কমনওয়েলথ (Commonwealth) ৫৪টি স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি গোষ্ঠী যা কমনওয়েলথ সনদের মূল্যবোধ ও নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই গোষ্ঠীতে যেমন যুক্তরাজ্য (United Kingdom) ও কানাডার মতো জি-৭ দেশ রয়েছে, তেমনই দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়ার মতো উন্নয়নশীল দেশ ও অনেকগুলি ছোট ছোট দেশও রয়েছে। এই সমস্ত দেশগুলির মধ্যে যোগাযোগ ও ঐকমত্য গড়ে তোলা হল কমনওয়েলথ এর একটি লক্ষ্য। সমস্ত সদস্য দেশ এখানে সমান মর্যাদা পায়। কমনওয়েলথ মূলত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল এবং পূর্বে এটি ব্রিটিশ কমনওয়েলথ হিসেবেই পরিচিত ছিল। সাধারণত কমনওয়েলথে যোগদানকারী দেশগুলির সঙ্গে ব্রিটেনের কোন না কোন প্রশাসনিক (সাম্প্রতিক অতীতে ব্রিটেনের উপনিবেশ থাকা দেশ) বা সাংবিধানিক যোগাযোগ ছিল। অবশ্য পরে এই কাঠামোটির পরিবর্তন ঘটে এবং এর নাম থেকে ব্রিটিশ শব্দটি তুলে দেওয়া হয়। ব্রিটিশ অধীনতা থেকে মুক্তিকামী ভারত এই কমনওয়েলথের অংশ কেন, সেই ইতিহাস এবং রাষ্ট্রনৈতিক কারণ আমাদের বিচার্য কারণ অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে স্বাধীনতার পরেও ভারত কমনওয়েলথ দেশগুলির অংশ কেন?
কমনওয়েলথের শিকড়ের সন্ধান পেতে গেলে উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের প্রথমদিকে ফিরে তাকাতে হবে। যখন ১৮৬৭ সালে কানাডা কনফেডারেশনের মাধ্যমে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের থেকে প্রথম স্বাধীন দেশের জন্ম হয়েছিল তখন থেকেই এক প্রকার স্বাধীন রাষ্ট্রগুলির একটি মুক্ত গোষ্ঠীর ধারণার সূচনা হয়েছিল যা বর্তমানে কমনওয়েলথ অব নেশনস (Commonwaelt of Nations) নামে পরিচিত। ১৮৮৭ সালের প্রথম দিক থেকে ব্রিটিশ ও ঔপনিবেশিক প্রধানমন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে থাকে যা ইম্পেরিয়াল বা কলোনিয়াল কনফারেন্স (Imperial/Colonial Conference) নামে পরিচিত ছিল। মূলত এই সম্মেলনগুলি থেকেই কমনওয়েলথের ধারণাটি বিকশিত হয়েছিল। ১৯১৭ সালে জ্যান স্মাটস (Jan Smuts) একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন এবং সেখানে তিনি ‘ব্রিটিশ কমনওয়েলথ অব নেশনস’ কথাটি ব্যবহার করেন। ১৯১৯ সালে তিনি প্যারিস শান্তি সম্মেলনে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য ডোমিনিয়নের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ‘ভবিষ্যৎ সাংবিধানিক সম্পর্ক- এর ধারণা ব্যক্ত করেন। ১৯২১ সালে অ্যাংলো-আইরিশ চুক্তির সময় আইরিশ ফ্রি স্টেটের পার্লামেন্টের সদস্যদের শপথগ্রহণে ‘ব্রিটিশ এম্পায়ার’ শব্দটির পরিবর্তে ‘ব্রিটিশ কমনওয়েলথ অব নেশনস’ (British Commonwealth of Nations) কথাটি ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীকালে ১৯২৬ সালের ইম্পেরিয়াল কনফারেন্সে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটি ব্রিটিশ কমনওয়েলথ অব নেশনস হিসেবে গড়ে ওঠে। ১৯২৬ সালের সেই বেলফোর ঘোষণায় জানানো হয়, যুক্তরাজ্য এবং তার ডোমিনিয়নগুলি মর্যাদায় সমান, কোন ভাবেই তাদের অভ্যন্তরীণ বা বহিরাগত বিষয়ে তারা একে অপরের অধীনস্থ নয়। এই সময় থেকেই কমনওয়েলথ শব্দটি নির্দিষ্ট এই সম্প্রদায়টিকে