যতীন্দ্রনাথ মুখ্যোপাধায়

যতীন্দ্রনাথ মুখ্যোপাধায়

অগ্নিযুগের বাংলার এক বীর বিপ্লবী, স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন্দ্রনাথ মুখ্যোপাধায় (Jatindranath Mukherjee) বাংলার বিপ্লবের ইতিহাসে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নাম। ইতিহাসে তিনি বেশি পরিচিত ‘বাঘা যতীন’ নামে। বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ও ‘যুগান্তর’ দলের প্রতিষ্ঠিতা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ই প্রথম জার্মানির সাহায্য নিয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ইস্পাতকঠিন স্নায়ু, লৌহসম পেশি এবং বজ্রসম সাহস নিয়ে তিনি লড়াই করেছিলেন ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে। ঐতিহাসিক বুড়িবালামের যুদ্ধে তাঁর প্রবল সাহসিকতার নিদর্শন আজও বাঙালির কাছে স্মরণীয়।

১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর অধুনা বাংলাদেশের কুষ্ঠিয়া জেলায় অবস্থিত কুমারখালী থানার কয়াগ্রামে যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম হয়। তাঁর বাবার নাম উমেশচন্দ্র মুখ্যোপাধ্যায় ও মায়ের নাম শরৎশশী দেবী। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলায়। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে যতীনের বাবা মারা গেলে বড় বোন বিনোদবালা দেবী ও মায়ের সঙ্গে যতীন্দ্রনাথ তাঁর মামার বাড়ি কয়াগ্রামে চলে যান। তাঁর বড়মামা বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায় পেশায় ছিলেন কৃষ্ণনগরের আইনজীবী এবং রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা ছিল। শিলাইদহের জমিদারি সংক্রান্ত বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ তাঁর পরামর্শ নিতেন। যতীনের মা দেশাত্মবোধক নানা রচনা পড়তে ভালোবাসতেন এবং রবীন্দ্র ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ছেলে-মেয়েদেরও অণুপ্রাণিত করার চেষ্টা করতেন। মূলত সেই কারণেই যতীনের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই এক দৃঢ়চেতা দেশপ্রেমিক সত্ত্বার উন্মেষ ঘটেছিল। নির্ভীক চিন্তা, সত্যনিষ্ঠা এবং পরোপকার স্বভাবের জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। পৌরাণিক কাহিনী পড়তে ভালবাসতেন যতীন এবং তাঁর পঠিত সেই চরিত্রগুলিকে মঞ্চে উপস্হাপনা করার ক্ষেত্রেও তাঁর আগ্রহ ছিল। এছাড়াও ফুটবল খেলায় তাঁর বিশেষ দক্ষতা ছিল। রবীন্দ্রনাথের ভাইপো সুরেন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁর ফুটবল খেলার গুণগ্রাহী। ১৯০০ সালে কুষ্ঠিয়ার কুমারখালী উপজেলার ইন্দুবালা ব্যানার্জীর সঙ্গে বিবাহ হয় যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের। তাঁদের চারটি সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে অতীন্দ্র খুব অল্প বয়সেই মারা যায়।

