অষ্টাদশ শতকের ব্রিটিশ সাহিত্যিক এবং চিত্রশিল্পী উইলিয়াম ব্লেক (William Blake) রোমান্টিক যুগের একজন অন্যতম অগ্রদূত। কোনো কোনো সময় এমন একেকজন প্রতিভাশালী, মহৎ শিল্পী জন্ম নেন যাঁরা নিজেদের সমসাময়িক বিদ্বৎসমাজের কাছ থেকে উপযুক্ত সম্মান পান না এবং তাঁর গুণের যথাযথ কদর করে মাত্র সামান্য কয়েকজন। অথচ তাঁদেরকেই আগামী দিনের সারস্বত সমাজ অনেক উঁচু আসনে স্থান দেন। উইলিয়াম ব্লেক সেই স্তরের একজন ব্যক্তি। কেবল সাহিত্য এবং চিত্রেই তাঁর অবদান সীমাবদ্ধ নয়, তার পাশাপাশি তিনি একজন দক্ষ মুদ্রক এবং খোদাইশিল্পীও ছিলেন। কিটস্, ওয়ার্ডসওয়ার্থ প্রমুখ বিখ্যাত রোমান্টিক কবিদের সঙ্গে তাঁর নাম সেকালে উচ্চারিত না হলেও পরবর্তীকালের সমালোচকদের কাছে তিনিই ব্রিটেনের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পীর মর্যাদা পেয়েছেন। ব্লেকের অধিকাংশ লেখা এবং আঁকা ছবি দেখলে বোঝা যেতো ঐশ্বরিক শক্তিতে গভীর বিশ্বাস এবং তীব্র এক আধ্যাত্মিক উপলব্ধি ছিল তাঁর। সমসাময়িক নাগরিক সংস্কৃতিকে পরিহার করে অলীক, আধ্যাত্মিক বিষয়সমূহকে কবিতা এবং শিল্পে রূপ দিয়েছিলেন তিনি। ‘দ্য সঙ্গস অব এক্সপেরিয়েন্স’, ‘দ্য ম্যারেজ অব হেভেন অ্যান্ড হেল’, ‘জেরুজালেম, দ্য ইম্যানেশন অব দ্য জায়ান্ট অ্যালিবিওঁ’ ইত্যাদি তাঁর লেখা বিখ্যাত বই যেখানে অলংকরণও করেছিলেন ব্লেক নিজেই।
১৭৫৭ সালের ২৮ নভেম্বর লন্ডনের সোহোতে অধুনা ব্রডউইক স্ট্রীটে উইলিয়াম ব্লেক এর জন্ম হয়। তাঁর বাবার নাম জেমস ব্লেক এবং মায়ের নাম ক্যাথরিন রাইট আর্মিটেজ ব্লেক। ক্যাথরিনের প্রথম বিবাহ হয়েছিল থমাস আর্মিটেজ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। থমাসের মৃত্যুর পর ১৭৫২ সালে জেমস ব্লেকের সঙ্গে বিবাহ হয় তাঁর। জেমস ব্লেক পেশায় ছিলেন একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী যিনি আয়ারল্যান্ড থেকে লণ্ডনে চলে এসেছিলেন। জেমস এবং ক্যাথরিনের ছয় সন্তানের মধ্যে উইলিয়াম ব্লেক ছিলেন তৃতীয়। ১৭৮২ সালের ১৮ আগস্ট ব্লেক ক্যাথরিন সোফিয়া বাউচার নামে এক নিরক্ষর মহিলাকে বিবাহ করেন। ব্লেকই তাঁকে লিখতে, পড়তে এমনকি ছবি আঁকতেও শিখিয়েছিলেন। ক্যাথরিন সোফিয়া নিজে উইলিয়াম ব্লেকের দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রতিভায় গভীর বিশ্বাস রাখতেন এবং আমৃত্যু তিনি ব্লেককে নানা কাজে সাহায্য করেছেন, তাঁর পাশে থেকেছেন।
উইলিয়াম ব্লেকের বিদ্যায়তনিক শিক্ষা ছিল কেবলমাত্র প্রাথমিক স্তরের। লিখতে এবং পড়তে শিখেই তিনি মাত্র দশ বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারপর বাড়িতেই নিজের মায়ের কাছে তাঁর শিক্ষালাভ এগিয়ে চলে। ব্লেক ছিলেন ইংরেজ-বিরোধী। তা সত্ত্বেও লণ্ডনের পিকাডিলির সেন্ট জেমস্ চার্চে উইলিয়াম ব্লেক খ্রিস্টধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন। কিন্তু একজন সমর্পিত খ্রিস্টান হয়েও ইংল্যাণ্ডের চার্চ এমনকি সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠিত ধর্মের বিরোধী ছিলেন তিনি। ব্লেকের জন্য তাঁর বাবা যেসব গ্রিক পুরাকীর্তির অঙ্কনগুলি সংগ্রহ করে