সতীপীঠ প্রভাস

সতীপীঠ প্রভাস

সতীপীঠ প্রভাস গুজরাটের সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের গির সোমনাথ জেলায় অবস্থিত। এটি একান্ন সতীপীঠের একটি পীঠ। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে এখানে সতীর উদরভাগ পড়েছিল। এখানে অধিষ্ঠিত দেবী চন্দ্রভাগা এবং ভৈরব হলেন বক্রতুণ্ড।

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে মাতা সতী নিজের বাপের বাড়িতে বাবার কাছে স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে সেখানেই দেহত্যাগ করেছিলেন। মাতা সতীর দেহত্যাগের খবর মহাদেবের কাছে পৌঁছতেই মহাদেব সেখানে উপস্থিত হন। সতীর মৃতদেহ দেখে ক্রোধে উন্মত্ত মহাদেব সেই দেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য চালু করেন। মহাদেবের তাণ্ডব নৃত্যে পৃথিবী ধ্বংসের আশঙ্কায় শ্রীবিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দ্বারা মাতা সতীর দেহ একান্নটি খণ্ডে খণ্ডিত করেন।  সেই দেহখন্ডগুলোই যে যে স্থানে পড়েছিল  সেখানে একটি করে সতীপীঠ প্রতিষ্ঠা হয়। বলা হয় এই দেহখন্ডগুলোর থেকে সতীর উদরভাগ প্রভাসে পড়েছিল।

স্কন্দ পুরাণ অনুসারে সত্যযুগে চন্দ্র প্রজাপতি দক্ষের ২৭ জন কন্যাকে বিবাহ করলেও শুধুমাত্র রোহিনীর প্রতিই আকৃষ্ট ছিলেন বেশি। ফলে তাঁর বাকি ২৬ জন স্ত্রী অবহেলিত ও অপমানিত বোধ করে তাঁদের বাবা দক্ষকে নালিশ করেন। ক্ষুব্ধ দক্ষ চন্দ্রকে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে তিনি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যাবেন। তখন চন্দ্র শাপমোচনের জন্য শিবের আরাধনা করেন। বলা হয় তিনি যে স্থানে সেই আরাধনা করেছিলেন, সেটা ছিল এই প্রভাস তীর্থ। তিনি শিবের উদ্দেশ্যে প্রভাস তীর্থে সোমনাথ মন্দির তৈরি করেছিলেন।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

সোমনাথ মন্দির থেকে কিছুটা দূরেই চন্দ্রভাগা দেবীর এই মন্দিরটি অবস্থিত। তবে বর্তমানে এখানে সেই অর্থে আলাদা কোন মন্দির নেই। প্রাচীনকালের ধ্বংস হয়ে যাওয়া মন্দিরটির রূপই এখন বর্তমান। পাথরে তৈরি এই মন্দিরে পাথরের গায়ে বিভিন্ন দেবতার মূর্তি খোদাই করা আছে। কোন সময়ে এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল তার কোন ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় নি।

প্রত্যেকটি সতীপীঠ বা শক্তিপীঠে দেবী এবং ভৈরব অধিষ্ঠিত থাকে। দেবী হলেন সতীর রূপ। ভৈরব হলেন দেবীর স্বামী। এখানে দেবীর নাম হল চন্দ্রভাগা। এবং ভৈরব হলেন বক্রতুণ্ড।

নবরাত্রির সময় এখানে প্রচুর ভিড় হয়। প্রায় সারা দেশ থেকেই বিভিন্ন মানুষ এখানে পূজা দিতে আসে। তাছাড়াও শিবরাত্রি এবং কার্ত্তিক পূর্ণিমার সময় সোমনাথ মন্দিরে ভিড় হওয়ার দরুণ এখানেও ভিড় হয়। শুধু এইসব পূজাগুলোতেই না, অন্য সময়েও যথেষ্ট ভিড় হয়।

এই সতীপীঠ নিয়ে তথ্যমূলক ভিডিও দেখুন এখানে

আপনার মতামত জানান