কৃষ্ণনগরের অ্যাংলো ভার্ণাকুলার স্কুলে তাঁর পড়াশোনা শুরু হয়। এখান থেকেই ১৮৯৫ সালে এন্ট্রান্স পাশ করে কলকাতার সেন্ট্রাল কলেজে ভর্তি হন তিনি। এইসময়ে স্বামী বিবেকানন্দের সংস্পর্শে এসে তাঁর মধ্যে আধ্যাত্মিক চেতনার উন্মেষ ঘটে। স্বামী বিবেকানন্দের পথ অনুসরণ করে আধ্যাত্মিকভাবে দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে শরীরচর্চা করার জন্য অম্বু গুহের কুস্তির আখড়ায় ভর্তি হন। এখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণের যিনি সেই সময়ে ইউরোপের ম্যাৎসিনি, গ্যারিবল্ডি প্রমুখ ইতালীয় নেতাদের জীবনকাহিনীর আলেখ্য রচনা করছিলেন। এখান থেকেই বিপ্লবী যতীনের জন্ম হয়। এই সময়ে কলকাতায় প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে যতীন বিবেকানন্দের শিষ্যা ভগিনী নিবেদিতার সঙ্গে প্লেগ রোগীদের সেবা করতে থাকেন। সেই সময়ে কলেরা রোগে আক্রান্ত মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে তিনি গ্রামে ফিরে আসেন। তাঁর গ্রামে সেই একই সময়ে মানুষখেকো বাঘের উপদ্রব ঘটে। যতীন্দ্রনাথ ও তাঁর মামাতো ভাই দুজনে বাঘের হাত থেকে গ্রামবাসীকে মুক্ত করতে তৎপর হন। যতীন্দ্রনাথের মামাতো ভাই বাঘের দিকে গুলি ছুঁড়লে তাঁর নিশানা ব্যর্থ হয়। আহত বাঘের সঙ্গে যতীন্দ্রনাথের মরণপণ যুদ্ধ হয়। যতীন্দ্রনাথের সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় বাঘের আক্রমণে। কিন্তু মাত্র একটি ছোরার সাহায্যে তিনি বাঘটিকে মারতে সফল হন। এই ঘটনার পরে যতীন্দ্রনাথের চিকিৎসক ডাঃ সর্বাধিকারী তাঁকে ‘বাঘা যতীন’ নাম দেন।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

কলেজে পড়াকালীনই যতীন আত্মনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে অ্যাটকিনসের স্টেনোটাইপিং-এর ক্লাসে ভর্তি হন। প্রশিক্ষণ শেষে নিশ্চিত মোটা মাইনের চাকরির প্রলোভন ছেড়ে ১৮৯৯ সালে মজফ্‌ফরপুরের বিখ্যাত ব্যারিস্টার প্রিঙ্গেলস কেনেডির সেক্রেটারি হিসেবে যোগদান করেন। ভারতপ্রেমিক কেনেডি সাহেব যতীনকে উৎসাহিত করেছিলেন সেখানকার স্হানীয় তরুণদের জন্য কিছু করতে। মূলত কেনেডির উৎসাহেই যতীন মুজফ্‌ফরপুরে একটি ফুটবল ও অ্যাথলেটিক ক্লাব গড়ে তোলেন। ১৯০৩ সালে তিনি বেঙ্গল গর্ভমেন্টের একশো কুড়ি টাকা বেতনের চাকরি নিয়ে বাংলায় ফিরে আসেন। সেই সময় বিপ্লবী বিপিনচন্দ্র পাল তাঁর পত্রিকা ‘নিউ ইণ্ডিয়া’তে ইংরেজ অফিসারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ভারতীয়দের উদ্বুদ্ধ করছেন ইংরেজদের অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে যতীনও ইংরেজ অফিসারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। ইংল্যাণ্ডের যুবরাজের ভারত সফরকালে গোরা সৈন্যদের সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে বচসায় জড়ান এবং যুবরাজের সামনে গোরা সৈন্যবাহিনীর অভব্য ব্যবহার সামনে আনেন। এই ঘটনায় যুবরাজ ইংল্যাণ্ডে ফিরে গিয়ে গোরা সৈন্যদের বিরুদ্ধে ভারত সচিব মংলির সঙ্গে আলোচনা করেন এবং প্রতিকারের ব্যবস্হা করেন। ১৯০৭ সালে সরকারি কাজে যতীনকে দার্জিলিং যেতে হয়। সেখানে গিয়ে ইংরেজ সামরিক অফিসার মর্ফি এবং লেফটেন্যান্ট সমারভিলের সঙ্গে যতীনের মারামারি হয় শিলিগুড়ি ষ্টেশনে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যতীনকে গ্রেফতার করা হয় ও যতীনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। সংবাদপত্রে ছাপা হয় একজন ভারতীয় ইংরেজ অফিসারকে একাই মেরেছেন। যতীনের গ্রেফতারের পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে আগুন জ্বলে ওঠে। পরিস্থিতির চাপে পড়ে যতীনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন ইংরেজ সরকার। কিন্তু ইংরেজ সরকারের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় যতীন্দ্রনাথের উপরে।

