তেনজিং নোরগে

তেনজিং নোরগে

পর্বতারোহণের ইতিহাসে ভারতবর্ষের নাম সারা বিশ্বের দরবারে উজ্জল করেছিলেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে নিঃসন্দেহে অন্যতম একজন হলেন পর্বতারোহী তেনজিং নোরগে (Tenzing Norgay)। পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষদেশে পদার্পণ করা প্রথম দুজনের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি। তবে সেই স্বপ্নপূরণের জন্য একাধিক ব্যর্থতার পথ পেরিয়ে আসতে হয়েছিল তাঁকে। মাউন্ট এভারেস্টের চারপাশের অনাবিষ্কৃত স্থানের সন্ধানে পাড়ি দেওয়া এক ব্রিটিশ অভিযাত্রী দলের সঙ্গী হয়ে পর্বতারোহণ শুরু করেন তেনজিং। তারপর সতেরো বছরের মধ্যে ব্রিটিশ, ফরাসী, সুইস নানা অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন কিন্তু এভারেস্ট জয় রয়ে গিয়েছিল অধরাই। এডমন্ড হিলারির সঙ্গে যৌথভাবে সে-স্বপ্ন পূরণ হয় তাঁর। গ্রেট ব্রিটেন তাঁকে জর্জ মেডেল প্রদান করে এই সাফল্যের জন্য। পরবর্তীকালে পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণের জন্য নির্মিত  হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে ফিল্ড ট্রেনিং এর প্রথম পরিচালক হয়েছিলেন তিনি। নানা অভিযাত্রীদলের ‘সর্দার’ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সাতটি ভাষায় কথা বলতে পারলেও লিখতে পারতেন না তেনজিং।  অপরের সাহায্য নিয়ে লিখেছিলেন আত্মজীবনী। ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মভূষণ’ খেতাবে সম্মানিত করে।

তেনজিং-এর সঠিক জন্মতারিখ এবং জন্মস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে তেনজিং নোরগে নিজে আবহাওয়া এবং ফসলের স্মৃতি থেকে বলেছিলেন তাঁর জন্ম মে মাসের শেষদিকে। পরবর্তীতে গবেষকরা  তিব্বতী ক্যালেন্ডার অনুসারে সিদ্ধান্ত দেন যে, ১৯১৪ সালের ২৯ মে তেনজিং-এর জন্ম হয়েছিল বলে মনে করা যেতে পারে। তেনজিং নোরগে আত্মজীবনীতে বলেছিলেন, যে, উত্তর-পূর্ব নেপালের খুম্বুর টেংবোচেতে এক শেরপা পরিবারে তাঁর জন্ম হয়েছিল। ১৯৮৫ সালের একটি রেডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন বাবা-মা তিব্বতের মানুষ হলেও তাঁর জন্ম হয়েছিল নেপালে। তবে এই তথ্যতেও গলদ রয়েছে বলে গবেষকদের বিশ্বাস। তেনজিং-এর ছেলে জামলিং তেনজিং নোরগে এবং আরও অনেকের বিবরণ অনুসারে তিনি জন্মেছিলেন তিব্বতেই। গবেষকদের মতে তিব্বতের খার্তা উপত্যকা হল তেনজিং-এর জন্মস্থান। আবার কারও মতে কামা উপত্যকার সেচুতে জন্ম হয়েছিল তাঁর, বেড়ে উঠেছিলেন থামেতে এবং শৈশব কাটিয়েছিলেন খার্তাতে। ১৯৪৪ সালে দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁর প্রথম স্ত্রী দাওয়া ফুটির মৃত্যু হয় এবং তাঁর মরদেহ চিত্রালে সমাহিত করা হয়। দাওয়া ফুটি দুটি কন্যার জন্ম দিয়েছিলেন। ১৯৪৫ সালে তেনজিং বিবাহ করেন আং লাহমুকে। পরবর্তীকালে তেনজিং বিবাহ করেন দাক্কু নাম্নী এক নারীকে। তৃতীয় পক্ষের এই স্ত্রী তিনটি কন্যা এবং এক পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন।

