পিয়ালী দ্বীপ ভ্রমণ

পিয়ালী দ্বীপের আকর্ষণ বিশেষত কিছুটা লং ড্রাইভে এবং কিছুটা সুন্দরবনের ছোঁয়ায়। সুন্দরবনের ছোঁয়ায় এই কারণে বললাম কারণ পিয়ালি দ্বীপকে বলা হয় সুন্দরবনের প্রবেশপথ। পিয়ালী নদী দ্বীপটির বুক চিরে গিয়ে মিশেছে মাতলা নদীতে।  সপ্তাহের শেষে কলকাতা থেকে বহু পর্যটকের ঠিকানা এই পিয়ালি দ্বীপ

লক গেট

কামালগাজি বাইপাসের ওপর দিয়ে নতুন ফ্লাইওভার ধরে বারুইপুর | সেখান থেকে গোচরণ-ধসা রোডে উঠে, দক্ষিণ বারাসাত ছাড়িয়ে কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসবে মহিষমারী বাজার। বাজার ছাড়িয়ে কিছুদূর এলেই পর্বে কুলতালি স্লুইস গেটের ব্রিজ । এই ব্রিজ পার হলেই পিয়ালী দ্বীপ। অথবা ট্রেনেও যেতে পারেন | শেয়ালদা সাউথ সেকশন থেকে ট্রেনে উঠে নেমে পড়ুন জয়নগর অথবা মজিলপুর স্টেশনে | ২ নং প্লাটফর্ম থেকে নেমে অটো রিকশা বা ট্রেকারে করে চলে আসুন জামতলা ঘাটে | সেখান থেকে বাসে, ট্রেকারে বা অটোতে করে পৌঁছে যাবেন পিয়ালী কেল্লায় | জয়নগর স্টেশন থেকেও গাড়ি রিসার্ভ করে কেল্লা অবধি চলে আসতে পারেন

পিয়ালী কেল্লার কম্পাউন্ড

বর্ষাকালে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির মধ্যে হোটেল থেকে অন্যরকম লাগে পিয়ালী | অনেক সময় হোটেলের সামনে পুকুর থাকলে তার জলে শাপলা গুলোর ওপর টুপটাপ বৃষ্টির খেলা দেখতে বেশ লাগে। আর যদি শীতকালে আসা হয় তাহলে এখানে প্রচুর পরিযায়ী পাখি দেখা যাবে |

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

স্থানীয় লোকজনের কাছে পিয়ালী আজও কেল্লা নামে পরিচিত।

এখানে বছরের যে কোনো সময়ই যাওয়া যায়, বিশেষ করে বর্ষা আর শীতের আমেজ নিতে অনেক পর্যটক ভিড় করে এখানে| যদি শীতকালে যাওয়া যায়, তাহলে এখানে প্রচুর পরিযায়ী পাখি দেখতে পাওয়া যায়| আর বর্ষায় গ্রামগুলো হয়ে ওঠে আরও সুন্দর।

পিয়ালীর বুকে নৌকা বিহার

পিয়ালী পৌঁছে একটু জিরিয়ে নিলে মনটা কেমন চাঙ্গা হয়ে যায়। তারপরে পিয়ালী নদীর পাড়ে গিয়ে একটি নৌকা ঠিক করে পিয়ালীর বুকে নৌবিহার করা যায়| নৌকো ভ্রমণ করতে করতে মনে হবে দ্বীপের পাড়ে থেকে থেকেই উকিঁ মারছে ম্যানগ্রোভ। কোথাও হয়তো দেখা যাবে এক জেলে তার শেষ বেলায় শেষ চেষ্টা করছে মাছ ধরার। কোথাও আবার পরিত্যক্ত ভাঙা ঘাটের অবশিষ্ট অংশতে বসে স্থানীয় ছেলে ছোকরার দল তাদের বিকেলের আড্ডায় ব্যস্ত।