যতীন্দ্রনাথ অনুভব করেছিলেন ইংদেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম প্রয়োজন। ১৯০০ সালে বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবকে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ১০২ নং আপার সার্কুলার রোডে যতীন্দ্রনাথ ‘অনুশীলনী সমিতি’ গড়ে তোলেন ১৯০২ সালে। পাঁচ বছর ক্রমাগত গোপনে এইখান থেকে বিপ্লবী কার্যকলাপ চলতে থাকে। যতীন্দ্রনাথ অন্য বিপ্লবীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জেলায় জেলায় অনুশীলন সমিতির শাখা তৈরি করেন। ১৯০২ সালে কুস্তির আখড়া থেকে পরিচয় হওয়া যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণের বাড়ীতে বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষের সঙ্গে যতীনের পরিচয় হয়। তাঁর কাছেই সশস্ত্র বিপ্লবের কার্যকলাপ শিখতে থাকেন তিনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই যতীন বিপ্লবী দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন। অরবিন্দ ঘোষ যতীন্দ্রকে দায়িত্ব দেন এক গোপন সংগঠন গড়ে তুলে দেশের যুবসমাজের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে। এর মাধ্যমেই জন্ম হয় ‘যুগান্তর’ দলের। এই দলটি গোপনে দেশের যুবসমাজের মধ্যে দেশের প্রতি জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলার কাজ সফলভাবে করতে থাকে। ক্রমশ দেশ ছাড়িয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপে যুগান্তর দলের কাজকর্ম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯০৬ সালে যতীন্দ্রনাথ আরেক বিপ্লবী বারীন ঘোষের সঙ্গে দেওঘরে একটি বোমা তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কলকাতার মানিকতলায় আরও একটি বোমা কারখানা গড়ে তোলেন তিনি। এখান থেকে সারা ভারতবর্ষে সশস্ত্র আন্দোলন পরিচালিত হতে থাকে। ইংরেজদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে যতীন্দ্রনাথ উপলব্ধি করেছিলেন যে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে হবে। সেই লক্ষ্যেই তিনি ১৯০৬ সালে মেধাবী ছাত্রদের বিদেশে গিয়ে শিক্ষাগ্রহণের জন্য বৃত্তির ব্যবস্হা করেন যাতে এই ছাত্ররা বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে উন্নততর প্রযুক্তি ও লড়াইয়ের কায়দা শিখে আসতে পারে। বিপ্লবীদলের ব্যয় বহন করা এবং অস্ত্র কেনার জন্য বিপুল খরচ বহন করার লক্ষ্যে ১৯০৮ সালে স্বদেশি ডাকাতি সংগঠিত করতে শুরু করেন যতীন্দ্রনাথ। ক্রমশ এই কার্যকলাপ ইংরেজ সরকারের কাছে বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে।