জন্মের পর তেনজিং-এর নাম রাখা হয়েছিল নামগিয়াল ওয়াংড়ি (Namgyal Wangdi)। কিন্তু ছোটোবেলাতেই রোংবুক মঠের প্রতিষ্ঠাতা এবং হেড লামা নগাওয়াং তেনজিন নোরবুর পরামর্শে তাঁর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছিল তেনজিং নোরগে, যার অর্থ ‘ধনী-সৌভাগ্যবান-ধর্মানুসারি’। তেনজিং- নিজে ছিলেন বৌদ্ধধর্মাবলম্বী। তাঁর বাবা ঘাং লা মিংমা (Ghang La Mingma) তিব্বতের একজন ইয়াক প্রতিপালক ছিলেন। তেনজিং-এর মায়ের নাম ডকমো কিনজোম (Dokmo Kinzom)। মোট তেরোটি সন্তানের মধ্যে তেনজিং ছিলেন একাদশতম সন্তান। জটিল রোগে ঘাং লা মিংমার ইয়াকগুলি মারা যাওয়ায় তাঁর পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। ফলত সেকারণেই তেনজিংকে তাঁর বাবা-মা নেপালের থামেতে একটি শেরপা পরিবারের কাছে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেয়।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

কিশোর বয়সে দুবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তেনজিং। প্রথমবার কাঠমান্ডু এবং দ্বিতীয়বারে দার্জিলিং গিয়েছিলেন তিনি। সেসময়ে পূর্ব-হিমালয়ের বেশিরভাগ অভিযানের সূচনাস্থলই ছিল এই দুটি জায়গা। শেরপাদের মধ্যে বেড়ে ওঠার কারণে পর্বত অভিযানের প্রতি আকর্ষণ ছিল তাঁর কৈশোরকাল থেকেই। এখানে উল্লেখ্য একবার তাঁকে টেংবোচে মঠে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য কিন্তু তিনি বুঝেছিলেন সে-পথ তাঁর নয়। অবশেষে ১৯ বছর বয়সে দার্জিলিঙের টু সং বস্তি এলাকায় শেরপা সম্প্রদায়ের মধ্যেই বসবাস করতে শুরু করেন তিনি৷

বিশ শতকের প্রথমদিকে যখন ইউরোপীয়েরা হিমালয় অন্বেষণ শুরু করেছিল তখন অভিযানে সহায়তা করার জন্য তারা শেরপাদের নিয়োগ করত। ১৯৩৩ সালে তেমনই এক ব্রিটিশ অভিযানের কথা শুনে সহায়তাকারী শেরপার পদ পাওয়ার আশায় তেনজিং দার্জিলিং গিয়েছিলেন কিন্তু সেবারে তাঁকে নির্বাচন করা হয়নি। অবশেষে, যখন তাঁর ২০ বছর বয়স তখন প্রথম এভারেস্ট অভিযানে সামিল হওয়ার একটি সুযোগ আসে তেনজিং-এর। ব্রিটিশ পর্বতারোহী এরিক শিপটন ১৯৩৫ সালে এভারেস্টের আশেপাশের এলাকা অন্বেষণের জন্য একটি অভিযানের পরিকল্পনা করেন৷ প্রায় হাতছাড়া হতে গিয়েও শেষমেশ যে-দুজনকে নির্বাচন করেন শিপটন সাহেব, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন তেনজিং। শিপটন তাঁকে একজন পোর্টার হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন।

১৯৩০-এর দশকে উত্তর তিব্বতের দিক থেকে এভারেস্ট আরোহণের জন্য তিনটি সরকারী ব্রিটিশ প্রচেষ্টায় নোরগে হাই-অলটিটিউড পোর্টার হিসেবে কাজ করেছিলেন। ১৯৩৬ সালের অভিযানে কাজ করেছিলেন জন মরিসের সঙ্গে। এছাড়াও ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য পর্বতারোহণেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৩৫ থেকে ১৯৫২ সালের মধ্যে সাতটি ব্রিটিশ, ফরাসী এবং সুইস পর্বতারোহণ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন তেনজিং।

১৯৪০-এর দশকের গোড়ার দিকে কিছু সময়ের জন্য তিনি একজন সৈনিক হিসেবে উচ্চপদস্থ অফিসারের ব্যক্তিগত সেবক হিসেবে নিযুক্ত হন। মেজর চ্যাপম্যানের কাছে থাকতেন তিনি। ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে গেলে চিত্রাল পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। ফলে দাওয়া ফুটির গর্ভজাত দুই কন্যাকে নিয়ে মেজর চ্যাপম্যানের পুরোনো ইউনিফর্ম গায়ে পরে বিনাটিকিটে ভীষণই ঝুঁকি নিয়ে ভারতে, দার্জিলিং-এ ফিরে আসেন তেনজিং।