আনতেন, ব্লেক সেগুলি অতি অল্প বয়স থেকেই খোদাই করা শুরু করেছিলেন। এভাবেই রাফায়েল, মাইকেল এঞ্জেলো, আলব্রেখট্ ডুরার-দের কাজ অনুকরণ করে ব্লেক চিত্রশিল্পের ধ্রুপদি আঙ্গিকের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন। সেই সময় জেমস এবং ক্যাথরিন উভয়েই ব্লেকের জন্য রঙিন বাঁধানো সব বইপত্রও এনে দিতেন। উইলিয়ামের দশ বছর বয়স থেকেই তাঁর মা ক্যাথরিন ছেলের অদম্য মেজাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাই স্কুল নিয়ে মাথা না ঘামালেও তাঁরা ছেলেকে স্ট্র্যান্ডে হেনরি পার্সের আঁকার স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। এসময় তিনি নিজের পছন্দমতো পড়াশোনা করতে থাকেন এবং কবিতার জগতে বিচরণ শুরু করেন। খুব ছোটোবেলা থেকেই ব্লেকের ওপর বাইবেলের প্রভাব ছিল অপরিসীম। আজীবন সেই আধ্যাত্মিক প্রভাব তাঁকে কবিতা এবং চিত্রশিল্পের প্রেরণা জুগিয়েছে বলা যায়।
১৭৭২ সালের ৪ আগস্ট আনুমানিক বাহান্ন পাউণ্ড বেতনে সাত বছরের মেয়াদে গ্রেট কুইন স্ট্রীটের খোদাইকারী জেমস বেসিরের আওতায় শিক্ষানবিশি শুরু করেন ব্লেক। যদিও প্রথমে ব্লেককে রাইল্যান্ড নামক এক খোদাইকরের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু ব্লেকের লোকটাকে তেমন মনে ধরেনি। অবশেষে ৭ বছর কাজ শেখার পর ২১ বছর বয়সে তিনি একজন পেশাদার খোদাইকর হয়ে ওঠেন। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে মধ্যযুগীয় শিল্প-ভাস্কর্যে সমৃদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভগুলিকে অনুকরণ করার জন্য বেসির পাঠিয়েছিলেন ব্লেককে। ব্লেকের অনুকরণ করা সেইসব চিত্র দিয়ে অষ্টাদশ শতকের এক বিখ্যাত বইয়ের অলঙ্করণ হয়েছিল।
১৭৭৯ সালের ৮ অক্টোবর স্ট্র্যাণ্ডের কাছে ওল্ড সমারসেট হাউসে রয়্যাল অ্যাকাডেমির ছাত্র হন তিনি। শিল্পচিন্তার দিক থেকে স্কুলের প্রথম সভাপতি জেশুয়া রেনল্ডসকে প্রথম থেকেই ব্লেক অপছন্দ করতেন। রেনল্ডসের কায়দা করা তৈলচিত্রের চেয়ে ব্লেক পছন্দ করতেন রাফায়েল কিংবা মাইকেল এঞ্জেলোদের ধ্রুপদি চিত্রগুলি। ১৭৮০ থেকে ১৮০৮ সালের মধ্যে অনুষ্ঠিত ছয়টি অনুষ্ঠানে প্রদর্শনীর জন্য ব্লেক নিজের কাজ জমা দিয়েছিলেন রয়্যাল অ্যাকাডেমিতে।
২১ বছর বয়সে উইলিয়াম ব্লেক যখন একজন ভ্রাম্যমান পেশাদার খোদাইশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন, বই প্রকাশকরা তাঁকে নিযুক্ত করেছিলেন বইয়ের সজ্জার জন্য খোদাইয়ের কাজে। ‘ডন কুইক্সোট’-এর মতো উপন্যাস কিংবা ‘লেডিস ম্যাগাজিন’ ধারাবাহিকের মতো প্রকাশনার জন্য তিনি চিত্র খোদাইয়ের কাজ করেছিলেন। প্রথমদিকে মূলত অন্যান্য শিল্পীর আঁকা ছবির অনুলিপি খোদাই করাই কাজ ছিল ব্লেকের। সেসময় গুরুত্বপূর্ণ সুইস লেখক জন ক্যাস্পার লাভাতের-এর প্রবন্ধের বই, ইংরেজ লেখক ইরাসমাস ডারউইনের ‘বোটানিক গার্ডেন’-এর মতো বইয়ের জন্য খোদাইয়ের কাজ করেছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি নিজস্ব মৌলিক নকশার জন্যও পয়সা পেতে শুরু করেন। সেই নকশাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘অরিজিনাল স্টোরিস ফ্রম রিয়াল লাইফ’ (১৭৯১)-এর