সংগ্রাহক দিলীপ মেইটে তাঁর সংগ্রহ থেকে সরকারকে এই সংগ্রহশালা গড়ে তোলার জন্য ৫২৪টি প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান দান করেন যেগুলির আনুমানিক মূল্য ৩০০ কোটির কাছাকাছি।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

চন্দ্রকেতুগড়ে এর নিচেই চাপা পড়ে রয়েছে কত ইতিহাস । চিত্র ইন্টারনেট।

গাছপালায় ঘেরা চন্দ্রকেতুগড়ের ঢিপিতে ওঠার মুখেই চোখে পড়বে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের সাইনবোর্ড। গাছের ছায়া ঘেরা সবুজ অন্ধকারে এখানেই যেন ইতিহাস ঘুমিয়ে রয়েছে। ঐ পথ ধরে এগোলেই একটা লোহার গেট চোখে পড়বে, খোলাই থাকে সবসময়। এরপরেই চন্দ্রকেতুর রাজপ্রাসাদের প্রাচীর দেখা যাবে। ঢিপির চারধারে পুরাতাত্ত্বিক বিভাগের ঘিরে দেওয়া অংশের মধ্যে যে দূর্গের ভগ্নাবশেষ দেখা যায়, তা আসলে এক বিশাল দূর্গের খানিক অংশমাত্র। শোনা যায় এই দূর্গটি নাকি মাটির তৈরি ছিল। এই ঢিপিতে বসে নিরালায় দু দণ্ডের শান্তি খুঁজে নিতে পারেন কোনও রোমান্টিক ভ্রমণবিলাসী। দূর্গ প্রাচীরের ভগ্নাবশেষ থেকে প্রাচীন ইঁটেরা সব বেরিয়ে এসেছে, যেন কোনও অতীতের কথা বলতে চায়। ঐ ঢিপির উপর হাঁটতে হাঁটতে শিহরিত হতে পারেন যেন পায়ের তলায় প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস শুয়ে আছে নিশ্চুপে। পায়ের নীচে ইতিহাসকে রেখে হাঁটার রোমাঞ্চকর অনুভূতি পেতে চন্দ্রকেতুগড়ে আসতেই হবে।

ট্রেনে করে চন্দ্রকেতুগড় আসার সবথেকে ভাল উপায় হল শিয়ালদা থেকে হাসনাবাদ বা বসিরহাট লোকালে চেপে মোটামুটি ১ ঘন্টা ১৫ মিনিটের যাত্রা শেষে সোজা হাড়োয়া রোড স্টেশনে নেমে পড়া। তারপর স্টেশনের পাশ থেকেই অটো বা টোটো করে চন্দ্রকেতুগড়ে চলে আসা যায়। বাসে চন্দ্রকেতুগড় আসতে হলে কলকাতার ধর্মতলা বা উল্টোডাঙা থেকে বারাসাতগামী বাসে উঠে নেমে পড়তে হবে বেড়াচাঁপা মোড়ে, তারপর সেখান থেকে একইভাবে অটো বা টোটোয় করে চন্দ্রকেতুগড় পৌঁছানো যায়। তাছাড়া নিজের গাড়ি নিয়ে আসতে গেলে কলকাতা থেকে যশোর রোড হয়ে বারাসাত পেরিয়ে টাকি রোড ধরতে হবে। তারপর সেই টাকি রোড ধরে বসিরহাটের দিকে যেতে ২১ কিমি পথ পেরোলেই দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা মোড় পড়বে, সেখান থেকে বাঁদিকে ঘুরলেই পৃথীবা রোড। এই রোডের পাশেই রয়েছে খনামিহিরের ঢিপি। আর বেড়াচাঁপা মোড় থেকে ডানদিকে হাড়োয়া রোড ধরে কিছুটা গেলেই চন্দ্রকেতুগড় দেখা যাবে।

এখানে থাকার হোটেল সেভাবে নেই। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন মন্ত্রকের অধীনে ‘পথের সাথী’ বলে একটি হোটেল রয়েছে। সেখানে আগে থেকে যোগাযোগ করে থাকার ব্যবস্থা করে নেওয়া যায়। তবে চন্দ্রকেতুগড় ভ্রমণ এক দিনেই সেরে ফেলা যায়, দিনের দিন যাওয়া আর ফেরাতে কোনও অসুবিধে হয় না।

চন্দ্রকেতুগড় ভ্রমণ বলতেই এখানকার তিনটি বিশেষ দ্রষ্টব্যের কথা উল্লেখ করা আবশ্যক। খনামিহিরের ঢিপি, চন্দ্রকেতুর দূর্গের ভগ্নাবশেষ আর সংগ্রহশালা।

চন্দ্রকেতুর দূর্গের ভগ্নাবশেষ । চিত্র ইন্টারনেট।

চন্দ্রকেতুর দূর্গের ভগ্নাবশেষ – এই দূর্গের পাশ দিয়ে  বহু বহু কাল আগে বয়ে যেত বিদ্যাধরী নদী। একসময় এখানেই নাকি রাজার দুই প্রিয় পাত্র হামা ও দামা শরীরচর্চা করতেন, রণকৌশল চর্চা করতেন। চারিদিকে এখন বিশাল বিশাল গাছ উঠেছে। দূর্গে আসার পথের মুখে দেখা যাবে একটা লোহার গেট। ঐতিহাসিকরা বলছেন যে এই দূর্গের বিশ্রামাগারে নাকি বণিকরা বিশ্রাম নিতেন। এখন যদিও তার আর কোনও অস্তিত্ব নেই। সবুজ বিস্তীর্ণ প্রান্তরের চারধারে খালি দূর্গ প্রাচীরের ভগ্নাবশেষ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। ভারত সরকারের পুরাতাত্ত্বিক বিভাগের তরফ থেকে বড় বড় নির্দেশনামা টাঙানো আছে যেখানে এই অঞ্চলের ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। পড়ে দেখতেই পারেন।

