একদিবসীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতার সর্বশ্রেষ্ঠ আসর হল বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা যা ক্রিকেট বিশ্বকাপ নামে পরিচিত। ১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপ (1992 Cricket World Cup) ছিল ক্রিকেট বিশ্বকাপের পঞ্চম আসর। এই বিশ্বকাপের আসর ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়। এটিই ছিল প্রথম বিশ্বকাপ যেটি চার বছর পর নয়, আগের বিশ্বকাপের (১৯৮৭) পাঁচ বছর পর আয়োজিত হয়েছিল। এই বিশ্বকাপটিই দক্ষিণ গোলার্ধে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপ। সর্বমোট ৯টি দেশ এই খেলায় অংশগ্রহণ করেছিল। এই বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে পাকিস্তান প্রথমবারের জন্য বিজয়ী হয়েছিল।
পূর্বের বিশ্বকাপগুলির চেয়ে এই ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপটি কয়েকটি দিক থেকে নতুন ছিল। প্রথমত, এই বিশ্বকাপেই প্রথমবার সাদা পোশাকের বদলে খেলোয়াড়দের রঙিন পোশাক পরতে দেখা গিয়েছিল, বলের রঙটি ছিল সাদা এবং মাঠে কালো সাইট স্ক্রিন লাগানো হয়েছিল। এছাড়াও কয়েকটি ম্যাচ কিন্তু ফ্লাড লাইটের নিচেও খেলা হয়েছিল। এরপর থেকে সমস্ত একদিবসীয় ক্রিকেট বিশ্বকাপেই এই বিষয়গুলি লক্ষ করা যায়। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপের মত এই ১৯৯২ বিশ্বকাপের স্পনসর কিন্তু রিলায়েন্স ছিল না। বেনসন অ্যান্ড হেজেস এই ১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপটির স্পনসরশিপের দায়িত্ব নিয়েছিল।
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ৭টি টেস্ট দল অংশ নিয়েছিল এবং প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিসির অষ্টম পূর্ণ সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। বর্ণবাদের কারণে ২১ বছর বাদ থাকবার পর ১৯৯১ সালের শেষেরদিকে পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে যুক্ত করা হয়। অন্যদিকে ১৯৯০ সালে পুনরায় নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে জিম্বাবুয়ে আইসিসি ট্রফি জিতে তৃতীয়বারের জন্য বিশ্বকাপে খেলবার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। অতএব, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে—সর্বমোট এই নয়টি দলই ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ খেলেছিল।
পূর্ববর্তী বিশ্বকাপগুলির মতো ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে দলগুলিকে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে দেওয়ার ফরম্যাট অনুসরণ করা হয়নি৷ এই বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে পৌঁছনোর জন্য যে বাছাইপর্ব সেখানে একেকটি টিমকে বাকি প্রত্যেক টিমের সঙ্গে একটি করে ম্যাচ খেলতে হয়েছিল। অতএব যেহেতু ৯টি টিম ছিল, তাই প্রতিটি টিমকে মোট আটটি করে ম্যাচ খেলতে হয়েছিল। সেই পর্বে একটি ম্যাচ জয়ের জন্য ধার্য ছিল ২ পয়েন্ট। মোট চারটি দল সেমিফাইনালের জন্য কোয়ালিফাই করেছিল এবং অবশেষে দুটি দলের মধ্যে হয় ফাইনাল।
অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন মাঠে এই বিশ্বকাপের ম্যাচগুলির আয়োজন করা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার যে-স্টেডিয়ামগুলিতে খেলা হয়েছিল সেগুলি হল: অ্যাডিলেড ওভাল, ল্যাভিংটন স্পোর্টস গ্রাউন্ড, ইস্টার্ন ওভাল, বেরি ওভাল, দ্য গাব্বা, ম্যানুকা ওভাল, বেল্লেরাইভ ওভাল, রে মিচেল ওভাল, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, ডব্লিউএসিএ গ্রাউন্ড এবং সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের যে-স্টেডিয়ামগুলিতে খেলা হয়েছিল: সেগুলি হল, ইডেন পার্ক, ল্যাঙ্কেস্টার পার্ক, ক্যারিসব্রুক, সেডন পার্ক, ম্যাকলিন পার্ক, পুকেকুরা পার্ক এবং বেসিন রিজার্ভ।
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডেই অকল্যান্ডের ইডেন পার্ক স্টেডিয়ামে এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৩৭ রানে সেই ম্যাচ জিতে নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ১৯৯২ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল পাকিস্তান। ২২ রানে পাকিস্তান সেই ফাইনাল ম্যাচ জিতে প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা অর্জন করেছিল।
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে নিয়মের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়েছিল। বৃষ্টি বা অন্য কোনো কারণে ম্যাচ অনেকখানি বিঘ্নিত হলে আগে এভারেজ রানরেট মেথড (Average Run Rate method) ব্যবহার করা হত। এই মেথড অনুযায়ী ওভারের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হত এবং প্রথম ব্যাট করার দলের গড় রানরেট অনুযায়ী হিসেব করে সেইমতো দ্বিতীয় দলের টার্গেট ঠিক করা হত। অঙ্কের হিসেবে বললে, ধরা যাক প্রথম দল নির্বিঘ্নে ৫০ ওভারে ২৫০ রান করেছে, অতএব তাদের গড় রানরেট ৫। এখন কোনো বিঘ্ন ঘটার ফলে দ্বিতীয় দলের জন্য যদি ওভারের সংখ্যা কমিয়ে ২৫ করে দেওয়া হয়, তবে প্রথম দলের সেই গড় রানরেট ৫ অনুযায়ী দ্বিতীয় দলকে জয়লাভের জন্য করতে হবে (২৫×৫=১২৫)+১, অর্থাৎ ১২৬ রান। কিন্তু এই পদ্ধতিতে দ্বিতীয় টিমের বেশি পরিমাণ সুবিধা হত বলেই এই পদ্ধতিটির বদলে ১৯৯২ সালে চালু করা হল মোস্ট প্রোডাকটিভ ওভার মেথড (Most Productive Overs method)। এই মেথড অনুযায়ী, বিঘ্নিত ম্যাচে দ্বিতীয় ব্যাট করতে নামা দলের ওভার কমবে ঠিকই, তবে কমে যত হবে, তত সংখ্যাক ওভারের মধ্যে প্রথম ব্যাট করার দলের সবচেয়ে বেশি স্কোর হওয়া ওভারগুলির রান মিলিয়ে মোট রান যত হবে তত রানই হবে দ্বিতীয় টিমের জয়ের লক্ষ্য। অঙ্কের হিসেবে বলা যাক। ধরা যাক প্রথম দল ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ২৫০ রান করল। এরপর কোনো কারণে বিঘ্ন ঘটায় দ্বিতীয় দলের জন্য ওভার কমিয়ে ৩০ করে দেওয়া হলে, হিসেব করে দেখা হবে প্রথম দলের সর্বোচ্চ রান হওয়া ৩০টি ওভার যোগ করলে কত রান হয়। সেই রানের সঙ্গে এক রান যোগ করলে যত হবে, সেটিই হবে জয়ের জন্য দ্বিতীয় দলের লক্ষ্য। এই পদ্ধতিতেও নানারকম গন্ডগোল দেখা গিয়েছিল এবং এতে আদতে প্রথম দলেরই বেশি ফায়দার সম্ভাবনা ছিল।
