শান্তিনিকেতন

শান্তিনিকেতন ভ্রমণ

শান্তিনিকেতন নামের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে জায়গাটির মূল বৈশিষ্ট্য। ‘শান্তির নীড়’ হল শান্তিনিকেতন। সত্যিই এখানে এলে মন জুড়িয়ে যায়, এক আলাদা শান্তির অনুভূতি পাওয়া যায়। লাল মাটি, সবুজ বনানীর চিত্রপটে গড়ে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট ‘বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়’। প্রকৃতির অতুল ঐশ্বর্য ও শিল্প-সাহিত্যের অপূর্ব মেলবন্ধনে শান্তিনিকেতন শুধুমাত্র বাংলা বা ভারতের নয়, সমগ্র বিশ্বের কাছেই আকর্ষণীয় দ্রষ্টব্য স্থান।

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের নিকট কোপাই নদী ও অজয় নদের তীরে অবস্থিত শান্তিনিকেতন। যদিও বর্তমানে কোপাই নদীতে বছরের বেশিরভাগ সময় জল থাকে না। এটি মূলত একটি আশ্রম ও শিক্ষা কেন্দ্র। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই আশ্রমের প্রতিষ্ঠা করেন।

১৮৬৩ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের তালুকদার ভূবনমোহন সিংয়ের কাছ থেকে এই কুড়ি বিঘা জমিটির মালিকানা পান। জায়গাটির নাম ছিল ভুবন ডাঙ্গা।রায়পুরে যাওয়ার সময় এই জমিটি দেখে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের খুব পছন্দ হয়েছিল । তাঁর মনে হয়েছিল এই জায়গাই ঈশ্বর আরাধনা উপযুক্ত স্থান। তাই তিনি এই জমিটি তালুকদার ভূবনমোহন সিংহের কাছ থেকে  কিনে নেন এবং সেখানে একটি বাড়ি তৈরি করে তার নাম দেন ‘শান্তিনিকেতন’। পরবর্তীকালে এই পুরো এলাকাটি শান্তিনিকেতন নামে পরিচিত হয়। প্রচলিত জনশ্রুতিঅনুযায়ী এই অঞ্চলের কুখ্যাত ডাকাত দলের জন্য এলাকার লোকদের কাছে অঞ্চলটি ভয়াবহ ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা দেবেন্দ্রনাথের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং শান্তিনিকেতন তৈরিতে সহায়তা করে।১৮৬৩ সালে দেবেন্দ্রনাথ এখানে একটি আশ্রম তৈরি করেন এবং ব্রাহ্মসমাজ এর সূত্রপাত করেন। রবীন্দ্রনাথ প্রথম শান্তিনিকেতনে আসেন ১৮৭৩ সালে, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে তা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নেয়। এখান থেকে শিক্ষার্থী হিসেবে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেন,ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী প্রমুখ। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনের দ্বিতীয়ার্ধের অধিকাংশ সময় শান্তিনিকেতন আশ্রমে অতিবাহিত করেছিলেন। তাঁর সাহিত্য ও সৃষ্টিকর্মে শান্তিনিকেতনের পরিবেশ ও প্রকৃতি মিশে রয়েছে। প্রকৃতির সাহচর্যে শিক্ষাদান এই ছিল শান্তিনিকেতন গড়ে তোলার মূল উদ্দেশ্য। বিভিন্ন বিখ্যাত শিল্পীর শিল্পকর্মে সজ্জিত হয়ে বর্তমানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থান।

বই  প্রকাশ করতে বা কিনতে এই ছবিতে ক্লিক করুন।

শান্তিনিকেতনে সারা বছর বিভিন্ন উৎসব পালন করা হয়। এর মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য উৎসব হল পৌষ মেলা ও বসন্ত উৎসব। এই দুই উৎসব উপলক্ষে দেশ-বিদেশ থেকে বহু দর্শনার্থীর সমাগম হয় প্রতিবছরই। পৌষ মেলা শীতকালে শান্তিনিকেতনে প্রত্যেক বছর ৭ই পৌষ শুরু হয় এবং তিনদিন জুড়ে হয়। এখানে বিভিন্ন প্রাদেশিক নৃত্য, লোক সঙ্গীতের পাশাপাশি কুটির শিল্প, হস্ত শিল্প, পিঠে পায়েস এই সমস্ত কিছুও পাওয়া যায়। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষাগ্রহণ স্মরণে পৌষ মেলা বা পৌষ উৎসবের সূচনা হয়।