এইরকম অনেককিছুই দেখতে দেখতে পিয়ালির নৌকাভ্রমণ। আর নৌকায় জেতে যেতেই মাঝির মুখে পিয়ালির সম্বন্ধে অনেক জানা যায়। পিয়ালী দ্বীপকে অনেক জায়গাতেই সুন্দরবনের একটি প্রবেশ দ্বার বলেও উদ্ধৃত করা আছে।

সব ধরণের বাঙালি খাবারই এখানে পাওয়া যায়| বিশেষ করে যারা মাছ খেতে ভালোবাসে তাদের স্বর্গরাজ্য এই পিয়ালী দ্বীপ |

ট্রিপ টিপস


  • কিভাবে যাবেন : রেল পথ – শেয়ালদা সাউথ সেকশন থেকে ট্রেনে উঠে নেমে পড়ুন জয়নগর অথবা মজিলপুর স্টেশনে | ২ নং প্লাটফর্ম থেকে নেমে অটো রিকশা বা ট্রেকারে করে চলে আসুন জামতলা ঘাটে | সেখান থেকে বাসে, ট্রেকারে বা অটোতে করে পৌঁছে যাবেন পিয়ালী কেল্লায় | জয়নগর স্টেশন থেকেও গাড়ি রিসার্ভ করে কেল্লা অবধি চলে আসতে পারেন                                                                                                                                                                                                                            সড়ক পথ – কামালগাজি বাইপাসের ওপর দিয়ে নতুন ফ্লাইওভার ধরে বারুইপুর | সেখান থেকে গোচরণ-ধসা রোডে উঠে, দক্ষিণ বারাসাত ছাড়িয়ে কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসবে মহিষমারী বাজার। বাজার ছাড়িয়ে কিছুদূর এলেই পর্বে কুলতালি স্লুইস গেটের ব্রিজ । এই ব্রিজ পার হলেই পিয়ালী দ্বীপ।
  • কোথায় থাকবেন : এখানে থাকার জায়গা হল পিয়ালি আইল্যান্ড ট্যুরিস্ট লজ। এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকার ট্যুরিজম লজগুলির অন্তর্গত| এটিকেই স্থানীয়রা পিয়ালী কেল্লা বলে চেনে| এখানে ১৯টি ডবল বেডের রুম রয়েছে। থাকা আর খাওয়ার খরচ আলাদা। থাকা-খাওয়া মিলে মাথাপিছু ১২০০ টাকার আশেপাশে পড়বে। মৎস্যপ্রেমীরা এখানে টাটকা মাছের স্বাদ নিতে পারবেন। এটি ছাড়াও কেল্লার আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে হয়েছে অনেক প্রাইভেট লজ
  • কি দেখবেন : কুলতলী স্লাইস গেট, পিয়ালী নদী থেকে হেড়োভাঙা নদী ও মাতলা নদীর সন্নিকট অবধি নৌকা ভ্রমণ, নদী চরে চড়ুইভাতি করার সুব্যবস্থা রয়েছে |
  • কখন যাবেন : সারা বছরই পিয়ালী কেল্লায় ট্যুরিস্টের আনাগোনা থাকে | তবে এই জায়গা ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল, অক্টোবর থেকে মার্চ
  • সতর্কতা : বর্ষাকালে গেলে নৌকাভ্রমণ না করাই বাঞ্চনীয়, মদ্যপান করে বা না করে কখনোই জলে নামবেন না | জলে চোরাস্রোত ও কুমির দুইই আছে, রাতের বেলা হোটেলের বাইরে না বেরোনোই ভালো, জলা জায়গায় সরীসৃপের আনাগোনা বেশি, অবশ্যই মশারি টানিয়ে শোবেন, অথবা মশার ওষুধ সঙ্গে রাখবেন

তথ্যসূত্র


  1. নিজস্ব সংবাদদাতা
  2. https://bengali.oneindia.com/travel/exotic-trip-to-piyali-island-the-gateway-of-sundarbans

 

আপনার মতামত জানান