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের একটি স্মরণীয় ম্যাচ হল অবশ্যই ইংল্যান্ড এবং সাউথ আফ্রিকার মধ্যে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনাল ম্যাচটি। এই ম্যাচেই উপরিউক্ত মোস্ট প্রোডাকটিভ ওভারস মেথডটির কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। মেঘলা আবহাওয়ার কারণে ওভারের সংখ্যা কমিয়ে ৪৫ করা হয়েছিল। প্রথম ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড ৪৫ ওভারে করেছিল ২৫২ রান। দক্ষিণ আফ্রিকাও অসাধারণভাবে ইনিংসটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩১-এ রান পৌঁছায়। জেতার জন্য সাউথ আফ্রিকার তখন প্রয়োজন আর মাত্র ২২ রান এবং বল বাকি ছিল মাত্র ১৩টি। তখনই জোরে বৃষ্টি নামায় প্রায় ১২ মিনিটের জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, নিয়ম অনুযায়ী, ইংল্যান্ডের কম রান হওয়া দুটি ওভার বৃষ্টির পর বাদ চলে গেলে, স্কোরবোর্ডে দেখা যায় সাউথ আফ্রিকার জেতার জন্য ১ বলে ২২ রান দরকার। সেই ম্যাচটি স্বাভাবিকভাবেই হেরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তাদের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। এই ম্যাচ এবং উক্ত নিয়মটি নিয়ে এরপর প্রচুর বিতর্ক হওয়ায়, এই নিয়মটির বদলে ডার্ক-ওয়ার্থ লুইস সিস্টেম প্রচলিত হয়েছিল।
১৯৯২ সালের এই বিশ্বকাপে ২৫ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ডের সঙ্গে পাকিস্তানের ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথমে টসে জিতে ব্যাটিং করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান। পাকিস্তানের আমির সোহেল এবং রামিজ রাজা ওপেন করতে নেমেছিলেন। তবে ইনিংসের শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি তাদের। প্রথমে ২০ রানের মধ্যেই ইংল্যান্ডের প্রিঙ্গলের বলে ক্যাচ তুলে মাত্র চার রান করে আউট হয়ে যান সোহেল। ঠিক পরপরই রামিজ রাজাও ২৬ বলে মাত্র ৮ রান করে সেই প্রিঙ্গলের বলেই আউট হন। এরপরই পাকিস্তানের ক্যাপ্টেন ইমরান খান এবং জাভেদ মিঁয়াদাদ মিলে খেলাটিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। ইমরান খান গুরুত্বপূর্ণ ৭২ রান এবং মিঁয়াদাদ ৫৮ রান করে পাকিস্তানকে থিতু করেছিল। ইমরান খান কিন্তু একটি ক্যাচ মিসের ফলে আউট হওয়া থেকে বেঁচেছিলেন৷ অবশ্য ইনিংসটিকে এরপর ইনজামাম-উল-হক এবং ওয়াসিম আক্রম মিলে একটি লড়াকু স্কোরের দিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। ইনজামাম করেন ৪২ রান এবং ওয়াসিমের রান ছিল ৩৩। অবশেষে পাকিস্তানের রান দাঁড়ায় ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪৯। ইংল্যান্ডের প্রিঙ্গল তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন তাদের ক্যাপ্টেন গ্রাহাম গুচ এবং ইয়ান বোথাম। মাত্র ৬ রানে প্রথমেই ইয়ান বোথামের উইকেট পড়ে গিয়েছিল। বোথাম ছয়টি বল খেলেও কোন রান করতে পারেননি। এমন নড়বড়ে একটি সূচনা হয় ইংল্যান্ডের এবং ৬৯ রানের মধ্যে যখন ৪টি উইকেট পড়ে যায় তাদের, তখন ম্যাচটি ক্রমে তাদের হাত থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। অবশেষে নেইল ফেয়ারব্রাদার এবং অ্যালান ল্যাম্ব ইংল্যান্ডকে পুনরায় লড়াইতে ফিরিয়ে এনেছিল। নেইল ফেয়ারব্রাদার করেছিলেন ৭০ বলে ৬২ রান এবং ল্যাম্ব করেন ৪১ বলে ৩১ রান। ইমরান খান কোনো উপায় না দেখে ওয়াসিম আক্রমকে বল করতে পাঠান ল্যাম্ব এবং ফেয়ারব্রাদারের পার্টনারশিপ ভাঙার জন্য। এই টোটকা কাজেও দিয়েছিল। ল্যাম্বের উইকেট পড়ে