চন্দ্রকেতুগড় সংগ্রহশালা। চিত্র ইন্টারনেট।

চন্দ্রকেতুগড় সংগ্রহশালা – চন্দ্রকেতুর দূর্গে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য চালিয়ে যে সকল পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে তা এই সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত আছে। বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি, মাটির পাত্র, তাম্রফলক, রৌপ্যমুদ্রা ইত্যাদি সবই এখানে দেখা যায়। সংগ্রহশালাটি বিকেল চারটে পর্যন্ত খোলা থাকে। চন্দ্রগুপ্ত ও কুমারদেবীর স্বর্ণমুদ্রা, অনেক মূল্যবান পাথরের পুঁতি, হাতির দাঁত ও হাড়ের জিনিসপত্র, কুষাণ ও গুপ্ত যুগের নানা নিদর্শন এখানে দেখা যাবে। সংগ্রহশালার ভিতরে ছবি তোলা যায় কিনা তা অনুমতি নিয়ে তবেই তুলবেন।  

খনা মিহিরের ঢিপি। চিত্র ইন্টারনেট।

খনা মিহিরের ঢিপি – চন্দ্রকেতুগড় থেকে খনা মিহিরের ঢিপির দূরত্ব মোটামুটি ২ কিলোমিটার। রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজসভার অন্যতম গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ বরাহের পুত্র মিহিরের সঙ্গে খনা একত্রে জ্যোতির্বিদ্যা চর্চা করতেন বলে জানা যায়। একসময় আকাশের তারা গণনা করে খনা ঐ অঞ্চলের কৃষকদের ঘোর দুর্যোগ থেকে রক্ষা করলে রাজা বিক্রমাদিত্য তাঁকে তাঁর রাজসভার দশম রত্নের সম্মান দেন। কিন্তু বরাহের নির্দেশে তাঁর পুত্র মিহির খনার জিভ কেটে ফেলেন। এরকম নানান প্রাচীন ঐতিহাসিক লোককথা জড়িয়ে রয়েছে এই খনামিহিরের ঢিপির সঙ্গে। মনে করা হয় এই ঢিপির নীচে একটি মন্দির ছিল যেখানে বসেই খনা আকাশের তারা দেখে জ্যোতিষ চর্চা করতেন। এখন এখানে কেবলই প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসস্তূপ চোখে পড়ে। তবে এই ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্বলিত স্থান ভ্রমণের সময় কোনওভাবেই প্লাস্টিক, জলের বোতল বা খাবারের আবর্জনা, প্যাকেট ইত্যাদি ফেলে নোংরা করা যাবে না। ফাঁকা মাঠ পেয়ে পিকনিক করতে বসার মত রুচিহীন কাজ না করাই শ্রেয়। গাছপালা আর প্রাচীন প্রত্ন নিদর্শন থাকায় সাপ-খোপ থাকতেই পারে, সে ব্যাপারে হাঁটা-চলার সময় সতর্ক থাকতে হবে।

বছরের যে কোনও সময়েই চন্দ্রকেতুগড়ে আসা যায়। তবে বর্ষাকালটা এড়িয়ে চলাই ভাল।


ট্রিপ টিপস

  • কীভাবে যাবেন – ট্রেনে করে শিয়ালদা থেকে বসিরহাট বা হাসনাবাদ লোকালে চেপে হাড়োয়া রোড স্টেশনে নামতে হবে, তারপর সেখান থেকে অটো বা টোটোয় করে চন্দ্রকেতুগড়। বাসে করে আসতে চাইলে কলকাতার ধর্মতলা বা উল্টোডাঙা থেকে বারাসাতগামী যে কোনও বাসে উঠে বেড়াচাঁপার মোড়ে নেমে একইভাবে অটো বা টোটো ধরে নিতে হবে। নিজের গাড়ি থাকলে যশোর রোড দিয়ে বারাসাত পেরিয়ে প্রথমে টাকি রোডে উঠতে হবে, তারপর ঐ পথে কিছুটা এগোলেই দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা মোড় থেকে ডানদিকে হাড়োয়া রোড ধরে কিছুটা গেলেই চন্দ্রকেতুগড়।
  • কোথায় থাকবেন – কলকাতা থেকে চন্দ্রকেতুগড় ভ্রমণ এক দিনেই সেরে ফেলা যায়, দিনের দিন যাওয়া আর ফেরাতে কোনও অসুবিধে হয় না।
  • কী দেখবেন –  চন্দ্রকেতুর দূর্গের ভগ্নাবশেষ, একটু এগিয়ে খনামিহিরের ঢিবি আর চন্দ্রকেতুগড়ের সংগ্রহশালায় বহুবিধ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।
  • কখন যাবেন –  বছরের যে কোনও সময় এখানে আসা যায়। সংগ্রহশালাটিও সারা বছর খোলা থাকে।
  • সতর্কতা –  
    • দূর্গ প্রাঙ্গণ বা খনামিহিরের ঢিপি ঘোরার সময় কোনওভাবেই জায়গা নোংরা করা যাবে না।
    • অযথা পিকনিক করে জায়গাটি নষ্ট করবেন না।
    • হাঁটা-চলার সময় সাপ-খোপের উৎপাত বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
  • বিশেষ পরামর্শ –  
    • এখানে আসার সময় বর্ষাকালটা এড়িয়ে চলা উচিত।

আপনার মতামত জানান