ভারতীয় সঙ্গীতের ইতিহাস রচনা করলে যেসব সঙ্গীতজ্ঞের উল্লেখ ছাড়া তা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন সঙ্গীতস্রষ্টা ত্যাগরাজ (Tyagaraja)। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কর্ণাটকী সঙ্গীত ঘরানাকে অকৃপণ দানে সমৃদ্ধ করেছিলেন তিনি। ত্যাগরাজের রচিত পাঁচটি বিশিষ্ট গানকে একত্রে ‘পঞ্চরত্ন’ নামে অভিহিত করা হয়। তিনি মূলত ভক্তিমূলক গান রচনা করেছিলেন। তাঁর অধিকাংশ গানই ভগবান রামচন্দ্রকে উদ্দেশ করে লিখিত। ত্যাগরাজ সঙ্গীতকে ঈশ্বরপ্রেমের একটি মাধ্যম হিসেবে মনে করতেন। চারজন মারাঠা রাজের সময়কালে ত্যাগরাজ জীবিত ছিলেন। যেহেতু বিত্ত এবং সম্পদের লোভ তাঁর ছিল না, তাই রাজার আমন্ত্রণকে প্রত্যাখান করতেও দ্বিধা করেননি তিনি। ‘নাগুমোমু’ তাঁর দারুণ জনপ্রিয় একটি গান।
১৭৬৭ সালের ৪ মে বর্তমান তামিলনাড়ুর অন্তর্গত তিরুভারুর নামক একটি শহরে এক তেলেগু বৈদিকি মুলাকানাড়ু ব্রাহ্মণ পরিবারে ত্যাগরাজের জন্ম হয়। অবশ্য সঙ্গীতজ্ঞ বিএম সুন্দরমের মতে ত্যাগরাজের জন্মস্থান ছিল তিরুভাইয়ারু। জন্মের পর ত্যাগরাজের নাম রাখা হয়েছিল কাকরলা ত্যাগব্রহ্মম। তাঁর নামের এই ‘কাকরলা’ শব্দটি আসলে ইঙ্গিত করে যে, তাঁরা ওই একই নামের গ্রাম থেকে এসেছিলেন, যে-গ্রাম অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাসাম জেলার কুম্বুম তালুকের অন্তর্ভুক্ত। ত্যাগরাজের পিতার নাম কাকরলা রাম ব্রহ্মম এবং মা সীতাম্মা। এই রামব্রহ্ম তাঁর পারিবারিক পেশা অর্থাৎ রামায়ণ ব্যাখার কাজ করতেন এবং তাঞ্জাভুরের রাজা তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। ত্যাগরাজের পরিবার স্মার্ত সংস্কৃতির চর্চা করতেন এবং তাঁরা ছিলেন ভরদ্বাজ গোত্রের ব্রাহ্মণ। মোট তিন ভাইয়ের মধ্যে ত্যাগরাজ ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। তাঁর দুই দাদার নাম হল পঞ্চনাথ ব্রহ্মম এবং পঞ্চপক্ষ ব্রহ্মম। ত্যাগরাজের পিতামহ ছিলেন গিরিরাজ কবি। তিনি কবি তো ছিলেন সেইসঙ্গে একজন সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। ত্যাগরাজের মাতামহের নাম কলাহস্ত্য। তবে যেহেতু তিনি একজন প্রসিদ্ধ বীণাবাদক ছিলেন সেই কারণে মানুষের মধ্যে তিনি বীণা কলাহস্ত্য নামে পরিচিত হয়েছিলেন। অতএব ছোটবেলা থেকেই ত্যাগরাজ একটি সাঙ্গীতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠবার সুযোগ পেয়েছিলেন। ত্যাগরাজ বাল্যকালে এই কলাহস্ত্যের কাছ থেকে বীণা বাজানো শিখেছিলেন। কলাহস্ত্যের মৃত্যুর পর ত্যাগরাজ ‘নারদেয়ম’ নামে একটি সঙ্গীত বিষয়ক গ্রন্থ খুঁজে পেয়েছিলেন। জনশ্রুতি রয়েছে যে, একজন সন্ন্যাসী ত্যাগরাজকে নারদকে আহ্বান করার এক মন্ত্র শিখিয়েছিলেন এবং সেই মন্ত্রোচ্চারণ করে নাকি তিনি নারদের দেখাও পেয়েছিলেন।
