অটল বিহারী বাজপেয়ী

অটল বিহারী বাজপেয়ী

অটল বিহারী বাজপেয়ী (Atal Bihari Vajpayee) ছিলেন ভারতের দশম প্রধানমন্ত্রী যিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ গ্রহণ করেছিলেন।  প্রথম ও দ্বিতীয় বার তিনি খুব স্বল্প সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী থাকলেও তৃতীয়বার তিনি পূর্ণ সময়ের জন্যই ভারতের প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ অলংকৃত করেছিলেন। ভারতীয় রাজনীতিতে অটল বিহারী বাজপেয়ী শুধুমাত্র রাজনীতিবিদ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন না, তিনি ছিলেন একাধারে একজন কবি ও সুবক্তা সর্বোপরি সুশিক্ষিত এবং সুভদ্র রাজনীতিবিদ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।

১৯২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্ম হয়। তাঁর বাবার নাম কৃষ্ণ বিহারী বাজপেয়ী ও মায়ের নাম কৃষ্ণা দেবী। তাঁর ঠাকুরদা পণ্ডিত শ্যামলাল বাজপেয়ী উত্তরপ্রদেশের বাতেশ্বরের গ্রাম থেকে গোয়ালিয়রের মোরেনায় চলে আসেন। তাঁর বাবা কৃষ্ণ বিহারী বাজপেয়ী ছিলেন গ্রামের স্কুলের শিক্ষক ও একজন কবি ।

অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রথম জীবনে গোয়ালিয়রের সরস্বতী শিশু মন্দির থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। পরে তিনি গোয়ালিয়রের ভিক্টোরিয়া কলেজে (Victoria College) হিন্দি, ইংরেজি ও সংস্কৃত নিয়ে বি.এ পড়েন। এরপরে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণিসহ স্নাতকোত্তর পাশ করেন কানপুরের ডিএভি (DAV) কলেজ থেকে।

১৯৪২ সালে মাত্র ষোলো বছর বয়সে বাজপেয়ী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (Rashtriya Swayamsevak Sangh) সক্রিয় সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪০ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিনি আর এস এস (RSS)-এর অফিসার ট্রেনিং ক্যাম্পে যোগদান করেছিলেন। ১৯৪২ সালের  ব্রিটিশ সরকার বিরোধী ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে যোগদানের ফলে তাঁকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়।  পরবর্তীকালে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ এবং জন সঙ্ঘের কাজকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

‘আরএসএস’-এর পত্রিকা প্রকাশের কাজে পূর্ণ সময়ের জন্য নিয়োজিত হওয়ার ফলে তিনি আইন পড়া ছেড়ে দেন এবং ১৯৬৮ সালে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তিনি জনসংঘের নেতৃত্ব পান।

কর্মজীবনে ভারতীয় জন সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসেন অটলবিহারী। এই অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল।

১৯৭৫ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করায় অন্যান্য বিরোধী নেতার সঙ্গে বাজপেয়ীও গ্রেফতার হন। কিন্তু স্বাস্থ্যের কারণে তাঁকে দিল্লির একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থা শেষ হয়। ওই বছরই মোরারজি দেশাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। মোরারজি দেশাইয়ের প্রধানমন্ত্রীত্ব কালে বাজপেয়ী বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বিদেশ মন্ত্রী থাকাকালীন বাজপেয়ী ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি ‘ইউনাইটেড নেশন জেনারেল এ্যাসেম্বলি’-তে হিন্দিতে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তাঁর এই বক্তৃতা যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৯ সালে জনতা পার্টির পতনের ফলে তিনি পদত্যাগ করেন। ১৯৮০ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি দলের সূচনা হয়। বাজপেয়ী ছিলেন এই দলের প্রথম প্রেসিডেন্ট এবং ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে আসীন ছিলেন।

১৯৮৬ সালে তিনি মধ্যপ্রদেশ থেকে নির্বাচিত হয়ে রাজ্যসভার সদস্য হন। ১৯৫৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সময়ে লোকসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

১৯৯৬ সালে বিজেপি সরকার গঠন করলে তিনি ভারতবর্ষের দশম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। কিন্তু আস্থাভোটে যথেষ্ট সংখ্যক আসন সংগ্রহে ব্যর্থ হওয়ায় মাত্র ১৩ দিনে বিজেপি সরকারের পতন ঘটে এবং বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ১৩ মাসের জন্য তিনি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু এবারও ১৩ মাস পরে জোট শরিক জয়ললিতার এআইএডিএমকে সমর্থন তুলে নেওয়ার ফলে তাঁর সরকারের পতন ঘটে। অবশেষে ১৯৯৯ সালে তিনি তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। এই সময় ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। অটলবিহারীই প্রথম অ-কংগ্রেসি নেতা, যাঁর সরকার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে সফল হয়।

১৯৯৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি, কার্গিল যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের নৃশংস আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার ব্যবস্থা করেন এবং অবশেষে কার্গিলের যুদ্ধে ভারত জয়লাভ করে। এর ফলে তিনি পুনরায় (তৃতীয় বার) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন।

প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ রয়েছে। ১৯৯৮ সালের ১১ ও ১৩ মে, রাজস্থানের ‌পোখরানে পাঁচটি পরমাণু বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তিনি ভারতকে পারমাণবিক শক্তি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।

১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য দিল্লী থেকে লাহোর পর্যন্ত বাস চালু করেন। তিনি বাসে করে লাহোরে যান তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়ে ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটানোর প্রচেষ্টায়।