এরপর কানাডিয়ান পর্বতারোহী আর্ল ডেনম্যান এবং আঙ্গে দাওয়া শেরপার সঙ্গে ১৯৪৭ সালেই এভারেস্টে আরেকটি প্রচেষ্টার জন্য তিব্বত সীমান্তের ওপর দিয়ে অভিযান করেন তিনি কিন্তু ২২০০০ (৬,৭০০ মিটার) ফুট থেকে তীব্র তুষারঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে ফিরে আসতে হয় তাঁদের। ১৯৪৭ সালেই প্রথমবারের মতো একটি সুইস অভিযানের সর্দার হয়েছিলেন তেনজিং। অভিযানটি পশ্চিম গাড়ওয়াল হিমালয়ের ২২,৭৬৯ ফুট উচ্চতায় কেদারনাথের প্রধান চূড়ায় পৌঁছেছিল। ১৯৫০ ও ১৯৫১ সালে তিনি রেমন্ড ল্যাম্বার্টের নেতৃত্বে দুটি সুইস অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। দক্ষিণ নেপালের দিক থেকে এভারেস্ট আরোহণের প্রথম গুরুতর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন তাঁরা এবং ৮৫৯৯ মিটার পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন ল্যাম্বার্ট এবং তেনজিং।

১৯৫৩ সালে তেনজিং জন হান্টের অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। এই দলেরই একজন সদস্য ছিলেন নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী এডমন্ড হিলারি। হান্ট অভিযানে ৪০০ জনেরও বেশি লোক ছিল, যার মধ্যে ৩৬২ জন পোর্টার, ২০ জন শেরপা গাইড এবং ১০,০০০ পাউন্ড লাগেজ । ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসে অভিযানটি বেস ক্যাম্প স্থাপন করে। সেসময় উচ্চ হিমালয় অনেকাংশে অনাবিষ্কৃত ছিল এবং কেউ জানত না যে, পর্বতারোহীদের পক্ষে শিখরে পৌঁছনো সম্ভব কি না। জন হান্টের এই দলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন একজন ফিজিওলজিস্ট, একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং একজন সংবাদদাতা। অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়ে তেনজিং একবার এডমন্ড হিলারির প্রাণরক্ষা করেছিলেন। একটি বরফের কার্নিসে হিলারি অবতরণ করলে তা ভেঙে পড়েছিল এবং ক্রেভাসের নীচের পাথরে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল তাঁর। তেনজিং তৎক্ষণাৎ দড়ি শক্ত করে সেই আঘাত থেকে রক্ষা করেছিলেন হিলারিকে। ধাপে ধাপে ক্যাম্প ফেলে এগোতে থাকেন তাঁরা। বিপজ্জনক খুম্বু বরফপ্রপাতের মধ্য দিয়ে লোৎসের দক্ষিণ মুখ অতিক্রম করে তাঁরা পৌঁছন সাউথ কলে।  ২৬ মে দলের দুই সদস্য চূড়ায় পৌঁছনোর চেষ্টা করলেও অক্সিজেন ইউনিটের ব্যর্থতার কারণে তাঁদের পিছু হটতে হয়। ২৮ মে ২৭,৯০০ ফুট উপরে একটি ক্যাম্প ফেলে একসঙ্গে রাত কাটিয়েছিলেন তেনজিং এবং হিলারি। দুজনে পালা করে অক্সিজেন ভাগ করে নিয়ে রাত কাটিয়ে দেন তাঁরা। পরদিন, অর্থাৎ ২৯ মে এক স্বচ্ছ সকালে ৬.৩০টার সময় তেনজিং এবং হিলারি একটি প্রচেষ্টা চালাবার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে সকাল নটার মধ্যে তাঁরা দক্ষিণ চূড়ায় পৌঁছে যান। আরোহণের শেষ অংশে ৪০ ফুটের একটি পাথরের সম্মুখীন হয় তাঁরা। পরবর্তীকালে এই পাথরটির নামকরণ করা হয় ‘হিলারি স্টেপ’। অবশেষে দীর্ঘ পথ, দুঃসাহসিক অভিযান শেষে ২৯ মে সকাল ১১.৩০টায় তেনজিং এবং হিলারি এভারেস্ট চূড়ায় পা রাখেন। এরপর থেকে এই ২৯ মে দিনটিকেই নিজের জন্মদিন হিসেবে পালন করতেন তেনজিং। সেই শিখরে তাঁরা প্রায় ১৫ মিনিট কাটিয়েছিলেন। তেনজিং সেখানে বরফের মধ্যেই গর্ত খনন করে পাহাড়ের দেবতাদের উদ্দেশ্যে কিছু খাবার রেখেছিলেন। দীর্ঘদিন পরে সাংবাদিকরা তাঁদেরকে প্রশ্ন করেছিলেন যে শিখরে প্রথম পদার্পণ কে করেছিলেন, হিলারি নাকি তেনজিং। দুজনেই তাঁরা এই প্রশ্নটিকে সহজভাবে গ্রহণ করেছিলেন এবং জন হান্ট বলেছিলেন তাঁরা একটি দল হিসেবেই এই সাফল্য লাভ করেছেন। যদিও পরবর্তীতে নিজের আত্মজীবনীতে তেনজিং প্রথম পদার্পণকারী হিসেবে হিলারির নাম করেছিলেন।