কথিত আছে, ত্যাগরাজের জন্মের পরপরই তাঞ্জাভুরের রাজা থুলজাজি তিরুভারুরে বসবাসকারী ত্যাগরাজের পরিবারকে আমন্ত্রণ জানালে সেই পরিবার তিরুভাইয়ারুতে চলে গিয়েছিলেন। সেই তিরুভাইয়ারুর তিরুমাঞ্জনা স্ট্রীটে রাজার দেওয়া বাড়িতে পরিবারটি দীর্ঘ পনেরো বছর বসবাস করেছিল। রাজা ত্যাগরাজের পিতাকে ছয় একর জমিও দান করেছিলেন। এই রাজা থুলজাজি একজন দুর্বল প্রশাসক হলেও শিল্পকলার একজন অত্যন্ত উদার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
মূলত পন্ডিত পিতার কাছেই ত্যাগরাজের প্রাথমিক শিক্ষার সূত্রপাত হয়েছিল। ত্যাগরাজের শৈশবকালে তিরুভাইয়ারু বেদ, সংস্কৃত এবং সঙ্গীত শিক্ষার একটি সুপরিচিত কেন্দ্র ছিল। পন্ডিতেরা বলেন যে, ত্যাগরাজ তিরুভাইয়ারুতে সংস্কৃত শিক্ষা লাভ করেছিলেন। সংস্কৃত ভাষায় যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করেছিলেন তিনি। প্রথম দিকের বেশ কিছু গান ত্যাগরাজ সংস্কৃততে রচনা করেন। তাঁর তেলেগু ভাষায় লেখা গানগুলিও সংস্কৃত শব্দে পূর্ণ। ত্যাগরাজ সেখানে সংস্কৃত এবং তেলেগু অধ্যয়ন সম্পন্ন করেন এবং বাল্মিকী রামায়ণ ও অন্যান্য ধর্মীয় সাহিত্যেও দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।
খুব ছোটবেলা থেকেই ত্যাগরাজ সঙ্গীতের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। অল্প বয়স থেকেই গান গাওয়া শুরু করেছিলেন তিনি৷ প্রাথমিকভাবে মাতামহ কলাহস্ত্য এবং নিজের মায়ের কাছেই তাঁর সঙ্গীতশিক্ষা শুরু হয়েছিল। ত্যাগরাজের মা তাঁকে ভদ্রচালা রামদাসুর কীর্তন এবং পুরন্দরদাসের পদ গাইতে শিখিয়েছিলেন। তাছাড়াও ত্যাগরাজের মাও ছিলেন প্রচন্ড রামভক্ত। ত্যাগরাজের মধ্যে রামভক্তির বীজ তিনিই রোপণ করেছিলেন। সাত বছর বয়সে ত্যাগরাজের উপনয়ন সম্পন্ন হয়েছিল। আট বছর বয়সে রামমন্ত্রে দীক্ষিত হওয়ার পর তিনি পিতাকে রামের নিত্য পূজায় সহায়তা করতেন।