বোঝাতে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়। ১৯৩১ সালের ওয়েস্টমিনস্টার সংবিধি অনুসারে এই রাষ্ট্রনৈতিক সম্পর্কের নানা দিকগুলিকে আনুষ্ঠানিক করা হয়, বলা হয় ব্রিটিশ কমনওয়েলথ অব নেশনসের মধ্যে ব্রিটিশ ক্রাউনের প্রতি আনুগত্য রেখে প্রত্যেক ডোমিনিয়ন স্বাধীনভাবে যুক্ত থাকবে। পরবর্তীকালে ১৯৪৯ সালের লন্ডন ঘোষণার পর কমনওয়েলথের পরিবর্তিত প্রকৃতিকে বোঝানোর জন্য ‘ব্রিটিশ’ শব্দটিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় এবং তা কমনওয়েলথ অব নেশনস নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৭১ সালের পরে কমনওয়েলথের যে উদ্দেশ্য স্থির হয়েছে, সেই অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা, মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও সাম্য প্রতিষ্ঠা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সমঝোতা গড়ে তোলা ইত্যাদি কমনওয়েলথের মূল লক্ষ্য।
১৯৪৯ সালের লন্ডন ঘোষণার পর কমনওয়েলথের আধুনিকীকরণ ঘটার পিছনে অবশ্য কিছু কারণ রয়েছে। কারণগুলির মধ্যে অবশ্যই অন্যতম হল প্রজাতন্ত্রে পরিণত হওয়া অনেকগুলি দেশ। তাদের মধ্যে ভারতবর্ষ অন্যতম। আসলে ভারতের স্বাধীনতার পরে ও ক্রমে তা প্রজাতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে অগ্রসর হওয়ায় ১৯৪৯ সালের লন্ডনে কমনওয়েলথ প্রাইম মিনিস্টার’স কনফারেন্সে যুক্তরাজ্য কমনওয়েলথের কাঠামোর পরিবর্তন করে এবং ভারতকে প্রথম প্রজাতন্ত্র হিসেবে কমনওয়েলথে জায়গা দিতে স্বীকৃত হয়। এই বন্দোবস্ত ১৯৩১ সালের ওয়েস্টমিনস্টার সংবিধিতে উল্লিখিত স্বায়ত্তশাসিত, সমমর্যাদাসম্পন্ন অথচ ব্রিটিশ ক্রাউনের প্রতি সাধারণ আনুগত্য দ্বারা একত্রিত এবং ব্রিটিশ কমনওয়েলথ অব নেশনসে স্বাধীনভাবে যুক্ত থাকার যে-নিয়ম (এই নিয়ম সেসময় কেবল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শ্বেতাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ ডোমিনিয়নগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল) তার পরিবর্তন ঘটায় এবং প্রজাতান্ত্রিক দেশগুলিকেও সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য উন্মুক্ত হয়ে ওঠে কমনওয়েলথ। এই নিয়মের পরিবর্তন কমনওয়েলথের সাম্রাজ্যবাদী প্রকৃতিকে একটি সাংস্কৃতিক সম্পর্কের মঞ্চে রূপান্তরিত করেছিল বলা যায়। আজ কমনওয়েলথ একটি ব্রিটিশ ফোরাম হিসেবে কাজ করে না। বর্তমানে ব্রিটেনের রাণী এলিজাবেথ কমনওয়েলথভুক্ত মাত্র ১৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রয়েছেন এবং কয়েকটি দেশের নিজেদের রাজা রয়েছে ও ৩১টি দেশ প্রজাতান্ত্রিক। বর্তমানে ভারত হল কমনওয়েলথের বৃহত্তম সদস্য রাষ্ট্র।
ভারতের এই কমনওয়েলথে যোগদান করার ইতিহাসের দিকে তাকানো যাক এবার। ভারত একটি ডোমিনিয়ন হিসেবে ব্রিটিশ রাজকে তার প্রধান হিসেবে মেনে নেবে নাকি সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দেবে এই নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল। ১৯২৮ সালে রচিত একটি প্রতিবেদনে মতিলাল নেহেরু ব্রিটিশ রাজের কাছে ডোমিনিয়নের মর্যাদা দাবি করেন এবং মহাত্মা গান্ধী তাতে সমর্থন দেন। তবে রক্ষণশীল এই অবস্থানের বিরোধিতা করেন জওহরলাল নেহেরু এবং সুভাষচন্দ্র বসু। কংগ্রেসের বামপন্থীরা ব্রিটিশদের সঙ্গে কোন যোগাযোগই রাখতে চায়নি এবং সবসময় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষেই ছিল তারা। ব্রিটিশদের দিক থেকে আদান-প্রদানের মানসিকতার অভাব, এমনকি ডোমিনিয়নের মর্যাদা দিতেও অস্বীকার করায় ১৯২৯ সালে কংগ্রেস ঘোষণা করে পূর্ণ স্বরাজই হবে তাদের লক্ষ্য।