তাঁর সময়ে কাবেরী জল বিরোধের নিষ্পত্তি হয় যা বহু বছর ধরে অমীমাংসিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বৈদ্যুতিক উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ রেগুলেটরি কমিশন, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের জন্য তথ্য ও প্রযুক্তি সংস্থা গঠন প্রভৃতি বিষয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। দেশের সব বিমানবন্দর এবং জাতীয় সড়কের বিকাশ ও নতুন টেলিকম নীতি চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। আর্থিক উপদেষ্টা কমিটি, বাণিজ্য ও শিল্প কমিটি, জাতীয় নিরাপত্তা কমিটিও গঠন করেছিলেন। তিনি কিছু অর্থনৈতিক সংস্কার করেছিলেন যার ফলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার সদর্থক পরিবর্তন ঘটে। তাঁর সরকার কর প্রথার পুনর্নবীকরণ করেন। তিনি বীমা যোজনারও সূত্রপাত করেন যার ফলে গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এবং বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা (NRI) ব্যাপক উপকৃত হয়। পাঁচ বছরে, তাঁর সরকার দরিদ্র, কৃষক এবং যুবকদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত করে। বিদেশি বিনিয়োগের হারও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ভারতের চারটি দিকে জাতীয় সড়কের মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করার জন্য সোনালি চতুর্ভুজ প্রকল্প শুরু করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই ও মুম্বাইকে জাতীয় সড়কের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়। এর ফলে ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটে। গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নতির জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্প’ প্রণয়ন করা হয়। প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য ‘সর্বশিক্ষা অভিযান’ চালু করা হয়।

২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর  পার্লামেন্ট ভবনে সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণের ফল স্বরূপ তিনি ২০০২ সালে প্রিভেনশন অফ টেরোরিজম অ্যাক্ট প্রণয়ন করেন।

তাঁর সময় ২০০২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ‘গোধরা কান্ড’ সংঘটিত হয়। অযোধ্যা থেকে হিন্দু তীর্থযাত্রী সমেত একটি ট্রেনকে গোধরায় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ৫৭ জন প্রাণ হারান। এই ঘটনার ফলে যে দাঙ্গার সৃষ্টি হয়েছিল, তা প্রায় দু’মাস ধরে চলেছিল এবং হাজার জন নিহত হয়েছিল। এই সময় বাজপেয়ী গোধরা এবং আমেদাবাদে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এবং মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দানের কথা ঘোষণা করেন। তহেলকা দুর্নীতিও বাজপেয়ীর আমলেই ঘটেছিল।

বাজপেয়ীর প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় ২০০০ সালের মার্চ মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ভারতে আসেন। এই ঘটনা ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।

২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে অসুস্থতার কারণে বাজপেয়ী রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। প্রাক্তন কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তাঁকে ভারতের রাজনীতিতে ‘পিতামহ ভীষ্ম’ বলে অভিহিত করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অকৃতদার। কিন্তু তিনি এক কন্যা সন্তান দত্তক নিয়েছিলেন। কন্যার নাম নমিতা ভট্টাচার্য। নমিতা ছিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের বান্ধবী রাজকুমারী এবং তাঁর স্বামী অধ্যাপক বি এন কৌলের সন্তান।

দেশে ও বিদেশে তিনি অনেক পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত  হয়েছিলেন। ১৯৯২ সাল তিনি ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মানে সম্মানিত হন। ১৯৯৩ সালে কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট (সাহিত্যে ডক্টরেট) উপাধি পান। ১৯৯৪ সালে ‘লোকমান্য তিলক পুরস্কার’ এবং শ্রেষ্ঠ সংসদ হিসাবে ‘আউটস্ট্যান্ডিং পর্লামেন্টারিয়ান আওয়ার্ড’ পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও ১৯৯৪ সালে তিনি ‘ভারতরত্ন পন্ডিত গোবিন্দ বল্লভ পন্ত আওয়ার্ড’ পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর জন্মদিন ২৫ ডিসেম্বরকে ‘Good Governance Day’ হিসাবে উদযাপন করার কথা ঘোষণা করেন। ২০১৫ সালে তাঁকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ‘ভারত রত্ন’ সম্মানে ভূষিত করা হয়। ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ, তৎকালীন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী নিজেই তাঁর বাড়ি যান পুরস্কারটি তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। ২০১৫ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধ পুরষ্কার’ (বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সম্মননা) লাভ করেন।

তিনি বহু কবিতা ও গদ্য রচনা করেছিলেন। তাঁর বক্তৃতা এবং বিভিন্ন প্রবন্ধ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং পুস্তক আকারে প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৩ সালে তাঁর হিন্দি কবিতার ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয়। বাজপেয়ী অসাধারণ বাগ্মী ছিলেন। তাঁর বক্তৃতায় রাজনীতির আঙ্গিকের বাইরেও একটি সাহিত্য সত্তা থাকত। তাঁর রচিত ‘কেয়া খোয়া কেয়া পায়া’ ‘নয়ি দিশায়েঁ’, ‘মেরি ইকাবনা কবিতায়েঁ’ ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’  কাব্য গ্রন্থগুলি সমালোচকদের যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছিল। তাঁর কবিতাকে গজলে রূপ দিয়ে ‘সমবেদনা’ অ্যালবামে গেয়েছিলেন শিল্পী জগজিৎ সিংহ। ‘দ্য ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং’(এনসিইআরটি) সম্প্রতি তাঁর ‘কদম মিলকর চলনা হোগা’ কবিতাটি হিন্দি ভাষা বিষয়ক অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক ‘বসন্ত’-এ অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি দিল্লির এইমস হাসপাতালে বুকে সংক্রমণ এবং জ্বর নিয়ে ভর্তি হন। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল, পরে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। ২০১৮ সালের ১১ জুন দীর্ঘ রোগভোগের পর পুনরায় কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গের সংক্রমণের কারণে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

7 comments

আপনার মতামত জানান