পন্ডিতেরা উল্লেখ করেছেন যে, ত্যাগরাজ তাঁর শৈশবেই, দশ-বারো বছর বয়সে রামচন্দ্রেন্দ্র সরস্বতী (যিনি পরবর্তীকালে উপনিষদ ব্রহ্মেন্দ্র যোগিন নামে পরিচিত হন) নামক এক সন্ন্যাসীর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। এই রামচন্দ্রেন্দ্র সরস্বতী তখন তাঞ্জাভুরুতে বসবাস করতেন এবং রামায়ণের উপর বক্তৃতা করতেন, কখনও তাঁর রচিত ভক্তিমূলক রামচন্দ্রের প্রশংসা-গীতের কোরাসও পরিচালনা করতেন। ত্যাগরাজ তাঁর পিতার সঙ্গে এই রামচন্দ্রেন্দ্রর সঙ্গীত ও বক্তৃতা শুনতে যেতেন। ত্যাগরাজের ওপর প্রভু শ্রীরামের নিবিড় ভক্ত এই রামচন্দ্রেন্দ্র সরস্বতীর ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। এই প্রভাবের চিহ্ন ত্যাগরাজের ‘দিব্য-নাম-সঙ্কীর্তন’ গানে পাওয়া যায়। এই সন্ন্যাসীর আদর্শে ত্যাগরাজও তাঁর একের পর এক গানে শ্রীরামচন্দ্রকে নানারূপে হাজির করেছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, সেই সময় ত্যাগরাজের জন্মস্থানটি শিল্প-সংস্কৃতির সব দিগগজ পন্ডিতদের আস্তানা ছিল। ফলত ত্যাগরাজ এক শিল্পকলা সমৃদ্ধ পরিবেশ পেয়েছিলেন ছোট থেকেই।
মাত্র তেরো বছর বয়সে (কোনো মতে ৮ আবার কেউ বলেন ১০ বছর বয়সে) প্রথম গান ‘নমো নমো রাঘবায়’ দেশিকা টোড়ি রাগে নির্মাণ করে তিনি নিজের ক্ষমতার পরিসর বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। সেই গান তিনি বাড়ির দেয়ালে খোদাই করেছিলেন।
কিশোর বয়সেই ভজনসম্প্রদায়ের দলগুলির সঙ্গে বাড়িতে বাড়িতে সীতা-কল্যাণ, রুক্মিণী-কল্যাণ, রাধা-কল্যাণের মতো বিশিষ্ট সব উৎসবে কোরাসে ভক্তিমূলক গান গাইতেন। এইরকম নির্দিষ্ট উৎসবে গাওয়ার জন্য ত্যাগরাজ প্রায় ২৭টি গানের একটি সঙ্কলন তৈরি করেছিলেন। অল্প বয়সে গাওয়া ত্যাগরাজের গান শুনে, ঐশ্বরিক ক্ষমতাসম্পন্ন সেই শিশুটির গুণে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সঙ্গীতের এক দিগগজ পন্ডিত সোন্তি ভেঙ্কটা রামানায়া। এরপর ১৬ বছর বয়স থেকেই ভেঙ্কটা রামানায়ার কাছে ত্যাগরাজের সঙ্গীত শিক্ষা শুরু হয়েছিল।
১৭৮৪ সালে ১৮ বছর বয়সে ত্যাগরাজ পার্বতীকে বিবাহ করেছিলেন। ১৭৮৫ সালে পুদুকোট্টাই রামাচন্দির থোনতাইমানের রাজদরবারে ত্যাগরাজ যোথিশ্বররূপেণি রাগে গান গেয়েছিলেন। ১৭৮৭ সালে ত্যাগরাজের যখন ২১ বছর বয়স তখন তাঁর বাবা রামব্রহ্মের মৃত্যু হয়েছিল। সেই বছরেই তিনি রামকৃষ্ণানন্দ নামে এক সাধুর কাছে ‘রাম শব্দাক্ষরী’ মন্ত্রে আধ্যাত্মিক দীক্ষা লাভ করেন। জানা যায়, এই রামকৃষ্ণানন্দ নিজে একজন কবি ও সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। ১৭৮৯ সালে ত্যাগরাজের স্ত্রী পার্বতীর মৃত্যু ঘটলে পার্বতীর বোন কমলাম্বাকে ১৭৯০ সালে বিবাহ করেছিলেন তিনি। সীতালক্ষ্মী নামে তাঁদের এক কন্যার জন্ম হয়েছিল।