এরপর পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণের জন্য ১৯৫৪ সালে দার্জিলিঙে নতুন প্রতিষ্ঠিত হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে ফিল্ড ট্রেনিংয়ের প্রধান পরিচালকের দায়িত্ব পান তেনজিং। পরবর্তীকালে উক্ত ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা হন তিনি। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে দেশে প্রবেশের অনুমতিপ্রাপ্ত প্রথম আমেরিকান ট্যুরিস্ট পার্টির ‘সর্দার’ হিসেবে কাজ করার জন্য ভুটানের রাজা জিগমে সিংয়ে ওয়াংচুক তাঁকে নির্বাচন করেছিলেন। ট্র্যাক শুরুর আগে দলটি প্রথমে তেনজিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছিল। এই অভিযান উত্তর ভুটানের পারোতে শুরু হয়েছিল এবং নেপাল ও সিকিম হয়ে ভারতে ফেরার আগে তারা প্রাচীন বৌদ্ধমঠ টাইগারস নেস্ট বা পারো তক্তসাং পরিদর্শন করেছিলেন। দলটিকে সিকিমের রাজার সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তেনজিং এবং তাঁদের নিজের বাড়িতেও এনেছিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি তেনজিং নোরগে অ্যাডভেঞ্চারস নামে একটি কোম্পানি স্থাপন করেন, যেটি মূলত, হিমালয়ে ট্রেকিংয়ের অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদগ্রহণের সুযোগ করে দেয়। ১৯৮৪-তে তেনজিং কর্ণাটকরে মাইসোরে অবস্থিত স্কুল অব অ্যাডভেঞ্চারের দশম বার্ষিকী উদযাপনে যোগ দিয়েছিলেন।

নিজে সাতটি ভাষায় কথা বলতে পারলেও কখনও লিখতে শেখেননি তেনজিং। জেমস রামসে উলম্যানের সহযোগীতায় ‘টাইগার অব দ্য স্নোস’ (‘ম্যান অব এভারেস্ট’ নামেও প্রকাশিত) নামে একটি আত্মজীবনী প্রকাশ পায় তাঁর ১৯৫৫ সালে।

পর্বতারোহণে দক্ষতা এবং প্রথম এভারেস্ট চূড়ায় পদার্পণের মতো কৃতিত্ব অর্জনের জন্য বিভিন্ন সময়ে নানা পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় তেনজিংকে। ১৯৩৮ সালে পোর্টার হিসেবে নোরগের তৃতীয় এভারেস্ট অভিযানের পর হিমালয়ান ক্লাব তাঁকে হাই-অলটিটিউডে কাজ করার জন্য ‘টাইগার মেডেল’ দ্বারা সম্মান জানিয়েছিল। প্রথম এভারেস্ট জয়ের কৃতিত্বের জন্যই ১৯৫৩ সালে ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাঁকে জর্জ মেডেল প্রদানের অনুমোদন দিয়েছিলেন। সেবছরেই নেপালের রাজা ত্রিভুবন তাঁকে প্রথম শ্রেণীর উপাধি ‘অর্ডার অব দ্য স্টার অব নেপাল’ প্রদান করেছিলেন। ১৯৫৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মভূষণ’ সম্মানে ভূষিত করেছিল।

২০১৫ সালে বামনগ্রহ প্লুটোর ৩.৪ কিলোমিটার উচ্চ পর্বতশ্রেণীর নাম রাখা হয়েছিল ‘তেনজিং মন্টেস’।

১৯৮৬ সালের ৯ মে দার্জিলিঙে ৭১ বছর বয়সে মস্তিস্কের রক্তক্ষরণের কারণে এই প্রতিভাবান পর্বতারোহী তেনজিং নোরগের মৃত্যু হয়। তাঁর প্রিয় আশ্রয়স্থল দার্জিলিঙের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে তেনজিং-এর মরদেহ দাহ করা হয়েছিল।

আপনার মতামত জানান