১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে জওহরলাল নেহেরু ঘোষণা করেছিলেন, কোনও পরিস্থিতিতেই ভারত ব্রিটিশ কমনওয়েলথের সঙ্গে যুক্ত হবে না। তিনি এও বলেন যে, মুক্ত ভারত একটি প্রজাতন্ত্র ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। অবশ্য ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৫০ সালে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ভারতের ওপর একপ্রকার ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আধিপত্য কায়েম ছিল। ভারত স্বায়ত্তশাসিত ছিল কিন্তু ব্রিটিশ ক্রাউনের প্রতিও আনুগত্য ছিল তার। রাজা ষষ্ঠ জর্জ তখনও সম্রাট ছিলেন এবং মাউন্টব্যাটেন ছিলেন ভারতের গভর্নর জেনারেল। খুবই আশ্চর্যজনকভাবে যে নেহেরু ভারতের প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে এবং কমনওয়েলথে যোগদান না করার কথা বলেছিলেন, ১৯৪৯ সালে সেই নেহেরুই ভারতকে কমনওয়েলথের অংশ হওয়ার পক্ষে সমর্থন দিয়েছিলেন। ১৯৪৯ সালের লন্ডন ঘোষণায় প্রজাতন্ত্র হলেও ভারতকে কমনওয়েলথের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বলা হয়, যুক্তরাজ্যের রাজা কমনওয়েলথের প্রধান হবেন কিন্তু তিনি ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান হবেন না। তবে কমনওয়েলথের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অর্থ যেহেতু, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সান্নিধ্য থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতা নয়, দুশো বছর-ব্যাপী ব্রিটিশদের অত্যাচারের পর এই সিদ্ধান্ত তাই বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছিল।
আসলে জওহরলাল নেহেরুর বিশ্বাস ছিল যে, কমনওয়েলথে অন্তর্ভুক্তিকরণ ভারতের জন্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা বহন করে আনবে, সর্বোপরি, ইংল্যান্ড-সহ আরও অনেক দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিসাধন করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন কমনওয়েলথের অংশ হলেও তা দেশের স্বাধীনতার ওপর কোন প্রভাব ফেলেনি। বিধানসভার সদস্যদের কেউ কেউ তাঁর কথায় আশ্বস্ত হননি, আবার অনেকে নেহেরুর সমালোচনা করেননি। নেহেরুর সমর্থকরা বলেছিলেন, এই কমনওয়েলথে যোগদান যেমন বিভিন্ন জাতির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে তেমনি, ব্রিটেনের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের কারণে অর্থনৈতিক ও সামরিক পরিষেবা উন্নত হবে।
নেহেরু তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বলেন ব্রিটিশদের প্রতি একটি তিক্ততার জায়গা থেকেই এই সদস্যপদের বিরোধিতা করা হচ্ছিল। কিন্তু পৃথিবী পরিবর্তিত হয়েছে; ইংল্যান্ড বদলে গেছে; ইউরোপ বদলেছে; ভারত বদলেছে; সবকিছু পরিবর্তিত হয়েছে এবং পরিবর্তন হচ্ছে…। শেষপর্যন্ত বিধানসভা নেহেরুর প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল।