বসন্ত উৎসব হল রঙের উৎসব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে যে ঋতু উৎসবের সূচনা হয়েছিল তাই পরবর্তীকালে বসন্ত উৎসব হিসেবে পালিত হয়। তখন থেকেই দেশ-‌বিদেশের নানা অতিথির পাশাপাশি উৎসবে সামিল হত আদিবাসীদেরও। মূলত দোল পূর্ণিমার আগে এই বসন্ত উৎসব পালন করা হয়। বসন্ত উৎসব মানেই বাঙালির ঠিকানা শান্তিনিকেতন।

ট্রেনে করে যেতে হলে হাওড়া থেকে ট্রেনে চেপে বোলপুর স্টেশনে আসতে হবে। বোলপুর স্টেশনে নেমে টোটো বা রিক্সায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগে শান্তিনিকেতন পৌঁছাতে। ২০২০ সালের কোভিড পরিস্থিতির পর পাওয়া তথ্য অনুযায়ী হাওড়া থেকে বোলপুরের কয়েকটি ট্রেনের বিস্তারিত তুলে ধরা হল। এছাড়াও অনেক ট্রেন আছে। শিয়ালদহ থেকেও ট্রেন আছে।

ট্রেন নাম্বারট্রেনের নামকখন ছাড়বেবোলপুর কখন পৌঁছবে
০৩০১৭গণদেবতা কোভিড - ১৯ স্পেশালসকাল ৬টা ৫ মিনিটসকাল ৮টা ৪২ মিনিট
০২৩৩৭শান্তিনিকেতন কোভিড - ১৯ স্পেশালসকাল ১০টা ১০ মিনিটবেলা ১২টা ২৫ মিনিট
০২৩৪৭শহীদ (ইন্টারসিটি) স্পেশালবেলা ১১টা ৫৫ মিনিট দুপুর ২টো ৩ মিনিট

বাসে করে আসতে চাইলে ধর্মতলা থেকে বিভিন্ন বাস ছাড়ে। সড়কপথে কলকাতা থেকে শান্তিনিকেতন এর দূরত্ব ১৬৩ কিলোমিটার। রাস্তার অবস্থা খুব ভালো। গাড়িতে আসতে প্রায় ৪ ঘণ্টা লাগে।

শান্তিনিকেতনে থাকার জন্য প্রচুর ছোট- বড় হোটেল ও লজ রয়েছে । এছাড়াও বিভিন্ন রিসর্টও রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বেশকিছু গেস্ট হাউস। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন বিভাগের পক্ষ থেকেও থাকার ব্যবস্থা আছে। তবে পৌষ মেলা ও বসন্ত উৎসবে এখানে প্রচণ্ড ভিড় হয়। তাই এই সময় যেতে হলে তিন-চার মাস আগে হোটেল বুকিং করে রাখা প্রয়োজনীয়। আর যে সময়েই আসুন না কেন, বিশ্বভারতী ক্যাম্পাস বা শান্তিনিকেতনের কাছাকাছি হোটেল নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

এখানে বহু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সেগুলো ঘোরার জন্য লোকাল গাইডের সাহায্য নেওয়া যায়। সাধারণত টোটো বা গাড়ি করে তারা এখানের বিভিন্ন স্থানগুলো ঘুরে দেখায়। তবে টোটো বা গাড়ি ভাড়া করার আগে জিজ্ঞেস করে নেবেন কোন কোন স্থান তারা দেখাবে। তাদের সঙ্গে সাধারণত তালিকা থাকে। সেই তালিকার বাইরেও আপনি কিছু দেখতে চাইলে আগে থেকে কথা বলে নিন।