১৮০২ সালে গুরু সোন্তি ভেঙ্কটা রামানায়ার আয়োজনে ত্যাগরাজ বিলাহারি রাগে নিজের রচিত গান ‘দোরাকুনা ইতুভান্তি’ গেয়েছিলেন। শিষ্যের সেই গানের পরে গুরু ভেঙ্কটা রামানায়া রীতিমতো আবেগে অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন। খুব দ্রুত তখন ত্যাগরাজের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল।
সেই সময় ব্রিটিশদের সহায়তায় দ্বিতীয় সেরফোজি সিংহাসন অধিকার করেন এবং এই সেরফোজির আমলেই ত্যাগরাজের জীবনের প্রায় ৪০ বছর অতিবাহিত হয়েছিল। এই রাজাও কিন্তু শিল্প ও সাহিত্যের কদর করতেন, পৃষ্ঠপোষণ করতেন। সোন্তি ভেঙ্কটা রামানায়া তাঞ্জাভুরের রাজাকে ত্যাগরাজের প্রতিভা সম্পর্কে অনেক প্রশংসাপূর্ণ কথা বলেছিলেন। রাজা তখন রাজসভায় ত্যাগরাজকে আমন্ত্রণ জানালে বিত্ত ও সম্পদের বিষয়ে উদাসীন ত্যাগরাজ সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করেছিলেন। এই উপলক্ষে তিনি তাঁর একটি কৃত্তি ‘নিধি চালা সুখমা’ (ধন কি সুখ আনে?) রচনা করেছিলেন। রাজার আহ্বান প্রত্যাখান করায় ত্যাগরাজের অগ্রজ তাঁর উপরে খুবই রেগে যান এবং তাঁর উপাস্য সব মূর্তি নদীতে ফেলে দিয়েছিলেন। অবশ্য তবুও ঈশ্বরের সঙ্গে ত্যাগরাজের বিচ্ছেদ ঘটানো সম্ভব হয়নি। ত্যাগরাজ সাংসারিক সমস্ত ভোগসুখ থেকেও দূরে ছিলেন। জীবনধারণের জন্য উঞ্ছবৃত্তি অবলম্বন করেছিলেন তিনি। প্রতিদিন শহরের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন, ভগবানের গান গাইতেন এবং গৃহস্থদের কাছ থেকে মুঠো মুঠো চাল গ্রহণ করে তাঁর দিনযাপন হত।
১৮০৪ ত্যাগরাজের যখন ৩৭ বছর বয়স তখন তাঁর মা সীতাম্মার মৃত্যু হয়েছিল। ১৮০৮ সালে তিনি ৯৬ কোটি রামনাম জপ করেছিলেন বলে কথিত আছে।
ত্যাগরাজ বেশ কয়েকটি তীর্থস্থানেও ভ্রমণ করেছিলেন। ১৮৩৯ সালের এপ্রিল মাসে ত্যাগরাজ তিরুপতিতে গিয়েছিলেন। যখন তিনি মন্দিরে গিয়েছিলেন, মন্দির তখন বন্ধ ছিল। ভগবানকে না দেখতে পাওয়ার দুঃখে তখন তিনি ‘তেরটিয়াগরাদা’ গেয়েছিলেন। তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে মন্দিরের আধিকারিকরা সেখানে জড়ো হয়ে গিয়েছিলেন। কথিত আছে, যে, আধিকারিকরা সেখানে এসে দেখেছিলেন মন্দিরের দরজা ধীরে ধীরে খুলে যাচ্ছে এবং পর্দা পড়ে আছে একপাশে। ভগবানকে দেখতে পাওয়ার আনন্দে ত্যাগরাজ তখন গেয়েছিলেন ‘ভেঙ্কটেশা নিনু সেভিম্পা’।