বেঙ্গল পুলিশের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং গোয়েন্দা কর্তা শামসুর আলমকে হত্যার পরে ব্রিটিশ পুলিশবাহিনী আরও তৎপর হয়ে ওঠে বাংলার বিপ্লবীদের শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে হাওড়ায় বোমা কারখানাটি খুঁজে পান এবং জানতে পারেন এই কর্মকাণ্ডের মূল নেতা যতীন্দ্রনাথ। সেই সূত্র ধরে ‘অনুশীলন সমিতি’র ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ, জেল হয় যতীন্দ্রনাথের। জেলে বসেই তিনি খবর পান জার্মানি ও ইংল্যাণ্ডের যুদ্ধ লাগতে চলেছে। উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে পুলিশ হাওড়া-শিবপুর বোমা মামলা থেকে যতীন্দ্রনাথকে অব্যাহতি দিলেও তাঁকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। সেই সময়ে জার্মান যুবরাজ ভারতে এলে যতীন্দ্রনাথ পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে যুবরাজের সঙ্গে দেখা করেন এবং যুবরাজের সঙ্গে আলোচনায় স্হির হয় জার্মানি ভারতকে সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করবে। ১৯১৩ সালে রাসবিহারী বসু ভারতে এসে যতীন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করে স্হির করেন সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হবে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পেশোয়ার অবধি। সেই লক্ষ্যে জার্মানি থেকে অস্ত্র এনে বাংলার বিপ্লবীদের অস্ত্রশিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্হা করা হয় এক সশস্ত্র আন্দোলন সংগঠিত হওয়ার উদ্দেশ্যে। সেইমত বার্লিনে থাকা বিপ্লবীরা জার্মান সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অস্ত্রশস্ত্র কাবুল হয়ে ভারতে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেন। দিল্লিতে ইংরেজ সৈন্যদের কাছে বন্দী ভারতীয় জওয়ানদের মুক্ত করে ফোর্ট উইলিয়াম দখল করে সশস্ত্র বিপ্লব ঘোষণা করবে এই বাহিনী, এমনই স্হির হয়। এই আন্দোলনের প্রভাব সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক স্তরে সশস্ত্র আন্দোলনকে সংগঠিত করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন স্বয়ং যতীন্দ্রনাথ। সমস্ত প্রস্তুতি শেষে স্হির হয় ভারতীয় সৈন্যবাহিনী ফোর্ট উইলিয়াম দখল করে তেরঙ্গা ঝান্ডা উড়িয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করবে এবং রেলপথ উড়িয়ে ইংরেজদের সমস্ত যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেবে। সেইমত যতীন্দ্রনাথ দলের সমস্ত সদস্যদের নিয়ে গোপনে বৈঠকে বসেন। সেখানে হঠাৎই এক সরকারি অফিসার এসে যতীন্দ্রকে শনাক্ত করেন। তাঁকে গুলি করা হলেও তিনি যতীন্দ্রর বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ ইংরেজ সরকারকে দিয়ে যান আর সেই প্রমাণের ভিত্তিতে ইংরেজ সরকার যতীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে। সমস্ত বাংলা জুড়ে যতীন্দ্রের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। যতীন্দ্রনাথ পালিয়ে গিয়ে উড়িষ্যার গভীর জঙ্গলে চলে যান। সেখানেও গিয়ে উপস্থিত হন পুলিশ কমিশনার চার্লস টের্গাট। তাঁদের আগমনের সংবাদ পেয়ে যতীন্দ্রনাথ গভীর জঙ্গল পেরিয়ে চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী, জ্যোতিপ্রিয় পাল, মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত, নীরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত প্রমুখকে নিয়ে বালেশ্বরে বুড়িবালামের নদী তীরে উপস্থিত হন। ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হন যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। সারাদিন ভীষণ যুদ্ধ চলাকালীন চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী শহীদ হন। সূর্যাস্তের আগেই যতীন্দ্রনাথকে গুরুতর আহত অবস্থায় বালেশ্বরে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

১৯১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বালেশ্বরে যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম যতীন্দ্রনাথের স্মৃতিতে লেখেন কাব্যগ্রন্থ ‘নব্য হলদিঘাটের যুদ্ধ’। ১৯৫৮ সালে তাঁকে নিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাণ হয় ‘বাঘা যতীন’ নামে। কলকাতায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বাঘা যতীনের একটি ভাস্কর্য রয়েছে। তাঁর নামে কলকাতার একটি অঞ্চলকে ‘বাঘা যতীন’ নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে।

3 comments

আপনার মতামত জানান