শান্তিনিকেতন ভবন। ছবি ইন্টারনেট

শান্তিনিকেতন ভবন – প্রথম দর্শনীয় স্থান অবশ্যই শান্তিনিকেতন ভবন, যা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তৈরি করেছিলেন। এটি আশ্রমের সর্বাপেক্ষা পুরনো বাড়ি ।প্রথমে বাড়িটি একতলা ছিল পরে দোতলা বাড়ি হয়। এই বাড়িতে তিনি ধ্যানে বসতেন। ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয় স্থাপনের সময় রবীন্দ্রনাথ কিছুকাল সপরিবারে এই বাড়িতে বাস করেছিলেন ।তবে পরে আর কখনো তিনি এটি বসতবাড়ি হিসেবে ব্যবহার করেননি। এই বাড়ির সামনে বিখ্যাত শিল্পী রামকিঙ্কর বেইজ নির্মিত একটি ভাস্কর্য রয়েছে।

উপাসনামন্দির বা কাঁচের মন্দির

উপাসনা মন্দির – এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জ্যেষ্ঠপুত্র দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। বেলজিয়াম কাচের রঙিন কারুকার্যময় নান্দনিক নকশায় নির্মিত এই উপাসনামন্দিরটি স্থানীয় লোকজনের কাছে কাঁচের মন্দির নামে পরিচিত।

উত্তরায়ন – পাঁচটি বাড়ি নিয়ে গড়ে উঠেছে উত্তরায়ন। বাড়ি গুলির নাম হল-উদয়ন, কোনার্ক, শ্যামলী, পুনশ্চ এবং উদীচী।এই প্রতিটি বাড়ি ঢোকার মুখেই লেখা আছে কবে কখন কি কারনে রবীন্দ্রনাথ সেই বাড়িগুলি তৈরি করেছিলেন । রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, নোবেল পুরস্কারের রেপ্লিকা, বিভিন্ন দেশ থেকে পাওয়া উপহার ,বাদ্যযন্ত্র, কলম সবকিছুই ‘উদয়ন’ বাড়িটিতে সাজানো রয়েছে। বিভিন্ন সময় কবি এই বাড়িগুলোতে বাস করেছিলেন। বিশ্বভারতী উত্তরায়ন কমপ্লেক্সে একটি ‘চিত্রভানু-গুহাঘর’ তৈরি করেছে, যেখানে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি সংরক্ষিত আছে। পুরো উত্তরায়ন চত্বর জুড়ে রয়েছে অসংখ্য ভাস্কর্য ও বট, শিরীষ ,মালতি সহ নানান গাছের সারি।

ছাতিমতলা

ছাতিমতলা – দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে এক ছাতিমতলায় কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম করেন। যদিও পুরাতন সেই ছাতিম গাছটি মারা গেছে, তার জায়গায় দুটি ছাতিম গাছ রোপন করা হয়েছে; কিন্তু আজও সেই ছাতিমতলা শান্তিনিকেতনের অন্যতম দর্শনীয় স্থান।

তালধ্বজ– অনন্য সুন্দর  মাটির বাড়িটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে ,একটি তালগাছ কে কেন্দ্র করে এই বাড়িটি নির্মিত হয়েছে এবং তাল গাছের পাতা গুলি ধ্বজার মতো বাড়িটির ওপরে শোভা পায় বলেই বাড়িটির নাম তালধ্বজ।

দেহলি

দেহলি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃনালিনী দেবীর সাথে এখানে বাস করতেন। মৃণালিনী দেবীর স্মরণে এখানে শিশুদের বিদ্যালয় ‘মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালা’র সূচনা হয়। এটি আম্রকুঞ্জের ঠিক দক্ষিণ কোণে অবস্থিত। দেহলির পাশে যে খড়ের বাড়িটি আছে তাকেই নতুন বাড়ি বলা হয়। নতুন বাড়ির পশ্চিম দিকে একটি খড়ের চালের বাড়ি আছে। সেটি শান্তিনিকেতন আশ্রমের মহিলাদের সমিতির ঘর, তার নাম ‘’আলাপিনী মহিলা সমিতি’।