জন্য করা ছয়টি প্লেট, এডওয়ার্ড ইয়ঙ্গের কবিতার বই ‘নাইট থটস’ (১৭৯৭)-এর প্রথম পর্বের জন্য করা ৪৩টি ফোলিও প্লেট। ব্লেকের শৈলী ছিল একেবারেই অপরিচিত, এমন চিন্তার প্রকাশ ইতিপূর্বে হয়নি কখনও। পরবর্তীকালে ব্লেক নিজস্ব নকশার খোদাই-চিত্রগুলিকে প্রকাশ করেছিলেন যেগুলি ‘গ্ল্যাড ডে’ নামে পরিচিত। ১৮২৭ সালে জন লিনেল নামে এক তরুণ শিল্পীর পৃষ্ঠপোষকতায় ব্লেক দান্তের ‘ডিভাইন কমেডি’ ধারাবাহিকের খোদাইয়ের কাজও করেছিলেন। তাঁর বিখ্যাত খোদাইকর্ম ‘ইউরোপ সাপোর্টেড বাই আফ্রিকা অ্যাণ্ড আমেরিকা’ সংরক্ষিত রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনা মিউজিয়াম অব আর্টে। এই কাজটি ব্লেক করেছিলেন তাঁর বন্ধু জন গ্যাব্রিয়েল স্টেন্ডম্যানের লেখা ‘দ্য ন্যারেটিভ অফ এ ফাইভ ইয়ারস এক্সপিডিশন অ্যাথেন দ্য রেভল্টেড নিগ্রোস অফ সুরিনাম’ (১৭৯৬) বইয়ের জন্য। ব্লেকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি খোদাই শিল্পের সংকলন ‘ইলাস্ট্রেশন অব দ্য বুক অব জব’ (১৮২৬)। মূলত বাইবেলের ‘বুক অব জব’ অংশই ছিল এই কাজগুলির প্রধান অবলম্বন।
হেনরি ম্যাথিউর বাড়িতে ব্লেক তাঁর প্রথমদিকের লেখা কবিতা পড়ে শোনাতেন। প্রায় ১৪ বছর ধরে লেখা কবিতাগুলো নিয়ে ব্লেকের প্রথম কবিতার বই ‘পোয়েটিকাল স্কেচেস’ (Poetical Sketches) প্রকাশিত হয়েছিল ১৭৮৩ সালে। কবিতার বইয়ের খুব একটা কাটতি না হলেও খোদাইকর হিসেবে জনপ্রিয় হওয়ায় তাঁর সংসার চলে যাচ্ছিল কোনোক্রমে। ১৭৮৪ সালে বাবার মৃত্যুর পরে বন্ধু জেমস পার্কারের সঙ্গে প্রিন্টসেলার হিসেবে একটি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। যদিও এই ব্যবসা সফল হয়নি। ফরাসি এবং আমেরিকানদের বিপ্লব ব্লেককে খুবই প্রভাবিত করেছিল। ১৭৮৪ সালে ব্লেক একটি পাণ্ডুলিপি রচনা করেন ‘অ্যান আইল্যান্ড ইন দ্য মুন’ নামে, যেটি অসমাপ্ত। পরবর্তীকালে ব্লেক নিজেরই লেখা কবিতার বই ‘দ্য সংস অব ইনোসেন্স’ (১৭৮৯)-এ সেই অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপির তিনটি কবিতা অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। ব্লেকের লেখা আরও উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হল – ‘দ্য সংস অব এক্সপেরিয়েন্স’, ‘দ্য ম্যারেজ অব হেভেন অ্যাণ্ড হেল’ এবং ‘প্রফেটিক বুকস’ নামে পরিচিত কিছু বই যেমন ‘দ্য বুক অব উরিজেন’ (১৭৯৪), ‘দ্য সং অব লোস’ (১৭৯৫), ‘দ্য বুক অফ আহানিয়া’ (১৭৯৫), ‘মিল্টন: আ পোয়েম ইন টু বুকস’ (১৮০৪-১৮১০), ‘জেরুজালেম, দ্য ইম্যানেশন অব দ্য জায়ান্ট অ্যালিবিওঁ’ (১৮০৪-১৮২০) ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য হল, এইসব বইতে ব্লেক নিজেই অলঙ্করণ করেছেন তাঁর অত্যাশ্চর্য ভঙ্গিতে যেগুলি তাঁর কল্পনা এবং আধ্যাত্মিক বোধের সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছিল। তাঁর লেখাও ছিল তেমনই। ‘সংস অব ইনোসেন্স’-এ কল্পনার বাহুল্য থাকলেও ‘সংস অব এক্সপেরিয়েন্স’-এ ব্লেক বাস্তবের মাটিকে পর্যবেক্ষণ করেছেন নিজস্ব ভঙ্গিতে। তাঁর কবিতা এবং ছবির অলৌকিক, আধ্যাত্মিক জগতকে অনেকেই সেদিন ধর্তব্যের মধ্যে আনেননি। ব্লেকের