তিরুভাইয়ারুতে ফিরে আসার সময় ত্যাগরাজ চেন্নাই-কোভুর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে কোভুর সুন্দরা মুদালিয়ারের সাথে থাকার সময় কোভুর পঞ্চরত্ন রচনা করেছিলেন। পরে তিনি বীণা কুপিয়ারের সাথে থাকার সময় তিরুভেত্রিয়ুর পঞ্চরত্ন রচনা করেন। তাঁর শিষ্য লালগুড়ি রামায়্যার আমন্ত্রণে তিনি লালগুড়ি পঞ্চরত্ন রচনা করেন, এছাড়াও শ্রীরঙ্গমের রঙ্গনাতার প্রশংসায় রচনা করেন শ্রীরঙ্গ পঞ্চরত্ন। অধিকাংশ গানেই ত্যাগরাজ ভগবান রামের সঙ্গে যেন এক যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেছেন। তবে তাঁর অন্যতম কীর্তি পাঁচটি গানের সংকলন যা ‘পঞ্চরত্ন কৃত্তি’ (জগদানন্দ করকা, দুদুকুগলা নান্নে, সাধীনচেনে, কানাকানা রুচিরা এবং এন্দারো মহানুভুভুলু) নামে পরিচিত। এছাড়াও তাঁর অন্যতম কয়েকটি সৃষ্টি হল, হিন্দোলাম রাগে সমাজবরাগমন, চারুকেসী রাগে আদমদিগলাধে, হনুমতোদি রাগে রাজু ভেদালে, টোডি রাগে নিন্নে নম্মি নানুরা, বৃন্দাবন সারঙ্গ রাগে কমলাপঠাকুল ইত্যাদি। মৃত্যুর আগে তাঁর শেষ রচনা ছিল ‘গিরিপাই নেলাকোন্না’। পন্ডিতেরা বলেন প্রায় ২৪০০০ গান তিনি রচনা করেছিলেন। তারমধ্যে কৃত্তি যেমন রয়েছে, রয়েছে কীর্তনও। তবে গান ছাড়াও তেলেগু ভাষায় ‘প্রহ্লাদ ভক্তি বিজয়ম’ এবং ‘নৌকা চরিতম’ নামক দুটি সঙ্গীত নাটকও তিনি রচনা করেছিলেন।
আধ্যাত্মিক সফর শেষ করে ১৮৩৯ সালের অক্টোবরে ত্যাগরাজ তিরুভাইয়ারুতে পৌঁছন।
কথিত আছে যে, ১৮৪৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর ত্যাগরাজ স্বপ্নে ভগবান শ্রীরামের দর্শন পেয়েছিলেন এবং পরেরদিন এই ঘটনা তিনি তাঁর শিষ্যদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন। নিজের এক কৃত্তিতে এই ঘটনাটি লিপিবদ্ধও করেছেন তিনি। এর ঠিক পরবর্তী বছর ১৮৪৭ সালে ৫ জানুয়ারি ত্যাগরাজ সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। কথিত আছে যে, ত্যাগরাজ শ্রী ব্রহ্মানন্দ স্বামীর কাছ থেকে সন্ন্যাস-আশ্রমে দীক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। এই ব্রহ্মানন্দ স্বামী তাঁকে গেরুয়া পোশাক প্রদান করেন এবং তাঁর নামকরণ করেন নদব্রহ্মানন্দ।
সন্ন্যাস গ্রহণের একদিন পরেই অর্থাৎ ১৮৪৭ সালের ৬ জানুয়ারি পুষ্য বহুলা পঞ্চমীর দিনে ৭৯ বছর বয়সে এই মহান সঙ্গীতজ্ঞ ত্যাগরাজের মৃত্যু হয়। তিরুভাইয়ারুতে কাবেরী নদীর তীরে তাঁকে দাহ করা হয়েছিল।