রবীন্দ্র ভবন – ১৯৪২ সালে স্থাপিত হয়। কবি প্রয়াণের ঠিক পরেই ভবনটি স্থাপিত হয়েছিল। এ ভবনটিতে একটি সংগ্রহশালা আছে যেখানে রবীন্দ্রনাথের পাণ্ডুলিপি, ছবি ,রবীন্দ্রনাথের হাতে আঁকা কিছু চিত্র, এছাড়া বিভিন্ন বই,পত্রিকা এবং কবির জীবনের সমস্ত জিনিসপত্র এই ভবনটিতে সংরক্ষিত আছে।এই ভবনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের পূত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

পাঠভবন – পাঠভবনে প্রাথমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা দেওয়া হয়। ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ভবনটিতে নন্দলাল বসুর তৈরি অসাধারণ শিল্পকলার প্রকাশ রয়েছে।

কলাভবন

কলাভবন ও কালো বাড়ি– কলাভবন ছিল ঔপনিবেশিক শিল্পশিক্ষারীতির বিরুদ্ধে বিকল্প, দেশীয় শিল্পশিক্ষা। কলাশিক্ষা বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের নিজস্ব ভাবনা এবং নন্দলালের প্রায়োগিক কুশলতায় কলাভবন ক্রমে ক্রমে হয়ে ওঠে বিশ্বভারতীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সেই কলাভবনের কাছেই রয়েছে কালো বাড়ি, যা শুরু করেছিলেন নন্দলাল বসু। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও প্রথমে এই কাজে সন্তুষ্ট না হলেও পরে বাড়িটি দেখে নন্দলালকে নাকি রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘‘এ আশ্রমের বিশেষ সম্পদ।’’

সোনাঝুরিতে বাউলদের গান

সোনাঝুরি হাট – প্রতি শনিবারে সোনাঝুরিতে হাট বসে। এখানে হাতের তৈরি প্রচুর সুন্দর জিনিস পাওয়া যায়। ঘর সাজানোর জিনিস থেকে শুরু করে শাড়ি, গয়না, বেতের জিনিস, বিভিন্নজনকে উপহার দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জিনিস এখানে পাওয়া যায়। সেখান থেকে অবশ্যই কিছু কিনুন। সেই একই জিনিস বেশ কিছু ব্যবসায়ী কিনে এনে কলকাতার বিভিন্ন মলে বা দোকানে অনেক চড়া দামে বিক্রি করে। এই হাটে কেনাকাটি ছাড়াও উপরিপাওনা হল বাউলদের জমায়েত। তাদের কণ্ঠে বাউলসঙ্গীত শুনলে একমনে কখন যে সন্ধ্যে নেমে আসবে বুঝতেও পারবেন না। শান্তিনিকেতনে এলে অবশ্যই এখানে আসার চেষ্টা করবেন। তবে শুধু সোনাঝুরিতেই না, শান্তিনিকেতন মানেই তো বাউলদের জায়গা। আপনি গোটা শান্তিনিকেতন জুড়েই তাদের পাবেন।

এছাড়াও রয়েছে সংগীত ভবন, চিনা ভবন, নিপ্পন ভবন, বাংলাদেশ ভবন, ভাষা ভবন, আম্র কুঞ্জ, কালো বাড়ি, সিংহ সদন, ঘন্টা তলা, রতন কুঠি, মালঞ্চ, শালবিথী, গৌড় প্রাঙ্গণ, তিনপাহাড়, বকুলবীথি, কোপাই নদীর ধারে খোয়াই, , আমার কুটির প্রভৃতি দর্শনীয় স্থান।

শান্তিনিকেতন হাতের কাজের জিনিসের জন্য বিখ্যাত। শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন দোকান থেকে বেতের সামগ্রী, ঘর সাজানোর বিভিন্ন জিনিস, শাড়ি, জুয়েলারী, চামড়ার ওপর বাটিকের কাজ বা ব্যাগ, কাঁথা কাজ, গালা শিল্প, তাঁত শিল্প ইত্যাদি কিনতে পারেন। ঘর সাজাতে বা বিভিন্নজনকে উপহার দেওয়ার জন্য এইগুলো খুবই ভালো। এছাড়াও বিভিন্ন সময় যখন মেলা বসে, তখন বহুরকমের জিনিস পাওয়া যায়। বিশেষ করে সোনাঝুরির হাটে খুব ভালো ভালো জিনিস বিক্রি হয়।