নানা বিতর্ক এবং সেই সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে কমনওয়েলথ ত্যাগ করবার আওয়াজ উঠলেও ভারত আজও কমনওয়েলথের সদস্য রয়ে গিয়েছে। নেহেরু কমনওয়েলথের সদস্য হওয়াতে যে-ধরনের লাভের কথা বলেছিলেন কতকটা সেইসব কারণের জন্যই আজও ভারত কমনওয়েলথের সদস্যপদ ত্যাগ করেনি। কমনওয়েলথের সদস্যপদ গ্রহণ করতে ভারতের আপত্তি না হওয়ার একটি অন্যতম কারণ, সম্ভবত এই যে, কমনওয়েলথে যোগ দিলেও ভারতকে তার সার্বভৌমত্ব কিংবা স্বাধীনতার নীতিগুলির বিষয়ে কোনোরকম আপোশ করতে হয়নি। কমনওয়েলথ ভারতকে বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা, সহযোগিতা এবং তথ্যের আদান-প্রদানের সুযোগ করে দিয়েছে। এমনকি ভারতকে শান্তিবার্তা প্রচার এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার মতো বৈদেশিক নীতিগুলি বিশ্বের সামনে তুলে ধরবার অবকাশ দিয়েছে কমনওয়েলথ। এটি নব্য প্রতিষ্ঠিত অনভিজ্ঞ এই প্রজাতান্ত্রিক দেশটিকে বিশ্বে জাতিগত বিচ্ছন্নতার হাত থেকে একপ্রকার রক্ষা করেছে বলা যায়। এছাড়াও যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য ব্রিটিশ উপনিবেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য ভারত কমনওয়েলথকে ব্যবহার করতে চেয়েছে।
ক্রমে এই ভারত কিন্তু কমনওয়েলথের গুরুত্বপূর্ণ একজন অবদানকারী হয়ে ওঠে। ভারত কমনওয়েলথ প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্কের প্রতিটি প্রধান অংশে জড়িত রয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে, ভারত কমনওয়েলথের বাজেটে চতুর্থ বৃহত্তম অবদানকারী এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের যৌথ অফিসের তৃতীয় বৃহত্তম তহবিলদাতা ছিল। কমনওয়েলথ প্রযুক্তিগত সহায়তা কর্মসূচিতে পরামর্শদাতা এবং বিশেষজ্ঞদের প্রায় ১৬ থেকে ২০ শতাংশ ভারতীয়। এছাড়াও ভারত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের জন্য তার আর্থিক সহায়তাও প্রসারিত করে।
গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক বৈচিত্র্য এবং অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ক্ষেত্রে ভারত কমনওয়েলথের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। কমনওয়েলথ বিশ্বের কাছে ভারতকে তার নেতৃত্ব ও ক্ষমতা প্রদর্শনেরও সুযোগ দিয়েছিল। কমনওয়েলথে থাকবার আরও একটি কারণ অবশ্যই কমনওয়েলথ গেমস এবং তাতে ভারতের অসামান্য সাফল্য। অলিম্পিক বা এশিয়ান গেমসের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত যত না সাফল্য পেয়েছে, তার তুলনায় অনেক বেশি সাফল্য পেয়েছে কমনওয়েলথে। অলিম্পিকের তুলনায় কমনওয়েলথে ভারত অনেক বেশি পদক জিততে সক্ষম হয়েছে।
অবশ্য বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি বিতর্কিত ঘটনা, যথা, ইংল্যান্ডে হিন্দুদের এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ওপর আক্রমণ, ইংল্যান্ডে ভারত-বিরোধী শক্তির ক্রমবর্ধমান উত্থান, এমনকি কমনওয়েলথের কাঠামোয় বর্ণবাদী পদক্ষেপ ইত্যাদির কারণে ভারতের কমনওয়েলথ পরিত্যাগ করা উচিত—এই মর্মে অনেকে আওয়াজ তুলেছেন। তবে পররাষ্ট্র নীতি এবং উপরিউক্ত সুবিধেগুলির কথা মাথায় রেখেই ভারত আজও কমনওয়েলথ দেশগুলির অংশ হিসেবে রয়ে গেছে।