শেষদিককার কবিতাগুলি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সেখানে জটিল প্রতীকের ব্যবহার করেছেন তিনি। তাঁর কবিতাকে প্রতীকীবাদের আলোকেও বিচার করা হয় বর্তমানে। ব্লেকের নিজের ভাষ্য অনুযায়ী তিনি ছোটো থেকেই বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে পারেন। এমনকি তিনি নাকি যিশুখ্রিস্টকে পর্যন্ত প্রত্যক্ষ করেছিলেন। চার বছর বয়সে জানালায় তিনি ঈশ্বরের মাথা দেখেছিলেন বলেও জানা যায়। ১৭৮৭ সালে সবচেয়ে প্রিয় ভাই রবার্ট ২৪ বছর বয়সে মারা গেলে ব্লেক নাকি তাঁর ভাইয়ের আত্মাকে ছাদ ভেদ করে উঠতে দেখেন। এসব কথা সত্য মিথ্যা যাইহোক না কেন, এই আধ্যাত্মিক বোধ এবং প্রখর কল্পনাশক্তিই তাঁর আজীবনের শিল্পের এবং সাহিত্যের অবলম্বন ছিল নিঃসন্দেহে।
১৭৯৫ সালে উইলিয়াম ব্লেক ‘লার্জ কালার প্রিন্ট’ নামে একটি সিরিজ শুরু করেন। বাইবেল, মিল্টন, শেক্সপিয়ার থেকে বিষয়বস্তু নির্বাচন করে এই সিরিজ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। ব্লেকই প্রথম এমন রঙিন প্রিন্টিং-এর প্রচলন করেছিলেন বলা যায়। সেবছরই টমাস বাটস নামে একজন পৃষ্ঠপোষক পেয়ে যান ব্লেক এবং নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তাঁর জন্য ছবি আঁকার কাজ করেন তিনি। ১৮০০ সালে ব্লেক সাসেক্স অঞ্চলের ফেলফাম গ্রামে গিয়ে একটি ছোট্ট কটেজে বসবাস শুরু করেন উইলিয়াম হেইলি নামক একজন কবির হয়ে কাজ করবার জন্য। সেই কটেজেই ‘মিল্টন’-এর কাজ শুরু করেছিলেন ব্লেক। ১৮০৩ সালে তিনি রাষ্ট্রের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন, এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগও আনা হয়েছিল। বন্ধু স্টোথার্ডের দ্বারা প্রতারিত হয়ে ব্লেক সোহোর ২৭ নং ব্রড স্ট্রীটে তাঁর ভাইয়ের দোকানে স্বাধীনভাবে প্রদর্শনীশালা খুলেছিলেন। চসারের ‘ক্যান্টারবেরি টেলস’কে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে চিত্রায়িত করেছিলেন ব্লেক যা ‘দ্য ক্যান্টারবারি পিলগ্রিমস’ নামে পরিচিত। মূলত এই কাজকেই বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি ওই প্রদর্শনীশালা খুলেছিলেন। এছাড়া ১৮০৯ সালে তিনি ‘ডেসক্রিপটিভ ক্যাটালগ’ নামে একটি বই লেখেন যা চসারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ বলে ধরা হয়।
এযাবৎকাল বিভিন্ন জায়গায় ব্লেকের কাজের প্রদর্শনী হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দ্য স্কটিশ ন্যাশানাল গ্যালারি’, ‘দ্য মরগ্যান লাইব্রেরি অ্যাণ্ড মিউজিয়াম’, ‘দ্য ন্যাশানাল গ্যালারি অব ভিক্টোরিয়া’, ‘টেট ব্রিটেন’ ইত্যাদি প্রদর্শনীসমূহ।
উইলিয়াম ব্লেক জীবনের শেষকটি দিন ফাউন্টেন কোর্টে অতিবাহিত করেন। মৃত্যুর দিনটিতেও ব্লেক তাঁর বিখ্যাত দান্তে সিরিজের কাজ করে গেছেন নিরলসভাবে। শেষ মুহূর্তে নিজের স্ত্রীকে দেবদূত বলে সম্মান জানিয়ে ব্লেক ক্যাথরিনের একটি প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন। সেই তাঁর শেষ ছবি। আঁকা সম্পূর্ণ করে শুয়ে তিনি স্তোত্র এবং শ্লোক গাইতে শুরু করেন।
১৮২৭ সালের ১২ আগস্ট উইলিয়াম ব্লেকের মৃত্যু হয়।