শান্তিনিকেতনের বেশিরভাগ দর্শনীয় স্থান বুধবার বন্ধ থাকে। ঘোরার প্ল্যান সেইভাবে করা যেতে পারে। শান্তিনিকেতনে বেশ কিছু জায়গায় ফটো তোলা নিষেধ ,তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক।


ট্রিপ টিপস

  • কিভাবে যাবেন – হাওড়া থেকে ট্রেনে বোলপুর স্টেশন। এরপর রিকশায় শান্তিনিকেতন। বাসে যেতে হবে ধর্মতলা থেকে বাস ছাড়ে। গাড়িতেও যাওয়া যায়। যাওয়ার রাস্তা খুব ভালো।
  • কোথায় থাকবেন – থাকার জন্য বিভিন্ন হোটেল, লজ, গেস্টহাউস ও রিসোর্ট আছে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন বিভাগের নিজস্ব হোটেলও আছে।
  • কি দেখবেন – শান্তিনিকেতন এবং তার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শান্তিনিকেতন ভবন, কাঁচের মন্দির, ছাতিমতলা, কলামন্দির, উত্তরায়ন, রবীন্দ্র ভবন, পাঠভবন, সংগীত ভবন, চিনা ভবন, নিপ্পন ভবন, বাংলাদেশ ভবন, ভাষা ভবন, আম্র কুঞ্জ, কালো বাড়ি, সিংহ সদন, ঘন্টা তলা, রতন কুঠি, মালঞ্চ, শালবিথী, গৌড় প্রাঙ্গণ, তিনপাহাড়, বকুলবীথি, কোপাই নদীর ধারে খোয়াই, সোনাঝুরি হাট আরও অনেক।
    শান্তিনিকেতনের কাছাকাছি দর্শনীয় স্থানগুলিও ঘুরে আসা যায়। সেগুলি হল বল্লভপুর অভয়ারণ্য ডিয়ার পার্ক, কঙ্কালীতলা, সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান, তারাপীঠ প্রভৃতি।
  • কখন যাবেন –  গ্রীষ্মকাল বাদে সারা বছরই যাওয়া যায়। তবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস সবথেকে উপযুক্ত সময়।
  • সতর্কতা – 
    • বসন্ত উৎসব ও পৌষ মেলা কিংবা কোন বিশেষ উৎসবে সময় গেলে আগে থেকে হোটেল বুকিং করে রাখা সমীচীন। নাহলে হোটেল পাওয়া নাও যেতে পারে।
    • শান্তিনিকেতনের বেশিরভাগ দর্শনীয় স্থান বুধবার বন্ধ থাকে।
    • টোটো বা গাড়ি ভাড়া করে শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গা ঘোরার আগে জিজ্ঞেস করে নেবেন কোন কোন স্থান তারা দেখাবে। তাদের সঙ্গে সাধারণত তালিকা থাকে। সেই তালিকার বাইরেও আপনি কিছু দেখতে চাইলে আগে থেকে কথা বলে নিন।
    • অনেক জায়গার ফটো তোলা নিষিদ্ধ ,এ ব্যাপারে সচেতন থাকা আবশ্যক।
  • বিশেষ পরামর্শ – প্রতি শনিবারে সোনাঝুরির হাট বসে। প্রচুর সুন্দর হাতের কাজের জিনিস সেখানে বিক্রি হয়। সেখান থেকে অবশ্যই কিছু কিনুন। সেই একই জিনিস বেশ কিছু ব্যবসায়ী কিনে এনে কলকাতার বিভিন্ন মলে বা দোকানে অনেক চড়া দামে বিক্রি করে।

One comment

আপনার মতামত জানান