ফেয়ারব্রাদারের সঙ্গে তাঁর পার্টনারশিপ ভেঙে যাওয়ার পর ইংল্যান্ড টিম আর লড়াইতে ফিরতে পারেনি। পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রম (১০ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট), মুস্তাক আহমেদ (১০ ওভারে ৪১ রান দিয়ে ৩ উইকেট) এবং আকিব জাভেদের (১০ ওভারে মাত্র ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট দুর্দান্ত বোলিং-এ ইংল্যান্ড তাদের ইনিংস স্বচ্ছন্দে এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়। ইমরান খান নিজে ইংল্যান্ডের রিচার্ড ইলিংওয়ার্থের উইকেট নিয়ে জয় একপ্রকার নিশ্চিত করেছিলেন। ৪৯ ওভার ২ বলে ২২৭ রানে ইংল্যান্ড অলআউট হয়ে যায় এবং ২২ রানে পাকিস্তান ম্যাচ জিতে নিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের শিরোপা অর্জন করে।
ফাইনালে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের শিরোপা পেয়েছিলেন ওয়াসিম আক্রম। সেই ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক ইমরান খান (১১০ বলে ৭২ রান) এবং সবচেয়ে বেশি উইকেটের কথা বলতে হলে তিনজনের কথা বলতে হবে, যে-তিনজনই তিনটি করে উইকেট নিয়েছিলেন। সেই তিনজন হলেন ইংল্যান্ডের ডেরেক প্রিঙ্গল এবং পাকিস্তানের ওয়াসিম আক্রম ও মুশতাক আহমেদ।
১৯৯২ সালের গোটা বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক মার্টিন ক্রো। মোট ৪৫৬ রান করেন তিনি। উল্লেখ্য যে, মার্টিন ক্রো ১৯৯২ বিশ্বকাপের ম্যান অব দ্য সিরিজ খেতাবও পেয়েছিলেন। সর্বোচ্চ রানের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদ। তাঁর রান ছিল ৪৩৭। পাকিস্তানের আরেক খেলোয়াড় রামিজ রাজাও সেই তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন। সেই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি বোলার ওয়াসিম আক্রম। মোট ১৮টি উইকেট নিয়ে তিনি তালিকার একেবারে প্রথমে স্থান করে নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন ১৬টি উইকেট গ্রহণকারী ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথাম।
১৯৯২ বিশ্বকাপটিতে ভারত খুব ভাল পারফরম্যান্স করতে পারেনি। গ্রুপপর্বের খেলায় ৮টি ম্যাচের মধ্যে পাকিস্তান এবং জিম্বাবুয়ের সঙ্গে তারা জিতেছিল কেবল, আর বাকি ছয়টি ম্যাচের মধ্যে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচটি বৃষ্টির জন্য বাতিল হয়ে গিয়েছিল ও পাঁচটি ম্যাচে হেরে গিয়েছিল ভারত। অমীমাংসিত খেলাটির জন্য ১ পয়েন্ট বাকি দুটি ম্যাচ জিতে সর্বমোট মাত্র পাঁচ পয়েন্ট পাওয়ার কারণে সেমিফাইনালে ভারত কোয়ালিফাই করতে পারেনি। উল্লেখযোগ্য হল, এই বিশ্বকাপে শচীন তেন্ডুলকরকে খেলতে দেখা যায় এবং তাঁর ব্যাটিং বেশ কয়েকটি ম্যাচে ভাল হয়েছিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে হাফসেঞ্চুরিও (৬২ বলে ৫৪ রান) করেন তিনি এবং জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ৭৭ বলে ৮১ রান করেন। এই বিশ্বকাপে মহম্মদ আজহারউদ্দিন ছিলেন ভারতের অধিনায়ক। তাঁর নিজের ব্যাটিং ভাল হলেও আশাপ্রদ ফল করতে পারেনি ভারত।
অন্যদিকে পাকিস্তানের ব্যাটিং এবং বোলিং-এর দুর্দান্ত প্রদর্শন তাদের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের পথ সহজ করে দিয়েছিল।